সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো জেনে নিন ১ মিনিটে
সৌদি আরব মুসলমানদের জন্য পবিত্রতম দেশ। এদেশে কেউ যায় কাজের উদ্দেশ্যে, কেউ
যায় হজ্ব করার উদ্দেশ্যে, এবং কেউ যায় পড়াশোনা করার উদ্দেশ্যে। আপনি সৌদি আরব
কোন উদ্দেশ্যেই যেতে চাচ্ছেন? তাহলে নিচে জেনে নিন, সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো সে
সম্পর্কে।
সৌদি আরব যাওয়ার উদ্দেশ্যে অনুযায়ী আপনার ভিসা ক্যাটাগরি আলাদা হয়ে থাকবে।
আপনি যদি কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান, তাহলে কাজের ভিসা নির্বাচন করতে হবে। এই
আর্টিকেলটির মাধ্যমে জানতে পারবেন, সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো এবং যাবতীয় তথ্য জানতে
নিচে পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো জানতে পড়ুন
- সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো
- আমেল আইদি ভিসা
- ক্লিনার ভিসা
- মাজরার ভিসা
- সুপার মার্কেট ভিসা
- আমেল মন্জিল ভিসা
- চাওয়াক খাছ ভিসা
- সোদি ফ্রি ভিসা
- সৌদি কোম্পানি ভিসা
- সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে
- সৌদি আরব কোন কাজের চাহিদা বেশি
- সৌদি আরব যেতে কি কি লাগে
- সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি
- সৌদি আরবের ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে
- লেখকের শেষ মন্তব্য
সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো
সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো সেটা জানা সৌদি প্রবাসগামী ভাই-বোনদের জন্য জানা খুবই
জরুরী। সৌদি আরবের বিভিন্ন দেশ থেকে, প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে
যাচ্ছে। কেউ যাচ্ছে হজ্ব করার জন্য, কেউ যাচ্ছে কাজের জন্য এবং কেউ যাচ্ছে
পড়াশোনা করার জন্য। বাংলাদেশ থেকেও প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ বৈধভাবে কাজ করার
উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যাচ্ছে। আর কেউ যাচ্ছে হজ্ব করার উদ্দেশ্যে।
প্রতিটা মানুষের ভিসা আবেদন করার পূর্বে জেনে নেওয়া উচিত, তার জন্য কোন ভিসাটা
ভালো হবে। তাহলে আপনি খুব সহজেই পবিত্রতম দেশে পাড়ি জমাতে পারবেন। সৌদি আরব
বিভিন্ন ধরনের ভিসা, বিভিন্ন উদ্দেশ্যে সাধারণত অফার করে থাকে। উদ্দেশ্য অনুযায়ী
ভিসা ক্যাটাগরি গুলো আলাদা হয়ে থাকে। সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো সেগুলো জানতে নিচে
পড়তে থাকুন।
আমেল আইদি ভিসা
আপনি যদি আমেল আইদি ভিসাতে সৌদি আরবে যান, তাহলে কফিলের অর্থাৎ (মালিকের) অধিনে
আপনাকে কাজ করতে হবে। এই ভিসা পাওয়ার জন্য কপিলের অনুমতি বাধ্যতামূলক। আপনি এই
ভিসা নিয়ে সৌদি গেলে কফিলের অনুমতি ছাড়া কোন ধরনের কাজ করতে পারবেন না। আপনি যদি
এই ভিসা পেতে চান, তাহলে কফিলকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা /ফি দিতে হবে।
ক্লিনার ভিসা
ক্লিনার ভিসা সাধারণত যারা কাজে অদক্ষ তাদের জন্য উপযুক্ত। আপনারা যারা সৌদি আরবে
কাজ করতে ইচ্ছুক কিন্তু কোনো ধরণের কাজের দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা নেই তাহলে আপনি
ক্লিনার ভিসা নিয়ে যেতে পারেন। এই ভিসা নিয়ে সৌদি গিয়ে, আপনি যদি কঠোর পরিশ্রম করতে পারেন, তাহলে ভালো পরিমাণ
টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এই ভিসায় সাধারণত পরিচ্ছন্নতার কাজ দেওয়া হয়।
মাজরার ভিসা
মাজরার ভিসা সাধারণত বাগান শ্রমিকদের জন্য। সৌদি আরবে গিয়ে যারা বাগানের কাজ
করতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য সাধারণত এই ভিসা। এই কাজে আপনি দক্ষ হোন বা অদক্ষ হোন
তাতে কোন সমস্যা নেই। এই ভিসা নিয়ে আপনি যদি সৌদিতে যেতে পারেন, তাহলে ভালো
পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। বাগানে কাজ যদিও একটু কঠিন তবে তুলনামূলকভাবে
ভিসা খরচ কম হযে থাকে।
সুপার মার্কেট ভিসা
আপনারা যারা সৌদি গিয়ে সুপার মার্কেটে কাজ করতে চান,তারা সুপারমার্কেট ভিসা নিয়ে
যদি সৌদি যেতে পারেন,আপনি তাহলে সুপার মার্কেটে কাজ করতে পারবেন।সুপার মার্কেটে
কাজ করলে সাধারণত ওভারটাইম করার সুযোগ থাকে। যার ফলে বাড়তি টাকা ইনকাম করার
সুযোগও পাওয়া যায়। আপনি চাইলে সবার মার্কেট ভিসা নিয়ে সৌদি আরব গিয়ে কাজ করতে
পারেন।
আমেল মন্জিল ভিসা
সৌদি আরবে সাধারণত বাড়িতে কাজ করার জন্য আমেল মন্জিল ভিসা দেওয়া হয়।উদাহরণ
হিসেবে যদি বলি: বাড়ির দারোয়ান, কেয়ারটেকার, ক্লিনার ইত্যাদি। আপনি যদি এ ভিসা
নিয়ে সৌদি আরবে যান, তাহলে মালিকের অনুমতি ছাড়া আপনি অন্য কোথাও কাজ করতে পারবেন
না।
এ ভিসা সাধারণত প্রতি বছরেই নবায়ন করতে হয়। নবায়ন করতে খরচ হয় প্রায় ১ লক্ষ
২০ হাজার টাকার মতো।
চাওয়াক খাছ ভিসা
চাওয়াক খাছ ভিসা সাধারণত ড্রাইভার কাজের জন্য দেওয়া হয়। এ ভিসা নিয়ে গেলে সৌদি
আরবের কোন নিজস্ব মালিকের আন্ডারে কাজ করতে হবে। মালিকের অনুমতি ছাড়া আপনি অন্য
কোথাও কাজ করতে পারবেন না।
সোদি ফ্রি ভিসা
সৌদি আরবে ফ্রি ভিসা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। সৌদি আরব ফ্রি ভিসা নিয়ে গেলে আপনারা
অনেক টাকা খরচ হবে। কেননা ফ্রি ভিসার সুযোগ সুবিধা অনেক পরিমাণ বেশি থাকে।
দালালরা এ ভিসাকে টার্গেট করে এবং বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে থাকে
এবং টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকে। তাই কখনো বিভ্রান্তি হবেন না। ফ্রি ভিসার ক্ষেত্রে
কোন অভিজ্ঞ লোকের কাছে পরামর্শ নিতে পারেন।
সৌদি কোম্পানি ভিসা
সৌদি আরব কোম্পানির ভিসা সবচেয়ে বেশি ভালো হয়ে থাকে। আপনি এ ভিসা নিয়ে গেলে
অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন। আপনি যদি কোন কোম্পানিতে কাজ করতে চান তাহলে
আপনাকে এই ভিসা নিতে হবে। আপনি যদি এ ভিসা নিয়ে কোম্পানিতে কাজ করেন তাহলে অনেক
বেশি পরিমাণ টাকা বেতন পাবেন। এজন্য অবশ্যই আপনাকে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা শিখে তারপর
আপনাকে কোম্পানিতে কাজ নিতে হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে
সৌদি আরব যেতে আপনার কত টাকা লাগবে সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার ভিসা
ক্যাটাগরির উপরে। কেননা ভিসার ক্যাটাগরি এবং মেয়াদ অনুযায়ী ভিসার দাম সাধারণত কম
বেশি হয়ে থাকে। তাই আপনাকে প্রথমেই জেনে নিতে হবে সৌদি আরবে কোন ভিসার দাম কত সে
সম্পর্কে। তবে বর্তমানে বাংলাদেশীদের জন্য ওমড়া হজ্ব করতে কোনো ভিসার প্রয়োজন
নেই।
তাই যারা সৌদি আরবে ওমরা করতে চাচ্ছেন খরচ কম পড়বে। নিচে ভিসা ক্যাটাগরী
অনুযায়ী কোন ভিসার দাম কত সেগুলো উল্লেখ করে দেওয়া হলো আপনাদের সুবিধার্থে।
ক্রমিক নং | ভিসা ক্যাটাগরি | আনুমানিক খরচ (টাকা) |
---|---|---|
০১ | ক্লিনার ভিসা | ৪ থেকে ৫ লক্ষ |
০২ | মাজরার ভিসা | ৩ থেকে ৪ লক্ষ |
০৩ | সুপার মার্কেট ভিসা | ৪ থেকে ৫ লক্ষ |
০৪ | আমেল মঞ্জিল ভিসা | ৩ থেকে ৪ লক্ষ |
০৫ | চাওয়াক খাছ ভিসা | ৪ থেকে ৫ লক্ষ |
০৬ | আমেল আইদি ভিসা | ৪ থেকে ৫ লক্ষ |
০৭ | ওমরা ভিসা | ১ থেকে ২ লক্ষ |
০৮ | সৌদি ফ্রি ভিসা | ৫ থেকে ৬ লক্ষ |
সৌদি আরব কোন কাজের চাহিদা বেশি
সৌদি আরবে বেশিরভাগ মানুষ শ্রমিক দিয়ে কাজ করিয়ে থাকে। সেজন্য সৌদি সরকার প্রতি
বছর প্রচুর পরিমাণে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য
মানুষ সৌদি আরবে যায় কিন্তু সঠিক কাজটা খুঁজে পায় না। এর কারণ হলো কোন কাজের
চাহিদাগুলো বেশি সেগুলো সম্পর্কে না জানা। তাই আপনি যদি সৌদি আরবে কোন কাজের
চাহিদা
বেশি এবং সেই কাজের উপর দক্ষতা অর্জন করে যদি যেতে পারেন তাহলে সহজেই কাজ
পাবেন এবং বেতনের পরিমাণও বেশি পাবেন। আপনাদের জানার সুবিধার্থে সৌদি আরবে কোন
কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- ইলেকট্রিশিয়ান
- রংমিস্ত্রি
- কনস্ট্রাকশন
- প্লাম্বার
- অটোমোবাইল সার্ভিসিং
- ক্লিনার ইত্যাদি
আপনারা উপরের কাজগুলোতে যদি দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে সৌদিতে যেতে পারেন,
তাহলে খুঁজে পাবেন এবং উচ্চ পরিমাণে বেতন পাবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
সৌদি আরব যেতে কি কি লাগে
মানুষ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়, তাই আপনাকে সৌদি আরব যাওয়ার আগে কি কি লাগবে,
সে বিষয়গুলো জেনে নিতে হবে। কেন এর একটি মিস হয়ে গেলে, হয়তো আপনার হবে না। তাই
সৌদি যাওয়ার আগে আপনাকে খুবই সতর্ক থাকা থাকতে হবে।৷ সৌদি আরব যেতে কি কি লাগে,
সেগুলো আপনাদের সুবিধার্থে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- আপনার বৈধ পাসপোর্ট (৬ মাস মেয়াদ)
- কোন উদ্দেশ্যে নিয়ে সৌদি আরব যাবেন সেটার ভিসা
- মেডিকেল ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- সৌদি যাওয়ার পর আপনি যেখানে থাকবেন তার রিসিট
- আপনার প্লেনের টিকিট
- স্বাস্থ্য বিমা যদি থাকে তাহলে ভালো
- পর্যাপ্ত পরিমাণে অর্থ লাগবে
- প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট লাগবে
সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি
সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি সেটা সম্পর্কে জানা প্রতিটি প্রবাসগামী ভাই বোনদের
জন্য জরুরী। সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি, সে সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই
গুগলে সার্চ করে থাকেন।
তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে সৌদিতে কোন কাজগুলোর বেতন
বেশি সেই কাজগুলোর নাম নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হল।
- ইলেকট্রিশিয়ান
- অটো মোবাইল
- টেকনিশিয়ান
- ওয়েল্ডিং
- প্লাম্বিং
আপনি যদি সৌদিতে যেতে চান, তাহলে উপরের কাজ গুলোর উপরে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন
করে যেতে পারেন। তাহলে আপনি ভাল বেতনে কাজ করতে পারবেন।
সৌদি আরবের জন্য কোন ভিসা সবচেয়ে ভালো
সৌদি আরবের জন্য সবচেয়ে ভালো হচ্ছে পর্যটক ই-ভিসা। তবে আপনি যদি কাজ করার
উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে যেতে চান, তাহলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সব থেকে বেশি ভালো হবে।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
সৌদি আরবের ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে
সৌদি আরবের ভিসা আবেদন করার পর সেটা প্রসেসিং হতে এবং হাতে পেতে সময় লাগে ৩ দিন
থেকে ৭ দিন পর্যন্ত।। আবার কখনো কখনো ১ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
লেখকের শেষ মন্তব্য - সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো সে সম্পর্কে
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যম জানতে পারবেন যে, সৌদি আরবে কোন ভিসা ভালো, সৌদি কোম্পানি
ভিসা,সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে, সৌদি আরব কোন কাজের চাহিদা বেশি, সৌদি আরব যেতে
কি কি লাগে, সৌদি আরব কোন কাজের বেতন বেশি, সৌদি আরব যেতে কতদিন সময় লাগে
ইত্যাদি সম্পর্কে। আশা করি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে
পেরেছেন।
আপনার যদি সৌদি আরবে যেতে চান অবশ্যই সে কাজের চাহিদা সম্পর্কে যেনে
যাবেন। এবং দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে জাবেন, তাহলে ভালো বেতনে কাজ করতে
পারবেন।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url