অর্থসহ মেয়েদের ৩০টি ইসলামিক নাম জানুন

আপনি কি মেয়েদের সুন্দর সুন্দর অর্থসহ ইসলামিক নাম জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই পোষ্টটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে  আজকে আমরা আপনাদের জানাবো অর্থসহ মেয়েদের ইসলামিক নামগুলো। পুরো আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।


অর্থসহ মেয়েদের সুন্দর সুন্দর ইসলামিক নাম আপনি এই আর্টিকেলটি ভিতরে পাবেন। কেননা আপনি সঠিক ওয়েবসাইটটিই খুঁজে পেয়েছেন। সন্তান জন্মগ্রহণ করার পরে একটি সুন্দর নাম রাখা উত্তম। তবে অবশ্যই  সেই নামটি  মুসলিম    হিসেবে ইসলামিক রাখা আবশ্যক। প্রতিটি বাবা-মায় চায় তার মেয়ে কন্যা সন্তানের নামটা যেন ইউনিক হয় এবং ইসলামিক ধরনের হয়। 

পোস্ট সূচীপত্রঃ মেয়েদের অর্থসহ সুন্দর সুন্দর ইসলামিক নাম জানতে পড়ুন 

মুসলিম হিসেবে সকল পিতা-মাতার উচিত তার কন্যা সন্তানের ইসলামিক নাম রাখা। প্রিয় পাঠক আপনি যদি মেয়েদের অর্থসহ সুন্দর সুন্দর ইসলামিক নাম খুঁজে থাকেন, তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। প্রতিটি বাবা- মা চায় তার কন্যা সন্তানের জন্য ইউনিক ইসলামিক নাম রাখতে। তাই আপনাদের কথা বিবেচনা করে আজকে  আমরা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের জানাবো অর্থসহ ইসলামিক ইউনিক নাম গুলো পুরো আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন এবং জানুন।  

মেয়েদের ইসলামিক নাম কেন রাখা উচিত 

মুসলিম হিসেবে শুধু কন্যা সন্তানের জন্যই নয়, ছেলে সন্তানের জন্যও ইসলামিক নাম রাখা উচিত এবং এটা সকল পিতা মাতার গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ভালো নাম শুনলে আশাবাদী হতেন। বিভিন্ন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত: মোহাম্মদ (সাঃ) শিশুদের সুন্দর নাম রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু  কুরআনের হাদিস  নিম্নরুপ।

"হে জাকারিয়া আমি (আল্লাহ) এক পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি।তার নাম হবে "ইয়াহইয়া"। এই নামের আগে আমি কারো নামকরণ করিনি"

"কিয়ামতের দিন তোমাদের নিজ নাম ও পিতার নামে ডাকা হবে। সুতরাং তোমরা সুন্দর নাম রাখো"

একজন মানুষের নাম শুনে বোঝা যায় সেই ব্যক্তি কোন ধর্মের অনুসারী হতে পারে। আপনি যদি সুন্দর ইসলামিক নাম রাখেন, তাহলে নামটি শুনে সহজে বুঝা যাবে, সে মুসলিম পরিবারের সন্তান। তাই সব সময় মেয়ের ইসলামিক নামগুলো রাখার চেষ্টা করবেন। ইসলামে মেয়েদের ইসলামিক নাম রাখার নির্দেশ রয়েছে। তাছাড়া  নাম মানুষের  পরিচয় বহন করে।

 আরো পড়ুনঃ আগস্ট মাসের ১১টি গুরুত্বপূর্ণ দিবস- আগস্ট মাসের ছুটির তালিকা ২০২৪ 

মেয়েদের ইসলামিক নাম যেভাবে বেছে নিবেন 

আপনার ঘরে সদ্যপ্রসূত মেয়ের ইসলামিক নাম বাছাই করার ক্ষেত্রে অবশ্যই পরামর্শ করতে হবে। কেননা পরামর্শ করার মাধ্যমে, উত্তম সুন্দর একটি ইসলামিক নাম আপনার কন্যার জন্য নির্ধারণ করতে পারবেন। আপনি যদি সন্তানের পিতা মাতা হন, তবে আপনি পরামর্শের জন্য আপনার বড় ছেলে, দাদা-দাদি, নানা-নানি, মামা-চাচি খালা-খালু পাড়া  প্রতিবেশী  ইত্যাদি 


আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতা পাবেন। আপনার কন্যা সন্তানের সুন্দর ইসলামিক নাম বেছে নেওয়ার জন্য কিছু কাজ অবলম্বন করতে পারেন। সেগুলো হলোঃ

প্রথমত: আপনার কন্যা সন্তানের নাম কোন অক্ষর দিয়ে রাখবেন সেটা নির্বাচন করুন। অনেকেই আছেন যারা পিতার নামের প্রথম অক্ষরের সাথে মিল রেখে, তার সন্তানের নাম রাখেন। যদি আপনি নির্দিষ্ট কোনো অক্ষর দিয়ে আপনার সন্তানের নাম রাখতে চান, তবে সেটা শুরুতেই নির্বাচন করে নিন। এরপর নির্বাচিত সেই অক্ষর দিয়ে শুরু হওয়া একের অধিক ইসলামিক নাম বাছাই করুন। নামের সাথে উচ্চারণের পাশাপাশি অর্থের দিকে  নজর দিন।

দ্বিতীয়ত: যে অক্ষর দিয়ে ইসলামিক নামগুলো নির্বাচন করেছেন সেই নামগুলো একটি কাগজের নোট করুন। এরপর সেই নামগুলো নিয়ে আপনার আত্মীয় স্বজনের সাথে পরামর্শ করুন। যে নামের পক্ষে বেশি সমর্থন থাকবে সেটাকে নির্বাচন করুন। এভাবে আপনি যদি সবার সাথে  পরামর্শ করে আপনার  সন্তানের নাম রাখেন  তাহলে সবচেয়ে  বেশি ভালো হয়।

আরো পড়ুনঃ  আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট ডাউনলোড ও অনলাইনে চেক করার নিয়ম

অর্থসহ মেয়েদের ৩০টি ইসলামিক নাম জানুন 

প্রতিটি মুসলিম পরিবারে শিশু জন্মগ্রহণ করলে, পিতা মাতার উচিত ইসলামিক নাম রাখা। অনেকেই ইসলামিক নাম গুলো জানার জন্য গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আপনাদের কথা বিবেচনা করে মেয়েদের সুন্দর সুন্দর ইসলামিক নাম নিম্নে আলোচনা করব। মেয়েদের ইসলামিক নাম ইংরেজি উচ্চারণ এবং অর্থসহ বিস্তারিত  নিম্নে আলোকপাত  করা হলো দেখুন।  

ইসলামিক নাম নামের অর্থ ইংরেজী নাম
আফিয়া পূর্ণ্যবর্তী Afia
তাযকিয়া পবিত্রতা Tazqiya
তাহিরা সতী Tahira
আনিসা ভালো মনের অধিকারিনী Anisa
রুফাইদা সামান্য দান Rufaida
নুসরাত সাহায্য Nusrat
শেফা আরোগ্য Sefha
আমেনা প্রশান্ত আত্মা Amena
কারিমা উচ্চবংশী Karima
হোমায়রা রূপসী Homaira
মুবাশশিরা সুসংবাদ বহনকারী Mubassira
মাছুমা নিস্পাপ Masuma
উম্মে আয়মান আইমানের মা Umme Ayman
ফাহিমা বুদ্দিমত্তা Fahima
সাজেদা ধার্মিক SAjeda
উমামা তিনশত উট Umama
সাদিয়া সৌভাগ্যবতী Sadia
হাফিজাহ ভালো স্মরণশক্তি Hafijah
তাসনি বেহেস্তি ঝর্না Tasni
তাবিয়া অনুগতা Tabia
তুবা সুসংবাদ Tuba
আছিয়া স্তম্ভ Ashia
তাসফিয়া বিশুদ্ধকারিনী TAsfia
জেবা আফিয়া যথার্থ Jeba Afia
আনিসা বুুশরা সুন্দর শুভ নিদর্শন Anisa Bushra
সালমা সাবা প্রশান্ত সুবাস Salma Saba
আনিসা নাওয়ার সুন্দর ফুল Anisa Nawar
আফিয়া ইবনাত রূপসী কন্যা Afia Ibnat
নাফিসা মূল্যবান Nafisa
আয়রা কুমারী Ayra

যেসব কারণে মেয়েদের ইসলামিক নাম রাখতে হয় 

শুধুমাত্র মেয়েদের ক্ষেত্রেই নয়, ছেলে-মেয়ের উভয় যদি মুসলিম পরিবারের যদি জন্ম নেয়, তবে ইসলামিক নাম রাখা উচিত। হাদিসে নবজাতক সন্তানের ইসলামিক নাম রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেসব কারণে ইসলামিক নাম রাখার নির্দেশ রয়েছে সেগুলো হলো।

ধর্মীয় পরিচয়ঃ একটি কন্যা সন্তানের ইসলামিক নাম রাখার মাধ্যমে ধর্মীয় পরিচয় এবং ধর্মীয় বিশ্বাস প্রকাশ পায়। ইসলামিক নামটি  ইসলামের আদর্শ ও মূল্যবোধের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে থাকে। 

অনুসরণ ও অনুকরণঃ অনেক মানুষ ইসলামিক সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য অনুসরণ করার প্রেক্ষিতে, অনেক পরিবার তাদের ছেলে বা মেয়ে সন্তানের নামটি ইসলামিক নাম অনুসারে রাখে। আর এই নামটি ইসলামের ধর্মীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির দেখা যায়। 

আধ্যাত্মিক দিকঃ ইসলামিক নামের একটি বিশেষ অর্থ বহন করে এবং আধ্যাত্মিক বা ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য গুলো প্রকাশ করে। যেমন উদাহরণ হিসেবে যদি বলা যায়: মারিয়াম(মেরি) নামের অর্থ "পবিত্র" এই নামের মাধ্যমে মেয়েদের মাঝে পবিত্রতা অসম্মান প্রদর্শিত হয়। 

পরিচিতি ও সংস্কৃতিঃ একজন মানুষের ইসলামিক নাম মুসলিম সমাজের পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা প্রকাশ পায়। আরে গ্রহণযোগ্যতা সামাজিক সম্পর্ক ও সন্মান অর্জনে সহায়তা হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ ভাতের মাড়ের ১২টি উপকারিতা-ভাতের মাড়ের পুষ্টিগুণ জানুন  

কখন সন্তানের ইসলামিক নামকরণ করবেন

সন্তান জন্ম নেওয়ার সপ্তম দিনেই আকিকা করা সুন্নত। তবে আপনি যদি সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে আকিকা করতে না পারেন, তাহলে আপনি সুবিধামতো দিনে আকিকা করতে পারবেন। সন্তানের আকিকার দিনে সুন্দর একটি ইসলামিক নাম রাখবেন। আপনি আপনার সন্তানের কখন নামকরণ করবেন সে সম্পর্কে নিচে  বিস্তারিত আলোচনা করা হলো পড়তে থাকুন।


জন্মের সপ্তম দিনেঃ ইসলামিক ঐতিহ্য অনুসারে সাধারণত সন্তান জন্মের সপ্তম দিনেই নামকরণ করা উচিত। সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে আকিকা করে অর্থাৎ (পশু কোরবানী) দিয়ে ছেলে বা মেয়ের ইসলামিক নামকরণ করা সুন্নত।

সন্তান জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভবঃ ইসলামিক ঐতিহ্যগতভাবে যদিও সন্তানের ৭ম দিনে নামকরণ করার কথা বলা হয়েছে। তবে যত দ্রুত সম্ভব, সন্তান জন্মের পরে নামকরণ করা যেতে পারে। এতে পরিবার-পরিজনদের জন্য সুবিধা হয় এবং শিশুর পরিচয় নির্ধারণ করা যায়। 

নাম রাখার সময়ঃ সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক নাম রাখার সময় বিভিন্ন দিক, যেমন পারিবারিক দিক, সামাজিক,আধ্যাত্মিক দিক,নামের ইসলামিক অর্থ ইত্যাদি  এগুলো গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তাই সবাই পরামর্শ করে একটি সুন্দর ইসলামিক অর্থপূর্ণ নাম রাখা উচিত এবং সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।

আরো পড়ুনঃ মেট্রোরেলের ভাড়া  ও সময়সূচী-মেট্রোরেল সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য জানুন

মেয়েদের ইসলামিক নামের ক্ষেত্রে যেদিকে নজর দিতে হবে

মেয়েদের ইসলামিক নাম রাখার ক্ষেত্রে অবশ্যই নামের অর্থের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। কিছু কিছু নাম রয়েছে যেগুলো শুনতে শ্রুতিমধুর হলেও নামের অর্থ ভালো হয় না। অনেক সময় দেখা যায় মুনাফিক, কাফের, মুশফিকদের সাথে মিলে যায় আর এই নামগুলো আপনার কন্যা সন্তানের জন্য রাখা যাবে না। তাছাড়া মুসলিমদের জন্য ইসলামিক নাম রাখার নির্দেশ রয়েছে।  

নামের অর্থের গুরুত্বঃ একটা মেয়ের নামের অর্থ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামিক নামের অর্থটা যেন সুন্দর, ইতিবাচক ও সম্মানজনকপূর্ণ হয়। উদাহরণ হিসেবে যদি বলি:"ফাতেমা " ফাতিমা শব্দের অর্থ হল "পবিত্র"।

ঐতিহ্যগত নামঃ ইসলামের ইতিহাস ঐতিহ্যে গুরুত্বপূর্ণ নারীদের যে নাম, যেমন: "মারিয়াম",আয়েশা, খাদিজা,ফাতিমা নামগুলো ব্যবহার করতে পারেন। 

সাধারণ নামের সাথে অমিলঃ একটা মেয়ের নামের উচ্চারণ সহজ এবং সাধারণ হওয়া উচিত। যাতে এটা খুব সহজেই বুঝতে পারা যায় এবং উচ্চারণ করা যায়। জটিল বা কঠিন নাম গুলো নাম রাখার ক্ষেত্রে এড়িয়ে চলাই ভালো।

আরো পড়ুনঃ  বিয়ের মেহেদি ডিজাইন-গর্জিয়াস মেহেদি ডিজাইন

লেখকের শেষ মন্তব্য 

উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে মেয়েদের অর্থসহ সুন্দর সুন্দর ইসলামিক নাম, মেয়েদের ইসলামিক নাম কেন রাখা উচিত, মেয়েদের ইসলামিক নাম রাখার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে হবে, কিভাবে মেয়েদের ইসলামিক নামগুলো বেছে নিবেন ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচিত হয়েছে আশা করি পুরো  আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে  পেরেছেন।  মুসলিম  মেয়েদের 

ইসলামিক নাম রাখা সুন্নত। তাছাড়া ইসলামিক নাম ইতিহাস ঐতিহ্য বহন করে। হাদিসে মুসলিম ছেলে মেয়েদের ইসলামিক নাম রাখার নির্দেশ রয়েছে। তাই সন্তান জন্মের  সপ্তম দিনে আকিকা করে সবার পরামর্শ অনুযায়ী সুন্দর একটা অর্থসহ ইসলামিক নাম রাখা উচিত। আর্টিকেলটা যদি আপনার ভালো লেগে থাকে   তাহলে আপনার বন্ধুদের  সাথে  শেয়ার করুন। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url