দুবাই যেতে কত টাকা লাগে এবং কোন ভিসার বেতন কত

দুবাই যেতে কত টাকা লাগে এবং কোন কাজের বেতন কত, সে সম্পর্কে জানা প্রতিটি দুবাই প্রবাসগামী মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দুবাই একটি উন্নত দেশ হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের কাজের চাহিদা এবং সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তাই আপনি যদি দুবাই যেতে চান,জেনে নিন দুবাই যেতে কত টাকা লাগে এবং বেতন সম্পর্কে।
দুবাই সরকার বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন কাজের জন্য প্রচুর পরিমাণে শ্রমিক নিচ্ছে। আপনি যদি অর্থ উপার্জন করে ঘুরে দাঁড়াতে চান, তাহলে দুবাই যেতে পারেন। দুবাই যেতে কত টাকা লাগে এবং কোন ভিসার বেতন কত সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচে পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ দুবাই যেতে কত টাকা লাগে এবং কোন ভিসার বেতন কত জানতে পড়ুন

দুবাই যেতে কত টাকা লাগে

দুবাই যেতে কত টাকা লাগে, যারা দুবাই প্রবাগামী আপনাদের সবার প্রশ্ন এমনটাই হয়ে থাকে। বর্তমান বিশ্বে দুবাই একটি উন্নত শহর হওয়াতে বিভিন্ন ধরনের কাজের যে ভিসাগুলো রয়েছে, সেগুলোর দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় একটু বেশি। দুবাই বিভিন্ন ধরনের ভিসা রয়েছে। দুবাই কাজের ভিসা, ভিজিট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা এবং কোম্পানি ভিসা। আপনি কোন ক্যাটাগরির ভিসা 

নিয়ে দুবাই যেতে চান এবং আপনার এজেন্সির উপর নির্ভর করবে কত টাকা লাগবে। দুবাই পর্যটক কেন্দ্রীয় দেশ হওয়াতে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে। তাই দুবাই সরকার বিভিন্ন কাজের ভিসার মাধ্যমে অসংখ্য শ্রমিক নিচ্ছে। তাই আপনি যদি কাজের ভিসা নিয়ে দুবাই যেতে চান, তাহলে আপনার খরচ পড়বে প্রায় ৫ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকার মতো। 

আপনি যদি দুবাই টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে যেতে চান, তাহলে আপনার খরচ পড়বে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মতো। তবে এই ভিসার ক্ষেত্রে একটাই সমস্যা, আর সেটা হলো, এই ভিসার মেয়াদ তিন মাস থাকে, আপনি যদি এই তিন মাসের ভিতরে কাজ খুঁজে না পেলে, কষ্টের বিষয় হলো, দেশে ফিরে আসতে হবে। তাই আপনি কোন ভিসাতে দুবাই যেতে চান, সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার নিজের উপরে।

দুবাই কোন ভিসার বেতন কত

দুবাই কোন ভিসার বেতন কত টাকা, অবশ্যই আপনাকে দুবাই যাওয়ার আগে এই বিষয়গুলো জেনে যাওয়া খুবই জরুরী। এবং সাথে আরো জানতে হবে, দুবাই কোন কাজের চাহিদাগুলো বেশি এবং কোন ভিসার বেতন কত সে সম্পর্কে। কেননা আপনি দুবাই, যে কাজের উপরে যাচ্ছেন সে কাজের উপরে যদি আপনার দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে আপনার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। 

বিশেষ করে আপনি যে কাজের উপরে দুবাই যাবেন, সেই কাজের উপর যদি আপনার দক্ষতা থাকে, তাহলে আপনি অল্প সময়ের ভেতরে অর্থ উপার্জন করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। তাই অবশ্যই দুবাই যাওয়ার আগে, যে কাজের ভিসা নিয়ে যাবেন সে কাজের উপরে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে যাবেন। আপনি যদি দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে যেতে পারেন তাহলে বেতনের পরিমাণ বেশি পাবেন।

দুবাই কোন কাজের চাহিদা গুলো বেশি

দুবাই কোন কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে জানা, যারা দুবাই যাবেন তাদের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। দুবাই একটি উন্নত দেশ হওয়াতে বিভিন্ন ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে। এসব কাজের উপর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে যদি যেতে পারেন। তাহলে ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। দুবাই যাওয়ার আগে অবশ্যই যে কাজের ভিসা নিয়ে যাবেন, সেটার উপরে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করবেন। 
বিশ্বের প্রতিটি দেশেই দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে মূল্যায়ন করে থাকে। নিচে দুবাই কোন কাজে চাহিদা গুলো বেশি আপনাদের সুবিধার্থে উল্লেখ করা হলো।

  • ক্লিনার
  • কনস্ট্রাকশন
  • মেকানিক্যাল
  • ইলেকট্রিশিয়ান
  • ড্রাইভিং
  • কম্পিউটার অপারেটর
  • মসজিদ ক্লিনার
  • ডেলিভারি বয় হোটেল বা রেস্টুরেন্ট এর কাজ
  • সিকিউরিটি গার্ড
  • এবং রোড ক্লিনার

দুবাই ড্রাইভিং ভিসার বেতন কত

ড্রাইভিং ভিসাতে আপনি যদি দুবাই যেতে চান, তবে অবশ্যই আপনাকে যাওয়ার আগে জেনে যেতে হবে, ড্রাইভিং ভিসার বেতন কত সে সম্পর্কে। ড্রাইভিং ভিসায় সাধারণত একজন শ্রমিকের বেতন হয়ে থাকে সর্বনিম্ন ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। 

আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর চেয়েও বেশি বেতন হয়ে থাকে। ড্রাইভিং ভিসার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার লাইসেন্স এর সার্টিফিকেট এবং ড্রাইভিং বিষয়ে ভালো দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। দুবাই বর্তমানে ডাইভিং ভিসার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই আপনি ড্রাইভিং ভিসা নিয়ে দুবাই যেতে পারেন।

দুবাই হোটেল ভিসা বেতন কত

দুবাই হোটেল ভিসার বেতন কত? এ বিষয়ে জানার জন্য প্রায় অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন। যারা দুবাই হোটেল ভিসাতে যেতে চাচ্ছেন, তাদের অবশ্যই যেনে যাওয়া উচিত এই ভিসার বেতন কত এবং কি রকম হতে পারে । তবে দুবাই যারা হোটেল বা রেস্টুরেন্টে শ্রমিক হিসাবে কাজ করবেন, 

তাদের একটু বেশি সময় অর্থাৎ ডিউটির পরিমাণ একটু বেশি হয়ে থাকে। ডিউটির পরিমাণ বেশি হলেও তবে অতোটা বেশি পরিশ্রমে কাজ নয়। দুবাই বর্তমানে হোটেল ভিসার বেতন প্রায় ৩৮ হাজার থেকে ৫৫ হাজার টাকার মতো।

দুবাই ইলেকট্রিক কাজের বেতন কত

দুবাই ইলেকট্রিক কাজের চাহিদা প্রচুর পরিমাণে, তাই আপনি যদি কাজের উপর দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা অর্জন করে আসতে পারেন। তাহলে ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এই কাজের ডিমান্ড খুবই বেশি। বর্তমানে ইলেকট্রিক কাজের বেতন বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৮৫ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে, দুবাই ইলেকট্রিক কাজের চাহিদা অথবা বেতন কেমন।

দুবাই ক্লিনার ভিসার বেতন কত

দুবাই একটি পর্যটনকেন্দ্রিক দেশ। এর ফলে এই দেশটিতে বিভিন্ন দেশের মানুষ যাতায়াত করে। আর সেজন্য ক্লিনার ভিসার ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণে ডিমান্ড রয়েছে। তবে ক্লিনার ভিসার চাহিদা বেশী থাকা সত্বেও বেতনের পরিমাণটা বেশি নয়। দুবাই ক্লিনার ভিসাতে বর্তমানে বেতন দিয়ে থাকে ৩৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা মাত্র। 

কিনার কাজগুলোর সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে। ক্লিনার ভিসাতে দক্ষ ও অদক্ষ প্রায় সব ধরনের শ্রমিক কাজ করে থাকে। আমরা যারা অল্প শিক্ষিত তারা ক্লিনার ভিসায় দুবাই আসতে পারেন।

দুবাই কোম্পানি ভিসা কত টাকা

দুবাই কোম্পানি ভিসাতে আপনি যদি সরকারিভাবে যান, তাহলে প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকার মধ্য যেতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি বেসরকারিভাবে কোন এসেন্সির মাধ্যমে যান, তাহলে খরচ পড়বে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। দুবাই কোম্পানিগুলো যদি শ্রমিক নিয়োগ করে তাহলে বাংলাদেশী নাগরিকরা স্পন্সার ভিসা পাবে। 

আর এ ভিসা মূলত কোম্পানির পিছনে পরিচিত। তবে এর মধ্য কিছু কিছু ভাগ্যবান নাগরিক রয়েছেন যাদের ভিসা তৈরী থেকে বিমান ভাড়া যাবতীয় খরচ কোম্পানির মাধ্যমে ভোগ করতে পারেন। এই সুযোগটা তবে সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়।

দুবাই যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে

দুবাই যাওয়ার ক্ষেত্রে কাগজপত্র ভিসা ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। দুবাই যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে আগে ভিসা ক্যাটাগরির নিশ্চিত করতে হবে। 
তারপর নির্ভর করবে আপনার কোন কাগজপত্র গুলো লাগবে সেগুলো সংগ্রহ করতে হবে। দুবাই যেতে যে কাগজপত্রগুলো লাগে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।

  • বৈধ পাসপোর্ট
  • পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)
  • আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
  • আপনার মেডিকেল সার্টিফিকেট (ভিজিট ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়)
  • কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট (কাজের ভিসার জন্য)
  • কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র (কাজের ভিসার জন্য)
  • আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণপত্র (ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
  • জাতীয় পরিচয়পত্রর স্ক্যান কপি
  • আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
  • আপনার অন্যান্য কাগজপত্র (যদি প্রয়োজন পড়ে)
দুবাই যাওয়ার ক্ষেত্রে উপরোক্ত কাগজপত্রগুলো আপনার লাগবে। তাই সবসময় কাগজপত্রগুলো আপনি সংগ্রহ করে রাখবেন। যখন যে কাগজ লাগবে তখন সেই কাগজপত্রগুলো সাবমিট করবেন।

দুবাই সর্বনিম্ন বেতন কত

দুবাই সর্বনিম্ন বেতন কত? সে সম্পর্কে প্রায় অধিকাংশ মানুষই জানতে চেয়ে থাকেন। দুবাই সর্বনিম্ন বেতন কত ইতিমধ্যে উপরে উল্লেখিত হয়েছে। বর্তমানে দুবাই সরকার অভিজ্ঞ ও দক্ষ লোকদের মূল্যায়ন বেশি করছে। আপনারা যে ভিসাতে দুবাই যেতে চাচ্ছেন, সেই কাজের উপরে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করুন। যতি দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে যেতে পারেন, তাহলে আপনার কাজের চাহিদা বেশি হবে এবং বেতনের পরিমাণ অনেক বেশি পাবেন। আপনি দুবাই সর্বনিম্ন বেতন ৩০ হাজারের উপরে পাবেন।

লেখকের শেষ মন্তব্য

উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, দুবাই যেতে কত টাকা লাগে এবং কোন ভিসার বেতন কত,দুবাই কোন কাজের চাহিদা বেশি, দুবাই ক্লিনার ভিসার বেতন কত, দুবাই ড্রাইভিং ভিসার বেতন কত, ইলেকট্রিক ভিসার বেতন কত এবং দুবাই সর্বনিম্ন বেতন কত ইত্যাদি সম্পর্কে।

আশা করি পুরো আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। দুবাই আপনি যেকোন ভিসাতে যান না কেন, অবশ্যই সেই কাজের উপর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা নিয়ে যাবেন। তাহলে আপনি বেশি পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে পারবেন এবং সহজেই ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url