হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ (আবেদন,বেতন,খরচ জানুন)
হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং যেতে কত টাকা লাগে আপনি কি সে সম্পর্কে জানতে
চাচ্ছেন। হাঙ্গেরি দেশটিতে বেকারত্বের পরিমাণ কম এবং বেতনের পরিমাণ ভালো, তাই
বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীরা যেতে চান। দেশটিতে যাওয়ার আগে অবশ্যই জেনে নিবেন
বেতন কত? সে সম্পর্কে জানতে নিচে পড়ুন।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তে হাঙ্গেরি যেতে কত টাকা লাগে, সেটা যদি জেনে যেতে নিতে
পারেন, তাহলে দালাল দ্বারা প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। দেশটিতে আপনি বিভিন্ন
ধরনের কাজের সুযোগ পাবেন। নিচে হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন, বেতন সম্পর্কে জানতে
পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানতে পড়ুন
হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে প্রায় অধিকাংশ মানুষ গুগলে সার্চ করে
থাকেন। আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন,
তাহলে বিস্তারিত জানতে পারবেন। হাঙ্গেরি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সেনজেনভুক্ত একটি
দেশ। হাঙ্গেরি কাজের ভিসা পাওয়া তুলনামূলকভাবে অনেক কঠিন। তবে বাংলাদেশ থেকে
হাঙ্গেরি যাওয়ার ভিসা প্রসেসিং করা যায়।
হাঙ্গেরি যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ মানুষ, এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা
আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকেন। বাংলাদেশে হাঙ্গেরির দূতাবাস রয়েছে।
হাঙ্গেরি দেশটিতে যাওয়ার জন্য আবেদনকারীর সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৫০
বছর পর্যন্ত হতে হবে। তবে হাঙ্গেরিতে যাওয়ার জন্য ৪০ বছরের বয়স কম হলে ভালো
হয়। আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে হাঙ্গেরিতে যেতে চান,
তবে আপনাকে একটি কাজের অফার পেতে হবে। এরপর আপনাকে হাঙ্গেরিতে যাওয়ার জন্য আবেদন
ফরম সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। আপনার ভিসা আবেদনপত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলোর
সাথে ভিসা আবেদন ফি দূতাবাস গিয়ে জমা দিতে হবে।আপনি যদি এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা
করেন, তাহলে তারা সবকিছু ব্যবস্থা করে দিবে।
সেজন্য অবশ্যই এজেন্সি হতে হবে আপনার বিশ্বস্ত এজেন্সি। যাদের হাঙ্গেরি নেওয়ার
জন্য ভালো হিস্ট্রি রয়েছে এমন এজেন্সি আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে। হাঙ্গেরি কাজের ভিসা পেতে ২ মাস থেকে ৩ মাস সময় লাগে। আর ভিসা প্রসেসিং হতে সময়
লাগে ৫ থেকে ৬ মাস। হাঙ্গেরি থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় জেনে নিতে পারেন।
হাঙ্গেরি যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে
হাঙ্গেরি যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে সেগুলো সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। তাই
আপনাদের জানার সুবিধার্থে হাঙ্গেরিতে যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে, সেগুলো নিচে
উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- আপনার বৈধ পাসপোর্ট
- সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- আপনার মেডিকেল সার্টিফিকেট
- কাজের অফার লেটার
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- কাজের দক্ষতা সার্টিফিকেট
- কাজের অভিজ্ঞতা সার্টিফিকেট
আপনি যদি হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান, তবে অবশ্যউ উপরে উল্লেখিত
কাগজপত্র গুলো লাগবে। তাই আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করে
রাখতে পারেন।
হাঙ্গেরি বেতন কত জানুন
হাঙ্গেরি বেতন কত? সে সম্পর্কে অনেকে জানতে চান। হাঙ্গেরি বেতন সাধারণত সরকার
কর্তৃক সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ করে দেওয়া থাকে। হাঙ্গেরিতে বর্তমানে প্রতি
মাসে সর্বনিম্ন বেতন পাবেন ৭১৮.৪৩ ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় কনভার্ট করলে
দাঁড়ায় প্রায় ৭৮ হাজার ৮০০ টাকা। তবে হাঙ্গেরিতে প্রতি মাসে ৮৭৭.৪০ ডলারের নিচে
কেউ বেতন পায় না। যা বাংলা টাকা দাঁড়ায় প্রায় ৯৬ হাজার টাকার আশেপাশে।
কাজেই বলা যায় যে, হাঙ্গেরি কাজের বেতন ৭৮ হাজার থেকে শুরু করে ১ লক্ষ টাকা
পর্যন্ত হয়ে থাকে।ইউরোপের প্রতিটি দেশে আপনাকে ৮ ঘণ্টা কাজ করতে হবে তুমি
এদেশটিও ব্যতিক্রম নয়। আপনাকে এই সপ্তাহে বেসিক ৪০ ঘন্টা ডিউটি করতে হবে। তবে এর
বেশি কাজ করলে সেটা ওভার টাইম হিসেবে গণ্য করা হবে। হাঙ্গেরিতে বেতন কত হবে সেটা
সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার অভিজ্ঞতা দক্ষতা,
যোগ্যতা এবং আপনার কোম্পানির উপরে। আপনারা যদি কোন কাজের উপরে অভিজ্ঞতা এবং
দক্ষতা থাক, তাহলে অবশ্যই বেতনের পরিমাণ বেশি পাবেন।
হাঙ্গেরি কোন কাজের চাহিদা বেশি
পৃথিবীর যেকোনো দেশেই যান না কেন, আপনাকে অবশ্যই কাজের উপরে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা
অর্জন করে যাওয়া উচিত। কেননা পৃথিবীর প্রতিটা দেশ কাজের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতাকে
মূল্যায়ন করে থাকে এবং বেকার বসে থাকতে হয় না। আপনি কি কোনো না কোনো কাজ অবশ্যই
সহজেই করতে পারবেন। তবে যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই, অথচ কাজের
প্রতি দক্ষতা রয়েছে তাদের বসে থাকতে হয না। বিশ্বের যেকোনো দেশের কোম্পানিতে
আপনার যদি দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা যদি থাকে, তাহলে আপনি কাজের বেতন বেশি পাবেন।
হাঙ্গেরিতে যেসব কাজের চাহিদা রয়েছে সেগুলো আপনাদের জানার সুবিধার্থে নিচে বিস্তারিত উল্লেখ করে
দেওয়া হলো।
- কনস্ট্রাকশনের কাজ
- হোটেল এবং রেস্টুরেন্টের কাজ
- ওয়েল্ডিং শ্রমিকের কাজ
- ইলেকট্রিশিয়ান
- প্লাম্বিং এর কাজ
- পেইন্টিং এর কাজ
- ড্রাইভিং এর কাজ
- ক্লিনারের কাজ
উপরে উল্লেখিত কাজগুলো হাঙ্গেরিতে সবচেয়ে চাহিদা বেশি। তাই আপনি যদি হাঙ্গেরিতে
যাওয়ার পূর্বে এইসব কাজের উপরে দক্ষতা অভিজ্ঞতা অর্জন করে যেতে পারেন, তাহলে
ভালো পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে পারবেন। আপনাকে বেকার বসে থাকতে হবে না।
হাঙ্গেরি যেতে কত টাকা লাগে
হাঙ্গেরি যেতে কত টাকা লাগবে, সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে এজেন্সি কিংবা দালালের
উপর ভিত্তি করে। আপনি যদি আত্মীয়-স্বজন কিংবা পরিচিত মাধ্যমে যেতে পারেন, তাহলে
দেশটিতে অল্প খরচেই ভিসা পেতে পারেন। আপনি যদি বর্তমানে হাঙ্গেরিতে এজেন্সির
মাধ্যমে যেতে চান, তাহলে আনুমানিক প্রায় খরচ হবে ১১ লক্ষ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা
পর্যন্ত। তবে হাঙ্গেরির এটা সর্বোচ্চ ভিসার দাম।
হাঙ্গেরিতে যেতে এর বেশি টাকা লাগে না, ওয়ার্ক পারমিট ভিসার এটা হচ্ছে টোটাল
খরচ। এই খরচের ভিতরে আপনার যাবতীয় খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে আপনি যদি
স্টুডেন্ট ভিসা অথবা টুরিস্ট ভিসাতে যেতে চান তবে খরচ অনেক কম হবে। কেননা ভিসা
ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিসা এবং আবেদন ফি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
হাঙ্গেরি ১ টাকা বাংলাদের কত টাকা
বর্তমানে হাঙ্গেরিয়ান ১ ফরিন্ট (HUF) সমান বাংলাদেশের ০.৩৩ টাকা অর্থাৎ
৩৩ পয়সা।
হাঙ্গেরি ভিসা রেশিও
হাঙ্গেরি ভিসা অনুমোদনের হার বা রেশিও বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য নির্দিষ্ট তথ্য
পাওয়া খুবই কঠিন। কেননা এটি বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সাধারণত
পরিবর্তিত হয়ে থাকে। তবে সাধারণ ভিসাগুলোর ক্ষেত্রে অনুমোদনের হার নির্ভর করে
থাকে, আবেদনকারী ডকুমেন্ট আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং ভ্রমণের উদ্দেশ্য কি তার উপরে।
আপনার ভিসা আবেদন সফল করার প্রয়োজনীয় কিছু টিপস
সঠিক ডকুমেন্টেশনঃ আপনার সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো সঠিকভাবে জমা
দিতে দিতে হবে।
আর্থিক স্থিতিশীলতাঃ আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং আর্থিক যে স্থিতিশীলতা
রয়েছে সেগুলো প্রমাণ করুন।
ভ্রমণের উদ্দেশ্যঃ আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য কি স্পষ্টভাবে আপনাকে উল্লেখ
করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি জমা দিতে হবে। আশা করি তিনটি টিপস কাজে
লাগালে আপনি ভিসা আবেদনে সফল হবেন।
লেখকের শেষ মন্তব্য - হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, হাঙ্গেরি কাজের ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া,
হাঙ্গেরি যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে, হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা,হাঙ্গেরি বেতন কত, হাঙ্গেরি কোন কাজের চাহিদা
বেশি, হাঙ্গেরি যেতে কত টাকা লাগে, হাঙ্গেরি ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা এবং
হাঙ্গেরি ভিসা রেশিও ইত্যাদি সম্পর্কে। আশা করি পুরো আর্টিকেলে মনোযোগ সহকারে
পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন।
আপনি যদি হাঙ্গেরি যেতে চান, তবে অবশ্যই কোন কাজের বেতন কত এবং কোন কাজের
চাহিদাগুলো বেশি। সেসব কাজের উপর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে যাবেন, তাহলে অল্প
সময়ে বেশি ইনকাম করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url