অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায় জানুন

অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলে প্রায় অধিকাংশ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। তাই বিদ্যুৎ বিল কিভাবে কমানো যায় তার উপায়সমূহ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আশা করি জানতে পারবেন। তাহলে চলুন বিদ্যুৎ বিল কমানোর ১০টি উপায় জেনে নেওয়া যাক।
প্রচন্ড গরমের ফলে বিদ্যুতের বাড়তি ব্যবহার করা হয়, আর বাড়তি ব্যবহারের ফলে আপনার বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে। এজন্য আপনাকে বিদ্যুৎ বিলে অতিষ্ঠ হয়ে হিমশিম খেতে হয়। নিচে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কমানোর ১০টি উপায় জেনে নিতে পারেন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায় জানতে পড়ুন।

অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কমানোর ১০টি উপায় 

বর্তমানে সম্প্রতি অনেক গ্রাহক অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসা নিয়ে নানান অভিযোগ করে থাকেন। প্রতি মাসে অতিরিক্ত বিল আসাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল নিয়ে মিডিয়াসহ নানা মাধ্যমে অভিযোগ এবং বিতর্কের যেন শেষ নেই। বিদ্যুৎ বিলে অতিষ্ঠ হয়ে কখনো কি নিজে সতর্ক হওয়ার কথা ভেবেছেন? আপনি যদি নিজে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সতর্ক থাকেন তাহলে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল এড়ানো সম্ভব।নিচে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কমানোর ১০টি উপায় বা কৌশল আলোচনা করা হলো আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন এবং বিস্তারিত জানুন।

বৈদ্যুতিক মিটার নিয়মিত পরীক্ষা করা

আপনার বাসায় বিদ্যুৎ প্রতিদিন কত ইউনিট ব্যবহার করছেন সেগুলো নিয়মিত ভাবে পরীক্ষা করুন। বৈদ্যুতিক মিটার যদি দেখেন, স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। তাহলে বুঝবেন আপনার বৈদ্যুতিক মিটার সঠিকভাবে কাজ করছে না। তাই নিয়মিত ভাবে বৈদ্যুতিক মিটার যাচাই করুন। অনেক সময় দেখা বৈদ্যুতিক মিটারে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রিডিং ভুল আসে। বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগের নিয়ম জানতে পড়ুন।  

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্যগুলো ব্যবহার করা

বিদ্যুৎ বিল কমাতে প্রতিটি মানুষকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্যগুলো ব্যবহার করা উচিত। আপনার বাসায় পুরনো বাতিগুলো  পরিবর্তন করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাল্বগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এসব বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাল্বগুলো ব্যবহার করার ফলে, আপনার বিদ্যুৎ বিলের খরচ অনেক পরিমাণ কমে যেতে পারে এবং আলোর পরিমাণও অনেক বেশি পাবেন। আপনার বাসায় রেফ্রিজারেটর এবং এসি ব্যবহারে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে। সেগুলো যেন বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তি সম্পন্ন হয়ে থাকে।

কাজ শেষে ইলেকট্রনিক প্লাগগুলো খুলে রাখা 

ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও ডিভাইস নিয়ে যখন কাজ করবেন, কাজ শেষে অবশ্যই ডিবাইসগুলো প্লাগগুলো থেকে খুলে রাখতে হবে। কেননা অনেক ডিভাইস রয়েছে সেগুলো বন্ধ না করলে দেখা যায় বিদ্যুৎ খরচ হতেই থাকে। আপনার বাসায় ফ্যান, টেলিভিশন, কম্পিউটারের প্লাগ লাগানো থাকে। যার জন্য অনেক পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হয়।এসব বিষয়ে যদি আপনি নজর না
দিয়ে থাকেন, তাহলে এখনই নজর দিন এবং বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ কমান। এজন্য বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহার করার শেষে বা চার্জ করার পর অবশ্যই আপনার সকেট থেকে প্লাগগুলো খুলে রাখুন। এতে আপনার বিদ্যুৎ খরচ কম হবে।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার 

অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কমানোর ১০টি উপায় এর মধ্যে অনতম। আপনার বাড়িতে সৌর বিদ্যুৎ থাকা মানে হচ্ছে, সবচেয়ে নিরাপদ এবং ভাবনাহীন ভাবে থাকা। যদিও প্রাথমিক পর্যায়ে সৌর বিদ্যুৎ স্থাপনে আপনার খরচের পরিমাণ একটু বেশি হবে। তবে আপনি সৌর বিদ্যুতের দীর্ঘমেয়াদি সুফল উপভোগ করতে পারবেন। লোডশেডিং  এর কোন সম্ভাবনা থাকবে না। সৌর 

বিদ্যুতের মাধ্যমে আপনি ফ্যান, রেফ্রিজারেটর, কম্পিউটার, এসি, টেলিভিশন প্রয়োজনীয় সকল কিছু সৌর বিদ্যুতের মাধ্যম ব্যবহার করতে পারবেন। সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের ফলে প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কোন চিন্তা বা ঝামেলা থাকবে না গৃহকর্তার।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে এসির তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখুন

তাপমাত্রা বেশি হওয়ার ফলে স্বাভাবিকের তুলনায় আপনারা যারা প্রযোজনের তুলনায় অতিরিক্ত পরিমাণে এসি ব্যবহার করে থাকেন। সাধারণত বেশি পরিমাণ গরমের ফলে এসি বেশি ব্যবহার করলেই যে, আপনার বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ বেশি আসবে এমন কোন কথা নেই। আপনার বাসার এসির তাপমাত্রা সবসময় ২৬ ডিগ্রী বা তার উপরে রাখতে পারেন। এসি নিয়মিতভাবে পরিষ্কার রাখবেন  এবং  সার্ভিসিং  করবেন।  কেননা  অনেক 

সময় দীর্ঘদিন সার্ভিস না করিয়ে ব্যবহার করলে, বিদ্যুৎ বিলের খরচের পরিমাণটা একটু বেশি হয়। তাই এ বিষয়ের প্রতি নজর দিবেন।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী অভ্যাস গড়ে তুলুন 

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য রুম থেকে চলে যাওয়ার আপনি আপনি রুমের বাল্ব, ফ্যান, এসি বন্ধ করতে অনেকেই ভুলে যায়। এটা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য কখনোই ঠিক নয়। এই বিষয়গুলোর প্রতি আপনি সবসময় নজর রাখতে পারেন । কেননা এই অভ্যাসগুলো যদি আপনি পরিবর্তন করতে পারেন বা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী জীবন যাপনে অভ্যস্ত হতে পারেন তাহলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য আপনি এ বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে নিবেন। 

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে বৈদ্যুতিক সামগ্রী নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করুন 

আপনার বাসায় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক সামগ্রী যেমন: ফ্রিজ, রুম হিটার, রাইস কুকার, ওভেন, ওয়াশিং হিটার, এসি সহ অন্যান্য ব্যবহারের জিনিসপত্র নিয়মিতভাবে রক্ষানাবেক্ষণ করা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কমানোর ১০টি উপায় এর মধ্যে বিদ্যুৎ  সাশ্রয়ে   বৈদ্যুতিক সামগ্রী  নিয়মিত  রক্ষানাবেক্ষণ করা।  আপনি যদি  সঠিকভাবে 

রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারেন তাহলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে একই সঙ্গে কোন দুর্ঘটনা থেকে সহজে রক্ষা পাওয়া যাবে। তাছাড়া পণ্যর কোন ত্রুটি থাকলে বিদ্যুৎ বিলের পরিমান বেশি আসবে।

সবুজায়নের প্রতি নজর দিন

প্রকৃতির শীতল সান্নিধ্য পেতে হলে আমাদেরকে সবুজায়নের প্রতি নজর দিতে হবে। সাম্প্রতিক কালে দাবদাহের ফলে আমরা আগের চেয়ে একটি বিষয় ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারছি। যত্রতত্র গাছপালা গুলো কেটে আমরা পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি


করেছি। আপনার বাড়িটি শীতল এবং ঠান্ডা রাখতে বাড়ির আশেপাশে যত বেশি সম্ভব গাছপালা লাগাতে পারেন।বাড়িতে লাগানো গাছপালা থেকে আপনি যেমন পাবেন বিশুদ্ধ অক্সিজেন এবং তেমনি পাবেন ছায়া যা আপনার বাড়িতে ঠান্ডা রাখতে বিশেষভাবে সহায়ক।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে প্রাকৃতিক বায়ু চলাচল ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিন

অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কমানোর ১০টি উপায় এর মধ্যে বায়ু চলাচল একটি অনতম কৌশল। আপনার বাসায় প্রাকৃতিক আলো বাতাস প্রবেশের জন্য আপনার বাসার দরজা ও জানালা পুরোপুরি খুলে দিন। তবে আপনার বাসা যদি দক্ষিণমুখী হয়, তাহলে এটি খুব ভালো কাজে দিবে। আপনার বাসায় সূর্যের আলো বা তাপ সরাসরি যেন প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য ভারী
পর্দা বা গাছপালা ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে আপনার বাসার কক্ষে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং সব সময় শীতল থাকবে। যার ফলে ফ্যান চালানোর প্রয়োজন পড়বে না। এর ফলে আপনার বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। আপনার বৈদ্যুতিক বিলের পরিমাণও কম আসবে।

বাসায় তাপ নিরোধক উপাদান ব্যবহার করুন

আপনার বাসায় তাপমাত্রা হ্রাস করার জন্য, আপনার বাসার দেওয়ালে ছাদ বা মেঝেতে তাপ প্রতিরোধী উপকরণগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে আপনার বাসার বাড়তি বিদ্যুৎ বিলের ব্যয়টা অনেকটা কমে যাবে। আপনি যদি এই উপকার গুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার বাসার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সবসময় চেষ্টা করবেন বাসায় আপনারা তাপ নিরোধক উপাদান গুলো ব্যবহার করতে। 

লেখকের শেষ মন্তব্য 

উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কমানোর ১০টি উপায় বা কৌশল সম্পর্কে। অতিরিক্ত পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল আশায় অনেকেই অতিষ্ঠ, তাই বিদ্যুৎ বিল কমানোর জন্য বা বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন উপায় বা কৌশল নিয়ে আলোচিত হয়েছে। 

তাই আমরা অতিরিক্ত  বিদ্যুৎ বিল কমানোর ১০টি উপায় আলোচনা করেছি। আশা করি  বিষয়গুলো সহজেই বুঝতে পেরেছেন। এই আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন, তাহলে আপনার বিদ্যুর বিলের পরিমাণটা অনেকটা সাশ্রয় করতে পারবেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url