গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন

গর্ভাবস্থায় আপনি কি পালং শাকের উপকারিতা ও পুষ্টিগণ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তবে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আজকে আপনাদের জানাবো, গর্ভাবস্থায় পালং শাকের উপকারিতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।


গর্ভাবস্থায় খাবারের যত্ন নেওয়া প্রতিটি নারীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আপনি গর্ভবতী অবস্থায় যাই খাবেন না কেন, সেগুলো আপনার অনাগত শিশুর উপর প্রভাব ফেলবে। এজন্য নারীরা অনেক সময় খাদদ্রব্য নিয়ে বিভ্রান্তিতে থাকেন। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারীদের জন্য পালং শাক খাওয়া কতটা উপকারী সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না তাই আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব।

পোস্ট সূচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় পালং শাকের উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ জানতে পড়ুন।    

গর্ভাবস্থায় সবুজ শাকসবজির মধ্যে পালং শাক অন্তর্ভুক্ত করা যাবে কিনা, এই বিষয় নিয়ে অনেকের সন্দেহ থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়া গর্ভবতী নারীর জন্য কতটা নিরাপদ, সে সম্পর্কে আপনাদের জানানোর জন্য চেষ্টা করবো। গর্ভাবস্থায় কিভাবে পালং শাক খেলে উপকার আসতে পারে এবং কি ক্ষতি হতে পারে সে সম্পর্কে আর্টিকেলটির মাধ্যমে  আপনাদের বিস্তারিত জানাবো পড়তে থাকুন।  

গর্ভাবস্থায় পালং শাক 

গর্ভাবস্থায় সুষম খাদ্য যে কোনো গর্ভবতী নারী এবং ভ্রুণ  উভয়ের জন্য অপরিহার্য। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের পালং শাক খাওয়ার প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। কেননা পালং শাকে রয়েছে  প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। পালং শাকের রয়েছে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, আয়রন এবং ফোলেট। যা গর্ভাবস্থায় একজন নারীর জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।  পালং শাকে থাকা  ফোলেট আপনার 

গর্ভাবস্থায় ঘটে যাওয়া অনাগত শিশুর জন্মগত ত্রুটিগুলো থেকে রক্ষা করতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে। বিশেষ করে, এই কারণেই গর্ভাবস্থায় পালন শাক নিরাপদ এবং পুষ্টিকর বলে বিবেচিত হয়ে থাকে। আপনি যদি অত্যাধিক গ্রহণ করেন তবে সেক্ষেত্রে অসুবিধাও হতে পারে। আমরা আর্টিকেলের শেষের অংশে বিস্তারিতভাবে জানাবো সাথেই থাকুন। 

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়া কতটা নিরাপদ? 

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। এজন্য সব সময় আপনি পরিমিতভাবে পালং শাক খাওয়ার চেষ্টা করবেন। গর্ভাবস্থায় আপনি এক থেকে দেড় কাপ পালং শাক খাওয়ার চেষ্টা করবেন। গর্অভাবস্থায় গর্ভবতী নারীর যদি স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যা বা গর্ভধারণ সংক্রান্ত জটিলতা থাকে তাহলে পালং শাক খাওয়া কতটা পরিমাণ নিরাপদ, সেগুলো চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে খাওয়ায় জরুরী। 

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়া উপযুক্ত সময় কখন 

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার যদিও সঠিক সময় নির্দিষ্ট করা হয়নি। তবে পালন থাকে প্রচুর পরিমাণে ফোলেট থাকায় পুষ্টি গবেষকরা পালং শাক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রিমাসিকে পালং শাক খেলে আপনার কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকির সম্ভাবনা থেকে থাকে। এই কারণে গর্ভাবস্থায় পালং শাক সঠিক পরিমাণ খেতে হবে। পালং শাক খাওয়ার পরে প্রচুর পরিমাণে আপনাকে পানি পান করতে হবে। আশাকরি পালং শাক খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন বুঝতে পেরেছেন। 

পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা জানুন 

রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করেঃ পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। পালং শাকে যে আয়রন রয়েছে তা লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়াতে কাজ করে থাকে। এবং এর সাহায্যে গর্ভবতী মহিলার রক্তশূন্যতার ঝুঁকি এড়িয়ে থাকে। তাই গর্ভবস্থায় আপনার খাদ্য তালিকাতে নিয়মিত পালং শাক রাখুন।


হাড় মজবুট করার জন্যঃ পালং শাক ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হওয়ায় হাড় কে মজবুত করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ফসফরাস যা হাড়ের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। আপনি হাড়ের মজবুতের জন্য পালং শাকের জুস খেতে পারেন।

প্রিম্যাচিউর ডেলিভারিঃ অনেক মহিলাদের গর্ভাবস্থায় অকাল প্রসবের ঝুঁকি থাকে। এই ঝুকি থেকে আয়রন সমৃদ্ধ শাকসবজি পালন শাক বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত পরিমিতভাবে পালং শাক খাওয়া উচিত। তাহলে এ জাতীয় সমস্যা গুলো থেকে আশা করি পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। 

দুধের গুণগত মান উন্নত করেঃ পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানগুলো রয়েছে। যা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় কোন মহিলার যদি নিয়মিতভাবে পালং শাক খায়, তবে মায়ের দুধের গুণগত মান উন্নত হয়ে থাকে। দুধের গুণগত মান উন্নতর জন্য প্রয়োজন ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, আইরন যা প্রচুর পরিমাণে পালং শাকে রয়েছে। 

নিউরাল টিউব ডিফেক্টঃ পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড রয়েছে যা  ভ্রূণ কে নিউরন টিউব ডিফেক্ট ত্রুটি থেকে রক্ষা করে থাকে। নিউরন টিউব ডিফেক্টের কারণে শিশুদের মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ডের কর্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিতভাবে খাবারের তালিকাতে রাখুন পালং শাক। 

গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবারের তালিকা 

  • গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের শাক খেতে পারবেন 
  • গর্ভাবস্থায় বাঁধাকপি খেতে পারবেন 
  • গর্ভাবস্থায় ফুলকপি খেতে পারবেন 
  • গর্ভাবস্থায় করলা খেতে পারবেন 
  • গর্ভাবস্থায় আমরা খেতে পারবেন 
  • গর্ভাবস্থায় কমলা খেতে পারবেন 
  • গর্ভাবস্থায় স্ট্রবেরি খেতে পারবেন 
  • গর্ভাবস্থায় চেরি ফল খেতে পারবেন 
  • গর্ভাবস্থায় টমেটো খেতে পারবেন 
  • গর্ভাবস্থায় পাকা পেঁপে খেতে পারবেন 
  • গর্ভাবস্থায় দুধ খেতে পারবে 
  • গর্ভাবস্থায় ডিম খেতে পারবেন 
  • গরুর মাংস (তবে অল্পে পরিমাণ) 
  • গর্ভাবস্থায়  ররই খেতে পারেন (তবে সীমিত) 
  • গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খেতে পারেন (তবে সীমিত)

গর্ভাবস্থায় কচুর শাকের উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় কচু শাকের প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের প্রয়োজন যা কচুর শাকে রয়েছে। গর্ভবতী মায়ের অনেক সময় দেখা যায়, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের অভাবে, নানান ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। কচু শাক গর্ভবতী মায়ের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের ঘাটতি গুলো পূরণ করে থাকে। নিচে কচু শাকের উপকারিতা গুলো আলোচনা করা হলো। 

  • কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে যা চোখে দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। 
  • কোন গর্ভবতী মহিলা যদি নিয়মিত কচু শাক খায়, তাহলে ভিটামিন এ ঘাটতি পূরণ করবে এবং নবাগত শিশুর চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পাবে। 
  • কত শাক খাওয়ার বলে আপনার রক্ত পরিষ্কার থাকবে, এবং রক্ত উৎপাদন করতে সাহায্য করবে। 
  • গর্ভাবস্থায় মহিলাদের নানান ধরনের বদহজমের সমস্যা দেখা দেয়, তাই নিয়মিত কচু শাক খাওয়ার ফলে এ সমস্যাগুলো দূর হয়ে যায়। 
  • শিশু জন্মের ছয় মাস পর্যন্ত মাতৃদুগ্ধ পান করাতে হয়। তাই কোন গর্ভবতী মহিলা যদি নিয়মিতভাবে কচু শাক খায় শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পাবে। 
  • গর্ভবতী মায়ের শরীরে প্রোটিন এবং ভিটামিনের অভাব পূরণ করতে কচু শাকের বিকল্প নেই। 

গর্ভাবস্থায় সকালের নাস্তাতে যেসব খাবার খাবেন

  • কাঠবাদাম 
  • মিষ্টি কুমড়ার বীজ 
  • চিনা বাদাম 
  • ওয়ালনাট
  • পাকা কলা 
  • কাজুবাদাম 
  • কুসুম গরম পানি ইত্যাদি 

গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার প্রচুর পরিমাণে উপকারিতা রয়েছে। কেননা লাল শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি  উপাদান। এই পুষ্টি উপাদান একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে অবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতাগুলো আলোচনা করা হলো। 

  • লাল শাকে প্রচুর পরিমানে আয়রন থাকার কারণে রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে। 
  • গর্ভবতী মায়ের যেকোনো অবস্থায় রক্ত কমে যেতে পারে তাই লাল শাক খাওয়ার ফলে রক্ত উৎপাদনের জন্য বিশেষভাবে কাজ করে।
  • লাল শাক খাওয়ার ফলে একজন গর্ভবতী মায়ের অনাগত শিশুর মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ড সঠিকভাবে বিকাশ করতে সাহায্য করে থাকে। 
  • লাল শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা আয়রন শোষণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। 
  • লাল শাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে, পেটকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে এবং গর্ভবতী মায়ের শরীরে ফ্রী Radical গুলির হাত থেকে রক্ষা করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। 
  • লাল শাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যা গর্ভবতী মায়ের, শিশুর ভালোমতো স্বাস্থ্য গঠনে এবং হাড় গঠনে উপকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। 

গর্ভাবস্থায় খালি পেটে বমি ভাব থকলে যেসব খাবার খাবেন 

  • কুসুম গরম পানি 
  • শুকনা বিস্কুট 
  • শুকনা মুড়ি 
  • পাকা কলা 
  • তরমুজ 
  • আপেল 
  • মিষ্টি দই 
  • রুটি ও সবজি 
  • চিরা
  • কাজুবাদাম ইত্যাদি 

পালং শাকের পুষ্টি উপাদান

পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে, যেগুলো সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই জানেনা। আজকে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে পালং শাকের পুষ্টিগণ সম্পর্কে আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। পালং শাকের পুষ্টিগুণ জানতে নিচের তালিকাতে চোখ রাখুন। 

পুষ্টি উপাদান ১০০ গ্রাম পরিমাণ
পানি ৯১.৪০ গ্রাম
শক্তি ২৩ কিলোক্যালরি
প্রোটিন ২.৮৬ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট ৩.৬৩ গ্রাম
ফাইবার ২২ গ্রাম
চিনি ০.৪২ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ৯৯ মিলিগ্রাম
আয়রন ২.৭১ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ৭৯ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ৪৯ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ৫.৫৮ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ৭৯ মিলিগ্রাম
দস্তা ০.৫৩ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ২.৮১ মিলিগ্রাম
ফোলেট ডিএই ১.৯৪ মিলিগ্রাম
ভিটামিন এ ৪৬৯ মিলিগ্রাম
ভিটামিন ই ২.০৩ মিলিগ্রাম
ভিটামিন কে ৪.৮২ মিলিগ্রাম

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস রোগীদের সকালের খাবারের তালিতা

  • পালং শাক 
  • লাল শাক 
  • ডাটা শাক 
  • সবুজ শাক 
  • আলুসিদ্ধ 
  • বাঁধাকপি 
  • ফুলকপি 
  • গাজর 
  • কুমড়া 
  • পটল 
  • পুঁই শাক
  • পাট শাক
  •  কচু শাক 
  • কচুর লতি
  • করলা ভাজি 
  • আনাজি কলা 
  • কলার ভাদাল
  • কাচা পেঁপে ইত্যাদি 

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার অপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়া যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। সব সময় মনে রাখতে হবে, কোনো খাবার প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে যেসব অপকারিতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে আপনাদের সুবিধার্থে নিচে আলোচনা করা হলো। বিস্তারিত নিচে পড়তে থাকুন।


কিডনিতে পাথরঃ পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে পিউরিনস থাকার কারণে কিডনিতে পাথর হবে এটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া অক্সালেট জাতীয় খাবারের মধ্যে পালং শাক একটি। আর এর জন্য গর্ভাবস্থায় মহিলাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে, গর্ভাবস্থায় পালং শাকে ক্যালসিয়াম,ফসফেট থাকায় অন্যদের তুলনায় ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত হয়। গর্ভাবস্থায় নারীদের দ্বতীয় এবং তৃতীয় ত্রিমাসিকের সময় এই ঝুঁকিটা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় পালং শাক খেতে হবে।

ঘন ঘন প্রস্রাবঃ একটি মূত্রবর্ধক খাবার হলো পালং শাক। পালং শাক খাওয়ার ফলে আপনার ঘনঘন প্রস্রাব হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় পরিমিতভাবে পালন শাক খেতে হবে যতটুকু না খেলেই নয়। কেননা অতিরিক্ত ঘনঘন প্রস্রাব গর্ভবতী মায়ের জন্য শুভকর নয়।

সন্তান জন্মদানের সমস্যাঃ পালং শাকের রয়েছে স্যালিসিলেট উপাদান যা গর্ভাবস্থায় শেষ মাসগুলোতে যদি এই উপাদানের পরিমাণ বেশি হয় তবে ভ্রূণের অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় পালং শাক খেতে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই উচিত। 

ডায়রিয়াঃ আপনি যদি পালং শাক প্রচুর পরিমাণে খেয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডাইরিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কেননা পালং শাকের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যার কারণে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য, ঘন ঘন প্রস্রাব এমন কি পেট ব্যথায় সমস্যা আক্রান্ত হতে পারে। সেজন্য গর্ভাবস্থায় পালং শাকের মত ফাইবার জাতীয় খাবার কম বা না খাওয়াই উচিত।

গ্যাস এবং অম্বলঃ গর্ভাবস্থায় কিছু কিছু মহিলার পালং শাক খেলে গ্যাস এবং অম্বলের দেখা দেয় এজন্য পালং শাক খাওয়ার পরিমাণ কমানো ভালো হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। 

পালং শাক খাবার আগে সতর্কতা

  • পালং শাক কেনার সময় খেয়াল রাখবেন পালন শাকের রং স্বাভাবিকভাবেই সবুজ আছে কিনা। 
  • পালং শাক যদি খারাপ গন্ধ হয়, তবে এটি কখনো কিনবেন না। 
  • পালং শাক রান্না করার আগে ভালো করে ধরে ধুয়ে নিতে হবে কেননা এতে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। 

গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খাওয়া ক্ষতিকর 

  • গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল জাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা 
  • তেল জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া যাবেনা 
  • বেশি পেঁয়াজ খাওয়া যাবেনা 
  • গর্ভাবস্থায় মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে 
  • কাঁচা পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন 
  • প্রথম তিন মাস গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া যাবেনা 
  • আঙ্গুর খাওয়া যাবেনা 
  • গর্ভাবস্থায় গাজর খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে
  • গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে 
  • তরমুজ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন 
  • ডায়াবেটিকস থাকলে গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

লেখকের শেষ মন্তব্য 

উপরোক্ত আলোচনার  মাধ্যমে আপনারা জানতে পারলেন যে, গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ, পালং শাক কেন খাবেন, কখন খাওয়া উপযুক্ত সময়, পালং শাক খাওয়ার সতর্কতা, গর্ভাবস্থায় কোন কোন খাওয়া উচিত ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচিত হয়েছে। আশা করি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। গর্ভাবস্থায় 

পালং শাক খাওয়ার বিকল্প নেই, তবে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত নয়। কেননা পালং শাকের যেমন উপকারিত রয়েছে তেমনি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াই উচিত। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন। 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url