মেথির আশ্চর্যজনক ১০টি স্বাস্থ্যগুণ ও মেথি খাওয়ার নিয়ম জানুন

আপনি কি মেথির আশ্চর্যজনক ১০টি স্বাস্থ্যগুণ ও মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? মেথি খাওয়ার প্রচুর উপকারিতা রয়েছে সেটা প্রায় অনেকেই জানে না।  নিচে মেথির স্বাস্থ্য গুণাগুণ ও খাওয়ার নিয়ম এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি পড়ুন।

মেথি এক ধরনের তিতা জাতীয় খাবার। আপনি যদি নিয়মিত প্রতিদিন পরিমাণমত মেথি খান, তাহলে আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণু মরে যাবে। মেথি খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে এবং স্টক হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। নিচে মেথির আশ্চর্যজনক ১০টি স্বাস্থ্যগুণ ও মেথি খাওয়ার নিয়ম জানতে পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ মেথির আশ্চর্যজনক ১০টি স্বাস্থ্যগুণ ও মেথি খাওয়ার নিয়ম জানতে পড়ুন

মেথির পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা 

মেথিতে আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। মেথিতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন সি, প্রোটিন, কপার, জিঙ্ক,আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম প্রভৃতির উৎস। মেথি শাক থেকে প্রতি ১০০ গ্রামে 50 ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায় এছাড়াও ১.৫ গ্রাম(৭%) স্যাচুরেটেড ফ্যাট,সোডিয়াম ৬৭ মিলিগ্রাম(২%), পটাশিয়াম ৭৭০ মিলিগ্রাম(২২%),কার্বোহাইড্রেট ৫৮ গ্রাম (১৯%),প্রোটিন ২৩ গ্রাম (৪৬%) পাওয়া যায় যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। 

এছাড়া মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। নিয়মিত মেথি খাওয়ার ফলে আশ্চর্যজনক যে দশটি স্বাস্থ্য উপকারিতা পাবেন নিম্নে আলোকপাত করা হলো।

 আরো পড়ুনঃ মাশরুমের ১৫ টি ঔষুধিগুণ- মাশরুম খাওয়ার পদ্ধতি জেনে নিন

মেথির আশ্চর্যজনক ১০টি স্বাস্থ্যগুণ

মেথির আশ্চর্যজনক ১০টি স্বাস্থ্যগুণ ও মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা প্রায় প্রতিটি মানুষের জন্য জরুরী। মেথি তিতা জাতীয় খাবার হলেও এতে রয়েছে আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য গুণাগুণ।নিম্নে মেথির  স্বাস্থ্যগুণ  সম্পর্কে  আলোকপাত করা হলো বিস্তারিত পড়তে থাকুন।

রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে মেথিঃ যাদের রক্তে চিনির পরিমাণ কম বা যাদের কম বয়সেই রক্তের চিনির পরিমাণ কমে যায় অর্থাৎ ব্লাড সুগার ঊর্ধ্বমুখী থাকে। তারা নিয়মিতভাবে মেথি ভেজানো পানি খেতে পারেন। এই পানি শরীর-স্বাস্থ্যর জন্য খুবই উপকারী। কেননা শরীরের গ্লেকটোমেনানের পরিমাণ বাড়ানো ছাড়াও শরীরে শর্করা শোষণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে পারে।

এতে রক্তে সুগার লেভেল বাড়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না বা কমে যায়। মেথিতে যে অ্যামাইনো এসিড থাকে সেগুলো ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা কে বাড়িয়ে দেয় এবং ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় না। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন প্রতিদিনের খাবার তালিকার মত নিয়মিতভাবে মেথি খাওয়ার। 

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে মেথিঃ হজম শক্তি বৃদ্ধিতে মেথি সহজ উপায়ে দেহের কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বাওয়েল মুভমেন্ট উন্নতি করে হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। তাই আপনি যদি কনস্টিপেশনের সমস্যাগুলো দূর করতে চান তাহলে প্রতিনিয়ত নিয়মিতভাবে সকালে খালি পেটে মেথি ভেজানো পানি খেতে হবে।

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে মেথির কোন বিকল্প নেই। তাই যারা হজম শক্তি বৃদ্ধি নিয়ে ভাবছেন তারা নিয়মিতভাবে মেথি খান। হজম শক্তি বৃদ্ধিতে মেথি আশ্চর্যজনক ভূমিকা পালন করে থাকে। 

শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে মেথিঃ মেথিতে এক ধরনের শ্টেরিওডাল সেপোনিনস নামক উপাদান রয়েছে। আর এই উপাদান শরীরে থাকা কোলেস্টরেলের মাত্রা কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এছাড়াও মেথিতে আরেকটি উপাদানের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে সেটি হল, গ্লেকটোম্যানান উপাদান। আর এই উপাদান হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 

এছাড়াও মেথিতে যে পটাশিয়াম রয়েছে তা রক্তে লবণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে সাহায্য করে আর এর ফলে দেহের ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই আপনি যদি নিয়মিতভাবে প্রতিদিন মেথি ভেজানো পানি পান করেন তাহলে হঠাৎ করে স্টোক বাহার এটাকের মাত্রা অনেকটা পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই সকলেই চেষ্টা করবেন প্রতিনিয়ত সকালে খালি পেটে মেথি ভেজানো পানি খাওয়ার। 

শরীর স্বাস্থ্যর জন্য মেথির উপকারিতা অপারিসীম। শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে মেথির বিকল্প নেই, তাই নিয়মিত খান মেথি। 

দেহের ওজন কমাতেঃ প্রিয় পাঠক আপনি যদি দেহের স্থূলতা কমাতে চান, তাহলে আপনাকে খেতে হবে নিয়মিতভাবে সকালে খালি পেটে মেথি ভেজানো পানি। মেথি ভেজানো পানি শরীরের স্থূলতা কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। কেউ যদি নিয়মিতভাবে সকালের খালি পেটে  মেথি ভেজানো পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে, তাহলে তার শরীরে ধীরে ধীরে ফাইবারের মাত্রা বাড়তে থাকবে। 

এরফলে একদিকে যেমন তার খিদে কমে যাবে অন্যদিকে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণীয় লাগাম পড়বে।এভাবে একজন মানুষের দেহের ওজন ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। দেহের ওজন কমাতে মেথি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেটে খাওয়ার উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। ওজন কমাতে মেথির গুরুত্ব অপরিসীম। দেহের ওজন কমাতে চাইলে মেথির কোন বিকল্প নেই। 

মেথি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়ঃ মেথি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। রূপচর্চার ক্ষেত্রে মেথির ভূমিকা অপরিসীম। মেথি ব্যবহার করে অতি সহজে ঝকঝকে ও উজ্জ্বলতা ত্বক ফিরিয়ে আনা সম্ভব।মেথিতে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল পদার্থ রয়েছে। যা ত্বকের গভীর স্তর পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। দীর্ঘদিন মেঘে ব্যবহার করলে ব্রণ থেকেও বা ব্রণের দাগের হাত থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া যায়। 

ক্ষতিকর উপাদান গুলো দূর করতে মেথি ব্যবহার করা যায়। এছাড়া চোখের কালো দাগ দূর করতে মেথি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই আপনারা যদি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান তাহলে মেথির বিকল্প নেই। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে মেথি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও শরীর স্বাস্থ্যর জন্য প্রতিনিয়ত আপনি যদি মেথি ভেজানো পানি খান তাহলে প্রচুর উপকারিতা পাবেন। 

জ্বরের প্রকোপ কমাতে ও সর্দি-কাশি সারাতে মেথিঃ বাংলাদেশে আবহাওয়া দ্রুত পরিবর্তনশীল আর এই আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে দেহে অনেক সময় জ্বর চলে আসে। আর এই সময় যদি কেউ এক গ্লাস পানি তে মেথি বীজ ভিজিয়ে পানি পান করেন তাহলে অনেক উপকার পেতে পারেন। মেথি বীজে অনেক ধরনের উপকারী উপাদান রয়েছে যার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে থাকে। এবং জ্বরের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে থাকে। 


তাই আপনি যদি জ্বরের প্রকোপ কমাতে চান তবে এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে পানি পান করেন তাহলেই দ্রুত সেফা পাবেন। এছাড়াও আপনি যদি সর্দি কাশি আক্রান্ত হন এবং অসুস্থতা সারাতে চান, তাহলে ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে মেথিবীজের বিকল্প নেই। সর্দি কাশির জন্য মেথি বীজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মেথি বহু গুণে গুণান্বিত এবং এর উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। শুধু জ্বর সর্দি কাশি জন্য নয় মেথির আরো বহু উপকারিতা রয়েছে। তাই প্রতিনিয়ত চেষ্টা করবেন মেথি খাওয়ার। 

খুশকি দূর করতে মেথিঃ প্রায় অনেকের মাথায় প্রচুর সাধারণত প্রচুর পরিমাণে খুশকি থাকে। আর এই খুশকি মাথার শুষ্ক ও মৃত ত্বকের কারণ হয়ে দাড়ায়। আপনি যদি খুশকি দূর করতে চান তাহলে মেথি সারারাত পানিতে ভিজে রেখে, বেটে পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন তবে চাইলে আপনি এর সাথে দই মিশিয়ে নিতে পারেন। এরপর আপনি যদি এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখেন, এরপর ধুয়ে ফেলেন তাহলে খুশকি থেকে সমাধান পাবেন। 

নিয়মিতভাবে আপনি যদি মাথার ত্বকে মেথি ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি খুশকি থেকে বাঁচতে পারবেন। খুশকি সাধারণত  মাথার ত্বক নষ্ট করে ফেলে। এবং চুলের ক্ষতি করে থাকে। তাই খুশকি থেকে দূরে থাকতে চাইলে মেথির বিকল্প নেই। নিয়মিতভাবে যতক্ষণ পর্যন্ত খুশকি দূর না হয়, ততদিন ব্যবহার করতে হবে নিয়মিতভাবে মেথি। তাহলে আপনি এর সমাধান পেয়ে যাবেন। 

মেথি চুল পড়া রোধ করেঃ চুল পড়া রোধে বহুকাল ধরে মেথির ব্যবহার হয়ে আসছে। মেথি চুল পড়া রোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। স্বাস্থ্যহীন চুলের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে এবং নিয়মিত ভাবে মেথি খাওয়া ছাড়াও আপনি যদি মেথি বেটে মাথায় দেন, তাহলে চুল পড়া থেকে প্রতিরোধ পাবেন। এছাড়াও মেথি বাটা আপনি যদি নারিকেল তেলের মধ্যে সারারাত চুবিয়ে রাখেন 

এবং সকালে সেই মেথি বাটা চুলে মাখেন তারপর  ঘন্টা খানেক পরে আপনি যদি গোসল করে ফেলেন। তাহলে যথেষ্ট পরিমাণ উপকার পাবেন। চুল পড়া প্রতিরোধে মেথি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই আপনি যদি চুল পড়া রোধ করতে চান, তাহলে নিয়মিতভাবে মাথায় মেথি বাটা মাখতে হবে।  আশা করি চুল পড়া থেকে প্রতিরোধ পাবেন।

মহিলাদের ঋতুকালীন ও প্রসবজনিত সমস্যার সমাধানের মেথিঃ মেথিতে এক ধরনের সাইট্রো-ইস্ট্রোজেন নামক উপাদান রয়েছে। এই উপাদান নারীদেহে প্রোলাকটিন নামের হরমোন বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এই হরমোন নারী দেহকে সুগঠিত করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও মেথি ঋতুকালীন বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য বিশেষ কার্যকারী। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা জরায়ুর সংকোচন  ও প্রসাররণের যন্ত্রণা কমাতে মেথির অবদান প্রমাণ করেছেন। 

তবে যদি অতিরিক্ত পরিমাণ মেথি খাওয়া হয়, তাহলে গর্ভপাত বা অপরিণত শিশুর জন্মদানের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। সেজন্য অবশ্যই গর্ভবতী মায়েদের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে পরামর্শ নেওয়ার পর তারপর খেতে হবে। সব জিনিসেরই যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতা ও রয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় বা অসময়ে আপনি যদি মেথি খান তাহলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে। তাই কোন মহিলা যদি গর্ভবতী হন তবে অবশ্যই মেথি খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করবেন এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মেথি খাবেন। মেথিতে প্রচুর পরিমাণে উপকারী উপাদান রয়েছে। যদি নিয়মিতভাবে মেথি খেতে পারেন তাহলে শরীর স্বাস্থ্য জন্য কাজে দিবে। 

ক্যান্সার কে দূরে রাখতে মেথিঃ রক্তে টক্সিক উপাদানের মাত্রা বাড়তে থাকলে, ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা সাধারণত বেড়ে যায়। আর এই ক্যান্সারকে দূরে রাখতে মেথির ভূমিকা অপরিসীম। মেথিতে থাকা ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান, রক্তের ভেসে বেড়ানো টক্সিক উপাদান গুলোকে দেহ থেকে বের করে দিতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। তাই দেহের ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়া প্রতিরোধ করতে প্রতিনিয়ত মেথি শাক কিম্বা মেথি বীজের বিকল্প নেই। 

ক্যান্সার একটি মরণ ব্যাধি রোগ। এই রোগ থেকে সহজেই রক্ষা পাওয়া যায় না। তাই ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করতে চাইলে মেয়েটি খাওয়ার বিকল্প নেই। ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য মেথি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। মেথি শরীর স্বাস্থ্য জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ক্যান্সার নয় আরো বহু রোগের প্রতিরোধক হিসেবে মেথি বিশেষভাবে উপকারী।  তাই আপনি যদি নিয়ে এত নিয়মিতভাবে মেথি খান তাহলে উপকারিতা পাবেন।

 আরো পড়ুনঃ  মিষ্টি কুমড়া বীজের ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা- পুষ্টিগুণ জেনে নিন 

মেথির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া 

আমরা উপরে জানলাম মেথির আশ্চর্যজনক ১০টি স্বাস্থ্যগুণ তবে মেথি খাওয়ার ক্ষেত্রে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে নিম্নে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো হলো।

  • মেথি তিতা স্বাদের প্রবাহ তৈরি করে আর এর ফলে অনেকেরই মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দেয় এমনকি বমি বমি ভাব দেখা যায়। 
  • মেথি ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য বিপদজনক এটির ব্যবহারের ফলে রক্তে হরার চীনের পরিমাণ কমে যেতে পারে। 
  • মেথি রক্তের জমাত বাঁধা প্রতিরোধ করে। আর সেজন্য যাদের রক্ত পাতলা তারা পরামর্শ অনুযায়ী মেথি সেবন করবেন। 
  • গর্ভবতী মহিলারা যদি অনেক বেশি দিন মেথি খায় তাহলে সময়ের আগে বাচ্চার জন্ম হয় প্রবনতা থাকে। এমনকি গর্ভপাতের ঝুঁকি থাকে। 

মেথি খাওয়ার নিয়ম 

আমরা সবচেয়ে বেশি মেথি খেয়ে থাকি রান্নার মসলা হিসাবে। তবে মেথি রান্নার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হলে তিন চার ঘন্টা পানিতে ভিজে রাখা উচিত। আপনি যদি পানিতে ভিজিয়ে রাখেন তাহলে সর্বোচ্চ উপকারিতা পাবেন। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন রান্নার ক্ষেত্রে মেথি পানিতে ভিজে রেখে তারপরে খাওয়ার। এছাড়া মেথি অন্যভাবেও খাওয়া যায় এক গ্লাস গরম পানিতে 

মেথি ভিজিয়ে রেখে ১০ মিনিট থিতিয়ে নিবেন। এরপর আপনি লেবু আর মধু মিশিয়ে সেইতর পানিটি পান করে নিবেন। এছাড়াও আপনি রুটি, পরোটা, রান্নার ঝোল  সালাত এবং মাছ ভাজাতে ও মেথি পাতা দিয়ে রান্না করে খাবারের স্বাদ বাড়াতে পারেন। এর ফলে মেথি একই সঙ্গে রান্নার স্বাদ বাড়াবে আবার অপরদিকে দেহের পুষ্টি উৎপাদানেরও যোগান দিবে। 

মেথির ব্যবহার জেনে নিন

  • মেথির গুড়া দিনে খাবারে আগে বা রাতে গরম দুধ বা পানির সঙ্গে আপনি চাইলেই পান করতে পারবেন। 
  • মেথি বীজ সারারাত ভিজিয়ে রেখে, সকালে ওই পানি খেতে পারেন তাছাড়া আপনি চাইলে মেথি ভিজিয়ে পানি ফুটিয়ে চা তৈরি করে পান করতে পারেন।
  • গোলাপজল দিয়ে আপনি তৈরি করতে পারেন মেথির পেস্ট। এর ব্যবহারের ফলে দূর হবে আপনার চোখের নিচে কালো দাগ ব্রণ ব্রণের দাগ ও বলিরেখা। 
  • মেথির বীজ ব্লেন্ড করে দই বা অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করলে খুশকি চুল পড়া পাকা চুলের সমস্যা ভালো হয়ে যায়। 

মেথির দাম কেমন

মেথি সাধারণত উপকারী একটি উপাদান। আমরা অনেকেই মেথি ব্যবহার করে থাকি তবে প্রায় অনেকেই এর দাম জানিনা। মেথি তে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে তাই এর চাহিদাও অনেক। বর্তমান বাজার মূল্যে মেথির দাম ১০০ গ্রাম ৩০-৩৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। এবং প্রতি কেজি মেথির দাম প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। তবে স্থানভেদে একেক জায়গায় একেক রকম দাম হতে পারে।

  আরো পড়ুনঃ সুস্থতা ও দীর্ঘ জীবন পেতে প্রতিদিন খান জীবন্ত খাবার 

কাসুরি মেথির দাম 

মেথির মধ্য কাসুরি মেথিকে ভালো মেথি বলা হয়। কাসুরি মেথুর মেথি সাধারণত ইন্ডিয়ায় উৎপাদন করা হয়। কাশুরি মেথি রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। কাসুরি মেথির প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। কাসুরি মেথি ত্বক, চুল, শরীরে শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। 

কাসুরি মেথি বেশি উপকারী হয় এর দামটাও একটু বেশি হয়ে থাকে। অনেকেই কাসুরি মেথির দাম জানতে চান চলুন জেনে নেওয়া যাক কাসুরি মেথির দাম।  

  • ২৫ গ্রাম কাসুরি মেথির দাম ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে 
  • ৫০০ গ্রাম কাসুরি মেথির দাম ৪৮০ থেকে ৫২০ টাকার মধ্যে
  • এক কেজি কাশুরি মেথি দাম ৪৮০০ টাকা থেকে ৫২০০ টাকা মধ্যে। 
  • তবে দামের ক্ষেত্র ভিন্ন আছে স্থানভেদে একেক জায়গায় কাসুরি মেথির দাম এক এক রকম। 

কোন মানুষের মেথি খাওয়া উচিত নয় 

প্রিয় পাঠক চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন মানুষের মেথি খাওয়া উচিত নয় মেথি থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। 

  • রক্তে শর্করার পরিমাণ কম রোগীদের সাধারণত মেথি এড়িয়ে চলা উচিত। কেননা মেথির হাইপো-গ্লাইসেমিক প্রভাব রয়েছে। 
  • মেথিতে অ্যান্টিহাইপারটেনসিভ দেখানো হয়েছে যার রক্তচাপ কমাতে পারে। যাদের রক্ত চাপের পরিমাণ কম তাদের মেথি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। 

লেখকের শেষ মন্তব্য - মেথির আশ্চর্যজনক ১০টি স্বাস্থ্যগুণ ও মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে  

উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে,মেথির আশ্চর্যজনক ১০টি স্বাস্থ্যগুণ ও মেথি খাওয়ার নিয়ম,  মেথির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, মেথি খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে। আশা করি পুরো আর্টিকেলটি পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। মেথি তিতা জাতীয় হলেও মেথির উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবেনা। প্রতিদিন আপনি যদি মেথি ভিজিয়ে পানি খান তাহলে প্রচুর পরিমাণে উপকার পাবেন। তাই স্বাস্থ্য গুণাগুণ ঠিক রাখতে চাইলে মেথি খাওয়ার বিকল্প নেই। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url