ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে খরচ কত টাকা

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে খরচ কত টাকা আপনি কি সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ ও ভারত পাশাপাশি হওয়াতে, টুরিস্ট ভিসা খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তাই আপনি যদি ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে চান, তাহলে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচে পড়ুন।
আপনি যদি ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে চান, তবে তার আগে আপনাকে পাসপোর্ট তৈরী করতে হবে। টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগবে এবং ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে খরচ কত টাকা হবে, যাবতীয় তথ্য বিস্তারিত জানতে নিচে পড়তে পারেন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে খরচ কত টাকা হবে জানতে পড়ুন

ইন্ডিয়া টুরিস্ট ভিসা

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা ভারতে বিদেশী পর্যটকদের প্রবেশ বা ভ্রমণ করার সুযোগ দিয়ে থাকে। টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে আপনি ভারতের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো সহজেই উপভোগ করতে পারবেন। ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের রয়েছে। প্রশ্ন আসতে পারে, কেমন ভিসা? নিচে পড়তে থাকুন।

  1. একক প্রবেশ ভিসা
  2. দ্বৈত প্রবেশ ভিসা
  3. একাধিক প্রবেশ ভিসা
উপরে উল্লেখিত এসব ভিসা সাধারণত ভ্রমণ পর্যটকদের ভ্রমণ পরিকল্পনার উপরে নির্ভর করে প্রদান করা হয়ে থাকে।আশা করি ক্লিয়ার বুঝতে পেরেছেন।

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে খরচ কত টাকা

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে খরচ কত টাকা সে বিষয়ে প্রায় অধিকাংশ মানুষ জানার জন্য গুগলে সার্চ করে থাকেন। ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার জন্য ভিসা ফি নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি নাগরিকদের সাধারণত ইন্ডিয়ান ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার ফি $২০ থেকে $১০০ অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২,৫০০ থেকে ১২,০০০ টাকার মধ্য হতে পারে। তবে এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার ভিসার ধরন ও মেয়াদ উপরে। আপনার ভিসা ফি ছাড়াও সার্ভিস চার্জ এবং প্রসেসিং ফি যুক্ত হতে পারে, 
যা আপনার আবেদনকারীদের প্রদান করতে হবে। ভিসার ধরন অনুযায়ী কত টাকা খরচ হতে পারে, সেগুলোর নিচে তুলে ধরা হলো বিস্তারিত দেখে নিন।
  • একক প্রবেশ ভিসা (Single Entry Visa) $২০ থেকে $৪০ বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২,৩৫০ থেকে ৪,৭০০ টাকা পর্যন্ত।
  • দ্বৈত প্রবেশ ভিসা (Dauble Entry Visa) $৬০ থেকে $৮০ বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৭,০০০ টাকা থেকে ৯,৪০০ টাকা পর্যন্ত।
  • একাধিক প্রবেশ ভিসা (Multiple Entry Visa) $৮০ থেকে $১০০ বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৯,৪০০ টাকা থেকে ১২,০০০ টাকা পর্যন্ত।
ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে খরচ কত টাকা, আশা করি উপরে আলোচ্য অংশটুকু পড়ে বুঝতে পেরেছেন। আপনি চাইলে ইন্ডিয়ার দর্শনীয় স্থানগুলো টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে ভ্রমণ করে দেখতে পারেন।

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে,সে সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন। ভারত ও বাংলাদেশ পাশাপাশি হলেও আপনি যদি ভ্রমণ করতে যেতে চান, তবে অবশ্যই ভিসার প্রয়োজন হবে। যেহেতু আপনার ভিসার প্রয়োজন হবে, তাহলে অবশ্যই আপনাকে পাসপোর্ট করতে হবে। এরপর আপনাকে আবেদন করতে হবে এই আবেদনপত্রের সাথে বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। 

তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে সেগুলো নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।

  • আপনার ছয় মাস মেয়াদী পাসপোর্ট
  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
  • ছোটোদের জন্ম সনদের কপি
  • সম্প্রতি তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর ডকুমেন্ট লাগবে
  • আবেদনপত্রের ফটোকপি লাগবে
  • আপনার ভ্রমণ বীমা লাগবে
উপরে উল্লেখিত কাগজপত্রগুলো আপনার টুরিস্ট আবেদনের ক্ষেত্রে লাগবে। তাই এই কাগজপত্রগুলো টুরিস্ট ভিসা করার আগেই আপনি সংগ্রহ করে রাখতে পারেন। তাহলে পরবর্তীতে আপনারা খুঁজতে সময় লাগবে না বা সময় নষ্ট হবে না।

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ সাধারণত বিভিন্ন রকম হতে পারে। ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ ৬ মাসের জন্য বৈধ থেকে থাকে। তবে অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে এক বছরের জন্য ভিসা প্রদান করা হয়ে থাকে। যাদের একাধিক প্রবেশ ভিসা রয়েছে তাদের ১ বছর বা তার বেশি মেয়াদের জন্য দেওয়া হয়। আর এর ফলে পর্যটক একাধিকবার ইন্ডিয়ার ভ্রমণের সুযোগ পায়। ভিসার মেয়াদকাল সাধারণত ভিসার প্রকারভেদ ও পর্যটকদের ভ্রমণ পরিকল্পনার উপরে নির্ভর করে থাকে।

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা পেতে আপনার সময় লাগবে ৫ থেকে ১০ কার্য দিবস পর্যন্ত। তবে আপনার যদি জরুরী পরিস্থিতিতে দ্রুত ভিসা লাগে তবে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে আর সেজন্য আপনাকে অতিরিক্ত চার্জ প্রদান করতে হবে পারে। আর এই জরুরী ভিসা সাধারণত ১ থেকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যেই পাওয়া যায়। টুরিস্ট ভিসার জন্য যারা আবেদন করবেন তাদের সময় মতো আবেদন জমা দেওয়া উচিত কোন ধরনের বিলম্ব না হয় সেজন্য।

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা আবেদন ও ফি

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা আবেদন আপনি অনলাইনের মাধ্যমে করতে পারবেন। এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারতের ভিসা করার জন্য অফিস রয়েছে। আপনি যদি চান তবে, সেখানে গিয়ে ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা জন্য আবেদন করতে পারবেন। ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা আবেদন করতে ইন্ডিয়ান এই অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ঢুকে অনলাইনের মাধ্যমে আপনি নিজেই আবেদন করতে পারবেন।

ইন্ডিয়ান অফিশিয়াল ওয়েবসাইটটের লিঙ্ক দেওয়া হলো। https://indianvisaonline.gov.in এই ওয়েবসাইটটি হলো ভারতের একটি অফিশিয়াল ওয়েবসাইট। আপনি চাইলে এখান থেকে খুব সহজেই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ক্রমিক নং ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ আবেদনপত্র প্রতি ভিসা প্রসেসিং ফি (টাকায়)
০১ আইভিএসি, ঢাকা( জেএফপি) ৮০০ টাকা
০২ ময়মনসিংহ ৮০০ টাকা
০৩ রংপুর ৮০০ টাকা
০৪ রাজশাহী ৮০০ টাকা
০৫ বরিশাল ৮০০ টাকা
০৬ যশোর ৮০০ টাকা
০৭ খুলনা ৮০০ টাকা
০৮ সিলেট ৮০০ টাকা
০৯ চট্টগ্রাম ৮০০ টাকা
১০ কুমিল্লা ৮০০ টাকা
১১ বগুড়া ৮০০ টাকা
১২ নোয়াখালী ৮০০ টাকা
১৩ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৮০০ টাকা
১৪ ঠাকুরগাঁও ৮০০ টাকা

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা খরচ

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের খরচ রয়েছে। ভিসা ফি, প্রসেসিং ফি, সার্ভিস চার্জ এবং অন্যান্য ফি প্রদান করতে হয়। বিভিন্ন ধরনের ক্যাটাগরির ভিসা ফি বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। উদাহরণ স্বরূপ যদি বলা যায়- একক প্রবেশ ভিসার ফি সাধারণত প্রায় ২,৩৫০ টাকা থেকে ৪,৭০০ টাকা, দ্বৈত প্রবেশ ভিসার ফি প্রায় ৭,০০০ থেকে ৯,৪০০ টাকা। একাধিক প্রবেশ ভিসার ফি প্রায় ৯,৪০০ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। আপনি যদি সঠিক সময়ে আবেদন করেন তাহলে খরচ সাশ্রয় হতে পারে।

ভিসা আবেদনে সমস্যা ও সমাধান

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে সাধারণত কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন আবেদন ফর্মে ভুল তথ্য প্রদান করা, ডকুমেন্টের অসম্পূর্ণতা, সময় মত ফি প্রদান না করা ইত্যাদি। এ ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য আপনাকে ডকুমেন্ট সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে, আবেদন ফর্মে সঠিক তথ্যগুলো প্রদান করতে হবে এবং আপনাকে সময় মত ফি প্রদান করতে হবে। এছাড়াও ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা জানুন

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার সুবিধা হলো এটি পর্যটকদের ভারতের দর্শনীয় স্থান, ঐতিহাসিক স্থাপনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করার সুযোগ করে দেয়। তবে এই ভিসার ক্ষেত্রে কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ :এ ভিসার মেয়াদ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বৈধ থাকে এবং কাজ করার কোন অনুমতি থাকে না এমনকি নির্দিষ্ট সময় দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়। 
নিচে ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করা হলো।

টুরিস্ট ভিসার সুবিধা
  • টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার ফলে পর্যটকরা অসংখ্য বৈচিত্রময় দর্শনীয় স্থান এবং স্থাপনা ও সংস্কৃতি উপভোগ করতে পারে।
  • ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং দ্রুত সময় হয়।
  • ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করা যায়, যা সময় ও প্রচেষ্ট সাশ্রয় করে দেয়।
টুরিস্ট ভিসার সীমাবদ্ধতা
  • ভিসার মেয়াদ সাধারণত সীমিত হওয়ার কারণে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ভ্রমণ শেষ করে চলে যেতে হয়।
  • টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে কাজ করার অনুমতি নেই
  • আপনি যদি একক প্রবেশ ভিসায় ইন্ডিয়াতে আসেন, তবে একবারে প্রবেশ করতে পারবেন। আপনার যা যা ভ্রমণ পরিকল্পনা থাকবে সেগুলো সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করতে পারে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে খরচ কত টাকা, ইন্ডিয়া টুরিস্ট ভিসা, ইন্ডিয়ান ভিসা করতে কি কি লাগে, ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা মেয়াদ,ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা পেতে কত সময় লাগে, ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার আবেদন ও ফি, ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদনের সমস্যা ও সমাধান এবং ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা ইত্যাদি সম্পর্কে। 

আশা করি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন, তবে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনদের সাথে শেয়ার করে রেখে দিতে পারেন। তাহলে তারাও উপকৃত হবে। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url