কালোজিরার ১৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়মসমূহ জানুন
কালোজিরা আমাদের কাছে পরিচিত শব্দ হলেও এর বহু স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং আশ্চর্য কিছু গুণ রয়েছে কিন্তু সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা, উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
পোস্ট সূচীপত্রঃ কালোজিরা স্বাস্থ্য উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে পড়ুন।
- কালোজিরা খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা
- খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
- কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
- কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
- প্রতিদিন রাতে কালোজিরা খেলে কি হয়
- কালোজিরা খেলে কি হয়
- কালোজিরা তেলের উপকারিতা
- কালোজিরা খাওয়ার অপকারিতা - কালোজিরা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
- লেখকের শেষ মন্তব্য
কালোজিরা শুধুমাত্র স্বাস্থ্যর জন্য না, চুল ও ত্বকের জন্যও অনেক উপকারী। কালোজিরার বিভিন্ন নাম রয়েছে সেগুলো অনেকেই জানেন না- কালো কেওড়া, রোমান ধনে, নিজেলা, ফিনেল ফ্লাওয়ার, হাব্বাটুসউডা কালঞ্জি ইত্যাদি। কালোজিরা কে যে নামে ডাকা হোক না কেন এর উপকারিতা অপরিসীম। কালোজিরা শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলো নিধন করে থাকে। তাছাড়া কালোজিরা রান্নাঘরেই থেকে থাকে যা খাবারকে সুবাসিত করে। নিম্নে কালোজিরার উপকারিতা গুলো উল্লেখ করা হলো পড়ুন।
কালোজিরা খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা
কালোজিরা একটি পরিচিত শব্দ হলেও এতে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে কিন্তু সেই সম্পর্কে অনেকেই ধারণা রাখেন না শুধু খেয়ে যান। তাই আপনাদের কথা চিন্তা করে কালোজিরা খেলে কি কি উপকারিতা হতে পারে সে সম্পর্কে এ পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো।
স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে কালোজিরা
স্বরণশক্তি বৃদ্ধি করতে কালোজিরার কোন বিকল্প নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন কালোজিরা খেলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। আপনি কি নিয়মিত ভাবে এক চামচ পুদিনা পাতার রস বা কমলার রস অথবা এক কাপ চায়ের সাথে কালোজিরা তেল মিশিয়ে, দিনে তিনবার সেবন করেন তবে আপনার দুশ্চিন্তা দূর হবে। কালোজিরা আপনার মেধা
বিকাশের ক্ষেত্রে কাজ করবে দ্বিগুণ হারে কেননা কালোজিরা নিজেই একটি অ্যান্টিবায়োটিক। কালোজিরা মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি মাধ্যমে একজন মানুষের স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। আপনি যদি নিয়মিতভাবে কালোজিরা খেতে পারেন। তবে দেহের রক্ত সঞ্চালন ঠিক মত হবে। এছাড়া মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। কালোজিরা স্মরণশক্তিকে বৃদ্ধি করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
কালোজিরা মায়ের জন্য উপকারী
যেসব মা তার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন তাদের জন্য কালোজিরা একে উপকারী খাবার। সেই সাথে শিশুর দৈহিক এবং মানসিক বৃদ্ধিতেও কালোজিরা বিশেষভাবে সাহায্য করে। তাই মায়েদের খাবারের তালিকায় নিয়মিতভাবে কালোজিরা রাখুন। কেননা মায়েদের জন্য কালোজিরা খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। কালোজিরাতে যে উপকারিতা গুলো রয়েছে সেগুলো মায়েদের জন্য বিশেষ উপকারী।
লিভারের সমস্যা দূরে রাখতে কালোজিরা
লিভার কিংবা জন্ডিসের সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণ করা ভীষণ জরুরী। আর এইসব কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে একমাত্র কালোজিরা। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিতভাবে কালোজিরা খেতে পারেন, তাহলে জন্ডিস থেকে দূরে থাকা সম্ভব হবে। কালোজিরা লিভার ভালো রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া যারা শ্বাসকষ্ট হাঁপানি রোগে ভুগছেন, তাদের জন্য কালোজিরা উপকারী হতে পারে। পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং বাতের ব্যথা দূর করতেও কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সর্দি সারাতে কালোজিরা
সর্দি সারাতে এক চামচ কালোজিরা তেল এবং সমপরিমাণ মধু কিংবা এক চাপ রং চায়ের সাথে মিশিয়ে, আপনি যদি প্রতিদিন সেবন এবং মাথায় ও ঘাড়ে না সারা পর্যন্ত মালিশ করেন, তাহলে ভালো উপকার পাবেন। এছাড়া জ্বর, ব্যথা, সর্দি এবং কাশি দূর করতে, এক চা-চামচ কালোজিরা সঙ্গে তিনটা চামচ মধু ও ২ চা- চামচ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খেতে
পারেন।যদি সর্দি বসে যায় তবে কালোজিরা বেটে কপালে দিন এবং কালোজিরা বেটে পরিষ্কার পাতলা কাপড়ের ভিতর নিয়ে শুকলে দ্রুত উপকার পাবেন। আপনার বুকে এবং পিঠে কালোজিরা তেল গুলো মালিশ করুন দেখবেন আপনি আরোগ্য লাভ করেছেন।
হজমের সমস্যা দূর করতে কালোজিরা
হজমের সমস্যা নিয়ে যারা ভুগছেন আপনারা আজই খাবারের তালিকাতে নিয়মিতভাবে যোগ করুন কালোজিরা। আপনি যদি কালোজিরা বেটে খেতে পারেন তাহলে হজমের সমস্যা সহজেই দূর হয়ে যাবে। আপনারা যারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিতভাবে খেতে পারেন কালোজিরা। আশা করি ভালো উপকার পাবেন। পেট ফাঁপা এবং পেট খারাপের ক্ষেত্রে কালোজিরা বিশেষ উপকারী। তাছাড়া নিয়মিতভাবে যদি আপনি কালোজিরা খেতে পারেন আপনার ত্বক ভালো রাখতে বিশেষভাবে কাজ করবে।
যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে কালোজিরা
যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কালোজিরা তেল ব্যবহার করতে পারেন। কালোজিরা দেহের শুক্রানু সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে পুরুষত্বহীনতা থেকে সহজেই মুক্তি লাভ করা যায়। জায়তুনের তেল, কালোজিরা তেল, আপনি যদি মধুর সাথে একত্রে মিশিয়ে ৩/৪ সপ্তাহ খেতে পারেন। তাহলে যৌন এবং আপনার শরীর স্বাস্থ্যর জন্য দারুন কাজে দেবে।
হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ
হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টে যারা ভুগছেন, আপনারা প্রতিদিন খাবারের তালিকাতে রাখতে পারেন কালোজিরার ভর্তা। কালোজিরার ভর্তা শ্বাসকষ্ট থেকে প্রতিরোধ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। আপনি যদি হাঁপানি প্রতিরোধ করতে চান, তাহলে কালোজিরা তেল, এক কাপ দুধ এবং এককাপ চায়ের সাথে যদি খেতে পারেন তাহলে ভালো উপকার পাবেন।
স্বাস্থ্যের সার্বিক উন্নতিতে কালোজিরা
আপনার স্বাস্থ্যের সার্বিক উন্নতিতে যেমন: আপনার দৃষ্টি শক্তি উন্নত করা, দাঁতের ব্যথা দূর করা, অনিয়মিত মাসিক নিয়ন্ত্রণ, পেটের ব্যথা দূর করা, জন্ডিসহ লিভার সমস্যা দূর করা ইত্যাদি যাবতীয় রোগের জন্য কালোজিরা মহাঔষুধ হিসাবে কাজ করে। আশা করি আপনারা কালোজিরার উপকারিতা গুলো জানতে পারলেন। আপনি নিয়মিত ভাবে কালোজিরা সেবন করার চেষ্টা করুন এবং উপকারীতা গুলো নিন।
ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে কালোজিরা
কালোজিরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনি যদি নিয়মিতভাবে এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা, এক গ্লাস পানি সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খান। দেখবেন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এছাড়া আপনি যদি একা চা-চামচ কালোজিরা তেল, এক কাপ রং চার সাথে মিশিয়ে দৈনিক দুইবার করে সেবন করেন। তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ১০০ ভাগ উপকারিতা পাবেন।
চর্মরোগ প্রতিরোধে কালোজিরা
যাদের চর্মরোগ রয়েছে আপনারা আপনার আক্রান্ত স্থানে কালোজিরা তেল মালিশ করতে পারেন। তাহলে ভালো উপকার পাবেন। এছাড়াও চর্ম রোগ প্রতিরোধ করার জন্য হলুদের সাথে কালোজিরা তেল ও মধু মিশিয়ে আপনি দুই তিন সপ্তাহ খেতে পারেন। দেখবেন আপনার চরম রোগ প্রতিরোধ হয়ে গেছে।
মাথা ব্যাথা দূর করতে কালোজিরা
আপনি যদি মাঝে মাঝেই আপনার মাথা ব্যথায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিতভাবে কালোজিরা ব্যবহার করতে পারেন। কালোজিরার তেল নিয়মিত ব্যবহার করলে মাথা ব্যাথা নিয়ন্ত্রণে। মাথা ব্যথা নিরাময়ে ১/২ চা চামচ কালোজিরা তেল আপনার মাথায় ভালোভাবে লাগাতে পারেন। এছাড়া এক চা চামচ কালোজিরা তেল এবং সমপরিমাণ মধু আপনি যদি দিনে তিনবার করে এবং ২/৩ সপ্তাহ সেব্য । তাহলে আপনার মাথা ব্যাথা নিরাময় হয়ে যাবে।
বাতের ব্যথা দূরীকরণ
আপনি যদি বাতের ব্যথা দূর করতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে আক্রান্ত স্থান ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে, তারপর মালিশ করতে হবে। এক চা- চামচ কাঁচা হলুদের রসের সাথে সমপরিমাণ কালোজিরা তেল এবং মধু এক কাপ রং চায়ের সাথে প্রতিদিন তিনবার এবং আপনাকে দুই তিন সপ্তাহ সেবন করতে হবে। তাহলে আশা করি আপনার বাতের ব্যথা দূর হয়ে যাবে।
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কালোজিরা
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আপনি নিয়মিতভাবে খেতে পারেন কালোজিরা। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে মধুসহ কালোজিরা খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং সকল মহামারী রোগ হতে রক্ষা পাবেন।তাই স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিতভাবে খান কালোজিরা।
চুল পড়া কমানো
কালোজিরা তেলে এত পরিমাণ উপাদান রয়েছে যে চুলের গোড়াকে মজবুত করে এবং চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।নিয়মিত যদি কালোজিরার তেল ব্যবহার করেন কি করে চুল পড়া অনেক টাকা কমে যাবে। এছাড়া আপনি যদি কালোজিরে চিবিয়ে খান তবে আপনার স্মৃতিশক্তিকে অনেক উন্নত করবে।
সুন্দর ঘুমের জন্য কালোজিরা
আপনি যদি সুন্দর একটি ঘুম দিতে চান, তবে অবশ্যই আপনার মাথায় ব্যবহার করতে হবে কালোজিরা তেল। ঘুমের সমস্যা রয়েছে তারা কালোজিরা তেল মাথায় ব্যবহার করতে পারেন এবং নিয়মিতভাবে কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
সতর্কতাঃ গর্ভাবস্থায় এবং দুই বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের কালোজিরা তেল সেবন করা কখনো উচিত নয়। তবে আপনি বাহ্যিকভাবে ব্যবহার করতে পারবেন।
খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
আপনি নিয়মিতভাবে খালি পেটে কালোজিরা খেলে যে উপকারিতা গুলো পাবেন সেগুলো আপনাদের সুবিধার্থে নিচে দেওয়া হল বিস্তারিত জেনে নিন।
- আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেতে পারেন। তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে আরো শক্তিশালী করে তোলে।
- বাতের ব্যথায় স্বস্তি দিতে কালোজিরা ভূমিকা অপরিসীম। তাই প্রতিদিন সকালে খান কালোজিরা।
- সর্দি-কাশিতে আরাম পেতে কালোজিরা অতি প্রয়োজনীয় উপাদান।
- সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে স্বরণ শক্তি বৃদ্ধি পায়।
- চর্মরোগ সমস্যায় আপনি নিয়মমিত খান কালোজিরা।
- আপনার গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যা সমাধান আপনাদের প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন কালোজিরা।
- কালোজিরা কোলেস্টরেলের মাত্রা এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে
- হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
- কালোজিরা খনিজ ভিটামিন এবং ফ্যাটি এসিড এর প্রয়োজনে একটি উৎস। তাই প্রতিদিন সকালে নিয়মিতভাবে খান কালোজিরা।
- আপনার জৈবশক্তি বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে খালি পেটে খান কালোজিরা।
- আপনার অস্বাভাবিক ওজন ফিরিয়ে আনতে প্রতিদিন সকালে খান কালোজিরা।
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
কালোজিরা প্রতিটি মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। এর উপকারিতার কথা, বলে শেষ করা যাবে না। কালোজিরার গুঁড়ো থেকে শুরু করে কালোজিরার তেল প্রতিটি মানুষের জন্য খুবই উপকারী। আপনি কালোজিরা ভেজে অথবা কাঁচা যে ভাবেই ইচ্ছে সেভাবেই খেতে পারবেন। আমরা আপনাদের কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়া সম্পর্কে জানাবো।
- আপনি যদি কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে শরীরের পুষ্টির শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
- কালোজিরা খালি পেটে খেলে পাকস্থলীতে এসিড তৈরিতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। আর এর ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
- আপনি যদি খালি পেটে কালোজিরা চিবিয়ে খান তবে শরীরের প্রদাহ কমে যাবে।
- আপনি যদি খালি পেটে কালোজিরা খান তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
- আপনি যদি কালোজিরা চিবিয়ে খান তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহায়ক হবে।
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
কালোজিরা বিভিন্ন রোগের মহাঔষধ হিসেবে কাজ করে। কালোজিরার ভিতরে অসংখ্য উপকারী পুষ্টি উপাদান গুলো রয়েছে। নিয়মিতভাবে কালোজিরা খাবেন তাদের শরীর স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে। কালোজিরা খাওয়ার একাধিক নিয়ম রয়েছে তবে আপনি যেভাবেই খান না কেন উপকার পেয়ে যাবেন। যে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম গুলো তুলে ধরা হলো।
- কালোজিরা বিভিন্ন তরকারিতে আপনি মসলা হিসেবে খেতে পারবেন।
- কালোজিরার সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারবেন এতে বিভিন্ন রোগের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
- কালোজিরার তেল আপনার শরীরের ব্যথাযুক্ত স্থানে ব্যবহার করতে পারবেন এবং খেতে পারবেন।।
- আপনি কালোজিরা এবং রসুনের ভর্তা করে খেতে পারবেন
- আপনি কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারবেন
- আপনি কালোজিরা ভেজে গুড়ো বানিয়ে দুধের সাথে মিশিয়ে যদি খেতে পারেন, তাহলে পেটের বিভিন্ন সমস্যাগুলো দূর হয়ে যাবে।
- কালোজিরা ব্লেন্ড করে আপনার ত্বকে লাগাতে পারেন
- কালোজিরা পানিতে দিয়ে ফুটিয়ে সেই পানি খেতে পারেন
- আপনি বিস্কুট, মিষ্টি, কেক, চাটনিসহ বিভিন্ন খাবারে কালোজিরা ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে এসব খাবারের সাধারণ বাড়িয়ে দেবে।
- আপনার যদি সর্দি,কাশি বা মাথাব্যথা থাকে তাহলে কালোজিরা পাতলার কাপড়ের ভিতরে নিয়ে শুকতে পারেন তাহলে অনেক উপকার পাবেন।
প্রতিদিন রাতে কালোজিরা খেলে কি হয়
কালোজিরা মৃত্যু ছাড়া প্রায় প্রতিটি রোগের মহাঔষধ হিসেবে উপকারী একটি উপাদান। কালোজিরা নিয়ে হাদিসে মহানবী (সাঃ) নিজেই এরশাদ করেছেন। এরপরেও কালোজিরা নিয়ে অনেকের মাঝেই রয়েছে কুসংস্কার। কালোজিরা প্রায় প্রতি বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকে। তাছাড়া কালোজিরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ঔষধি গুনাগুন। আপনি যদি
নিয়মিতভাবে প্রতিদিন কাজে যারে খান তবে শরীর স্বাস্থ্যর বিভিন্ন অঙ্গ ঠিক থাকবে। অনেকেই মনে করেন রাতে কালোজিরা খাওয়া ঠিক নয়, তাদের ধারণা রাতে কালোজিরা খেলে অন্ধ হয়ে যেতে পারে এটা সম্পূর্ণ কুসংস্কার। পরম রাতে কালোজিরা খাওয়ার ফলে অনেক উপকারিতা রয়েছে সেগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
- আপনি প্রতিদিন নিয়মিতভাবে রাতে কালোজিরা খেলে দৈহিক সতেজতা বজায় থাকবে
- রাতে কালোজিরা খেলে পেট ফাঁপা ভাব দূর হয়ে যাবে
- ঘুমানোর আগে কালোজিরা তেল চোখের ভ্রুতে লাগালে চোখে ব্যথা কমে যাবে
- এক মাস প্রতিদিন নিয়মিতভাবে কালোজিরা খেলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- গ্যাস্টিক এবং আমাশয় রোগীদের রোগ নিরাময়ে কালোজিরা খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
- নিয়মিত কালোজিরা খেলে চুলের পুষ্টি দিদি ভাই এবং চুল পড়া রোধ করে থাকে।
- কালোজিরা ডায়াবেটিস রোগ নিরাময়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
- আপনি যদি নিয়মিতভাবে কালোজিরা খেতে পারেন তাহলে রক্তের শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাবে।
- আপনি যদি নিয়মিত ভাবে মাথায় কালোজিরার তেল ব্যবহার করতে পারেন তাহলে মাথাব্যথা কমে যাবে।
- এলাদের জন্যই তো সমস্যার সমাধানের কালোজিরা তেল অধিক কার্যকারী।
কালোজিরা খেলে কি হয়
কালোজিরা সাধারণত বিভিন্ন রোগের মহাঔষুধ। কালোজিরা খেলে কি হয় সেগুলো জানতে নিচে বিস্তারিত পড়তে থাকুন আশা করি বুঝতে পারবেন।
- কালোজিরা খেলে আপনার ডায়েটে কাজে আসবে
- বিভিন্ন ব্যথা এবং মুখের দাগ গুলো দূর হয়ে যাবে
- আপনার সর্দি কাশি গুলো দূর হয়ে যাবে
- হাঁপানি এবং শ্বাসকষ্ট জানিতো রোগ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ করবে।
কালোজিরা তেলের উপকারিতা
কালোজিরা তেলের হুপ উপকারিতা রয়েছে কালোজিরা তেল আপনার ডায়াবেটিকস, স্মৃতিশক্তি, হাঁপানি, জয়েন্টে ব্যথা এবং হার্ট ভালো রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। নিচে কালোজিরা তেলের উপকারিতা গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরা হল।
ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ করে রাখে
আপনার যদি ডায়াবেটিকস থাকে তবে কালোজিরা তেল ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে এক কাপ ব্লাক টির সঙ্গে আধা চা চামচ কালোজিরা তেল মিশিয়ে খেতে পারেন। তাহলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে উপকারিতা বুঝতে পারবেন।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং হাঁপানি দূর করতে
আপনি যদি প্রতিদিন কালোজিরার সঙ্গে সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে। এটি শিশু এবং প্রাপ্ত বয়স্ক উভয়ের শ্বাসকষ্ট নিরাময় করার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তবে আপনাকে এটি কমপক্ষে ৪৫ দিনের জন্য নিয়মিতভাবে করতে হবে। এই সময়ে আপনাকে ঠান্ডা পানীয় খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
জয়েন্টের ব্যথা কমাতে কালোজিরা তেল
জয়েন্টের ব্যথা কমাতে একমুঠো কালোজিরা সরিষার তেল দিয়ে ভালো করে গরম করে নিন। তেলে ধোয়া উঠতে শুরু করলে একটু পর নামিয়ে কিছুটা ঠান্ডা করুন। এরপর সেই তেল আপনার জয়েন্ট মালিশ করুন। দেখবেন নিয়মিতভাবে মালিশ করলে আপনার জয়েন্টের ব্যথা নিরাময় হয়ে গেছে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে
যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তারা কালোজিরা তেল সেবন করতে পারেন। আধা চা চামচ কালোজিরা তেল গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিয়মিতভাবে পান করতে পারেন। এবং যে খাবারগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে সেই খাবারগুলো খেতে হবে আপনাকে নিয়মিত।
কালোজিরা তেল কিডনি রক্ষা করে
কিডনিতে সমস্যা একটি পরিচিত সমস্যা। তাই এর সমাধানের জন্য আধা চা চামচ কালোজিরা তেলের সঙ্গে দুই চা চামচ মধু ও গরম পানি খেলে কিডনিতে ব্যথা, পাথর এবং সংক্রমণ থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে আপনার কোন খাবারগুলো খেতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কালোজিরা খাওয়ার অপকারিতা - কালোজিরা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনারা কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তবে কোনো খাবারই প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। কেননা এর উপকারিতার সাথে সাথে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা গুলো রয়েছে। কালোজিরার উপকারিতা গুলো বা ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে নিচে আপনাদের সামনে আলোকপাত করা হলো।
- কালোজিরা অতিরিক্ত পরিমাণ আপনার স্কিনে লাগালে এটি এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলারা কালোজিরা খাওয়ার ফলে অকাল গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে।
- আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ কালোজিরা খান তবে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা প্রদান করে থাকে। এজন্য আপনার কোথাও যদি কেটে যায় তবে রক্তপাত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- আপনি যদি কালোজিরা অতিরিক্ত পরিমাণে খান তবে আকস্মিকভাবে শর্করার পরিমাণ কমে যেতে পারে।সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরী।
- আপনি যদি কালোজিরা অতিরিক্ত পরিমাণ খান তবে বমি বমি ভাব এবং বুক জ্বালা পোড়া করার সমস্যা দেখা দিতে পারে
লেখকের শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আশা করি উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, কালোজিরার স্বাস্থ্য উপকারিতা, অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক, রাতে কালোজিরা খেলে কি হয়, চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম, তেলের উপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে। আশা করি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। কালোজিরার উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। কালোজিরাতে বিভিন্ন ধরণের উপকারিতা রয়েছে তা আমরা উপরের আলোচনায় আপনাদেরকে জানাতে পেরেছি আশা করি উপকৃত হয়েছেন।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url