তুলসী পাতার বিভিন্ন উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম

তুলসী পাতার বিভিন্ন উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে প্রায় অনেকেই জানে না। আপনি কি তুলসী পাতার উপকারিতা এবং কাশির জন্য তুলসী খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন ? তুলসী পাতাতে রয়েছে এন্টিফ্যাঙ্গাল ও ব্যাকটেরিয়াল। নিচে বিস্তারিত জানুন।
তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে প্রায় সবাই জানে। কিন্তু তুলসী পাতাতে কি কি উপকারিতা রয়েছে সে অজানা। ঔষুধি হিসাবে তুলসী পাতার ব্যবহার বেশ পুরনো। তুলসী পাতা মারাত্বক সব রোগের ঔষুধ হিসাবে ব্যবহার হয়। নিচে তুলসী পাতার বিভিন্ন উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম জানতে পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ তুলসী পাতার বিভিন্ন উপকারিত ও খাওয়ার নিয়ম জানতে পড়ুন

তুলসী পাতা নিয়ে কিছু কথা

তুলসী পাতার বিভিন্ন উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা প্রতিটি মানুষের জন্য জরুরী। তুলসী গাছ একটি লামিয়াসি পরিবারের অন্তর্গত সুগন্ধী উদ্ভিদ। তুলসী গাছের বৈজ্ঞানিক নাম। Ocimum Sanctum, তুলসী নামটি শব্দের অর্থ দাঁড়ায় যার কোন তুলনা নেই। তুলসী গাছের নাম যেমন তেমনি এর কোন এর কথা বলেও শেষ করা যায় না। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই তুই ঠিক আছে ফুলের টপ দেখতে পাওয়া যায়। 

সনাতন ধর্মের লোকদের কাছে তুলসী গাছ হল, একটি পবিত্রতম গাছ। তাই তারা তুলসী গাছটি বাড়ির উঠোন লাগিয়ে থাকে। গাছের উপস্থিতিতে কোন রোগ হবে না বা অমঙ্গল হবে না। অনেকেই তুলসি গাছের শিকর কান্ড ছোট ছোট করে গলায় পড়ে থাকেন এবং তাদের বিশ্বাস এই মালা পরলে কোন রোগ বা অমঙ্গল হবে না। 

তুলসী পাতার উপকারিতা 

তুলসী পাতার বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে কিন্তু কি কি উপকারিতাগুলো রয়েছে সেগুলো আপনাকে জানতে হবে। তুলসী পাতা ঔষধি গুণসম্পন্ন একটি উদ্ভিদ। তুলসী পাতার বহু উপকারিতা রয়েছে আর সেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারে তাই আমাদের তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানা উচিত। তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি সাথেই থাকুন।  

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তুলসী পাতার ভূমিকা অপরিসীম। আপনি যদি নিয়মিত তুলসী পাতার রস সেবন করেন, তাহলে আপনার শরীর থেকে বিষাক্ত টক্সিন বের হয়ে যাবে। তুলসী পাতাতে রয়েছে হরমোন ব্যালেন্স করার ক্ষমতা। শরীরে বাতের ব্যথা জনিত রোগ গুলোর জন্য তুলসী পাতা মহোঔষধ। বাতের ব্যথা দূর করার জন্য নিয়মিতভাবে তুলসী পাতার রস সেবন করতে পারেন। 

যারা ডায়াবেটিকস রোগে আক্রান্ত তাদের জন্য তুলসী পাতা আশির্বাদ স্বরুপ। তুলসী পাতা শরীর থেকে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কম করতে তুলসী পাতার রস বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তুলসী পাতাতে রয়েছে হরমোন ব্যালেন্স করার ক্ষমতা যা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য কার্যকরী। তাছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য তুলসী পাতার রস সেবন করতে পারেন। 

আপনার যদি গ্যাস, এসিডিটি, হজম-জনিত কোন সমস্যা থাকে, তাহলে তুলসী পাতার রস মধুর সাথে খেলে পচন প্রক্রিয়াতে জটিলতা থাকলে সেটা সমাধান হয়ে থাকে।তুলসী গাছ থেকে যে বীজ উৎপন্ন হয়, সেগুলোকে খনিজের ভান্ডার বলা হয়।  তুলসী পাতাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম। তুলসী পাতার বীজ শরীর স্বাস্থ্যর জন্য বিশেষ উপকারী। 

আপনার শরীরের দশ শতাংশ ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে পারে এক চামচ তুলশি পাতার বীজ। আপনার দেহের হাড়ের ব্যথা এবং হাড়কে শক্ত করতে নিয়মিত সেবন করুন তুলসী পাতার বীজ। তুলসী পাতার বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। আর ফাইবার হজম শক্তিকে উন্নতি করে। তাছাড়া ফাইবার শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও ওজন কমাতে তুলসী পাতার রস এবং হালকা কুসুম গরম পানিতে তুলসী পাতার বীজ খেলে দ্রুত ওজন কমে যায়।

 আরো পড়ুনঃ মেথির আশ্চর্যজনক ১০ টি স্বাস্থ্যগুণ- মেথি খাওয়ার নিয়ম

কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম 

তুলসী পাতার বিভিন্ন উপকারিতার মধ্য কাশি সারাতে বিশেষ উপকারী। তুলসী পাতার রসে রয়েছে বিভিন্ন রকম রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা। শরীরের সর্দি, কাশি, ফুসফুসে প্রদাহ জনিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে তুলসী পাতার কোনো জুরি নেই। তুলসী গাছ একটি ঔষধি সম্পন্ন উদ্ভিদ। তুলসীপাতা গাছের সকল অংশকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তুলসী গাছে পাতায় শেকড়, বাকল, বীজ,ফুল এর সবগুলোই ঔষধিগুণ সম্পন্ন। 

আপনি যদি নিয়ম মেনে, তুলসী পাতার রস খান তাহলে সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, ঠান্ডা জনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন এমনকি এই রোগ গুলো আপনার ধারে কাছেও আসবে না। চলুন জেনে নেওয়া যাক তুলসী পাতা খেলে কি উপকার মিলবে। 

  • প্রথমে কয়েকটি তুলসী পাতার রস ও এক টেবিল চামচ আদার রস মিশিয়ে, আপনি যদি সেবন করেন। তাহলে আপনার গলা ব্যথা ভালো হয়ে যাবে। 
  • একটি কাপে এক কাপ পানিতে ৬ থেকে ৭ তুলসী পাতা আদা কুচি, লবঙ্গ, মিশিয়ে যদি গরম পানিতে ফুটিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে খুশখুসে কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 
  • সর্দি জনিত সমস্যা থেকে যদি মুক্তি পেতে চান, তাহলে সরাসরি তুলসী গাছ থেকে পাতা তুলে চিবিয়ে খান তাহলে সেফা পাবেন।
  • যদি শিশুদের সর্দি, কাশি, জ্বর হয় তবে তুলশি পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খাওয়ালে ভালো উপকার হয়। 

তুলসী গাছ থেকে সংগ্রহ করা বীজ গুঁড়া করে আপনি বছরের পর বছর সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন। তুলসী পাতার গুঁড়া শুকনা কাশি ভালো করতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়েও যাদের কাশি ভালো হচ্ছে না বা মুক্তি পাচ্ছেন না তারা তুলসী পাতার বীজ সংরক্ষণ করে রেখে দিতে পারেন।দুই গ্লাস পানিতে তুলসী পাতার বীজের গুঁড়া, দারুচিনি গুঁড়া,লবঙ্গ গুঁড়া, মিশিয়ে জ্বাল দিতে হবে এবং যখন পানি অর্ধেক হয়ে যাবে তার সাথে মধু মিশে খেতে পারেন।

কাশি সারাতে তুলসী পাতার কোন বিকল্প নেই। নিয়মিতভাবে তুলসী পাতার রস সেবন করুন এর ফলে বিভিন্ন ভাবে উপকারিতা পাবেন। তুলসী পাতার উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না।

 আরো পড়ুনঃ মাশরুমের ১৫ টি ঔষুধিগুণ- মাশরুম খাওয়ার পদ্ধতি জেনে নিন

তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন 

তুলসী পাতার বিভিন্ন উপকারিতা যেমন রয়েছে তেমনি এর অপকারিতাও রয়েছে। তুলসী পাতার বহু গুণ রয়েছে। তুলসী পাতা সাধারণত অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস, ফুসফুসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করা হয়। শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনের কাজে তুলসী পাতা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন খাওয়ার আগে আপনি যদি তুলসী পাতা খান, তাহলে রক্তের সুগারের মাত্রা কমে যাবে। 

তুলসী পাতা এন্টিবায়োটিক ঔষধের মত কাজ করে থাকে। তুলসী পাতাতে রয়েছে এক ধরনের রেডিও প্রটেকটিভ উপাদান  আর এই উপাদানগুলো টিউমারের কোষ কে ধ্বংস করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও তুলসী পাতাতে যে ফাইটোকেমিক্যালের উপাদানগুলো রয়েছে সেগুলো হলো রোসমারিনিক এসিড,মাইরেটিনাল,লিউটিউলিন ইত্যাদি এইসব উপাদানের  উপস্থিতি। 

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে তুলসী পাতার রস বিশেষভাবে কাজ করে থাকে। তুলসী পাতার রস নিয়মিতভাবে সেবন করলে অগ্নাশয় টিউমারে কোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও অস্বাভাবিক বিভিন্ন ধরনের কোষ বিভাজনের কারণে সৃষ্ট যেসব ক্যান্সার সৃষ্টি হয়, নিয়মিতভাবে তুলসী পাতার রস সেবন করলে সেগুলো থেকে নিরাময় পাওয়া যায়। গলা ব্যথা, সর্দি-কাশি, বুকে জমা থাকা কফ,ইফতারি পরিষ্কার করতে তুলসী পাতা খুব দ্রুত কাজ করে। 

আর এগুলোর জন্য তুলসী পাতার ভূমিকা অপরিসীম। বাড়ির আঙ্গিনাতে যদি কোন তুলসী পাতার গাছ থাকে, তাহলে সেই গাছের হাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। সনাতন ধর্মের মানুষেরা মনে করেন, তুলসী পাতার গাছ যদি বাড়ির আঙ্গিনাতে থাকে, তাহলে তুলসী গাছের হাওয়া শরীরে লাগলে মন ভাল থাকে এবং পজিটিভ এনার্জি পাওয়া যায় বলে তাদের বিশ্বাস। গর্ভাবস্থায় তুলসী পাতা সেবন করলে, শরীরের জন্য ক্ষতি হতে পারে। 

তবে সামান্য পরিমাণ খেলে তা ক্ষতির কারণ হবে না। কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ তুলসী পাতা খান, তাহলে জটিলতা দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় এবং এমনকি স্তন্যপান করানোর সময় নারীদের ক্ষেত্রে তুলসী পাতা সেবন না করাটাই ভালো। অতিরিক্ত পরিমাণ তুলসী পাতা খেলে, নারীদের বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে। তাই তুলসী পাতার ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় সাবধানতা অবলম্বন করবেন। 

অতিরিক্ত পরিমাণ তুলসী পাতা খেলে শরীরে অস্বাভাবিক রক্ত জমাট বাঁধার যে প্রবণতা গুলো থাকে সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। কারণ অতিরিক্ত রক্তপাতের সমস্যা গুলো যদি, কোন ধরনের সার্জারি করা হয় তবে সেই সার্জারির থেকে তিন সপ্তাহ আগে অবশ্যই তুলসি পাতা খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। যাদের লো প্রেসার রয়েছে তারা তুলসী পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কেননা তুলসী পাতাতে অনেক বেশি পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে যা লো প্রেসার রক্তচাপের সমস্যা হতে পারে। 

মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা 

মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা অপরিসীম। তুলসী এবং মধুর মিশ্রণ ভিটামিন এবং পুষ্টিতে ভরপুর। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মধু ও তুলসী খান তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া কিডনিতে যদি পাথর হয়, তাহলে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে এক চামচ মধুর সাথে দুই চামচ তুলসী পাতা রস সেবন করুন। তাহলে দেখবেন কিডনির পাথর গলতে সাহায্য করছে।

কোলেস্টেরল কমানোর শক্তি রয়েছে মধু এবং তুলসীর মিশ্রণে। যা হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। হৃদপিন্ডের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে মধু এবং তুলসীর মিশ্রণ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তুলসী পাতার খাওয়ার নিয়ম  জানতে নিচে পড়ুন।

  আরো পড়ুনঃ মিষ্টি কুমড়া বীজের ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা- পুষ্টিগুণ জেনে নিন

তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম 

তুলসী পাতা আপনি বিভিন্নভাবে খেতে পারবেন তবে তুলসী পাতা সরাসরি চিবিয়ে খাওয়ায় বেশি কার্যকর। এছাড়া আপনি তুলসী পাতা রান্নার কাজে মসলা হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। এ ছাড়া পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে আপনি সেবন করতে পারবেন। তুলসী পাতা আপনি জুস বা চা বানিয়েও খেতে পারবেন। 

তুলসী পাতার জুস শরীরকে ঠান্ডা রাখে। অতিরিক্ত গরমে আপনি তুলসী পাতার জুস খেতে পারেন সাধারণত তুলসী পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম হল বিকালে। তুলসী গাছের কচি পাতাগুলো সব সময় খাওয়ার জন্য বেছে নিবেন কারণ কচি পাতাগুলো তে বেশি পরিমাণ উপকার হয়।

খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার  উপকারিতা 

তুলসী পাতার বিভিন্ন উপকারিতা তার মধ্য খালি পেতে খাওয়া বিশেষ উপকারী। তুলসী পাতাতে এন্টিফাঙ্গাল ও এন্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে। আর সেজন্য খালি পেটে সেবন করলে খুব ভালো কাজ করে। পেটে জমে থাকা গ্যাস বা ক্ষতিকর টক্সিন গুলো নির্মল করার জন্য সকালে খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। প্রতিদিন নিয়মিত সকালে দুই থেকে তিনটি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে শরীরে রক্তের ভালো কোলেস্টেরল গুলো বৃদ্ধি পায় এবং খাওয়া খারাপ কোলেস্টেরল শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

 আরো পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা, অপকারিতা- খাওয়ার নিয়ম ও ব্যবহারবিধি   

কাশির জন্য তুলসী পাতা 

শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক, যেকোনো ধরনের মানুষের সর্দি কাশি জনিত সমস্যাগুলো হতে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র তুলসী পাতা। ঋতু পরিবর্তনের ফলে বা অতিরিক্ত গরমে, বৃষ্টির পানি মাথায় পড়লে যে সর্দি কাশি গুলো হয়। এগুলো থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে চাইলে তুলসী পাতার বিকল্প নেই। এগুলোতে তুলসী পাতা খুব দ্রুত কাজ করে। তাছাড়া শিশুদের সর্দি-কাশি জনিত

সমতুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক স্যাগুলোর সমাধানে এক চামচ মধুর সঙ্গে তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খাওয়ালে খুব দ্রুত শিশুদের সর্দির কাশি থেকে মুক্তির ভার মিলে। যদি বুকে কফ বসে থাকে তাহলে গরম পানির সাথে তুলসী পাতার রস এবং গোলমরিচ একত্রে করে ফুটিয়ে খেলে কফগুলো দ্রুত বেরিয়ে যায়। 

তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক

একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় তুলসী পাতা সেবন করা ক্ষতিকর। মেয়েদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণ যদি তুলসী পাতা সেবন করে, তাহলে বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণ তুলসী পাতায় সেবনে শরীরের রক্তচাপ কমে যেতে পারে দুর্বল হয়ে যায় বা দূর্বলতা দেখা দিতে পারে।
তুলসী পাতা গাছের তেমন কোন ক্ষতিকর বেশি দিক নেই, তবে যদি নিয়ম মেনে অল্প পরিমাণ তুলসী পাতা খাওয়া যায় তবে শরীর স্বাস্থ্য ভালো।

শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ানোর নিয়ম 

ঋতু পরিবর্তনের ফলে, শিশুদের যে ঠান্ডা জনিত অসুস্থতাগুলো হয়। সেগুলো থেকে মুক্তি পেতে, শিশুদের গুড়ের সাথে তুলসী পাতার রস মিশিয়ে, শিশুদের খাওয়ালে বেশ উপকার হয়। যেসব শিশুদের সাধারণত খাবারের রুচি থাকে না বা খাবার খেতে চায় না। সেসব শিশুদের জন্য প্রতিদিন দু থেকে তিনটি পাতা রস করে  খাওয়াল রুচি ফিরে আসবে। শিশুদের কে সারাদিন এনার্জেটিক করে রাখতে, তুলসী পাতার শরবত খাওয়ান। এতে  শিশুদের মন ভাল থাকে এবং মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটবে।

তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা 

মুখের দুর্গন্ধ গুলো দূর করতে তুলসী পাতা চিবিয়ে খান। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে তুলসী পাতার ভূমিকা অপরিসীম। তুলসী পাতাতে রয়েছে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সাইড প্রপার্টি যা অকাল বার্ধক্য থেকে রক্ষা করে থাকে। তুলসী পাতা ত্বকের ময়লা দূর করতে ত্বক পরিষ্কার রাখতে এবং উজ্জলতা বৃদ্ধি করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন আপনি যদি নিয়মিতভাবে ২ থেকে ৩ টি পাতা চিবিয়ে খান, তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। 

তুলসী পাতার চায়ের উপকারিতা 

তুলসী পাতার চা শরীর-স্বাস্থ্যের জন্য এতটাই উপকারী যে, বর্তমানে এই চা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিতভাবে এক থেকে দুই কাপ তুলসী পাতার চা খেতে পারেন তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তুলসী পাতার চা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিকসের ঝুঁকি কমিয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে তুলসী 

পাতার চা টি ব্যাগেও পাওয়া যায়। আপনি প্রতিদিন যদি ১ থেকে ২ টি ব্যাগের চা খেতে পারেন তাহলে মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তুলসী পাতার চা ফ্যাট জাতীয় খাবারের বিপাকে খুব সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পেতে তুলসী পাতা চায়ের সঙ্গে এক টুকরো আদা দারুচিনির গুঁড়ো এলাচি মিশিয়ে শক্তিশালী পানীয় তৈরি করে খেতে পারেন। এরফলে যেকোনো কাজ করতে শরীরে এনার্জিটিক অনুভব করবেন।

লেখকের শেষ মন্তব্য -  তুলসী পাতার বিভিন্ন উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম  সম্পর্কে

উপুরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, তুলসী পাতার বিভিন্ন উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা, মধু ও তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা, কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম, ইত্যাদি সমস্ত বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে আশা করি বুঝতে পেরেছেন। তুলসী পাতা একটি ঔষধি পাতা, তুলসী গাছে যথাযথ যত্ন নেওয়া হয় না। আমাদের উচিত তুলসী গাছ লাগানো এবং সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া। কেননা তুলসী গাছের উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবেনা। প্রতিদিন  সকালে খালি পেটে নিয়মিতভাবে তুলসী পাতা সেবন করলে বহু উপকারিতা পাওয়া যায়। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url