লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪
লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তে উন্নত জীবনযাপন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সুবিধার
জন্য আপনি কি যুক্তরাজ্যর শহর লন্ডনে যেতে চাচ্ছেন? যুক্তরাজ্য প্রতি বছর ওয়ার্ক
পারমিট ভিসাতে লোক নিয়ে থাকে। বিস্তারিত জানতে নিচে পড়তে পারেন।
বাংলাদেশ থেকে লন্ডনে ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে আইএলটিএস (IELTS) বাধ্যতামূলক নয়।
আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে লন্ডন যেতে চান, তবে আবেদন প্রক্রিয়ার সম্পর্কে
সুন্দরভাবে জানতে হবে। নিচে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন, সহজ গাইডলাইন পেয়ে যাবেন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানতে পড়ুন
- লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া জানুন
- লন্ডন যাওয়ার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে
- লন্ডনের সর্বনিম্ন বেতন কত
- লন্ডনে কোন কাজের চাহিদা বেশি
- লন্ডনে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কত টাকা
- লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ধরনগুলো জেনে নিন
- লন্ডন যেতে কত বছর বয়স লাগে
- ভিসা পাওয়ার পর যা করবেন
- জীবনযাত্রার ব্যয়
- লেখকের শেষ মন্তব্য
লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া জানুন
লন্ডন ওয়ার্ক ভিসা আবেদন করার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ গুগলে সার্চ করে থাকেন।
তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে, লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আওতায় বিভিন্ন ধরনের
শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। এর মধ্য যেগুলো রয়েছে সেগুলো নিচে উল্লেখ করে
দেওয়া হলো।
- কৃষি শ্রমিক
- নির্মাণ শ্রমিক
- নার্স
- ট্রাক চালক
- রেস্তোঁরা কর্মী
- হোটেল বয়
- ডাক্তার
- শিক্ষক
- ইন্জিনিয়ার ইত্যাদি
লন্ডনে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে অনেকটা সহজেই করা যায়।
আপনি অনলাইনে আবেদন করার পর, আপনার প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রগুলো সব জমা দিতে
হবে। এরপর একটি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আপনার যোগ্যতা যাচাই করা হবে। তবে আপনি যদি
লন্ডন যেতে চান সেক্ষেত্রে, আপনার ভিসা প্রসেসিং সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে একজন
লন্ডন প্রবাসী কিংবা বিশ্বস্ত কোন এজেন্সি সাহায্য নিতে পারেন। এছাড়াও আপনি
বাংলাদেশ থেকে লন্ডনে বোয়েসেলের মাধ্যমেও যেতে পারবেন।
লন্ডন যাওয়ার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে
লন্ডন যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন পড়ে। কি কি কাগজপত্রগুলো
প্রয়োজন পড়ে সেগুলো আপনাদের জানাই সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।আপনার
বৈধ পাসপোর্ট
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- আপনার ভিসা আবেদন ফি
- শিক্ষকতা যোগ্যতার সার্টিফিকেট
- জব ওফার লেটার
- বায়োমেট্রিক ইনফরমেশন
- ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র
- কাজের দক্ষতার প্রমাণপত্র
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
আপনি যদি লন্ডন ওয়ার্ল্ড পারমিট ভিসা আবেদন করতে চান, তবে উপরোক্ত কাগজপত্র গুলো
অবশ্যই লাগবে। তাই ভিসা আবেদন করার পূর্বে কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করে রাখুন। যেন
ভিসা আবেদনের সময় কাগজপত্রগুলো হাতের নাগালে পাওয়া যায়।
লন্ডনের সর্বনিম্ন বেতন কত
লন্ডনের সর্বনিম্ন বেতন কত? সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে বয়স অনুযায়ী। লন্ডনের
প্রতি ঘন্টায় হিসাব করে বেতন দিয়ে থাকে। আপনার বয়স যদি ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্য
হয়, তাহলে আপনার সর্বনিম্ন বেতন হবে, প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৮.৬ পাউন্ড। এবং
যাদের বয়স ২১ বছর কিংবা তার চেয়ে বেশি তারা ঘন্টায় সর্বনিম্ন বেতন পাবে ১১.৪৪
পাউন্ড। তবে বাস্তবে সর্বনিম্ন বেতনের থেকে আপনি বেশি বেতন পেতে পারেন।
এটা লন্ডনের ন্যূনতম বেতন কাঠামো, যা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে এর চেয়ে কেউ কম
বেতন পাবে না। বর্তমানে ১ পাউন্ড সমান বাংলাদেশি টাকায় ১৩৭ টাকা। আশা করি বুঝতে
পেরেছেন লন্ডনে গেলে আপনার বেতন কেমন হতে পারে। আপনি প্রতি সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা কাজ
করতে পারবেন এবং সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৮ ঘন্টা ওভারটাইম করতে পারবেন। আপনার যদি কাজের
দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকে তবে লন্ডনে কাজ করে প্রতি মাসে ২ লক্ষ ৩ লক্ষ টাকার বেশি
ইনকাম করা সম্ভব।
লন্ডনে কোন কাজের চাহিদা বেশি
লন্ডনের কোন কাজে চাহিদা বেশি, সে সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অনেকেই ইন্টারনেটে
সার্চ করেন। লন্ডনের সাধারণত বাঙালিরা বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকেন। যারা লন্ডনে
অবৈধভাবে কাজ করেন তারা সহজে কাজ খুঁজে পায় না। থাকে। লন্ডনে যেসব কাজের চাহিদা
বেশি সেগুলো আপনাদের জানার সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- নির্মাণ শ্রমিক
- ইলেকট্রিশিয়ান
- প্লাম্বার
- রেস্টুরেন্ট কর্মী
- নার্স
উপরে উল্লেখিত কাজ গুলো লন্ডনে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে। তাই আপনি লন্ডনে
যাওয়ার আগে অবশ্যই এই কাজগুলোর উপরে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে যাবেন। তাহলে
বেশি পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
লন্ডনে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কত টাকা
লন্ডনে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কত টাকা, লন্ডনের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সাধারণত
স্টুডেন্ট ভিসা এবং টুরিস্ট ভিসা চেয়ে দাম বেশি হয়ে থাকে। অনেক ধরনের ওয়ার্ক
পারমিট ভিসা রয়েছে। লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দাম সাধারণত ভিসার ক্যাটাগরি ও
এজেন্সি এবং দালাল ভেদে তারতম্য হয়ে থাকে। কেননা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ক্যাটাগরী
অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন আবেদন থেকে ফি পরিশোধ করতে হয়।
এছাড়াও এজেন্সি বা দালাল
আপনার কাছ থেকে যত টাকা বুঝিয়ে বা কৌশল করে নিতে পারে। আর সেজন্যই সঠিকভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না তবে কিছুটা ধারণা দিতে পারবো। তবে
বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে যুক্তরাজ্যের শহর লন্ডনে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে,
আনুমানিক আপনার খরচ হবে প্রায় ৬ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। আপনারা সবকিছু
এই খরচের ভিতরই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আপনি যদি সরকারিভাবে বোয়েসেলের মাধ্যমে যেতে
পারেন, তাহলে আপনার খরচ অনেকটাই কম হবে। এছাড়া আপনার যদি বন্ধু-বান্ধব
আত্মীয়-স্বজন কেউ থাকে, তাহলে আরো কম খরচে যেতে পারবেন।
লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ধরনগুলো জেনে নিন
যুক্তরাজ্যের শহর লন্ডনে আপনি কাজ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা পাবেন। তাই
আপনাদের জানার সুবিধার্থে নিচে জনপ্রিয় কিছু ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ধরন উল্লেখ
করে দেওয়া হলো।
1.Skilled Worker Visa (দক্ষ কর্মী ভিসা): এই ভিসাটি হলো সবচেয়ে প্রচলিত
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা। এই ভিসাটি হলো শুধুমাত্র সেই ব্যক্তিদের জন্য, যারা
যুক্তরাজ্যর শহর লন্ডনে চাকরির অফার লেটার পেয়েছেন। তবে অবশ্যই চাকরিদাকা সরকারি
অনুমোদিত হতে হবে।
2.Global Talent Visa ( বিশ্ব প্রতিভা ভিসা): এই ভিসাতে সাধারণত যারা
গবেষণা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ইঞ্জিনিয়ারিং আর্টসের এর মত ক্ষেত্রগুলোতে অসাধারণ
প্রতিভা প্রদর্শন করে থাকেন, তাদের জন্য শুধু প্রযোজ্য।
3.Temporary Worker Visa( অস্থায়ী কর্মী ভিসা): আপনি যদি বিভিন্ন
প্রোগ্রামের জন্য অস্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্য কাজ করতে চান তাহলে এই বিচার জন্য
আবেদন করতে পারবেন।
4.Health and Care Worker Visa: যারা সাধারণত স্বাস্থ্য খাত বা সেবা খাতে
কাজ করতে চান, বিশেষ করে যারা ডাক্তার, নার্স এবং সামাজিক সেবা কর্মীদের জন্য এই
ভিসা প্রযোজ্য।
লন্ডন যেতে কত বছর বয়স লাগে
লন্ডন যেতে কত বছর বয়স লাগে, সে বিষয়ে জানার জন্য অনেকেই গুগলে সার্চ করে
থাকেন। তবে এই প্রশ্নটিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা লন্ডনে যাওয়ার একটা বয়স
সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে লন্ডনে যেতে চান তবে
সর্বনিম্ন বয়স হল ১৯ বছর। যাদের এর চেয়ে কম বয়সী তাদের ভিসার জন্য আবেদন করতে
দেওয়া হয় না। লন্ডনে যাওয়ার সর্বোচ্চ বয়স হচ্ছে ৩৫ বছর, এর চেয়ে বেশি বয়সী
ব্যক্তিরা কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে না। তবে সেক্ষেত্রে স্টুডেন্ট ভিসা
এবং টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে এই বয়স প্রযোজ্য নয়।
ভিসা পাওয়ার পর যা করবেন
লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার পর যুক্তরাজ্যে এসে আপনাকে নির্দিষ্ট নিয়ম ও
শর্তাবলীগুলো মেনে চলতে হবে।নিচে আপনাদের জানার সুবিধার্থে শর্তাবলীগুলো উল্লেখ
করে দেওয়া হলো।
- আপনি শুধু সেই কোম্পানির কাজ করতে পারবেন, যে কোম্পানি আপনাকে স্পন্সর করেছে।
- ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আপনাকে পূনঃরায় আপডেট করতে হবে।
- আপনাকে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা চার্জ প্রদান করতে হবে
জীবনযাত্রার ব্যয়
লন্ডনে একজন শ্রমিকের তুলনামূলকভাবে বেতন অনেক বেশি কিন্তু জীবনযাত্রার ব্যয়ও
বেশি। বিশেষ করে বাসস্থান খাদ্য এবং যাতায়াতের খরচ উল্লেখযোগ্য ভাবে অনেক বেশি।
সেজন্য আপনার বেতন বিবেচনা করে এসব খরচ মাথায় রেখে করতে হবে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন
প্রক্রিয়া, লন্ডন যাওয়ার জন্য কি কি যোগ্যতা বা কাগজপত্র লাগে, ওযার্ক
পারমিট ভিসা, লন্ডনের সর্বনিম্ন বেতন কত, লন্ডনের কোন কাজের চাহিদা বেশি, লন্ডনের
পারমিট ভিসা ধরনগুলো, লন্ডন যেতে কত বছর বয়স লাগে এবং জীবন যাত্রার ব্যয়
ইত্যাদি সম্পর্কে। আশা করি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে
পেরেছেন।
আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে লন্ডন যেতে চান তাহলে কি কি কাগজপত্র
লাগবে, সেগুলো ভালোভাবে জেনে নিবেন। এবং যে কাজের উপরে যাবেন এবং সেই কাজের উপরে
যাওয়ার পূর্বে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে যাবেন। তাহলে প্রথম থেকেই আপনি বেশি
টাকা উপার্জন করতে পারবেন। আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকলে বন্ধু বান্ধবের সাথে
শেয়ার করে দিতে পারো।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url