দক্ষিণ কোরিয়া কাজের চাহিদা ও বেতন
আপনি কি দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য যারা নিজেকে প্রস্তুত করছেন। তাহলে আপনাকে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার আগে, যেনে যেতে হবে কোন কাজের চাহিদাগুলো বেশি এবং বেতন কত সে সম্পর্কে। নিচে দক্ষিণ কোরিয়া কাজের চাহিদা ও বেতন সম্পর্কে জানতে পড়ুন।
দক্ষিণ কোরিয়া অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে দ্রুত পরিবর্তনশীল একটি উন্নত রাষ্ট্র। প্রতিনিয়তই প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিচ্ছে কোরিয়া সরকার।অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় কোরিয়াতে, আপনি সবচেয়ে বেতন বেশি পাবেন। কাজের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়া প্রতিটি প্রবাসী ভাইদের কাছে একটি স্বপ্ন। কেননা এটি একটি নিরাপদ এবং সুরক্ষিত রাষ্ট্র।
পোস্ট সূচীপত্রঃ দক্ষিণ কোরিয়া কাজের চাহিদা ও বেতন জানতে পড়ুন।
- দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্কে প্রবাসীগামী ভাইদের কিছু কথা
- দক্ষিণ কোরিয়ার বেতন কত জানুন
- দক্ষিণ কোরিয়া সর্বনিম্ন বেতন কত জানুন
- দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজগুলোর চাহিদা বেশি
- দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা করতে কত টাকা লাগে
- দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা পাওয়ার উপায় জানুন
- দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা করতে যে কাগজপত্র লাগে
- লেখকের শেষ মন্তব্য
দক্ষিণ কোরিয়া সরকার তার দেশের উন্নতির জন্য প্রতিবছর সার্কুলার দিয়ে থাকেন। সার্কুলারের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে। আপনি যদি কাজের উদ্দেশ্য কোরিয়া যেতে চান, তবে অবশ্যই নিজেকে দক্ষ করতে হবে এবং কাজের চাহিদা ও বেতন সম্পর্কে জেনে যেতে হবে। কেননা কর্মীদের দক্ষতা অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে কাজের বেতন ভিন্ন হয়ে থাকে। এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের জানাবো, দক্ষিণ কোরিয়া কাজের চাহিদা ও বেতন সম্পর্কে।
দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্কে প্রবাসীগামী ভাইদের কিছু কথা
দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসগামী ভাইদের কাছে একটি স্বপ্নের দেশ। আপনি এই দেশে যাওয়ার আগে, দেশের আইন কানুন সম্পর্কে জ্ঞান রাখবেন এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন।কোনভাবেই নিজ দেশের মান যেন ক্ষুন্ন না হয়। সে বিষয়ের প্রতি নজর দিবেন। এই দেশটি একটি সুরক্ষিত এবং নিরাপদ রাষ্ট্র। অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে অনেক উন্নত একটি রাষ্ট্র।
দেশের উন্নয়নের জন্য সরকার প্রতিবছরই সার্কুলার দিয়ে থাকে। আপনি যদি দক্ষ কর্মী হয়ে থাকেন তবে এ দেশটিতে যেতে পারেন। কেননা অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় কাজের চাহিদা এবং বেতন অনেক বেশি। শিক্ষাগত যোগ্যতা, শ্রমিকদের কাজের ধরন এবং অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বেতন কম বেশি হয়ে। নিচে কোরিয়া যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোকপাত করা হলো জানুন।
দক্ষিণ কোরিয়ার বেতন কত জানুন
দক্ষিণ কোরিয়াতে অনেক ধরনের কাজ রয়েছে। আপনার বেতন নির্ভর করবে কাজের ধরন, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতার উপরে। আর এগুলোর উপর ভিত্তিতে বেতন বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। আজকে আমরা আপনাদের জানাবো কর্মীর মাসিক গড় বেতন কত সে সম্পর্কে। এই দেশে অনেক ধরনের কোম্পানি রয়েছে। কিছু কোম্পানি ছোট এবং কিছু কোম্পানি বড় উভয়
ক্রমিক নং | কাজের নাম | আনুমানিক মাসিক গড় বেতন(টাকা) |
---|---|---|
০১ | ইলেক্ট্রিশিয়ান | ৪,০০,০০০ টাকা |
০২ | নির্মাণ শ্রমিক | ১,৫০,০০০ টাকা |
০৩ | কৃষি কাজ | ১,২০,০০০ টাকা |
০৪ | ফাক্টরির জব | ১,৮০,০০০ টাকা |
০৫ | ক্লিনার | ১,৫০,০০০ টাকা |
০৬ | নার্স | ৩,৫০,০০০ টাকা |
০৭ | সফটওয়্যার ডেভেলপার | ৪,৫০,০০০ টাকা |
০৮ | রেস্টুরেন্ট জব | ২,০০,০০০ টাকা |
০৯ | হোটেল জব | ১,৮০,০০০ টাকা |
১০ | মেকানিকাল | ৩,৮০,০০০ টাকা |
১১ | ব্যাংক টেইলার | ২,৩০,০০০ টাকা |
১২ | গ্রফিক ডিজাইনার | ২,৫০,০০০ টাকা |
১৩ | আকাউন্টেন্ট | ২,৯০,০০০ টাকা |
১৪ | মার্কেটিং ম্যানেজার | ২,৭০,০০০ টাকা |
১৫ | শিক্ষক | ৩,০০,০০০ টাকা |
১৬ | গৃহকর্মী | ২,৮৯,০০০ টাকা |
ধরনের রয়েছে। আপনি যদি বড় বড় কোম্পানিগুলোতে কাজ করতে চান, অবশ্যই আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বড় বড় কোম্পানিগুলোতে বেতনের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে। তাই প্রবাসগামী ভাইয়েরা নিজেকে দক্ষ করুন তারপর কোরিয়া যাওয়া টার্গেট নিন। সব সময় বড় বড় কোম্পানিগুলোতে কাজ করার টার্গেট নিন। সেজন্য
নিজেকে দক্ষ করতে হবে নিজের এবং পরিবারের ভবিষ্যতের জন্য। তবে ভয় পাবেন না। যাদের দক্ষতা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা কোনটাই নেই তারা ছোট ছোট কোম্পানিগুলোতে কাজ করতে পারবেন। নিচে কাজের চাহিদা এবং বেতন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে দেখানো হলো।
দক্ষিণ কোরিয়া সর্বনিম্ন বেতন কত জানুন
দক্ষিণ কোরিয়া একটু উন্নত রাষ্ট্র হওয়ায় প্রচুর পরিমাণে কাজের সুযোগ রয়েছে। এজন্য সরকার প্রতি বছর কাজের জন্য সার্কুলার দিয়ে থাকেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ কর্মীগুলো নিয়োগ দেন। আপনারা যদি কাজের উদ্দেশ্যে প্রবাসে যেতে চান তাহলে বলব দক্ষিণ কোরিয়াতে যেতে পারেন। এই দেশটি একটি সুরক্ষিত এবং উন্নত রাষ্ট্র। এই দেশের
জীবনযাত্রার মান উন্নত চিকিৎসা সেবা উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। বেশিরভাগ কোম্পানিগুলো মাস শেষের পরবর্তী মাসের প্রথম দিকে বেতন দিয়ে থাকে। কিন্তু এইদেশে প্রতিমাসের বেতন প্রতি মাসে দেওয়া হয়। সরকার কর্তৃক এটি ন্যূনতম নির্ধারিত মজুরি কাঠামো রয়েছে। যার ফলে আপনাদের একটি নির্ধারিত বেতন থাকবে। যে বেতনটা নির্ধারিত হয় এর কমে
কেউ বেতন পায় না। দক্ষিণ কোরিয়ার একজন বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রমিকের বাংলা টাকায় ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার বেশি হয়ে থাকে। আপনি যদি ওভার টাইম করেন তাহলে আপনার বেতনের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে। এই দেশে ঘন্টা হিসেবে বেতন নির্ধারণ করা হয়। আপনার বেসিক ডিউটি হবে ৮ ঘন্টা। আপনি অতিরিক্ত সময় কাজ করতে পারবেন
তার জন্য বেতন পাবেন। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় এদেশে রোগের পরিমাণটা একটু বেশি। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজগুলোর চাহিদা বেশি
দক্ষিণ কোরিয়া একটি পরিশ্রমী দেশ। আর এই পরিশ্রমের ফলে বিশ্বের ভিতরে উন্নত দেশে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত দিক দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং উন্নত দেশ। এই দেশে প্রচুর কাজের কাজের চাহিদা রয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে। তাছাড়া সরকার প্রতি বছরই সার্কুলার দিয়ে থাকেন এবং দক্ষ কর্মীগুলো নিয়োগ দেন। এ দেশের শ্রমিকদের
যে কাজের | চাহিদা বেশি |
---|---|
০১ | ইলেক্ট্রিশিয়ান |
০২ | নির্মাণ শ্রমিক |
০৩ | কৃষি কাজ |
০৪ | ফাক্টরির জব |
০৫ | ক্লিনার |
০৬ | নার্স |
০৭ | গৃহকর্মী |
০৮ | রেস্টুরেন্ট জব |
০৯ | হোটেল জব |
১০ | মেকানিকাল |
সর্বনিম্ন ৮ ঘন্টা কাজ করতে হয়। এক মাসে অর্থাৎ ২৬ দিনে ২০৯ ঘন্টা কাজ করতে হয়।যাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং যোগ্যতা রয়েছে তারা এই দেশে খুব সহজেই কাজ পায়। যারা নতুন কোরিয়াতে যেতে চান, তাদের প্রথম দিকে কাজ পেতে একটু অসুবিধা হয়ে থাকে। যাওয়ার আগে কোন কাজগুলো চাহিদা বেশি এবং খুব সহজে কাজের ব্যবস্থা করা যায়। সে
বিষয়গুলোর প্রতি জ্ঞান রাখা উচিত। প্রবাসী ভাইদের জানার সুবিধার্থে কাজগুলো চাহিদা বেশি সেই কাজগুলো টেবিল আকারে দেখানো হলো।
দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা করতে কত টাকা লাগে
দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা করতে কত টাকা লাগে এমন প্রশ্ন অনেকেরই থাকে। বর্তমানে আপনি বিভিন্ন ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়া যেতে পারবেন। আপনি যদি কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান। তবে আপনার করতে হবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, যদি পড়াশোনার জন্য যেতে চান তবে স্টুডেন্ট ভিসা, যদি ভ্রমণের জন্য যেতে চান তাহলে টুরিস্ট ভিসা ইত্যাদি। আপনার দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা করতে সর্বনিম্ন প্রায় ৪ লক্ষ টাকা হতে সর্বোচ্চ ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা পাওয়ার উপায় জানুন
দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা কার্যক্রম চালু রয়েছে। আপনি যদি দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা পেতে চান, তাহলে আপনাকে প্রথমে আবেদন করতে হবে। ভিসার জন্য আপনি অফলাইন বা অনলাইনে দু'ভাবেই আবেদন করতে পারবেন। আপনি যদি অনলাইনে আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকে দক্ষিণ কোরিয়ার ওয়েবসাইট ভিজিট করে আবেদন করতে হবে।
যদি অফলাইনে আবেদন করতে চান তাহলে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার দ্বারা অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে আপনাকে আবেদন করতে হবে।
দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা করতে যে কাগজপত্র লাগে
দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা কার্যক্রম কয়েকটি ধাপে তৈরি হয়। ভিসা তৈরির জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরি অনুযায়ী আপনার কাগজপত্র জমা দিতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা আবেদন ফরম পূরণ এবং যাচাইয়ের সুবিধার্থে যে সকল কাগজপত্রগুলো জমা নেওয়া হয় সেগুলো নিচে দেওয়া হলো।
- আপনার কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদে বৈধ পাসপোর্ট এবং আপনার ভিসা আবেদন ফরম।
- সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি লাগবে
- মেডিকেল রিপোর্ট লাগবে
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট লাগবে
- জাতীয় পরিচয় পত্র সনদের ফটোকপি লাগবে বা জন্ম নিবন্ধন।
- আপনার আর্থিক সাপোর্টের প্রমাণপত্র বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে
- ড্রাইভিং ভিসার ক্ষেত্রে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স লাগবে
- আপনার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র লাগবে (তবে সকল বিষয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়)
আপনার দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা প্রসেসিং হতে সময় লাগবে ১২ থেকে ১৮ দিন। আপনার যদি কাগজপত্রে কোন ভুল ত্রুটি থাকে, তাহলে ভিসা তৈরি করতে অনেক হেনস্থার শিকার হতে হবে। তাই ভিসা তৈরির ক্ষেত্রে কাগজপত্র সঠিক বা নির্ভুল তথ্য প্রদান করবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
লেখকের শেষ মন্তব্য
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনারা জানতে পারলেন, দক্ষিণ কোরিয়াতে কোন কাজগুলো চাহিদা ও বেতন বেশি,ভিসা পাওয়ার উপায়, ভিসা পেতে কত টাকা লাগে, ভিসা তৈরি করতে কি কি কাগজপত্র লাগে ইত্যাদি যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিটি মানুষের কাছে স্বপ্নের একটি দেশ। আপনি যদি দক্ষিণ কোরিয়াতে যেতে
চান তবে অবশ্যই দক্ষতা অর্জন করে যাবেন। তাহলে আপনি সহজেই কাজ পাবেন এবং পারিশ্রমিকও বেশি পাবেন। এদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন কেননা দেশের যেন ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন না হয়। এ বিষয়গুলো সব সময় মাথায় রাখবেন।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url