গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার ৮টি উপকারিতা - জলপাই ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার ৮টি উপকারিতা এবং জলপাই ফলের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? জলপাইয়ে রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান এবং বহুবিধ উপকারিতা। নিম্নে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত জানতে নিচে পড়ুন।
গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার প্রচুর উপকারিতা রয়েছে কিন্তু প্রায় অধিকাংশ গর্ভবতী মা সে সম্পর্কে জেনে থাকেন না। জলপাই সাধারণত পুষ্টিকর এবং অসাধারণ স্বাদে ভরপুর একটি ফল। নিচে গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার ৮টি উপকারিতা জলপাই এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোকপাত হলো।

পোস্ট সুচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার ৮টি উপকারিতা এবং জলপাই ফলের বিভিন্ন     পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা জানুন

জলপাই ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

জলপাই ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানা ফল প্রেমি প্রতিটি মানুষের জন্য জরুরী। কেননা নানান ধরনের পুষ্টি উপাদানে ভরপুর জলপাই। জলপাই একটি পরিচিত খাবার। জলপাই অনেকে পছন্দ করেন আবার অনেকেই পছন্দ করেন না। নিম্নে জলপাই ফলের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা আলোচনা করা হলো।

আরো পরুনঃ সুস্থ থাকার জন্য  প্রয়োজনীয় যে ৫ টি খাবার খেতে পারেন 

ক্যান্সার প্রতিরোধে জলপাইঃ জলপাই প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে। আর ভিটামিন ই ফ্রী  Radical কে ধ্বংস করে ফেলে। আর এর ফলে শরীরে যদি অস্বাভাবিক ওজন থাকে তা নিয়ন্ত্রণ করে। জলপাইয়ে শুধু ভিটামিন ই নয়, এতে রয়েছে মনোস্যাটুরেটেড ফ্যাট। যা ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য বিশেষ প্রয়োজনীয়। তাছাড়া জলপাইয়ে থাকা ভিটামিন ই, দেহের কোষের অস্বাভাবিক গঠনে বাধা প্রদান করে থাকে। আর এর ফলে শরীরে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। তাই আমরা  প্রতিনিয়তই চেষ্টা করব জলপাই খাবার। 

ত্বক ও চুলের যত্নে জলপাইঃ ত্বক এবং চুলের যত্নের জন্য জলপাই বিশেষ উপকারী। জলপাইয়ে রয়েছে ফ্যাটি এসিড ও এন্টি অক্সিডেন্ট যা ত্বক ও চুলের যত্নে কাজ করে থাকে। এবং জলপাইয়ে থাকা ভিটামিন এ ত্বকের মসৃণতা আনে। চুলের গঠনকে মজবুত করে। জলপাই ত্বকের ক্যান্সার হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির কারণে ত্বকের যে ক্ষতিগুলো হয় সেগুলো জলপাই সাধারণত রোধ করে থাকে। তাই প্রতিদিন ফলের তালিকাতে জলপাই রাখা উচিত। 

সুস্থ হৃদযন্ত্রের জন্য জলপাইঃ মানুষের শরীরে যদি কোলেস্টরেলের মাত্রা বেড়ে যায়, তাহলে সাধারণত হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে। জলপাইয়ের তেল বিশেষ উপকারী। জলপাইয়ের তেল হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমিয়ে থাকে। জলপাইয়ের তেলে  থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে থাকে। আর এর ফলেই হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। জলপাই হৃদ যন্ত্রের জন্য কাজ করে থাকে এবং বিশেষ উপকারী একটি ফল। 

হাড়ের ক্ষয় রোধ করেঃ জলপাই হাড়ের ক্ষয় রোধ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। জলপাই রয়েছে মনোস্যাটুরেটেড এবং এন্টি ইনফ্লোমেটারি। আরো আছে ভিটামিন ই ও পলিফেনাল। আর এগুলো বাত-ব্যথা জনিত রোগের হাত থেকে রক্ষা করে থাকে।অনেকের বয়স জনিত কারণে হাড়ের ক্ষয় হয়ে থাকে আর এই হারের ক্ষয় রোধ প্রতিরোধে জলপাইয়ের ভূমিকা অপরিসীম। তাই আমাদের শরীর স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে নিয়মিত জলপাই খাওয়া উচিত। 

জলপাই আয়রনের ভালো উৎসঃ জলপাইকে আয়রন এর উৎস বলা হয়। জলপাই রক্তে লোহিত কণিকা অক্সিজেন বহন করে থাকে। শরীরে যদি আয়রনের অভাব থাকে অক্সিজেনের দেখা দেয়। আয়রনের অভাব পূরণে জলপাই খাওয়ার ভিউ বিকল্প নাই। জলপড়ি থেকে আয়রন শরীরের এমকে চাঙ্গা করে রাখে।

জলপাই পরিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করেঃ আপনি যদি নিয়মিত জলপাই খান তাহলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যাবে। তাই নিয়মিত চেষ্টা করবেন জলপাই খাওয়ার। জলপাই খাবার পরিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করে। শুধু পরিপাক ক্রিয়া নয় জলপাই গ্যাস্টিক এবং আলসারের হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। জলপাইয়ের তেল বিশেষ উপকারী এই পেলে থাকে প্রচুর পরিমানে ফাইবার আর এই ফাইবার বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে।

চোখের যত্নেঃ জলপাই  প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। আরে ভিটামিন এ চোখের সমস্যাগুলো দূর করে থাকে। যারা চোখে কম দেখে ও অন্ধকারের সংবেদনশীল তাদের জন্য ঔষধ হিসেবে কাজ করে থাকে জলপাই। জলপাই সাধারণত পুষ্টিগুণে গুণান্বিত। তাই আপনারা প্রয়োজন মাফিক নিয়মিত জলপাই খাবেন।

আরো পরুনঃ সুস্থতা ও দীর্ঘ জীবন পেতে প্রতিদিন খান জীবন্ত খাবার

জলপাই খাওয়াতে সতর্কতা 

  • জলপাইয়ের যদিও প্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে সচারাচর শোনা যায় না, তবে ঋতুকালীন এলার্জির সৃষ্টিকর্তা পারে। 
  • কোন গর্ভবতী মা গর্ভাবস্থায় জলপায়ের তেল ব্যবহার না করাই ভালো। 
  • জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম পাওয়া যায়। তাই যারা হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন তারা জলপাই না খাওয়াই ভালো। 

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার ৮টি উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার ৮টি উপকারিতা জানা প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের জন্য জরুরী। আপনারা জানেন জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা রয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কিনা? হ্যাঁ গর্ভাবস্থায় জল পা খাওয়া যাবে তবে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত নয় এ বিষয়টা সবসময় খেয়াল রাখবেন। আপনাদের সুবিধার্থে গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার ৮টি উপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলো বিস্তারিত পড়ুন।
  1. একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় রক্ত চলাচল ঠিক রাখতে জলপাই বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। জলপাই গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুবই উপকারী। 
  2. জলপাই প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ রয়েছে যা গর্ভবতী মায়ের জন্য বিশেষ প্রয়োজন। এছাড়াও নিজের তো একেবারে নবজাতকের ত্বক ও চুলের জন্য ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ বিশেষ উপকারী। 
  3. জলপাই ফাইবার রয়েছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে এবং খাবার হজমে কাজ করে থাকে। 
  4. জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। গর্ভবতী মায়ের গর্ভকালীন সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। শরীরে যদি আয়রনের অভাব দেখা দেয় তাহলে শরীর দুর্বল হয়ে যায় আর জলপাই আয়রনার বাপ পূরণ করে থাকে। 
  5. জলপাইয়ে এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ শক্তিকে দ্বিগুণ বাড়ায়।
  6. জলপাই গর্ভের শিশুর ত্বক হার এবং রক্তদানের সুস্থ রাখে।
  7. জলপাই একটি টক জাতীয় ফল। আর এ ফলে যেহেতু ভিটামিন সি রয়েছে তা শিশুর জন্য অনেক উপকারী।
  8. গর্ভাবস্থায় অনেকে টক ফল পছন্দ করেন তবে বেশি খাওয়া বোকামি। তাই পরিমাণ মতো খাবেন। 

জলপাই খাওয়ার উপকারিতা জেনে আবার অনেকেই বেশি বেশি খাবেন না, পরিমিত পরিমাণে খাবেন। কেননা প্রতিটা জিনিসেরই যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি তার প্রতিক্রিয়াও রয়েছে।

গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খাবেন 

গর্ভাবস্থায় সবসময় চেষ্টা করবেন সুষম খাদ্য খাবার। অর্থাৎ খাদ্য তালিকায় সব সময় চেষ্টা করবেন সবগুলো খাদ্য রাখার। নিচে সুষম খাদ্যগুলো দেওয়া হল। 

শর্করাঃ ভাত, রুটি, আলু, মধু, শাকসবজি ইত্যাদি 

আমিষঃ মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, সিমের বিচি, চীনা বাদাম ইত্যাদি 

ভিটামিনঃ বিভিন্ন ধরনের ফল শাকসবজি। 

স্নেহ ও চর্বি জাতীয় খাদ্যঃ ডিমের কুসুম, চর্বি,ঘি, ডালডা,এবং বিভিন্ন ধরনের ভোজ্য তেল। 

তবে সব সময় মনে রাখবেন স্নেহ চর্বিত খাবার কম পরিমাণে খেতে। সুষম খাদ্যর অংশ হিসেবে স্নেহ জাতীয় তেল চর্বিত খাদ্য কম রাখাই ভালো।

 আরো পরুনঃ গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিন 

জলপাই তেলের ব্যবহার এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা 

জলপাই তেলের বহুবিধ উপকারিতা রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষ ধারণা রাখি না।  নিম্নে  জলপাই তেলের ব্যবহার ও  স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। 

চুলের জন্যঃ চুলের জন্য জলপাইয়ের তেল বিশেষ উপকারী। মাথা এবং ত্বকের জন্য যে উপযুক্ত পুষ্টি উপাদান  দরকার হয় এবং চুল নরম, স্বাস্থ্যকর ও উজ্জ্বল রাখতে বা করতে জলপাই এর ভূমিকা অপরিসীম।

ত্বক এবং মুখ মন্ডলের জন্যঃ জলপাই তেলে প্রচুর পরিমাণে এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে আর সে কারণে তেল ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী। জলপাই তেল ত্বকে শুধু নরম করে না, পুষ্টি উপাদানই সরবর করে না, ত্বকের উপরে দাগ বা ত্বক কুঁচকে যাওয়া প্রতিরোধ করে থাকে। 

হার্টের জন্যঃ হার্টের জন্য জলপাইয়ের তেলের ভূমিকা অপরিসীম। জলপাইয়ের তেল শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে থাকে এবং হার্টের ক্ষতি প্রতিরোধ করে থাকে। 

ডায়াবেটিকসের জন্যঃ জলপাইয়ের তেল ডায়াবেটিকসের ঝুঁকি কমিয়ে থাকে। এবং রক্তে শর্করা পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। 

শিশুদের জন্যঃ জলপাইয়ের তেল শিশুদের মেসেজ করলে ত্বক নরম করে রাখে। 

ক্যান্সার প্রতিরোধীঃ জলপাইয়ের তেল ক্যান্সার প্রতিরোধে হিসেবে কাজ করে। 

জলপাইয়ের আচার ৪ ভাবে করা যায়

জলপাইয়ের আচার স্বাদে ভরপুর। একবার খেলে শুধু বারবার খেতে মন চায়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েরা টক খেতে ভালোবাসেন আর যদি হয় জলপাইয়ের আচার তাহলে তো কথাই নয়।নিচে জলপাইয়ের আচার বানানোর পদ্ধতি গুলো আলোচনা করা হলো। 

জলপাইয়ের রসালো আচার 

জলপাইয়ের রসালো আচার বানাতে যা যা লাগবে সেগুলো হলো। জলপাই এক কেজি তেজপাতা ২ পিস, পাঁচফোড়ন ২ পিস, হলুদ, মরিচ,ধনে গুঁড়া এক চা চামচ,আদা, ও রসুন বাটা এক চা চামচ, লবণ, দেখি রসুনের কোষ হাফ কাপ,আস্ত শুকনা মরিচ ৫/৬ পিস,সরিষার তেল কাপ,সরিষা বাটা দু টেবিল চামচ,সোডিয়াম বেনজুয়েট হাফ চা চামচ। 

যেভাবে করবেনঃ ফুটন্ত পানিতে জলপাই ২-৩ মিনিট সেদ্ধ করে নিবেন। জলপাই লবণ হলুদ মেখে কিছু সময় শুকানোর  জন্য রোদে রাখবেন। জলপাই আচার বানানোর সময় হলুদ, মরিচ, ধনে গুড়া, লবণ, চিনি, সরিষা বাটা, সিরকা দিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। জলপাই কড়াইতে নিয়ে সরিষার তেল দিয়ে শুকনা মরিচ ও রসুনের ফোরন দিন।তারপরে জলপাই দিয়ে নাড়াচাড়া দিন।জলপাইয়ের আচার নামানোর  আগে  চুলা তাপ কমিয়ে দিতে হবে এবং নাড়াচাড়া করে নামায় নিতে হবে। এভাবেই জলপাইয়ের রসালো আচার তৈরি করা হয়ে থাকে।

জলপাইয়ের ঝাল আচার 

জলপাই ঝাল আচার বানাতে যে উপাদান গুলো লাগবে। জলপাই এক কেজি, বোম্বাই মরিচ দশ বারো পিস, মরিচ ধোনে এক চা চামচ, হলুদ, রসুন এক কাপ, আদা সরিষার বাটা সরিষার তেল এক কাপ, লবণ, চিনি, সোডিয়াম বেনজুয়েট হাফ চা চামচ, পাঁচফোড়ন 2 টেবিল চামচ, কালোজিরা এক চা চামচ। 

যেভাবে করবেনঃ প্রথমে জলপাই সিদ্ধ করে নিন। হলুদ, মরিচ, ধনে, সরিষা বাটা, লবণ, চিনি সিরকা দিয়ে জলপাই পেজ তৈরি করে নিন।জলপাইর করাইতে সরিষার তেল দিয়ে কালোজিরা এবং ফোরন দিন। তারপর বোম্বাই মরিচ এবং রসুন তেলে ভেজে নিন। এরপর মসলা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন।জলপাইয়ের ছাড়িয়ে নাড়াচাড়া দিন।এরপর তেল ছেড়ে গেলে তাপ কমিয়ে সোডিয়াম বেলজুয়েট দিয়ে নামিয়ে নিন। জলপাইয়ের আচার গরম অবস্থাতেই পরিষ্কার জীবন মুক্ত বোতলে ভরে রাখুন। এভাবেই তৈরি হয় জলপাইয়ের ঝাল আচার। 

জলপাইয়ের টক ঝাল মিষ্টি আচার 

জলপাই টক ঝাল মিষ্টি আচার বানাতে যা যা লাগবে। জলপাই এক কেজি, চিনি এক কাপের বেশি, শুকনো গুড়া মরিচ এক টেবিল চামচ, বিট লবণ এক চা চামচ, পাঁচফোড়ন ২ টেবিল চামচ, সিরকা ১/৪ কাপ, রসুন কুচি এক টেবিল চামচ, সরিষার তেল এক কাপ, সোডিয়াম বেনজুয়েট হাফ চা চামচ এবং লবণ পরিমাণ মতো নিতে হবে।

যেভাবে করবেনঃ জলপাই আগে সেদ্ধ করে দিতে হবে। তারপর বাটিতে জলপাই চটকানো চিনি, লবণ, পাঁচফোড়ন, শুকনা গুড়া মরিচ, বিট লবণ, ফিরকা দিয়ে মেখে রেখে দিতে হবে ৩০ মিনিট। তারপরে পরে করাইতে সরিষার তেল দিয়ে রসুন কুচি করে ফোরাম দিন। এরপর চুলার তাপ কমিয়ে সোডিয়াম বেনজুয়েট দিয়ে মিশিয়ে নামিয়ে নিবেন। হয়ে গেল মজাদার জলপাইয়ের টক ঝাল মিষ্টি আচার। 

জলপাইয়ের স্পঞ্জ আচার

জলপাইয়ের স্পঞ্জ আচার বানাতে যা যা লাগবে। জলপাই আধা কেজি, চিনি পৌনে এক কাপ, লবণ পরিমাণ মতো, মরিচ কুচি এক টেবিল চামচ, বিট লবণ এক চা চামচ, সরিষার বাটা, রসুন কুচি সরিষার তেল আধা কাপ এবং কাসুন্দী এক টেবিল চামচ, ভিনেগার এক টেবিল চামচ।

যেভাবে করবেনঃ জলপাইগুলো কুচি কুচি করে কেটে নিন।লবণ মাখিয়ে তিন চার ঘন্টা রেখে দিন। এরপর পাতলা একটা কাপড় দিয়ে চেপে টক পানিগুলো বের করে নিন। এরপর একটি বাটিতে জলপাইয়ের কুচি , সরিষা বাটা, বিট লবণ, রসুন কুচি, কাঁচা মরিচ কুচি,পাঁচফোড়ন সিরকা কাসুন্দি একসঙ্গে মাখিয়ে জীবাণুমুক্ত একটি বোতলে রাখুন। হয়ে গেল জলপাইয়ের স্পঞ্জ আচার।

 আরো পরুনঃ হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে এমন ৫ টি খাবার জেনে নিন 

জলপাই পাতার গুণাগুণ

আপনারা অনেকেই জলপাই তেল এবং জলপাইয়ের আচারের কথা কমবেশি সবাই শুনেছেন। তবে জলপাই পাতার গুনাগুনের কথা অনেকে জানেন না নিম্নে আলোচনা করছি। বিভিন্ন রোগ থেকে নিরাময়ের জন্য জলপাইয়ের পাতা ওষুধ হিসাবে কাজ করে এবং নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যা দূর করার জন্য এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। 

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ জলপাইয়ের পাতা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ বিশেষ ভূমিকা পালন করা থাকে। জলপাইয়ের পাতায় রয়েছে অলিওরোপিয়েন নামক একটি উপাদান যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এছাড়াও জলপাইয়ের পাতা খাওয়ার ফলে রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে থাকে। হার্টের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক ডাকতে এটি বিশেষভাবে কাজ করে। 

ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণঃ জলপাইয়ের পাতা ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। জলপাইয়ের পাতা মানুষের রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। টাইপ টু ডায়াবেটিকস প্রতিরোধে জলপাইয়ের পাতা বিশেষ উপকারী।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ জলপাইয়ের পাতার নির্যাস স্তন ক্যান্সারের প্রতিরোধ করে থাকে। এটি সাধারণত সহায়ক কোষ বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। তাছাড়াও জলপাইয়ের পাতা টিউমার বৃদ্ধি ঠেকাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 

হাড়ের গঠনঃ হাড়ের গঠনে জলপর পাতা বেশি ভূমিকা পালন করে।হাড় ক্ষয় রোধের সঙ্গে লড়াই করে থাকে। এছাড়াও জলপাইয়ের পাতা হাড় তৈরীকারি কোষকে বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।জলপাইয়ের পাতা গুড়ো করেও খেতে পারবেন আবার জলপাইয়ের পাতা দিয়ে চা তৈরি করা যায়।  

জলপাইয়ের পাতা কিসের প্রতীক 

জলপাইয়ের পাতা শান্তির পথিক হিসাবে প্রকাশ করা হয়।যুদ্ধে শান্তির প্রতীক হলো জলপাইয়ের পাতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ধ্বংসস্তূপ অবলোকন করে, জাতিসংঘের বিশ্ব নেতারা জাতিসংঘ গঠনে প্রক্রিয়া শুরু করেন এবং যুদ্ধের শান্তির প্রতিটি হিসাবের জলপাই গাছের পাতাকে জাতিসংঘের পতাকা হিসাবে স্থান দেয়।

জলপাই পাতার রসের স্বাস্থ্য উপকারিতা 

জলপাই আমাদের দেশের একটি অতি পরিচিত ফল। এই ফলটি সাধারণত টক প্রকৃতির হয়। জলপাই পাতার অনেক গুণাবলী রয়েছে এবং রোগের প্রতিষেধক  হিসেবে কাজ করে। জলপাই পাতাতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি, এন্টিফাঙ্গাল, ওই আন্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। জলপাই পাতার রসের উপকারিতা নিচে আলোচনা করা হলো-

সূর্যের ক্ষতিকর থেকে রক্ষা করেঃ আপনি যদি অনেক সময় ধরে সূর্যের সংস্পর্শে থাকেন তাহলে সূর্যের তাপের ফলে আপনার ত্বক স্থিতিস্থাপকতা হারায় এবং ত্বকের পুরত্ব বৃদ্ধি পায়। জলপাইয়ের পাতায় লিউরোপেইন নামক উপাদান থাকে। জলপাই পাতার নির্যাস ত্বকের পুরো হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে থাকে। 

ক্যান্সার রোগ হিসেবে কাজ করেঃ জলপাই পাতার রস ক্যান্সার কোষের ধীর গতি করার মাধ্যমে ত্বকের টিউমার বৃদ্ধি কমাতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও  জলপাই পাতার রস বেস্ট ক্যান্সার কোষের কার্যকারিতা কমাতে বিজয় ভূমিকা পালন করে থাকে।

ক্ষত ভালো করেঃ জলপাই পাতার রস খাওয়ার মাধ্যমে দ্রুত ক্ষত নিরাময় সাহায্য করে থাকে। কেননা জলপাইয়ে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। ছোট ছোট কোন কাটাছেঁড়া গুলো এবং ফুসকুড়ির মধ্যে জলপাই পাতা নির্যাস দিলে দ্রুত ভালো হয়ে যায়।

এন্টি এজিং উপাদান আছেঃ জলপাই পাতার রস একজন মানুষের ত্বক পুরো হয়ে যাওয়া বা ত্বক নষ্ট হয়ে যাওয়া রোধ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। কেননা জলপাইয়ের রসে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। 

চুলের জন্য উপকারীঃ জলপাইয়ের রস চুলের জন্য বিশেষ উপকারী। চুলকে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে থাকে। 

রোগ নিরাময় সাহায্য করেঃ জলপাই পাতার রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে বলে  পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যবহার হয়ে আসছে। জলপাই রস ঠান্ডা ও জ্বরের উপসর্গ কমাতেও সহযোগিতা করে থাকে। 

লেখকের শেষ মন্তব্য - গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার ৮টি উপকারিতা ও  পুষ্টিগুণ  সম্পর্কে

প্রিয় পাঠক উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার ৮টি উপকারিতা এবং জলপাই ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা, জলপাই খাওয়ার উপকারিতা, জলপাইয়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা, জলপাই কিসের প্রতীক ইত্যাদি সম্পর্কে।  আশা করি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। জলপাই একটি পরিচিত ফল এবং খেতে অনেক সুস্বাদু হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের কাছে এই ফলটি বিশেষ প্রিয়। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url