কাজু বাদামের ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা - বিভিন্ন জাতের বাদামের পুষ্টিগুণ

কাজু বাদামের ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং বিভিন্ন জাতের বাদামের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে চান। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাদামের পুষ্টিগুণের ভূমিকা অপরিসীম।বাদামের যেমন উপকারিতা রয়েছে, তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। নিচে বিভিন্ন জাতের বাদামের যাবতীয় পুষ্টিগুণ জানতে পড়ুন। 


বাদাম সাধারণত ছোট বড় সকলের পছন্দের একটি খাবার। কিন্তু বাদামের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে প্রায় অধিকাংশ মানুষ ধারণা রাখে না। শরীরের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বাদাম দারুন কার্যকর।নিচে কাজু বাদামের ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা  এবং বিভিন্ন জাতের বাদামের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানাবো।

পেজ সূচীপত্রঃ কাজু বাদামের ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা - বিভিন্ন জাতের বাদামের পুষ্টিগুণ  জানতে পড়ুন

বাদাম সম্পর্কে কিছু কথা

বিভিন্ন জাতের বাদাম, বাদামের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং খাওয়ার নিয়ম সেসব সম্বন্ধে আজকে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব। পুরো আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। বাদাম হল শুকনো ফলের সংমিশ্রণ এটি সাধারণত কাঁচা খাওয়া যায় এবং রান্নার কাজেও ব্যবহার করা যায়। বাদাম বিভিন্ন ধরনের খনিজ এবং ভিটামিন সরবরাহ করে থাকে। আপনি যদি নিয়মিত বাদাম খেতে পারেন তাহলে শরীর স্বাস্থ্যর জন্য অনেক উপকারিতা পাবেন। তবে খেতে হবে আপনাকে নিয়ম মাফিক ভাবে।বাদাম সাধারণত বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে তবে বাদাম সাধারণত চার প্রকার নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

  • কাজু বাদাম 
  • কাঠ বাদাম 
  • পেস্তা বাদাম
  •  চীনা বাদাম

এসব বাদাম ছাড়াও বাজারে বিভিন্ন ধরনের বাদাম পাওয়া যায়  তবে এদের ভিন্ন ভিন্ন প্রোটিন এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ থাকে এবং তাদের ছাদের পরিমাণও ভিন্ন হয়। বিভিন্ন জাতের বাদামে বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান রয়েছে। কাজু বাদামের ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কাজু বাদামের পুষ্টিগুণ জানতে নিচে পড়ুন।

 আরো পড়ুনঃ সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায় এবং উপকারিতা

কাজু বাদামের পুষ্টিগুণ 

প্রিয় পাঠকগণ, কাজু বাদাম থেকে পরিপূর্ণ পুষ্টিগুণ পাওয়ার জন্য আপনাকে জানতে হবে কাজু বাদামের খাবার নিয়মগুলো এবং উপকারিতা কি সেগুলো সম্পর্কে। কাজু বাদামে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন, কপার, ফসফরাস,ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি। কাজু বাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে যা মানুষের দ্রুত ওজন   কমাতে এবং হার্ট ভালো রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন

করে কাজু বাদাম একটি সুস্বাদু খাবার। কাজু বাদাম বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত হয়ে থাকে যেমন বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ভারত,কেনিয়া, মালয়েশিয়া, তানজানিয়া প্রভৃতি ইত্যাদি দেশে। আমাদের দেশের খাগড়াছড়ি বিভিন্ন অঞ্চলে এই কাজুবাদাম গুলো উৎপাদিত হয়ে থাকে। কাজু বাদামের গাছগুলো   সাধারণত ৬০ থেকে ৭০ বছর পর্যন্ত বাঁচলেও, কাজু বাদামের ফলন

পাওয়া যায় মূলত ৫০ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত। কাজুবাদাম গাছ মূলত ১০ থেকে ১২ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। কাজুবাদামের ওজন সর্বনিম্ন পাঁচ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ২০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। প্রতিটা কাজুবাদাম থেকে ১৫৭ গ্রাম ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়। 

কাজু  বাদাম এর উপকারিতা

কাজু বাদামের ১০টি উপকারিতা জানা প্রতিটি মানুষের জন্য জরুরী। আপনি যদি এক মুঠো পরিমাণ কাজুবাদাম খান, তাহলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। কাজুবাদামে রয়েছে প্রোটিন এবং ভিটামিন যা শরীরের বিভিন্ন সমস্যার নিরাময় করে থাকে। চলুন আজকে আমরা কাজু বাদামের উপকারিতা গুলো জেনে নেব। 

ক্যান্সার প্রতিরোধের সহায়ক 

কাজু বাদামে বিদ্যামান রয়েছে প্রচুর পরিমাণে "কপার "যা ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিকে প্রতিহত করে থাকে। এবং কাজুবাদামে আরো রয়েছে প্রো-অ্যান্থোসায়ানিডিন যা টিউমার কোষের বৃদ্ধিকে প্রতিহত করে প্রতিরোধের জন্য সাহায্য করে। তাই কাজু বাদাম এর উপকারিতা অপরিসীম। 

দ্রুত ওজন কমাতে 

কাজু বাদাম দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে। আপনি যদি প্রতিদিন কাজু বাদাম খান তাহলে ধীরে ধীরে আপনার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল গুলো দূর করে ভালো কোলেস্টেরল এর মাত্রা বৃদ্ধি করে থাকবে। কাজুবাদামে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি রয়েছে। যা আপনার শক্তির যোগান হিসাবে বিশেষ ভুমিকা পালন করবে।


ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় 

কাজুবাদাম ত্বকের উজ্জলতা বাড়িয়ে থাকে। কাজুবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং কপার। যা ত্বকের কোলাজেন তৈরীতে সহায়তা করে থাকে। এবং বার্ধক্যের ছাপ দূর করে।

রক্তের জীবাণু দূর করে থাকে 

কাজু বাদাম রক্তের জীবানু দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে  থাকে।কাজু বাদামে রয়েছে কপার যা রক্তের যাবতীয় জীবনুগুলো দূর করতে সহায়তা করে। 

আরো পড়ুনঃ পাকা কাঁঠালের উপকারিতা এবং অপকারিতা 

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকে 

কাজু বাদাম কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে থাকে। আপনি যদি সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খান তাহলে হজম শক্তি তরান্বিত হয়। এবং রেচন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে থাকে। তবে আপনি যদি ১৮টির বেশি কাজুবাদাম খান অতিরিক্ত প্রোটিনের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা তৈরি হতে পারে। 

রক্ত স্বল্পতা দূর করে থাকে

কাজু বাদাম নিয়মিত খেলে রক্তস্বল্পতা  দূর করে থাকে। কাজু বাদামে যে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান গুলো রয়েছে, সেগুলো রক্তস্বল্পতায় সমস্যা কমিয়ে শরীরের রক্ত বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

চোখের রেটিনা সুস্থ রাখে 

কাজু বাদামে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তা চোখের রেটিনা সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। চোখকে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির হাত থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য কাজু বাদামের ভূমিকা অপরিসীম। 

কার্ডিওভাসকুলার প্রতিরোধে সহায়ক

কাজু বাদামের প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে। আর এই ফ্যাট হার্টের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখে এবং হার্টে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। সেজন্য আমাদের কম করে হলেও কাজু বাদাম খাওয়া উচিত।

ক্ষুধা মেটাতে সাহায্য করে 

কাজু বাদাম ক্ষুধা মেটাতে সাহায্য করে থাকে। কাজুবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও চর্বি যা ক্ষুধা মিটিয়ে এবং পেট ভরে রাখতে সহায়তা করে। 

উপরে আমারা কাজু বাদামের ১০টি উপকারিতা জানলাম এখন আমরা নিচে জানবো কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম এবং অপকারিতা সম্পর্কে। বিস্তারিত নিচে জানুন।

কাজুবাদাম খাবার নিয়ম 

কাজু বাদাম প্রতিদিন ১৮টির বেশি খাওয়া মোটে উচিত নয়। কেননা কাজু বাদামে থাকে অ্যানাকার্ডিক অ্যাসিড।কখনোই ভারী খাবার হিসেবে বাদাম খাওয়ার ঠিক না। গুলোর নিচে কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়মগুলো এক নজরে দেখা যাক। 

  • কাজুবাদাম সেবনের জন্য পরিষ্কার এবং বিশুদ্ধ মানের বাদাম নির্বাচন করুন। 
  • কাজুবাদাম সবসময় খালি পেটে সকালে খাবার চেষ্টা করুন।
  • কাজুবাদাম সংরক্ষণের জন্য বন্ধ সংরক্ষণগার নির্বাচন করুন  
  • সাধারণত রাতে কাজ বাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। 
  • দুপুরে খাবারের পরে কাজুবাদাম খেতে পারেন। 
  • কাজুবাদাম দিয়ে তৈরি পায়েস খুবই উপকারী। 

কাজুবাদামের অপকারিতা 

কাজু বাদামের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর অপকারিতাও রয়েছে। উপরে কাজু বাদামের উপকারিতা গুলো আলোচনা করেছি, জেনে নেওয়া যাক কাজুবাদামের অপকারিতা গুলো কি... 

  • কাজুবাদাম এলার্জির ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে 
  • যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তারা কাজুবাদাম থেকে দূরে থাকুন। 
  • কাজুবাদাম দূর্বল ব্যক্তির স্বাস্থ্য কে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে,কেননা কাজু বাদামে প্রচুর পরিমাণে অক্সালিক এসিড থাকে । 
  • আপনি যদি প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পরিমাণে কাজুবাদাম খান তাহলে ধীরে ধীরে ওজন বৃদ্ধি পাবে।

কাঠ বাদামের পুষ্টিগুণ 

বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর ড্রাই ফুডের মধ্যে কাঠ বাদাম অন্যতম। কেননা প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে কাঠবাদামে । কাঠ বাদামের ভিতরে রয়েছে উপকারী ফ্যাট, প্রোটিন, ফাইবার, মিনারেলস, ভিটামিনসহ বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।  নিচে কাঠ বাদামের পুষ্টিগুণগুলো দেওয়া হলো-

  • ক্যালসিয়াম- ৭৬.৩ গ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম - ৭৬.৫ মিলিগ্রাম
  • জিঙ্ক- ০.৯ মিলিগ্রাম
  • পটাশিয়াম-২০৮ মিলিগ্রাম
  • কপার - ০.৩ মিলিগ্রাম
  • ম্যাঙ্গানিজ- ০.৬ মিলিগ্রাম
  • ফ্যাট- ৪.২ গ্রাম
  • শর্করা - ৬.০ গ্রাম
  • আমিষ- ৬ গ্রাম
  • অ্যাঁশ- ৩.৫ গ্রাম
  • সেলেনিয়াম- ০.২ মিলিগ্রাম
  • এনার্জি- ৫৭৮ কিলোক্যালরি
  • ভিটামিন ই- ৭.২ মিলিগ্রাম

কাঠ বাদামের উপকারিতা 

কাঠ বাদামে যেমন প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। কাঠ বাদামের যেমন উপকার রয়েছে, তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। নিচে কাঠ বাদামের উপকারিতাগুলো  আলোচনা  করা হলো।

শরীরকে শক্তিশালী করেঃ কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে এবং ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে যা শরীরকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে থাকে। 

হাড় এবং দাঁতের জন্যঃ কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যা দাঁতের হাড়কে স্বাস্থ্যকর রাখে। 

ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তাঃ কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণে চর্বি রয়েছে যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। 

ক্যান্সারের জন্য প্রতিরোধঃ ক্যান্সার প্রতিরো করার জন্য যে গুণগুলি প্রয়োজন, সেগুলো  কাঠ বাদামের ভেতরে রয়েছে। ক্যান্সার প্রতিরোধে কাঠবাদাম বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। 

ভিটামিন ও মিনারেল এর উৎসঃ কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, ভিটামিন ই, ভিটামিন এ, ফসফরাস এবং আয়রনের উৎস রয়েছে যা শরীরের জন্য বিশেষ উপযোগী। 

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ কাঠ বাদাম হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। আপনি যদি প্রতিদিন কাঠ বাদাম ভিজিয়ে রেখে খান  তাহলে অনেক উপকার পাবেন। 

উচ্চ ফাইবারের উৎসঃ কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যার ফলে পচন ব্যবস্থাকে শোষণ করে পুষ্টিমুখি পেটের সমস্যায় সমাধান করে থাকে। 

হৃদযন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকরঃ নিয়মিত কাঠ বাদাম খেলে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে। শরীর সাস্থ্যের উন্নত করে এবং কোলেস্টেরল নিম্নে রেখে দেয়।

ব্রেণ উন্নত করেঃ কাঠ বাদাম সাধারণত বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপের সমস্যা গুলো দূর করে থাকে এবং মেমোরি মনোযোগ বৃদ্ধি করে থাকে। 

প্রোটিনের উৎসঃ কাঠবাদাম প্রোটিনের উৎস হিসেবে কাজ করে। আর এই প্রোটিন শরীরকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। 

  • মজার স্বাদ
  • কাঠবাদাম একটি সুস্বাদু খাবার। প্রায় প্রতিটি মানুষের এটি পছন্দনীয়।  
  • আপনি প্রতিদিন যদি কাঠবাদাম নিয়মিত খান তাহলে, উপরের  সমস্ত উপকারিতা গুলো উপভোগ করতে পারবেন।তাই আমাদের প্রতিদিন কম করে হলেও কাঠবাদাম খাওয়া উচিত শরীর স্বাস্থ্য জন্য। 

কাঠ বাদামের অপকারিতা 

কাঠ বাদামের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতা ও রয়েছে নিচে অপকারিতা গুলো উল্লেখ করা হলো। 

  • কিছু কিছু মানুষের জন্য কাঠবাদাম এলার্জির কারণ হতে পারে। এদের জন্য কাঠবাদাম বাদাম খাওয়া মোটেও ঠিক না। 
  • কাঠবাদাম এ প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। তাই বেশি পরিমাণে যদি কাঠবাদাম খান তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
  • কাঠবাদামের প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি ও ফ্যাট রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঠবাদাম থেকে প্রায় ৫০ গ্রাম ফ্যাট পাওয়া যায়। তাই আপনি যদি বেশি পরিমাণে খান তাহলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। 
  • কাঠবাদাম একদিনে ৪০ গ্রাম  বা আট দশটি বেশি খাওয়া ঠিক নয়। 
  • কাঠবাদামে হাইড্রোকার্বন অ্যাসিড রয়েছে। তাই কাঠ বাদাম বেশি পরিমাণে খেলে দেহে টক্সিন জমা হতে থাকে যার ফলে শ্বাস কষ্টের সমস্যা হয়, নার্ভের সমস্যা হয় এমনকি মৃত্যু হতে পারে। 

কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম

কাঠ বাদাম সাধারণত দুই ভাবে খাওয়া যায়। আপনি খোসা সহ খেতে পারবেন এবং খোসা ছাড়িয়েও খেতে পারবেন। আপনি কাঠ বাদাম যেভাবেই খান না, কেন উপকারিতা পাবেন। আপনি রাতের বেলা কাঠ বাদাম গুলো ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ভিজে রাখবেন সকালবেলা খোসা ছাড়িয়ে বা খোসা সহ খেতে পারেন। কাঠ বাদামের খোসাতে ট্যানিক থাকে যা শরীরের জন্য উপকারী।  

পেস্তা বাদামের পুষ্টিগুণ 

পেস্তা বাদাম সাধারণত এক ধরনের শুকনো ফল। পেস্তা বাদাম পুষ্টিতে সমৃদ্ধ একটি ফল । পেস্তা বাদাম খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের উপাদান গুলোর অভাব পূরণ করে থাকে এবং বিভিন্ন রোগ ব্যাধি থেকে প্রতিরোধ করে থাকে। নিচে পেস্তা বাদামের পুষ্টিগুণ উল্লেখ করা হলো-

  • ক্যালোরি- ১৫৯ গ্রাম
  • প্রোটিন- ৬ গ্রাম
  • ফাইবার - ৮ গ্রাম
  • ফ্যাট- ১৩ গ্রাম
  • কার্বস- ৮ গ্রাম
  • পটাশিয়াম - (৬ শতাংশ RDI)
  • ফসফরাস- (১১ শতাংশ RDI)
  • কপার- (৪১ শতাংশ RDI)
  • ম্যাঙ্গানিজ- (১৫ শতাংশ RDI)
  • ভিটামি বি ৬ - (২৮ শতাংশ RDI)

পেস্তা বাদামের উপকারিতা 

পেস্তা বাদামের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর কিছু সাইট এফেক্টও রয়েছে নিম্নে পেস্তা বাদাম নিয়ে আলোচনা করা হলো -

ডায়াবেটিকস থেকে রক্ষাঃ পেস্তা বাদাম ডায়াবেটিসের মতো ভয়াবহ রোগ থেকে প্রতিরোধ করে থাকে। আমাদের শরীরের জন্য, এক কাপ পেস্তা বাদাম ৬০ শতাংশ ফসফরাসের অভাব পূরণ করে।যা ডায়াবেটিস থেকে আমাদের রক্ষা করে থাকে। পেস্তা বাদামে থাকা ফসফরায় প্রোটিনকে অ্যামিনো অ্যাসিডে৷ ভেঙ্গে দেয় যার ফলে শরীরের গ্লুকোজের  শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে।

হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিঃ পেস্তা বাদামে ভিটামিন বি-৬ এবং প্রোটিনের উপাদান রয়েছে যা রক্তের অক্সিজেন বহন করে থাকে।  যদি প্রতিদিন পেস্তা বাদাম খাওয়া যায়, তবে রক্তে হিমোগ্লোবিন এবং অক্সিজেনের  পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। 

জ্বলন থেকে রক্ষাঃ পেস্তা বাদাম জ্বালা প্রতিরোধ করে থাকে। পেস্তা বাদামে ভিটামিন ই, ভিটামিন এ , থাকায় জ্বলন প্রতরোধী ক্ষমতা রয়েছে। যার ফলে  কোনরকম সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। 

প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ আমাদের শরীরে যদি প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয় তাহলে সহজে আমরা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারি। ভিটামিন বি-৬ প্রচুর পরিমাণে পেস্তা বাদামে থাকে। যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পেস্তা বাদাম শরীরের গঠন, রক্ত সঞ্চালনের জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 

ক্যান্সার থেকে রক্ষাঃ প্রতিটি মানুষের জন্য ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ। ক্যান্সার রোগ সহজে নিরাময় করা যায় না। তবে আপনি যদি নিয়মিত পেস্তা বাদাম খান, তাহলে মারাত্মক রোগ ক্যান্সার থেকে বাঁচতে পারবেন। 

সুস্থ ত্বকের জন্যঃ আপনি কি সুস্থতা পেতে চান? তাহলে নিয়মিত আপনাকে পেস্তা বাদাম খেতে হবে।বাদামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে। যা মানুষের শরীরের স্বাস্থ্যকর চামড়ার জন্য বিশেষ উপযোগী।  পেস্তা বাদাম ত্বক সুন্দর করে থাকে।

চোখের সমস্যা থেকে রক্ষাঃ পেস্তা বাদাম চোখের জন্য খুবই উপকারী। পেস্তা বাদাম চোখের রোগের সমস্যা থেকে রক্ষা করে থাকে। পেস্তা বাদামে লুটিন জ্যাক্স্যান্থিন নামক দুটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা চোখের জন্য খুবই উপকারী। 

পেস্তা বাদামের সাইড ইফেক্ট 

প্রিয় পাঠকগণ, আমরা জানি যে শুকনো ফল গুলি বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিতে সমৃদ্ধ হয়ে থাকে এবং পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। তাই নির্দিষ্ট পরিমাণ না খেয়ে অতিরিক্ত পরিমাণ খাই যার শরীরের জন্য সৃষ্টি করে। পেটে গ্যাস, পেট ফোলা ভাব, ডায়েরিয়া, এলার্জি ইত্যাদির সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

চীনা বাদামের পুষ্টিগুণ 

প্রিয় পাঠকগণ বাদামের মধ্যে চীনা বাদামের জনপ্রিয়তা রয়েছে। আমরা সকলে জানি বাদাম একটি পুষ্টিকর খাবার। চীনা বাদাম রক্তের খারাপ চর্বি এবং শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। নিচে চীনা বাদামের পুষ্টিগুণ  সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

চীনা বাদামে যেসব পুষ্টিগুণ রয়েছে:

১০০ গ্রাম চিনাবাদামে যেসব পুষ্টি উপাদান গুলো রয়েছে। 

  • প্রোটিন -২৫.৮ গ্রাম
  • পানি- ৭ শতাংশ
  • কার্বহাইড্রেড- ১৬.১ গ্রাম
  • ফাইবার- ৮.৫ গ্রাম
  • ফ্যাট- ৪৯.২ গ্রাম
  • ওমেগা -৬ (১৫.৫৬ গ্রাম)
  • আয়রন-৪.৫৮ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন ই- ৫৫ শতাংশ
  • সোডিয়াম -১৮ শতাংশ
  • ক্যালসিয়াম -৯২ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম- ১৬৮ মিলিগ্রাম
  • পটাশিয়াম - ৭০৫ মিলিগ্রাম।
  • ক্যালোরি - ৫৬৭ মিলিগ্রাম

চীনা বাদামের উপকারিতা 

চিনাবাদাম একটি জনপ্রিয়  শুকনো ফল। চিনা বাদামের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর সাইড ইফেক্টও রয়েছে। প্রিয় পাঠকগণ, চিনা বাদামের উপকারিতা এবং সাইড ইফেক্টগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো। 

শক্তির উৎসঃ চীনা বাদামে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, খনিজ,ভিটামিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট  ধারণ করে বলে, চীনা বাদাম প্রচুর পরিমাণে শক্তির উৎস হিসাবে কাজ করে থাকে।

দেহের বিকাশঃ চিনা বাদাম প্রোটিন সমৃদ্ধ। চীনা বাদামের মধ্যে উপস্থিত অ্যামিনো অ্যাসিড শরীরের উন্নয়ন এবং বিকাশের জন্য ভূমিকা পালন করে। 

প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ সাধারণত পুষ্টির অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে নানান ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়। যেমন সর্দি-কাশি, জ্বর,  মাথা, দূর্বলতা ইত্যাদি। চীনাবাদাম এগুলো থেকে রক্ষা করে থাকে।

খারাপ কোলেরস্টরেলের  মাত্রা কমায়ঃ আপনার কোলেস্টেরল হওয়ার একমাত্র কারণ হলো অপুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং তৈলাক্ত খাবার খাওয়া। আপনি যদি নিয়মিত চীনা বাদাম খান  তাহলে, খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে  ভালো কোলেস্টেরল এর মাত্রা বৃদ্ধি করে।

চুল বৃদ্ধি করেঃ ভিটামিন ই এর অভাবে মানুষের চুলের গোড়া দূর্বল হয়ে পড়ে। চিনা বাদামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই রয়েছে যা চুল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। 

চুলের পুষ্টি যোগায়ঃ চিনাবাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে এবং ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা মাথার চুলের পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে।

ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করেঃ চিনা বাদামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে ত্বক কে গ্লোয়িং করে তোলে এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।

চিনা বাদামের সাইড ইফেক্ট 

যে কোন খাবার গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট একটা পরিমাণ রয়েছে। আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ খাবার খান তাহলে আপনার শরীরের উপরে প্রভাব পড়বে। চীনা বাদাম মাত্রাতিরিক্ত খাইলে যে সমস্যাগুলো হতে পারে-

  • আপনার ত্বকে চুলকানি এবং ফুসকুড়ি উঠতে পারে। 
  • আপনি যদি বেশি পরিমাণ চিনা বাদাম খান তাহলে গ্যাস, বুক জ্বালা বা এসিডিটি হতে পারে। 
  • চিনাবাদাম  এলার্জি হতে পারে 
  • আপনি যদি গরমে অতিরিক্ত চীনা বাদাম খান তাহলে পেট খারাপ হতে পারে।
  • যাদের থাইরয়েড আছে তাদের সমস্যা হতে পারে।

লেখকের শেষ কথা 

উপররোক্ত  আলচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে,কাজু বাদামের ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা - বিভিন্ন জাতের বাদামের পুষ্টিগুণ, উপরে বিভিন্ন জাতের বাদামের যেমন কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম,পেস্তা বাদাম এবং চীনা বাদামের পুষ্টিগুণ উপকারীতা অপকারিতা এবং  সাইড ইফেক্ট সম্পর্কে আশা করি বোঝাতে পেরেছি। তাই আর দেরি না করে চলুন আজ থেকেই নিয়মিত 

ভাবে ডায়েটের যুক্ত করে নেই অনেক গুণের অধিকারী এই বাদামগুলো।তবে আবারো স্মরণ করে দেই খেতে হবে নিয়মিত এবং সঠিক পরিমাণ মতো। অতিরিক্ত কোন কিছুই আপনার জন্য সুখকর নয়। তাই আপনার শরীর স্বাস্থ্য ও সুরক্ষায় প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণ বাদাম খাবেন। আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন এবং নিয়মিত আপডেট পোস্ট পাওয়ার জন্য ফলো করুণ। ধন্যবাদ....

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url