অস্টেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ যেভাবে আবেদন করবেন

আপনি কি অস্টেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪, আবেদন ও খরচ যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আপনাদের জানাবো অস্টেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সম্পর্কে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।


অস্ট্রেলিয়া অধিকাংশ মানুষের কাছে একটি স্বপ্নের দেশ। কেননা জীবন যাত্রার উন্নত মান, উচ্চ বেতন, নিরাপদ স্থিতিশীল পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য অনেকের কাছে দেশটি অনেক প্রিয়। অস্টেলিয়াতে বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। এখানে দক্ষ শ্রমিকদের চাহিদা অনেক বেশি।তাই দক্ষতা অর্জন করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া যেতে পারেন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ অস্টেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ জানতে পড়ুন।

অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ভাইদের পরিবার নিয়ে বসবাস করার উপযুক্ত একটি দেশ। এখানে কাজের প্রচুর পরিমাণে সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তাছাড়া আপনি পাবেন সামাজিক নিরাপত্তা, উন্নত চিকিৎসা এবং শিক্ষা ব্যবস্থা সুযোগ। অস্ট্রেলিয়া সরকার দক্ষ শ্রমিকদেরকে উৎসাহিত করে থাকে। আপনি যদি এসব সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে চান  অবশ্যই আপনার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা লাগবে।

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার নিয়ম 

অস্ট্রেলিয়া সরকার বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা কাজের জন্য অফার করে থাকে। এসব ক্যাটাগরির মধ্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিসা ক্যাটাগরি হল স্কিল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ভিসা (subclass 189)। এছাড়াও আরো অনেক ক্যাটাগরির ভিসা রয়েছে। আপনি যদি অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে চান, তাহলে  আপনার নির্দিষ্ট  কিছু যোগ্যতা এবং প্রয়োজনীয় কিছু 

কাগজপত্র লাগবে।  আপনার বয়স যদি ১৮ থেকে ৪৯ হয় তাহলে অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ওয়ার্ক পারমিট  ভিসা আবেদনের জন্য যেসব যোগ্যতা এবং কাগজপত্রগুলো লাগে। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে টেবিল আকারে দেখানো হলো। 

ক্রমিক নং ডকুমেন্টস শর্ত
০১ ই- পাস্পোর্ট (e-pasport) মেয়াদ উত্তীর্ণের অন্তত ২৪ মাস বাকি থাকতে হবে
০২ পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট সর্বশেষ ৩ মাসের
০৩ মেদিকেল রিপোর্ট সার্টফিকেট অস্টেলিয়া সরকারের অনুমোদিত ডাক্তার কর্তৃক তৈরী
০৪ সাম্প্রতিক তোলা পাস্পোর্ট সাইজের ছবি সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড
০৫ ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সার্টফিকেট(আইএল টিএস) ন্যূনতম স্কোর ৫.৫
০৬ শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট সত্যায়িত অনুবাদ (ইংরেজিতে)
০৭ জাতীয় পরিচয় পত্র সত্যায়িত অনুবাদ ( ইংরেজীতে)
০৮ কোম্পানি অফার লেটার মূল কপি
০৯ চাকরির সিভি আপডেটেড ইংরেজিতে
১০ ব্যাংক স্টেটমেন্ট সর্বশেষ ৬ মাসের
১১ স্কিল সার্টিফিকেট যদি প্রযোজ্য হয়
১২ কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ সত্যায়িত অনুবাদ ( ইংরেজিতে)

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার জন্য নিচে উল্লেখিত ধাপগুলো অনুসরণ করে আবেদন করতে পারবেন।

  • প্রথমে আপনাকে অস্ট্রেলিয়া সরকারের অফিসিয়াল ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইট ভিজিট করে একটা একাউন্ট তৈরী করতে হবে। 
  • আপনার একাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে, এরপর অনলাইনে ভিসা ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে আবেদন করতে হবে। অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন ফরম আপনাকে আগে থেকেই পূরণ করে রাখতে হবে। 
  • অনলাইনে আপনি সঠিক এবং নির্ভুলভাবে ফরমটি পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ এবং ভিসা আবেদন ফি জমা দিতে হবে।
  • অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং হতে ৬ থেকে ৮ মাস সময় লাগবে। এর জন্য আপনাকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। 

অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ কত

অস্ট্রেলিয়া অনেক ধরনের ক্যাটাগরির ভিসা রয়েছে। ভিসা  ক্যাটাগরির ভিসার মেয়াদের উপর নির্ভর করে অস্টেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ সাধারণত  কম বেশি হয়ে থাকে।আপনি যদি সরকারি ভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার যেতে পারেন, তাহলে খরচ অনেক কম হবে। অপরদিকে যদি বেসরকারিভাবে  কোন এজেন্সি  সাহায্যে নিয়ে ওয়ার্ক পারমিট 


ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়াতে যেতে চান তাহলে তুলনামূলকভাবে আপনার খরচ কয়েকগুণ বেশি হবে। এছাড়া আপনি যদি দালালের মাধ্যমে যান তাহলে আপনার খরচ তার চেয়েও বেশি পড়বে। তাই সবসময় দালাল থেকে সাবধান থাকবেন। কেননা দালালের মাধ্যমে গেলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং ঝুঁকির  সম্ভাবনা বেশি। বর্তমানে  আপনি  যদি ওয়ার্ক 

পারমিট ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়াতে যেতে চান, তবে আপনার আনুমানিক প্রায় খরচ হবে ১০ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা। এটা ধারণা মাত্র। তবে বাস্তবে খরচ কম বা বেশি হতে পারে। এজন্য বললাম যে, দালাল বা এজেন্সি ভিসার জন্য যার কাছ থেকে যেমন টাকা নিতে পারে। তাই এই খরচের হিসাবটা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা বেতন কত জানুন

অস্ট্রেলিয়ায় দক্ষ শ্রমিকদের কাজ করার জন্য উপযুক্ত একটি জায়গা। শ্রমিক ভাইদের এখানে কাজের জন্য বেশি পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। অস্টেলিয়া বিভিন্ন ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে। এজন্য দক্ষ শ্রমিকদের জন্য কাজের চাহিদা সব সময় থাকে। আপনি যদি কাজের ভিসা নিয়ে অস্টেলিয়া যেতে পারেন, তাহলে আপনার ভবিষ্যৎ উজ্জল হবে।অস্ট্রেলিয়াতে গিয়ে শ্রমিকদের

কি কাজগুলো করতে হয়, অনেকেই সেই সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা জানেনা। সেসব প্রবাসী ভাইদের সুবিধার্থে অস্ট্রেলিয়া তে কি কাজ গুলো করতে হয় সেগুলো হলো- কৃষি কাজ, কনস্ট্রাকশনের কাজ, বাগান শ্রমিক, ডেলিভারি ম্যান, পাইপ ফিটিং, ইলেকট্রিশিয়ান, ড্রাইভিং কাজ ইত্যাদি করে থাকে। অস্ট্রেলিয়াতে কাজের ভিসা নিয়ে গেলে প্রবাসী শ্রমিক ভাইদের এই কাজগুলো

করতে হবে। তাই প্রবাসে যাওয়ার আগে নিজের  দক্ষতা অর্জন করে তারপর প্রবাসে পারি জমান। তাহলে আপনার জন্য বেশি ভালো হবে এবং ভালো পারিশ্রমিক পাবেন। অস্ট্রেলিয়াতে  দক্ষতার উপরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। অস্ট্রেলিয়া অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশ হওয়ায় প্রতিবছরই শ্রমিকের সংকট দেখা যায়।তাই শ্রমিক সংকট কাটানোর জন্য

বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চ বেতনে দক্ষ অদক্ষ কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়াতে আপনার বেতনের পরিমাণ নির্ভর করবে আপনার কাজের দক্ষতা অভিজ্ঞতা এবং যোগ্যতার উপরে। অস্ট্রেলিয়াতে কাজভেদে বর্তমানে আপনার বেতন হতে পারে প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

অস্ট্রেলিয়া ক্লিনার ভিসা কত

অস্ট্রেলিয়া ক্লিনার ভিসা আপনি খুব সহজেই পাবেন।  আপনি যদি ক্লিনার ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়াতে যান। তবে তুলনামূলকভাবে আপনার খরচ অনেকটা কম হবে। আউটডোর এবং ইনডোর উভয় জায়গাতেই ক্লিনারের কাজগুলো করা হয়। উদাহরণ হিসেবে যদি বলাই বলি, অফিস, আদালত, কোম্পানি, রাস্তাঘাট ইত্যাদি।অস্ট্রেলিয়া সরকার এবং সে দেশের 


জনগণ প্রতিটি মানুষ কাজকে সম্মান করে থাকে। তাই উন্নত দেশ অস্ট্রেলিয়াতে ক্লিনারের কাজ করলে সেখানে  আপনাকে অসম্মানিত হতে হবে না। কেননা অস্ট্রেলিয়ার দেশ যেমন উন্নত তেমনি দেশের জনগণ উচ্চশিক্ষিত এবং উদার মন-মানসিকতার।আপনি যদি অস্ট্রেলিয়াতে ক্লিনার ভিসা নিয়ে যেতে পারেন।  তবে আপনার বেতন হতে পারে  আনুমানিক প্রায় 

২ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। আপনি যদি ক্লিনার ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়াতে যেতে চান, তাহলে ক্লিনার ভিসা করতে আপনার খরচ হবে মোট ৮ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা। আপনি ক্লিনার বিষয় নিয়ে অস্ট্রেলিয়াতে গেলে নিজের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে পারবেন

লেখকের শেষ মন্তব্য

প্রিয় পাঠক উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন, অস্টেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন, ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ, ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বেতন, ক্লিনার ভিসা ইত্যাদি সম্পর্কে। আশা করি পুরো আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন। অস্টেলিয়া একটি উন্নত রাষ্ট্র। আপনি যদি এই ভিসা নিয়ে যেতে পারেন তাহলে উচ্চ বেতনে জব করতে পারবেন। তাছাড়া সুযোগ সুবিধার পরিমাণও বেশি পাবেন



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url