সুস্থতা ও দীর্ঘ জীবন পেতে প্রতিদিন খান জীবন্ত খাবার

সুস্থতা ও দীর্ঘ জীবন পেতে প্রতিদিন খান জীবন্ত খাবার। অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, খাবার আবার জীবন্ত হয় নাকি? আমি এক কথায় বলব হ্যাঁ। প্রিয় পাঠক, জীবন্ত খাবার সম্পর্কে জানতে চাইলে পুরো পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
সুস্থতা এবং সুন্দর দীর্ঘ জীবন পেতে আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখা প্রয়োজন জীবন্ত খাবার। নানান রকম পুষ্টি উৎপাদনে ভরপুর জীবন্ত খাবার। পুষ্টিগুণের ধরন বেধে বিভিন্ন পুষ্টিবিজ্ঞানীগণ জীবন্ত খাবার কে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। সেগুলো হলো জীবন্ত খাবার,অর্ধমৃত খাবার, মৃত খাবার।

পেজ সূচীপত্রঃ সুস্থতা ও দীর্ঘ জীবন পেতে প্রতিদিন খান জীবন্ত খাবার 

প্রতিদিন খান জীবন্ত খাবার 

সুস্থতা ও দীর্ঘ জীবন পেতে প্রতিদিন খান জীবন্ত খাবার। সুস্থতা প্রতিটি মানুষের জন্য জরুরী। তাই সুস্থতা এবং  কর্মময় দীর্ঘজীবন পেতে প্রতিদিন জীবন্ত খাবার খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।  প্রতিদিন খাবারের তালিকা রাখুন জীবন্ত খাবার। জীবন্ত খাবার কি? কেন খাবেন জীবন্ত খাবার, নিম্নে আর্টিকেলটির মাধ্যমে  জীবন্ত  খাবার সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো পড়তে থাকুন এবং জীবন্ত খাবার সম্পর্কে জানুন। 

জীবন্ত খাবার কী 

সাধারণত ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বা এর বেশি তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময় ধরে যদি, রান্না করা হয় তাহলে সব খাবারই মৃত খাবার। দীর্ঘ সময় ধরে যদি রান্না করা হয় তাহলে উচ্চতাপে এনজাইমগুলো নষ্ট হয়ে যায়। আর আর এজন্যই অনেক খাবার গুলো যেমন তেলে ভাজা খাবার, বিরিয়ানি, গ্রীল,কাবাব, তেহারি, কালা ভুনা ইত্যাদি এ সকল খাবারগুলো মৃত খাবার।

এসব খাবারের ভিতরে ইনজাইম থাকেনা। ফলে শরীর স্বাস্থর জন্য কোন প্রকার উপকার হয় না। প্যাকেট জাত ও প্রক্রিয়াজাত করা খাবারগুলোও মৃত খাবার। যেমন বিস্কিট, কেক, পেস্টি, ফাস্টফুড, জুস,কমল পানীয়,চিপস ইত্যাদি এগুলো মৃত খাবার। এসব খাবারগুলোতে সাধারণত থাকে না কোন প্রকার এনজাইম, না ফাইটোক্যামিকেল, না বায়ো ইলেক্ট্রিকাল এনার্জি। এ খাবারগুলো ফোর্সও হারিয়ে ফেলে। 

প্রাকৃতিক খাবারই জীবন্ত খাবার 

সাধারণত প্রাকৃতিক খাবারকেই জীবন তো খাবার বলা হয়ে থাকে। আরো ভালো করে যদি বলি তাহলে, যে খাবারগুলো প্রাকৃতিক অবস্থায় পাওয়া যায় বা উৎপন্ন হয় আর সেই অবস্থাতেই যদি খাবারগুলো খাওয়া যায় সেগুলোকেই সাধারণত জীবন্ত খাবার বলা হয়ে থাকে। সকল প্রকারের জীবিত প্রাণী বা উদ্ভিদ তৈরি করে থাকে। আর এই এনজাইম ছাড়া জীবন

চলতে পারে না। একজন মানুষের খাবার হজম হওয়ার জন্য খাবারে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম থাকা প্রয়োজন।এনজাইম মানুষের হজম বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত পরিমাণ এনজাইম থাকে জীবন্ত খাবারে। যেসব ধরনের তাজা ফলগুলো রয়েছে সেগুলোর মাঝে প্রচুর পরিমানে এনজাইম থাকে। যেমন তাজা ফল, কাঁচা সবজি, গ্রীন জুস, রেড জুস,বাদাম,

মটরশুটি, ছোলা, রসুন,আদা,হলুদ ইত্যাদি এগুলোকে আপনি যদি কাঁচা অবস্থায় খেতে পারেন তাহলে মনে করবেন আপনি জীবন্ত খাবার খেলেন।

অর্ধ মৃত খাবার 

প্রিয় পাঠক, জীবন্ত খাবারগুলো কে যখন, ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এমনকি তার চেয়ে বেশি তাপমাত্রায়  রান্না করা হয় তখন সে খাবারগুলো সাধারণত অর্ধমৃত খাবার হয়। এবং সুস্থতা ও দীর্ঘজীবনে জন্য  আশানুরূপ অল্প পরিমাণে ফল পাওয়া যায়। কেননা এসব খাবারে কিছু এনজাইম ও প্রাণশক্তি রয়েছে। তবে জীবন্ত খাবারের চেয়ে কম রয়েছে। তাই সুস্থতা এবং দীর্ঘ জীবন পেতে জীবন তো খাবারের গুরুত্ব অপরিসীম। 

মৃত খাবার 

মৃত খাবারে সাধারণত এনজাইম থাকে না। এনজাইমশূন্য খাবার শক্তি এবং পুষ্টি যোগানোর পরিবর্তে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে থাকে। এসব খাবারগুলো হজম করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয় তৈরি করতে হয়। আপনি যদি দিনের পর দিন মৃত খাবার খান তাহলে আপনার শরীর-মন ক্লান্ত হয়ে যাবে অবসন্ন উদ্যমহীন,অবসাদগ্রস্ত হয়ে যাবে।গবেষকরা বলছেন বর্তমানে মানুষের

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক ভাবে অনেক দুর্বল এবং রোগ বালাই অসংক্রামক রোগে আক্রান্তর হার বেড়ে গেছে।আর বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হলো আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় জীবন্ত খাবারের চেয়ে মৃত খাবারে পরিমাণ বেশি রাখা। মৃত খাবার কখনোই একজন মানুষকে সুস্থতা এবং দীর্ঘজীবন দিতে পারে না কাজেই সুস্থতা  এবং  দীর্ঘ জীবন পেতে

খাবারের তালিকা জীবন্ত খাবারের কোন বিকল্প নাই। তাই আপনারা  প্রতিদিন আপনাদের খাবারের তালিকায় জীবন্ত খাবার রাখতে পারেন।

কেন খাবেন জীবন্ত খাবার 

Lifestyle experts-রা বলছেন প্রাণবন্ত এবং সুস্থ জীবন পেতে খাদ্য তালিকায় প্রায় ৭০% জীবন্ত খাবার থাকতে হবে। পুষ্টিবিজ্ঞানী এবং এনজাইম বিষয়ক গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের একজন গবেষক  ডাক্তার huawei F লুমিস জুনিয়র। তার একটি বইতে লিখেছেন। খাবারের সাধারণত কতটুকু ভিটামিন আছে সেগুলো আমরা খোঁজ রাখি  কিন্তু খাবারে কতটুকু  এনজাইম

আছে সেগুলোর প্রতি আমরা খোঁজ রাখি না। ভিটামিন এবং মিনারের অভাবে আপনার স্বল্পমেয়াদী শারীরিক কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু খাবারে এনজাইমের অভাব থাকলে সৃষ্টি হয় দীর্ঘমেয়াদী নানান জটিলতা। তাই সবসময় জীবন্ত খাবারের যেমন গুরুত্ব রয়েছে তেমনি এর ভূমিকাও অপররিসীম।রেশন খাবারের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ফাইবার বা অ্যাঁশ যা রেচনের

জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শাকসবজিগুলোতে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। কিন্তু যদি অধিক তাপমাত্রায় রান্না করা হয়, তাহলে ফাইবারে কার্যক্ষমতা হারিয়ে যায়। এ কারণে অনেকের নিয়মিত শাকসবজি খাওয়ার ফলেও কোষ্ঠকাঠিন্য ও রেচনতন্ত্রের সমস্যা হয়ে থাকে। সুস্থতা ও দীর্ঘ জীবন পেতে প্রতিদিন খান জীবন্ত খাবার যেভাবে খেতে পারেন।

যেভাবে খেতে পারেন জীবন্ত খাবার 

আপনি সকালে একটি গ্লাসে কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারবেন। দিনে খেতে হবে দুই-তিন ধরনের ফল। বিভিন্ন রকম ছোলা, মটরশুটি, বাদাম, বীজ ইত্যাদি ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন। দুপুরের খাবারের আগে খেতে পারেন এক প্লেট সালাদ। আর আপনি দিনের যেকোনো সময়ে পান করতে পারেন এক গ্লাস বিটের জুস অথবা গ্রীণ জুস।শাকসবজি রান্না

করা সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। সবসময় শাকসবজি অর্ধসিদ্ধ করে রানতে হবে। এবারের তালিকা গুলোতে মৃতখাবারের পরিমাণ একদমই অল্প রাখুন। প্যাকেটজাত পণ্যগুলো বর্জন করুন। এভাবে আপনি যদি ৬ মাস খেতে থাকেন দেখবেন, আপনার শরীর স্বাস্থ্য বদলে গেছে। ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। কর্মক্ষমতা বেড়ে

যাবে তাই প্রতিদিন ৭০% জীবন্ত খাবার রাখুন খাবারের তালিকায়।তাহলে আপনি সুস্বাস্থ্যপূর্ণ দীর্ঘ জীবনের অধিকারী হবেন। 

লেখকের শেষ মন্তব্য - সুস্থতা ও দীর্ঘ জীবন পেতে প্রতিদিন খান জীবন্ত খাবার 

উপরোক্ত আলোচনার সুস্থতা ও দীর্ঘ জীবন পেতে প্রতিদিন খান জীবন্ত খাবার, জীবন্ত খাবার কী,অর্ধ মৃত খাবার কী, কেন খাবেন জীবন্ত খাবার,কিভাবে খাবেন ইত্যাদি বিষয়গুলো উপরে আলোচনা করা হয়েছে  আশা করি সমস্ত আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সুস্থতা এবং দীর্ঘ জীবন পেতে জীবন্ত খাবারের কোন বিকল্প নেই। তাই প্রতিদিন খাবারের তালিকায় প্রায় 70% জীবন্ত খাবার রাখা উচিত। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url