গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার ১০টি উপকারিতা জানুন
আপনি কি গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার ১০টি উপকারিতা এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন ? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জানতে পারবেন বিটরুট খাওয়ার খাওয়ার ১০টি উপকারিতা সহ যাবতীয় তথগুলো পড়তে থাকুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় বিটরুটের উপকারিতা জানতে পড়ুন
- গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা
- গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে বিটরুটের রস
- গর্ভাবস্থায় আপনার ডায়েট এর যোগ করতে পারেন বিটরুট
- গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের বাটার খাওয়ার উপকারিতা
- বিটরুটের দাম কেমন
- বিটরুটের পাউডারের দাম কত
- বিটরুটের রসের পুষ্টি উপাদান
- গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন কতগুলো বিটরুট খাওয়া উচিত
- গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার সঠিক সময়
- গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পনার জন্য বিটরুটের রস যেভাবে খাবেন
- গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার স্বাস্থ্যঝুঁকি
গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা
বিটরুট একটি পুষ্টিকর মূল জাতীয় সবজি। আমাদের দেশে বিটরুটের চাহিদা দিন দিন প্রচুর পরিমাণে বাড়ছে। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই বিটরুট গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকার জন্য বিশেষ কার্যকরী সংযোজন। বিটরুটে পুষ্টিগুণের পরিমাণ এতটা পরিমাণ বেশি যে, গর্ভাবস্থায় খাবার জন্য এই সবজির চাহিদা ব্যাপক পরিমাণে রয়েছে। বিটরুটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
খনিজ ও ভিটামিন। খনিজ এবং ভিটামিন গর্ভবতী মায়ের ক্রমবর্ধমান গর্ভের ভ্রণকে স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে থাকে। প্রিয় পাঠক,জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়া ১০টি উপকারিতা।
আরো পড়ুনঃ ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ,কারণ- প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
ওজন কমাতে সাহায্য করে
গর্ভাবস্থায় যদি আপনার ওজন কমাতে চান কিংবা আপনার সঠিক ওজন ধরে রাখাতে চান, তাহলে আপনার ডায়েটের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাতে কাঁচা বিটরুট রান্না করা অন্তর্ভুক্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিটরুট ওজন কমাতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের ওজন কমাতে বিটরুট খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে সাহায্য করে
গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় একটি প্রচলিত সমস্যা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। অনেক গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় এবং শরীর ফোলা ফোলা ভাব হয়। এই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে নিজেকে রক্ষা করতে বা মুক্তি পেতে আপনি খেতে পারেন বিটরুট। বিটরুটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া গর্ভাবস্থায় পেট পরিষ্কার রাখতে বিটরুট বিশেষভাবে সাহায্য করে।
আয়রনের ঘাটটি দূর করতে সাহায্য করে
বিটরুটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। বিটরুটে আয়রন থাকার কারণে, গর্ভবতী মায়ের শরীরের ক্লান্তি এবং দুর্বলতার ঝুঁকি কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। যারা নিরামিষ পছন্দ করেন তাদের জন্য বিটরট খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা বিটরুট হলো আয়রনের উৎস।
বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে বিটরুট খুবই কার্যকরী। গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় ইলেক্ট্রোলাইটে ভারসাম্য আনতে এবং বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে বিটরুট খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা বিটরুটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। পটাশিয়াম ও একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
নিউরাল টিউবের ত্রুটি প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে
বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এ্যাসিড রয়েছে আর এই ফলিক এ্যাসিড থাকার কারণে গর্ভবতী মায়ের গর্ভের ভ্রনের ত্রুটি এবং বিকাশ জনিত সমস্যা গুলোর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বিটরুটের উপকারিতা এতটাই যে, আপনার গর্ভের ভ্রণের সঠিক বিকাশ এবং বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে থাকে। এছাড়া মেরুদন্ডের উন্নতিতেও কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
বিটরুট রক্তের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। বিটরুট সাধারণত কম গ্লাইসেমিকযুক্ত খাদ্য। বিটরুট কম গ্লাইসেমিকযুক্ত খাদ্য হওয়ার কারণে গ্লুকোজে রুপান্তরিত হতে রক্তের মধ্যে শোষিত হতে অনেক বেশি সময় নিয়ে থাকে। এর ফলে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকভাবেই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
স্বাস্থ্যকর যকৃত উন্নতীকরণে সাহায্য করে
বিটরুটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা সায়ানিন। যা স্বাস্থ্যকর যকৃত উন্নতি করনে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। বিটরুট আপনার যকৃত এবং রক্তকে বিষমুক্ত করতে সাহায্য করে।এছাড়া বিটরুট ফ্যাটি এ্যাসিড এবং বিষাক্ত পদার্থগুলোকে অপসারণ করে, আপনাকে একটি স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থার নিশ্চিত করতে পারে।
ভিটামিন সি সরবরাহ
ভিতরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। আর এই ভিটামিন সি আপনার আয়রন শোষণে সহায়তা করে থাকে এবং স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থায় নিশ্চিত করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
ভ্রণের জন্মগত ত্রুটি দূরীকরণে সাহায্য করে
বিটরুটে ফলিক এসিড থাকার কারণে আপনার গর্ভের ভ্রণের বিকাশকে প্ররোচিত করে।তেমনি পিঠের মেরুদন্ডের সর্বোচ্চ বিকাশ সুনিশ্চিত করে জন্মগত ত্রুটি গুলো দূরীকরণে বিশেষভাবে প্রতিরোধ করে থাকে।
শরীরের প্রদাহ রোধ করতে সাহায্যে করে
বিটরুটের মধ্যে রয়েছে এক প্রকার বিটের নাম প্রধান বিরোধী এজেন্ট। আপনি যদি বিটরুট খান তাহলে এই বিটেন নামক এজেন্ট আপনার জয়েন্ট ব্যাথা এবং ফুলে যাওয়া প্রতিরোধ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে।
আরো পড়ুনঃ মেথির আশ্চর্যজনক ১০ টি স্বাস্থ্যগুণ- মেথি খাওয়ার নিয়ম
গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে বিটরুটের রস
একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে বিটরুট রসের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কারণ বিটরুটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফাইবার এবং এ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু পুষ্টি উপাদান। যা গর্ভের শিশুর পুষ্টি যোগিয়ে থাকে এবং সুস্থ কোষের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ থাকায়, বিটরুটের রস হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য
এবং রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়াকে উন্নতি করে থাকে। গর্ভবতী মায়ের ভ্রণকে অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ করতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে বা সাহায্য করে থাকে। আপনি যদি প্রতিনিয়ত নিয়মিতভাবে বিটরুটের রস পান করেন, তাহলে আপনার উচ্চ রক্তচাপ কমতে পারে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ গুলো হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কম থাকে। গর্ভাবস্থায় কোন গর্ভবতী মা
যদি রক্তস্বল্পতায় ভুগে থাকেন, তাহলে বিটরুটের রস পান করতে পারেন এতে অনেক উপকার পাবেন। বিটরুট রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে বিশেষভাবে কাজ করে থাকে। বিটরুট থেকে যদি আপনি উপকার পেতে চান তাহলে গর্ভাবস্থার প্রথম মাস থেকেই বিটরুটের রস পান করতে পারেন। তাহলে আশা করি অনেক উপকার পাবেন। এছাড়া আপনি আপনার
খাবার তালিকাতেও নিয়মিত রাখতে পারেন বিটরুটের রস। তাছাড়া আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে বিটরুটের রস সেবন করেন তাহলে অনেক উপকার পাবেন আশা করি বুঝতে পেরেছন। গর্ভবতী মায়ের জন্য বিটরুট খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। বিটরুট এমন একটি সবজি যা রক্ত বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। বিটরুটের রসের উপকারিতার কথা বলে শেষ
করা যাবে না। প্রিয় পাঠক নিয়মিতভাবে প্রতিদিন খাবারের তালিকাতে যোগ করুন বিটরুট। একজন মানুষের জন্য বিটরুটের ভূমিকা অপরিসীম।
গর্ভাবস্থায় আপনার ডায়েট এর যোগ করতে পারেন বিটরুট
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই গর্ভাবস্থায় আপনার ডায়েটের অন্যান্য সবজির সাথে যোগ করতে পারেন বিটরুট। প্রিয় পাঠক, চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় আপনি কিভাবে বিটরুট খাবেন বিস্তারিতভাবে আলোকপাত করা হলো।
চা হিসাবে বিটরুট খেতে পারেন
বিটরুটের চা এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকারী দিক হলো বিটরুটের মধ্যে বলদায়ক বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং বিটরুটে কোনো প্রকার ক্যাফিন থাকেনা। বটরুটের চা আপনি কিভাবে খাবেন চলুন জানিয়ে দেই।
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- পানির পরিমাণ নিতে হবে ১/৪ কাপ পরিমাণ
- বিটের পরিমাণ নিতে হবে সুক্ষভাবে ৪টি কাটা
- মধুর পরিমাণ নিতে হবে এক থেকে দুই কাপ
- লেবুর রসের পরিমাণ- ২ টি
প্রস্তুত প্রণালীঃ
প্রথমে আপনাকে একটি পরিষ্কার পাত্র নিতে হবে। এরপর পাত্রে পানি ভালো করে ফুটিয়ে বিট, লেবুর রস, মধু যোগ করুন। সবগুলো উপকরণ একসাথে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। পুরানো হয়ে গেলে চুলা নিভিয়ে ২০ মিনিটের জন্য স্থির ভাবে মিশ্রণটিকে রেখে দিন। এরপর মিশ্রণটি ছেঁকে চা এর মত পরিবেশন করুন।
বিটরুটের গুঁড়ো হিসেবে
বিটরুট চূর্ণ করে মিহি পাউডার অথবা রসের সাথে মিশিয়ে সেবন করতে পারেন। বিটরুটের পাউডার হিসাবে কিভাবে খেতে পারবেন, চলুন সেই পদ্ধতি গুলো আপনাদের জানিয়ে দেই।
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
বিটরুট- ১টি
প্রস্তুত প্রণালীঃ
- প্রথমে বিটরুট পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে এবং সেটাকে পাতলা পাতলা করে স্লাইস করে কেটে নিতে হবে।
- স্লাইস করা বিটরুটের টুকরোগুলো গুলিকে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।
- বিটরুট পরিপূর্ণভাবে শুকিয়ে গেলে আপনি একটা ব্লেন্ডারে গুঁড়ো করে নিন।
- ব্লেন্ডারে গুঁড়ো করা হয়ে গেলে আপনি একটি প্রশ্ন পরিষ্কার বোয়মে ভালো করে সংরক্ষণ করে রেখে দিতে পারেন খেয়াল রাখবেন বোয়মের ভিতরে যেন বাতাস না ঢুকে।
গর্ভাবস্থায় আপনার দ্বিতীয় তৃতীয় মাসিকে বিটরুট খাওয়া খুবই স্বাস্থ্যকর। গর্ভাবস্থা এবং আপনার প্রসবকে উন্নতি করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদানগুলো বিটরুটে রয়েছে। তাইন নিয়মিতভাবে বিটরুট সেবন করার চেষ্টা করবেন।
আরো পড়ুনঃ মিষ্টি কুমড়া বীজের ২০ টি উপকারিতা -অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের বাটার খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভবতী মায়ের জন্য গর্ভাবস্থায় পিনাক বাটার শরীর স্বাস্থ্যের জন্য। নিচে পিনাক বাটারের পুষ্টি উপাদান উল্লেখ করা হলো।
পুষ্টি | উপাদান |
---|---|
ক্যালোরি | ১৯০ |
প্রোটিন | ৮- গ্রাম |
ফ্যাট | ১৬- গ্রাম |
কার্বহাইড্রেট | ৩- গ্রাম |
ফাইবার | ৩-গ্রাম |
পিনাক বাটারে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই উপকারী। গর্ভবতী মায়ের সরীর স্বাস্থ্যের জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করা। পিনাক বাটারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের রনের প্রোটিনের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। পিনাট বাটার একটি ফ্যাট ফুড ও মনোসেচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ ফুড। আর এই ফুড
আপনার হার্টকে সুরক্ষিত রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় পিনাক বাটার খান তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে এবং ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবেন। পিনাক বাটারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি রয়েছে।
বিটরুটের দাম কেমন
বিটরুটের দাম সম্পর্কে আমাদের প্রায় অনেক মানুষেরই অজানা রয়েছে। কেননা আমাদের দেশের সব জায়গাগুলোতে সচরাচার বিটরুট পাওয়া যায় না। আর এ কারণে স্থানভেদে এর দাম বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে যারা বিট রুট চাষ করে থাকেন, তাদের কাছ থেকে বিটরুট যদি নিতে পারেন, তবে অনেকটা কম দামে নিতে পারবেন। যারা বিটরুট চাষাবাদ করে,
আপনি যদি তাদের কাছ থেকে ক্রয় করতে পারেন, তবে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দামে নিতে পারবেন।বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম থেকেও বিটরুট বিক্রি করে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি অনলাইন থেকেও বিটরুট ক্রয় করতে পারেন। আপনি যদি অনলাইন থেকে বিটরুট ক্রয় করেন তাহলে আপনার দাম পড়বে প্রতি কেজি ৩৮০ টাকা করে। এছাড়াও আপনি
বিটরুট ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরেও কিনতে পারবেন। আশাকরি বিটরুটের দাম সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা পেয়েছেন।
বিটরুটের পাউডারের দাম কত
বিট রুটের পাউডারের দাম তুলনামূলকভাবে একটু বেশি হয়। কেননা বিট পাউডার তৈরি করার জন্য অনেকগুলো পরিমাণ বিট একসাথে করে, রোদে শুকিয়ে তারপর পাউডার করতে হয়। যারা কাঁচা বিটরুট খেতে পারেন না, তারা বিটরুটের পাউডার খেতে পারেন। প্রিয় পাঠক চলুন জেনে নেওয়া যাক বিটরুটের পাউডারের দাম কেমন সেটা জানিয়ে দেই।বিটরুটের
পাউডার ২৫০ গ্রাম ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় কিনতে পারবেন। তবে অনেকেই ১০০ গ্রাম বিটরুট পাউডারের দাম ৩০০ টাকা দিয়ে নিয়ে থাকেন। বিটরুট পাওডারের দাম যতই হোকনা কেন। বাজারে প্রতিনিয়তই বিটরুটের চাহিদা বাড়ছে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা- অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
বিটরুটের রসের পুষ্টি উপাদান
বিটরুটের রসে প্রচুর পরিমাণে খনিজ এবং পুষ্টি উপাদান রয়েছে যার ফলে, গর্ভাবস্থায় ডাক্তারগণ বিটরুট খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। প্রিয় পাঠক চলুন প্রতি 100 মিলিমিটার বিটরসে পুষ্টি উপাদান কত সেগুলো জেনে নেই।
বিটরুট রসের | পুষ্টি উপাদান |
---|---|
শক্তি | ৩৮-কিলোক্যলোরি |
কার্বহাইড্রেট | ৮.৭৫ গ্রাম |
চিনি | ৮.৭৫ গ্রাম |
প্রোটিন | ০.৪২ মিলিগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ১৭- মিলিগ্রাম |
আয়রন | ০.৭৫- মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ১৭- মিলিগ্রাম |
পটাশিয়াম | ২৪২- মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম | ৫৪- মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | ১৭-মিলিগ্রাম |
ভিটামিন সি | ২.৫ মিলিগ্রাম |
গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন কতগুলো বিটরুট খাওয়া উচিত
গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে, তবে মাত্রারিক্ত কোনো কিছু খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকার নয়। বিটরুট খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে পরিমিত পরিমাণ খেতে হবে। কখনই অতিরিক্ত পরিমাণ সেবন করা যাবেনা। কোন গর্ভবতী মা গর্ভাবস্থায় দিনে এক থেকে দুইটি বিটরুট রস করে, সালাত করে, সবজি রান্না করে খেতে পারেন।গর্ভবতী মায়ের
গর্ভাবস্থায় দুইটার উপরে কখনো বিটরুট খাওয়া উচিত নয়। বিষয়গুলো সব সময় খেয়াল রাখবেন, কখনোই অতিরিক্ত খাওয়া শরীর স্বাস্থ্যের জন্য সুখকর বয়ে আনে না। বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আপনি যদি নিয়মিতভাবে পরিমাণমত বিটরুট খেতে পারেন, তাহলে আপনার শরীর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই কাজে দিবে। বিশেষকরে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের জন্য বিটরুট খুবই উপকারী।
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার সঠিক সময়
গর্ভাবস্থায় কোন গর্ভবতী মায়ের জন্য পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা অতীব জরুরী। বিটরুটে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে ভরপুর রয়েছে, তাই ডাক্তারগণ বিটরুট খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। গর্ভাবস্থায় বিটরুটের প্রয়োজনীয়তা অতুলনীয়। বিটরুট খাবার ক্ষেত্রে যেটা সাজেস্ট করে থাকেন চিকিৎসকরা
আরো পড়ুনঃ জলপাই ফলের পুষ্টিগুণ- উপকারিতা এবং সতর্কতা জেনে নিন
গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পনার জন্য বিটরুটের রস যেভাবে খাবেন
গর্ভাবস্থায় কোন গর্ভবতী মায়ের জন্য রক্তস্বল্পতায় একটি সাধারন সমস্যা। গর্ভকালীন সময়ে প্রায় সব সকল গর্ভবতী মায়ের রক্তস্বল্পতার সমস্যাগুলো দেখা দেয়। আপনি যদি এই রক্ত থেকে রক্ষা পেতে চান তাহলে বিটরুটের রস আপনার জন্য প্রয়োজনীয়। আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, বিটরুটের রস কিভাবে তৈরি করে খাবেন? তাহলে জেনে নেওয়া যাক
বিটরুটের রস কিভাবে তৈরি করে খাবেন। প্রথমে আপনি বিটরুটগুলো টুকরো টুকরো করে কেটে ব্লেন্ডারে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। আপনি যদি শুধু বিটরুটের রস খেতে না পারেন, তবে লেবু বা কমলার রসের সাথে করে বিটরুটের রস সেবন করতে পারেন। গর্মাভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বিটরুটের রস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কেননা বিটরুটের রস
আয়রনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। তাছাড়া আরো বিভিন্ন উপায়ে আপনি বিটরুট খেতে পারেন যেমন সালাদ হিসাবে, রান্না করে ইত্যাদি।তবে একটি কথা সব সময় খেয়াল রাখবেন যে, আপনার যদি কোন বিশেষ স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকে কিংবা নির্দিষ্ট কোন ঔষুধ সেবন করেন সে ক্ষেত্রে বিটরুট সেবনের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। কেননা বিটরুটে এমন কিছু যৌগ থাকতে পারে যা ঔষুধের সাথে বিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার স্বাস্থ্যঝুঁকি
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাবার অসংখ্য উপকারিতা থাকলেও, তবে গর্ভাবস্থায় এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো প্রিয় পাঠক চলুন জেনে নেওয়া যাক।
- বিটরুটে রয়েছে বিটের নামক এক প্রকার উপাদান আর এর জন্য আপনার বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া এবং অন্যান্য সমস্যা হতে পারে।
- বিটরুটে রয়েছে অক্সালেট। আর এই অক্সালেট আপনার কিডনির স্টোন পাথরের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
- আপনি যদি গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণ বিটরুট সেবন করেন, তাহলে আপনার গলার ভোকাল কর্ডে প্যারালাইসিস হতে পারে।
- বিটরুটে বিদ্যমান রয়েছে নাইট্রেট উপাদান। এই উপাদান আপনার গর্ভকালীন সময়ে ক্লান্তি এবং দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণ বিটরুট খাওয়ার ফলে বিটুরিয়া নামক এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে আপনার প্রস্রাব এবং মলের বর্ণ লাল বর্ণে রূপান্তরিত করে ফেলতে পারে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
উপরোক্ত আলোচনায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, আশা করি বুঝতে পেরেছেন। একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। গর্ভবতী মায়ের জন্য বিটরুট খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যা গর্ভবতী মায়ের জন্য বিশেষ উপকারী।
প্রিয় পাঠক গর্ভবতী মায়ের জন্য বিটরুটের যে উপকারিতা গুলো রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে উপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url