জেনে নিন ভাতের মাড়ের ১০টি উপকারিতা ও পুষ্টিগুণসমূহ

ভাতের মাড়ের ১০টি উপকারিতা ও পুষ্টিগুণসমূহ সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটা শুধুমাত্র আপনার জন্য। নিচে ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ এবং ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে।


ভাতের মাড়ের জনপ্রিয়তা বর্তমান বিশ্বে চোখে পড়ার মতো বেড়েই চলছে। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে শুরু করে সিডনি।  কিন্তু একটা সমস্যা হচ্ছে, ভাত রান্না করার পর সবাই ভুল ফেলে দিচ্ছেন। ফলে পুষ্টিগুণ গুলোই চলে যাচ্ছে। নিচে ভাতের মাড়ের ১০টি উপকারিতা ও পুষ্টিগুণসমূহ জানুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ ভাতের মাড়ের ১০টি উপকারিতা ও পুষ্টিগুণসমূহ  জানতে  পড়্রুন

ভাতের মাড় নিয়ে কিছু কথা

ভাতের মাড়ের ১২টি উপকারিতা ও পুষ্টিগুণসমূহ সম্পর্কে জানা প্রতিটি মানুষের জন্য জরুরী। আপনি কি ভাত রান্না মাড় ফেলে দিচ্ছেন? তাহলে ভুল করছেন, কেননা চালের যা গুনাগুন সেগুলো পানির সাথে চলে যাচ্ছে। এর ফলে ভাতের মাড়ে যে পুষ্টিগুণগুলো রয়েছে তা আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে না। ভাত খেয়ে শুধু ওজন বেড়ে যাচ্ছে কিন্তু অন্য কোন কিছুর সুফল মিলছে না। ভাতের মাড়ে অনেক কার্যকারী উপাদান রয়েছে এই পোস্ট থেকে বিস্তারিত জানুন।    

ভাতের মাড়ের উপকারিতা 

ভাতের মারের উপকারিতা একাধিক গবেষণায় জানা গেছে যে, শরীর এবং ত্বককে চাঙ্কা করতে ভাতের মাড়ের কোন বিকল্প নেই।  ভাতের মাড় এমনকি অনেক রোগের জন্যও কার্যকারী ভুমিকা পালন করে থাকে। ভাতের মাড়ের কথা একাধিক প্রাচীন গ্রন্থেও এই বিষয়গুলো নিয়ে উল্লেখ পাওয়া যায়। ভাতের মাড় বা  ফ্যান,কাজে লাগিয়ে শরীরের বিভিন্ন রোগ মুক্ত করা

যায়,যা গ্রন্থে লেখা রয়েছে। ভাতের মাড়ে বিভিন্ন কার্যকরী উপাদান রয়েছে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ, ভিটামিন-ই সহ আরো বিভিন্ন উপাদান। আপনার শরীর গঠনে ভাতের মাড় বিশেষ ভূমিকা পালন করে সেই সঙ্গে আরো নানান কাজে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। প্রিয় পাঠক, আপনারা যদি ভাতের মাড়ের উপকারিতাগুলো জানতে চান, তাহলে আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত পড়ুন তাহলে সম্পূর্ণ বুঝতে পারবেন।নিচে ভাতের মাড়ের ১০টি উপকারিতা জানুন।

ভাতের মাড়ের ১০টি উপকারিতা 

চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেঃ ভাতের মাড় চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে থাকে । আপনি যদি সপ্তাহে তিনবার গোসলের আগে, ভাতের মাড় চুলে ভালো করে লাগাতে পারেন। এবং কিছু সময়ের জন্য, অপেক্ষা করে হালকা গরম পানি দিয়ে চুলটা ধৌত করে নিতে পারেন,  তাহলে আপনার চুলের গোড়ায় পুষ্টির সঠিক উপাদানগুলো  পাবে এবং পুষ্টির অভাবগুলো দূর হয়ে যাবে। এর ফলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। চুলের বিভিন্ন রোগ বালাই দূর হয়ে যাবে সেই সঙ্গে আপনার চুলের সৌন্দর্যতা বা উজ্জ্বলতা ও বৃদ্ধি পাবে।

ভাতের মাড় এনার্জির ঘাটতি দূর করেঃ ভাতের মাড় শরীরের এনার্জি দূর করতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। তাই শীরর চর্চার আগে আপনি যদি নিয়মিতভাবে এক গ্লাস করে ভাতের মাড় খান। তাহলে আপনার শরীরে ৮ টি উপকারী অ্যামাইনো এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। অ্যামাইনো এসিড বৃদ্ধির ফলে এক্সারসাইজের সময় শরীরের পেশি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

এছাড়াও ভাতের মাড়ে উপস্থিত রয়েছে কার্বোহাইড্রেট। যা এনার্জির ঘাটতি দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।  তাই প্রতিদিন ভাত রান্না করার পর অযথাই মাড় ফেলে দিবেন না। আপনি যদি নিয়মিতভাবে ভাতের মার খেতে পারেন, তাহলে আপনার এনার্জি গত ঘাটতিগুলো দ্রুতই দূর হয়ে যাবে। এছাড়া আরো বিভিন্ন রোগবালই থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন। তাই ভাতের মাড় খাওয়ার কোন বিকল্প নেই।

ভাতের মাড় ডায়রিয়া চিকিৎসায় কাজে লাগেঃ ডায়রিয়া হলে আপনি যদি ভাতের মাড় খেতে পারেন, তাহলে আপনার ভালো কাজে দিবে। ডায়রিয়া হওয়াতে প্রতিনিয়ত আপনার পানির মত পায়খানা হয়েই চলছে। এর সাথে যদি পেটে ব্যথা হয়ে থাকে, তাহলে আপনি ভাতের মাড় খাওয়া শুরু করতে পারেন। দেখবেন আপনি অনেকটা উপকার পাচ্ছেন। আপনি যদি পেট খারাপের সময় এক গ্লাস 

পরিমান ভাতের মাড়ের সাথে অল্প পরিমাণ লবণ মেশিয়ে খেলে, শরীরে খনিজের মাত্রা প্রচুর পরিমাণে বাড়তে শুরু করে। এর ফলে ডায়রিয়ার প্রকোপ অনেকটা কমে যায়। ডায়রিয়া হলে ভাতের মাড় খাওয়ার কোনো বিকল্প নাই। আপনার যদি ডায়রিয়া হয়ে থাকে তবে ভাতের মাড় খেতে পারেন। তাহলে আশা করা যায় উপকার পাবেন। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। 

ব্রণের প্রকোপ কমিয়ে থাকেঃ আপনি যদি ভাতের মাড় প্রতিদিন দুইবার  ভালো করে মুখে লাগান তাহলে আপনার ব্রণ কমতে শুরু করবে। কেননা ভাতের মাড়ে উপস্থিত রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। যা আপনার ত্বকের অন্দরে প্রদানের মাত্রা হ্রাস করে ফেলবে। আর এর ফলে আপনার মুখের ব্রণ দ্রুতই কমে যাবে। আপনার মুখের ব্রণ দূর করতে ভাতের মাড় ব্যবহার করতে পারেন। 

ভাতের মাড় ত্বক সুন্দর করেঃ ত্বকের সৌন্দর্য বা উজ্জলতা বৃদ্ধিতে ভাতের মাড় কার্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। ভাতের মাড় একটি প্রাকৃতিক উপায় ও বলা চলে। বিভিন্ন গবেষক, গবেষণা করে লক্ষ্য করেছেন যে, প্রতিদিন নিয়মিতভাবে ভাতের মাড় মুখে লাগিয়ে যদি ম্যাসেজ করা যায়, তাহলে ত্বকের ছিদ্রগুলো ছোটো  হয়ে যায় এবং ত্বকের উপরের অংশে জমে থাকা মৃত কোষগুলোর আবরণ নষ্ট 

হয়ে যায়। এর ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। আপনি যদি প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে অল্প পরিমাণ তুলার সাহায্যে, ভাতের মার মুখে লাগিয়ে ভালো করে ম্যাসেজ করে রাতে শুয়ে থাকেন। এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখটা ধুয়ে ফেলতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনারা যদি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে চান তাহলে ভাতের মাড়ের বিকল্প নেই। 

ভাতের মাড় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভাতের মাড় খুবই উপকারী। কেননা ভাতের মাড়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার।  যা আপনার শরীরের জন্য উপকারী।  ফাইবার দেহের মেটাবলিজম শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে আর এর ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। হজম শক্তি বৃদ্ধি পেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যাগুলো দূর হয়ে যায়। আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের মত রোগগুলো হয়, তাহলে ভাতের মাড় খেতে পারেন আশা করি উপকার ভালো  পাবেন।

ভাতের মাড় দেহের ক্লান্তি দূর করেঃ ভাতের মাড় সাধারণত তরল। ভাতের মাড়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেড যা আপনার শরীরের ঘাটতি দূর করতে এবং শরীরে প্রচুর পরিমাণে কার্বাইডের প্রবেশ করিয়ে দেহের ক্লান্তি ভাব দূর করে দেয়। আপনি যদি পরিশ্রমের ফলে নিজেকে ক্লান্তি ভাব মনে করেন, তাহলে আপনি খেতে পারেন ভাতের মা আর বা ফ্যান।

ভাতের মাড় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ভাতের মাড় খুবই কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের জন্য একটি সেরা খাবার হল ভাতের মাড়। কেননা ভাতের মারে মধ্যে সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ  থাকে তাহলে ভাতের মাড় খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে  থাকবে।

মৌসুমী রোগ প্রতিরোধে ভাতের মাড়ঃ মৌসুমী রোগ প্রতিরোধে ভাতের মাড় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু বা আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে আমাদের দেশের প্রায় অনেক মানুষের বিভিন্ন ধরণের রোগ দেখা যায়, যেমন সর্দি, জ্বর, কাশি ইত্যাদি। এসব অসুখ প্রতিরোধ করতে চাইলে বেশি বেশি খেতে হবে ভাতের মাড়। যদি নিয়মিত ভাতের মার খেতে পারেন, তাহলে আপনার এসব রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। 

ভাতের মাড় পাকস্থলির জন্য খুব উপকারীঃ পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যাগুলো দূর করে, পাকস্থলি ঠিক রাখতে ভাতের মাড়ের গুরুত্ব অপরিসীম। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যর  মত সমস্যাগুলো রয়েছে এবং তাদের সাধারণ হজম ঠিকমত হয় না। তাই তাদের জন্য ভাতের মাড়ের উপকারিতা অনেক। আপনার পাকস্থলী যদি ঠিক রাখতে চান তাহলে নিয়মিতভাবে খেতে পারেন ভাতের মাড়।

ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম  

উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম, ভাতের  মাড়ের ১০টি উপকারিতা এখন আমরা জানবো ভাতের  মাড় খাওয়ার নিয়ম, পড়তে থাকুন। ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম হলো, 

  • আপনি যখন রান্না করবেন তখন রান্না করার সময় মাড়গুলো বের করে নিয়ে, গরম থাকা অবস্থায় মাড়ের ভিতরে অল্প পরিমাণ লবণ মিশিয়ে চুমুক দিয়ে আপনি পান করতে পারেন। 
  • আবার আপনার বাসায় যদি ঘি থাকে তাহলে ঘির সাথে  ভাতের মাড় মিশিয়েও পান করতে পারেন। তাহলে আরো বেশি উপকারিতা পাবেন। এই নিয়মগুলো মেনে যদি আপনি ভাতের মাড় খান তাহলে আপনার শরীরের বিভিন্ন রকম উপকারিতা পাবেন।

গর্ভাবস্থায় ভাতের মার খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় ভাতের  মাড় খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। ভাতের  মাড়ে রয়েছে কার্বোহাইডেট এবং ফাইবার যা গর্ভাবস্থায় শিশুর বৃদ্ধির জন্য কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া কার্বোহাইড্রেড  থাকার কারণে গর্ভবতী মায়ের তাৎক্ষণিক শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও ভাতের ফ্যানে রয়েছে ভিটামিন ও মিনারেল যা শিশুর জন্য অত্যন্ত উপকারী। 

গর্ভাবস্থায় বদহজম জনিত সমস্যাগুলো থাকলে ভাতের ফ্যান খাওয়ার ফলে দ্রুত প্রতিরোধ পাওয়া যায়। শিশুর হাড় মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভাতের ফ্যানে রয়েছে খনিজ পদার্থ যেমন ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফাইবার ইত্যাদি যা শিশুর দাঁত ও হাড় শক্তিশালী করতে বেশি উপকারী।

রূপচর্চা-ভাতের মার মুখে দিলে কি হয় 

রূপরর্চা জন্য আপনি ভাতের মাড় ব্যবহার করতে পারেন। রূপচর্চার জন্য ভাতের মার খুবই উপকারী। আপনার মুখের যদি উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়, মুখে ব্রণ উঠে, মুখ রুক্ষ হয়ে যায়, মুখের চামড়া টানটান না থাকে এসব যাবতীয় সমস্যা থাকলে আপনি রূপচর্চার ক্ষেত্রে ভাতের মাড় ব্যবহার করতে পারেন।আপনি যদি ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা করতে চান, তাহলে রান্না

করার সময় ভাতের মাড় বের করে নিবেন এবং সেগুলো ছাকনা দিয়ে ছেকে নিবেন। তারপর আপনার ত্বকে ভালো করে লাগাবেন এবং ২০-৩০ মিনিট রাখার পর সেগুলো পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। আর আপনি এভাবে নিয়মিতভাবে কয়েকদিন আপনার মুখে লাগান, তাহলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে আশা করি।আপনার ত্বকের আদ্রতা যদি হারিয়ে

যায়, তাহলে এ্যালোভেরা জেল এর সাথে ভাতের মাড় মিশিয়ে আপনার ত্বকের মধ্যেও লাগাতে পারেন। তাহলে আপনার ত্বকের আদ্রতা ফিরে আসবে।  আপনার চোখের নিচে যদি কালো দাগ পরে যায়, তবে আপনি ভাতের মাড় একটু গাঢ় করে নিয়ে চোখের কালো দাগে দিবেন। তাহলে আপনার চোখের নিচে কালো দাগগুলো দূর হয়ে যাবে। এছাড়া আপনি দুধের সাথে ভাতের মাড় মিশিয়ে যদি ত্বকে লাগান তাহলে  ভালো উপকার পেতে পারেন। 

ভাতের মাড় খেলে কি মানুষ মোটা হয় 

আপনাদের অনেকের প্রশ্ন থাকে যে, ভাতের মাড় খেলে কি মানুষকে মোটা হয়? এমন প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক। কেননা ভাতের মাড়ে রয়েছে উচ্চ মানের পুষ্টি উপাদান। পাঠক জেনে নেওয়া যাক ভাতের মাড় খেলে মানুষ মোটা হয় কিনা। প্রতিটা মানুষের শরীর স্বাস্থ্য ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। আপনার শরীর যদি অনেক রোগা,  চিকনা,  পাতলা এবং দূর্বল স্বভাবের হয়।  তাহলে 

আপনার জন্য ভাতের মাড় খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভাতের মাড়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্র। যা আপনার শরীরে পুষ্টি উপাদান গুলো সরবরাহ করে থাকে এর ফলে আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া আপনার শরীরের দূর্বলতাগুলোও কেটে যাবে পুষ্টি উপাদানের জন্য।  আপনি যদি নিয়মিতভাবে অধিক পরিমাণ ভাতের মাড় খান তাহলে আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি

পাবে। অধিক পরিমাণে ভাতের ফ্যান খাওয়ার ফলে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে এবং পানি জমা হতে থাকবে। আপনার শরীরে যদি অধিক পরিমাণ পানি জমা হতে থাকে, তাহলে আপনার ওজন বৃদ্ধি হতে থাকবে তাই ভাতের ফ্যান খেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়।

যেভাবে ভাতের মাড় তৈরি করতে হয় 

ভাতের মাড় প্রস্তুত করতে আপনাকে সাধারণত কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। আপনি যদি ইচ্ছা করেন তবে আপনি চাইলে বাড়িতে বসেই ভাতের মার তৈরি করতে পারবেন কিভাবে করবেন নিচে উল্লেখ করা হলো। 

  • একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ চাউল নিন 
  • চাউলগুলো ভালো করে পরিষ্কার করে ফেলুন 
  • একটি পাত্রে পানি দিন এবং চাউল থেকে চার গুণ পরিমাণ যেন বেশি হয়। 
  • পাত্রটি চুলার উপরে তুলে দিন 
  • যতক্ষণ সেদ্ধ না হবে ততক্ষণ চুলা জাল দিন
  • চাউল যদি সিদ্ধ হয়ে যায় তখন ভাতে পরিণত হবে 
  • এরপর ভাতের মার সংগ্রহ করে ভালোভাবে ছেকে নিন

ভাতের মাড়ের পুষ্টিগুণ

ভাতের মাড়ে প্রচুর পরিমাণে হরেক রকমের পুষ্টিগুণ রয়েছে।গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভাতের মারের ভিতরে উল্লেখযোগ্য হাড়ে ভিটামিন বি এবং ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এছাড়াও ভাতের মাড় বা ফ্যানে যে উপাদানগুলো রয়েছে নিচে উল্লেখ করা হলো।

  • আমিষ
  • শর্করা
  • লৌহ
  • ফসফরাস 
  • ক্যালসিয়াম
  • ম্যাঙ্গানিজ
  • জিংক
  • কপার 
  • মিলেনিয়াম

আমরা ভাতের ফ্যান বা মাড় নিয়ে চিনতে ভাবনা না করলেও বিভিন্ন দেশ নানান গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। চীনা বিজ্ঞানী মি.লিন ভাতের ফ্যান ফেলে দেওয়া  নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা করে দেখেছেন যে, ভাতের মাড়ে লৌহ, জিংক, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, মিলেনিয়াম, কপার এই ৬টি উপাদান রয়েছে। মাড়গুলো ফেলে দেওয়ার ফলে উপরের এই উপদানগুলো চলে যায়। 

মাড় বা ফ্যান ফেলে দেওয়াতে যে পুষ্টি উপাদান অপচয় হয়

পুষ্টি উপাদান
লৌহ ১০ গুণ
ক্যালসিয়াম ৪ গুণ
মাঙ্গানিজ ১২ গুণ
কপার ৬ গুণ
মেলেনিয়াম ২ গুণ

ভাতের মাড়ের অপকারিতা-ভাতের মারের ক্ষতিকর দিক

আমরা উপরের অংশের আলোচনায় ভাতের মাড়ের উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। প্রায় সব জিনিসের উপকারিতার সাথে তার কিছু অপকারিতাও রয়েছে। তেমনি  ভাতের  উপকারিতার সাথে কিছু অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক রয়েছে। ভাতের মাড় আমাদের শরীর-স্বাস্থ্যর জন্য যে ক্ষতিকর, সে সম্পর্কে আমাদের জানা অবশ্যই প্রয়োজনীয়।অধিক পরিমাণে ফ্যান খাওয়ার 

ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক। অতিরিক্ত পরিমাণ ফ্যান খাওয়ার ফলে কি ক্ষতিকরগুলো হয় সেগুলো সম্পর্কে। 

  • আপনি যদি প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পরিমাণ ফ্যান খান, তাহলে আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে এবং অতিরিক্ত মোটা হয়ে যেতে পারেন। 
  • ভাতের ফ্যান যেহেতু তরল জাতীয় খাবার। তাই আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ খান তাহলে ডায়রিয়া হয় সম্ভাবনা থাকে। 
  • ভাতের মাড়ে ফ্যাট রয়েছে তাই আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ ভাতের মাড় খান, তাহলে আপনার শরীরে, রক্তে,লিভাবে  চর্বি জমার সম্ভাবনা রয়েছে।  
  • আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ ভাতের ফ্যান খান, তাহলে আপনার কোলেস্টোলের মাত্রা বাড়তে পারে। 
  • অতিরিক্ত পরিমাণ ভাতার ফ্যান খেলে, রাতে সরকারের পরিমাণ বেড়ে যায়। 
  • অতিরিক্ত পরিমাণ ভাতের ফ্যান খেলে উচ্চ রক্তচাপ সম্ভাবনা থাকে। 

লেখকের শেষ মন্তব্য - ভাতের মাড়ের ১০টি উপকারিতা ও পুষ্টিগুণসমূহ সম্পর্কে

উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন ভাতের মাড়ের ১০টি উপকারিতা,রূপচর্চায় ভাতের মাড়, ভাতের মাড় খেলে মানুষ মোটা হয় কিনা , ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম, কিভাবে মাড় তৈরি করতে হয় এবং ভাতের মারের অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে আশা করি বুঝতে পেরেছেন। ভাতের মাড়ের উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে 

না। আপনি যদি ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে চান তাহলে মুখে মাড় ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও দেহের এনার্জি এবং ক্লান্তি দূর করতে মাড় বা ফ্যানের ভূমিকা অপরিসীম। তাছাড়া মানুষের শরীরের বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ করে থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যাগুলো ভাতের ফ্যান খাওয়ার ফলে উপকার পাওয়া যায়। তবে ভাতের ফ্যানে শুধু উপকারীতাই রয়েছে এমনটা নয় এর কিছু ক্ষতিকর দিক গুলো রয়েছে সেগুলো মেইনটেইন করে খাবেন। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url