জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা- ভিসা খরচ ও কাজের চাহিদা জানুন

আপনি কি জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিক ভিসার জন্য কি কি লাগে, ভিসা খরচ কত সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটা আপনার জন্য। নিচে জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বিস্তারিতভাবে আলোকপাত করা হলো পড়তে থাকুন।


জার্মানি বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় পরিচ্ছন্ন এবং শক্তিশালী একটি রাষ্ট্র। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর হাজারো শ্রমিক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে জার্মানিতে যাচ্ছে। কেননা কাজের ক্যাটাগরি এবং বেতনের পরিমাণ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি পাওয়া যায়। আপনি যদি জার্মানিতে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে হবে। বর্তমানে জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চালু রয়েছে।

পোস্ট সূচীপত্রঃ জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং খরচ এক নজর জানতে পড়ুন।

আপনি যদি জার্মানিতে যেতে চান, তবে কয়েক ধরনের ভিসা পাবেন। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় জার্মানির ভিসা পাওয়াটা একটু কঠিন এবং খরচের পরিমাণও বেশি। আপনাদের জন্য সুখবর রয়েছে যে, এবছর জার্মানি থেকে কিছু শ্রমিক নিয়োগ করবে। আপনি অল্প খরচে তখন জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় আবেদন করতে পারবেন।আবেদন করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় রয়েছে সেগুলো জেনে নিতে হবে। তাই আজকে আমরা  এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে ।

জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 

আপনি যদি জার্মানিতে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান, তবে আপনার জন্য বর্তমানে সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। কেননা জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চালু আছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে আপনার একটু খরচের পরিমাণ বেশি পড়বে। প্রতি বছর জার্মানি সরকার এটা নির্দিষ্ট সময়ে বিভিন্ন ধরনের কাজের চাহিদা অনুযায়ী, জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট 

ভিসায় বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে। তখন আপনি অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই জার্মানি ওয়ার্ক ভিসার জন্য আবেদন করে নিতে পারবেন। আপনি যদি নিজে আবেদন করতে না পারেন। তবে কোনো ভিসা এজেন্সির সাহায্য নিয়ে জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।  জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সরকারি তুলনায় 


আপনি যদি বেসরকারিভাবে করেন তাহলে খরচের পরিমাণটা বেশি পড়বে। আপনার যদি জার্মানিতে কোন আত্মীয়-স্বজন থাকে বা বন্ধুবান্ধব থাকে তাহলে তাদের মাধ্যমে এজেন্সির সাহায্য নিয়ে অল্প খরচে জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে পারবেন। জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে আপনার কাজের দক্ষতার  সার্টিফিকেট এবং ইংরেজি ভাষার উপরে অবশ্যই 

অভিজ্ঞতা  থাকতে হবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার প্রচুর পরিমাণে চাহিদা রয়েছে। আপনার যদি জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসা থাকে, তাহলে আপনি বিভিন্ন রকমের কাজ পেয়ে যাবেন। জার্মানিতে এক এক কাজের বেতন এক এক রকম নির্ধারিত হয়ে থাকে। তবে জার্মানিতে যেগুলো কোম্পানি রয়েছে, সেই কোম্পানিগুলোর বেতন

অনেক পরিমাণ বেশি। সে ক্ষেত্রে আপনি জার্মানি বিভিন্ন কোম্পানির সার্কুলার দেখে বা সার্কুলারের জন্য অপেক্ষা করে অনলাইনের মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে পারবেন।

জার্মানি কাজের ভিসা 

জার্মানিতে কাজের ভিসায় যাওয়ার জন্য  অনেক মানুষ চেষ্টা করছেন। তবে জার্মানিতে  যাওয়ার জন্য কয়েক ধরনের ভিসা রয়েছে। পৃথীবির অন্যান্য দেশের তুলনায় জার্মানি ভিসা অর্থাৎ জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশ থেকে যারা কাজের জন্য জার্মানি যেতে চাচ্ছে, তাদের অধিকাংশ মানুষই জানে না, জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট 

ভিসার মত কি কি কাজের ভিসা রয়েছে। পাঠক আপনাদের সুবিধার্থে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কি কি কাজের ভিসা রয়েছে। প্রিয় পাঠক সেগুলো ভিসার নাম তুলে ধরার চেষ্টা করব। আশা করি পুরো আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। 

  • ইলেকট্রিশিয়ান ভিসা 
  • ড্রাইভিং ভিসা 
  • হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট ভিসা 
  • ক্লিনার ভিসা 
  • কৃষি ভিসা 
  • ইঞ্জিনিয়ারিং ভিসা ইত্যাদি 

জার্মানির ভিসা খরচ কত জানুন

বর্তমানে অধিকাংশ প্রবাসী জার্মানি ভিসা আবেদন করার আগে, ভিসা করতে কত টাকা খরচ হবে। সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় জার্মানিতে ভিসা খরচের পরিমাণ অনেকটা বেশি।এজন্য আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে জার্মানি সরকারি সার্কুলার এর জন্য অপেক্ষা করা।আপনি যদি সরকারি সার্কুলারের

অপেক্ষা করে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন, তাহলে আপনার জার্মানি যেতে খরচের পরিমাণ কম হবে। আপনি যদি বর্তমানে জার্মানিতে ইলেকট্রিশিয়ান ভিসা, হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট ভিসা, ড্রাইভিং ভিসা, কৃষি ভিসা, ক্লিনার ভিসা ইত্যাদি। এসবের ভিসা নিয়ে যদি জার্মানিতে যেতে চান, তাহলে আপনার প্রায় ৮ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ ৫০ হাজার  টাকার মতো খরচ পড়বে। তবে সময়ের ব্যবধানে ১ লক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেশিও লাগতে পারে।

জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কি কি লাগে জানুন 

জার্মানিতে যদি আপনি কাজের জন্য যেতে চান তবে অবশ্যই আপনার দরকার একটি ভিসা। আপনি যদি ভিসা পেতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে আবেদন করতে হবে। "জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা" আবেদন করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র লাগবে যেগুলো ভিসা আবেদন করার সময় প্রদান করতে হয়।  অধিকাংশ  মানুষই জানে না  যে জার্মানি ওয়ার্ক 

পারমিট ভিসা করার জন্য কি কি  কাগজপত্রগুলো লাগে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকে আমরা জানাবো জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে নিচে বিস্তারিত দেখুন। 

  • বাংলাদেশী বৈধ একটি পাসপোর্ট 
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি 
  • আপনার পাসপোর্ট সাইজের কয়েকটি রঙ্গিন ছবি 
  • আপনি যে কোম্পানিতে যাবেন ওই কোম্পানির অনলাইন ফটোকপি 
  • আপনার জীবন বৃত্তান্তের কাগজপত্র 
  • করোনা ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট 
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট 
  • পুলিশ ক্লিয়ার এন্ড সার্টিফিকেট 
  • সর্বনিম্ন এক বছরে একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে 

জার্মানিতে কোন কাজগুলো চাহিদা বেশি জানুন

জামার্নিতে অনেক ধরনের কাজ রয়েছে। তবে এদের মধ্যে যে কাজগুলো চাহিদা সবচেয়ে বেশি রয়েছে সেগুলো আমরা আপনাদেরকে জানাবো। বাঙালি প্রবাসী হিসেবে এই কাজগুলো যদি আপনি শিখে যেতে পারেন, তাহলে খুব সহজেই আপনি জার্মানিতে কাজ পাবেন। জার্মানিতে যাওয়ার আগে অবশ্যই কাজের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে যাবেন।কারণ দেশটিতে দক্ষ

এবং অভিজ্ঞ লোকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। ভাই আপনি যে কাজের উপরে যাবেন সেই কাজের উপর দক্ষতা অর্জন করুন। জার্মানিতে যে কাজগুলোর সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে সেই কাজগুলো তাদের সুবিধার্থে  নিচে উল্লেখ করা হলো। 

  • ডাক্তার 
  • নার্স 
  • ক্লিনার 
  • ফুড সার্ভিস 
  • ইলেকট্রিশিয়ান 
  • হোটেল বয় 
  • ড্রাইভিং 
  • ফুড ডেলিভারি ম্যান 
  • মেকানিক 
  • প্লাম্বার 
  • কনস্ট্রাকশন শ্রমিক 
  • ফ্যাক্টরি ওয়ার্কার 
  • সিকিউরিটি গার্ড  ইত্যাদি

জার্মানিতে সর্বনিম্ন বেতন কত 

জার্মানিতে সর্বনিম্ন জাতীয় একটি বেতন কাঠামো রয়েছে।  জার্মানিতে প্রতি ঘন্টা কাজ অনুযায়ী বেতন নির্ধারণ করা হয়। দেশটিতে আপনাকে প্রতি সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা ডিউটি করতে হবে এটাই হল আপনার বেসিক ডিউটি। আপনি জার্মানিতে প্রতি ঘন্টায় বেতন পাবেন প্রায় ১২ ইউরো। এই ইউরো যদি টাকায় রূপান্তর করা যায়,  তাহলে  বাংলা   টাকায় হবে টাকা প্রায় 

১,৪৫০ টাকা। আপনি যদি প্রতি মাসে বেসিক ডিউটিগুলো করেন তবে আপনার সর্বনিম্ন বেতন দাঁড়াবে ২ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা। সর্বনিম্ন এই বেতন কাঠামোটি দেশটির সকল কাজের জন্যই প্রযোজ্য। প্রতিটা শ্রমিকের মাসিক গড় বেতন ৩,৫০০ থেকে ৩,৮০০ ইউরো। এই ইউরো যদি বাংলা টাকায় কনভার্ট করা যায়। তাহলে বাংলা ঢাকায় দাঁড়াবে প্রায়  ৪,০৯,০০০ টাকা থেকে ৪,৪৩,০০০ টাকা।

জার্মানিতে যেতে কত টাকা লাগে 

জার্মানিতে যেতে কত টাকা লাগবে সেটা নির্ভর করবে আপনার ভিসা ক্যাটাগরির উপরে। আপনি যদি কোন এজেন্সির সাহায্য নিয়ে জার্মানিতে যেতে চান, তবে আপনার খরচ বেশি পড়বে। আপনি যদি নিজে আবেদন করতে পারেন তাহলে খরচ কম হবে। কাজের ভিসা নিয়ে গেলে অন্যান্য দেশের তুলনায় জার্মানি যেতে বেশি টাকা লাগে। তবে আপনি যদি স্টুডেন্ট কিংবা টুরিস্ট ভিসায় যেতে চান তাহলে কম খরচে যেতে পারবেন।

ক্রমিক নং ভিসা ক্যাটাগরি ভিসা খরচ (টাকা)
০১ স্টুডেন্ট ভিসা ৫ থেকে ৬ লক্ষ
০২ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ১২ থেক ১৫ লক্ষ
০৩ টুরিস্ট ভিসা ৪ থেকে ৫ লক্

বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে কত সময় লাগে 

জার্মানিতে ভিসা প্রসেসিং করতে আনুমানিক প্রায় দুই থেকে তিন মাস সময় লেগে থাকে। বাংলাদেশ থেকে জার্মানি দূরত্ব প্রায় ৭,২৮৭ কিলোমিটার। এই দুরত্ব অতিক্রম করতে চাইলে  অবশ্যই আপনাকে বিমানে যেতে হবে। অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে যে, বাংলাদেশের জার্মানি যেতে কত সময় লাগবে? তাদের উদ্দেশ্য হলো -বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে প্রায় ১৮ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। তবে আপনার বিমানের ফ্লাইটের উপর নির্ভর করে সময় কম বেশি হতে পারে।

জার্মানির ভিসা পাওয়ার উপায় জানুন 

জার্মানিতে কাজের জন্য যারা যেতে চাচ্ছেন, তাদের অনেকেরই জার্মানির ভিসা পাওয়ার উপায়গুলো জানা থাকে না।  আপনি দুটো উপায়ে জার্মানির ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

  • সরকারি  
  • বেসরকারিভাবে

আপনি যদি বেসরকারিভাবে জার্মানি ভিসা করতে চান, তবে আপনার খরচের পরিমাণ বেশি পড়বে। আর যদি আপনি সরকারি সার্কুলার দেখে ভিসার জন্য আবেদন করেন, তাহলে অল্প টাকায় আপনি ভিসা করে নিতে পারবেন। প্রতিবছর এই জার্মানি সরকার নির্দিষ্ট সময়ে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। সেই সময়টাতে আপনি অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন ফরম সংগ্রহ 

করে, যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো পূরণ করে, কোনো এজেন্সি সাহায্য নিয়ে ভিসার কাজ সম্পূর্ণ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ভিসা প্রসেসিং কাজ শেষ হলে আপনি ভিসা ফি পরিশোধ করলে, সহজেই ভিসা পেয়ে যাবেন। 

লেখকের শেষ মন্তব্য

প্রিয় পাঠক উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনারা জানতে পারলেন যে, জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, জার্মানি ভিসা খরচ, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে কি কি লাগে, কাজের ভিসা, জার্মানির ভিসা পাওয়ার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে আশা করি বুঝতে পেরেছেন। জার্মানি বর্তমানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক উন্নত  এজন্য বেশিরভাগ  শ্রমিক এখন জার্মানিতে যেতে 

চায়। কিন্তু বেশিরভাগ শ্রমিক জার্মানিতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে অনেকেই জানে না। সেজন্য জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য উপরের আলোচনায় তুলে ধরেছি। আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে সহজেই বুঝতে পারবেন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করবেন। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url