বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার উপায় জানুন

বাংলাদেশ থেকে অনেক প্রবাসগামী মানুষ ইউরোপীয় দেশ পোল্যান্ডে যেতে চায়। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার উপায় এবং কিভাবে ভিসা আবেদন করতে হয়, সে সম্পর্কে ধারনা রাখেন না। তাই ইউরোপের দেশটিতে কিভাবে যাবেন নিচে বিস্তারিত জেনে নিন।
ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে যান, তবে এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশের চেয়েও অনেক বেশি বেতন পাবেন। দেশটিতে আপনি ভ্রমণ এবং পড়াশোনার করার জন্য যেতে পারবেন। তাই বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। 

পোস্ট সূচীপত্রঃ বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার উপায় জানতে পড়ুন

বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার উপায়

বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ গুগলে সার্চ করে থাকেন। আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন, তাহলে বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যেতে চান, তবে আপনার বাধ্যতামূলক ভিসার প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশ থেকে সাধারণত স্টুডেন্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, ভিজিট ভিসার মাধ্যমে ইউরোপের এই দেশটিতে যেতে পারবেন।

পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে হলে, আপনাকে পোল্যান্ডের যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কাজের অফার লেটার পেতে হবে। আর এজন্য আপনি অনলাইনে বিভিন্ন জব পোর্টালে চাকরির জন্য আবেদন করতে হবে। আপনার এই আবেদনটি যদি পোল্যান্ডের কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান গ্রহণ করে, তাহলে আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট এবং কাজের অফার লেটার দিবে। পরবর্তীতে আপনি পোল্যান্ডের জবের ভিসার জন্য সহজেই আবেদন করতে পারবেন।

পোল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা

পোল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য দেশটির যেকোন স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠান থেকে আপনাকে ভর্তির অফার লেটার পেতে হবে। তবে আপনাকে অর্থনৈতিকভাবে অনেক শক্তিশালী হতে হবে। আপনার এই আর্থিক সক্ষমতা প্রমাণ করার জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে। আপনার কাছে যদি দেশটিতে পড়াশোনার খরচ, খাওয়া এবং থাকার খরচ বহনে সামর্থ্য থাকে, তাহলে আপনি খুব সহজেই পোল্যান্ডের স্টুডেন্ট ভিসা পেয়ে যাবেন।

পোল্যান্ড ভিজিট ভিসা

পোল্যান্ডের ভিজিট ভিসা, আপনি যদি পেতে চান তবে প্রমাণ করতে হবে আপনি একজন ভ্রমণ পর্যটক এবং নিয়মিত বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে থাকেন। এর পাশাপাশি আপনাকে আরও একটি বিষয়ে প্রমাণ করতে হবে, সেটা হলো পোল্যান্ড গেলে পুনরায় নিজ দেশে ফিরে আসবেন। এজন্য ভিজিট ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভিসা কর্তৃপক্ষ সাধারণত ট্রাভেল হিস্ট্রি, পেশা এবং ব্যাংক ব্যালেন্স দেখে থাকেন।

পোল্যান্ড ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া জেনে নিন

পোল্যান্ড ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া, আপনি চাইলে নিজে নিজেই, সরকারিভাবে, এজেন্সি কিংবা দালালের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। তবে এজন্য আপনাকে ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করতে হবে।তবে প্রতিটা ভিটা ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী কাগজপত্র গুলো আলাদা হয়ে থাকে।
পোল্যান্ডের ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সাধারণত অনলাইন এর মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয়। আপনি যখন আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবেন তখন পোল্যান্ডের ভিসা ফি টা পরিশোধ করতে হবে। আপনার যদি ইন্টারভিউ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে পোল্যান্ড ভিসা কর্তৃপক্ষ আপনাকে জানিয়ে দিবে।

পোল্যান্ড ভিসা আবেদন করার জন্য যেসব কাগজপত্র লাগে

পোল্যান্ড ভিসা আবেদন করার জন্য যেসব কাগজপত্র লাগে সেগুলো সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে সেসব কাগজপত্রগুলো নিচে তুলে দেওয়া হলো।

  • আপনার বৈধ পাসপোর্ট
  • সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • ইউরোপিয়ান সিভি (ওয়ার্ক পারমিট ভিসা)
  • কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র
  • কাজের দক্ষতা সার্টিফিকেট
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (স্টুডেন্ট ও টুরিস্ট ভিসা)
  • ভর্তি অফার লেটার (স্টুডেন্ট ভিসা)
  • মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
  • পুলিশ ক্লিয়ার এন্ড সার্টিফিকেট
  • জব অফার লেটার (ওয়ার্ক পারমিট ভিসা)
  • কাজের চুক্তিপত্র (ওয়ার্ক পারমিট ভিসা)
  • আইএলটিএস স্কোর (যদি লাগে)
উপরে উল্লেখিত কাগজপত্রগুলো পোল্যান্ড ভিসা আবেদনের করার জন্য লাগবে, তাই কাগজপত্রগুলো ভিসা আবেদনের পূর্বে সংগ্রহ করে রাখতে পারেন।

পোল্যান্ড যেতে কত বছর বয়স লাগে

পোল্যান্ডের শ্রম আইন অনুযায়ী কাজ করার জন্য সর্বনিম্ন বয়স হচ্ছে ১৮ বছর। তবে পোল্যান্ড নাগরিকরা ১৫ বছর বয়স হলে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে কাজ করতে পারে বা কাজের অনুমতি পায়। কিন্তু যারা বিভিন্ন দেশ থেকে পোল্যান্ডে যায় তাদের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স ১৮ হতে হবে।

পোল্যান্ড কাজের বেতন কত জানুন

ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে সাধারণত সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে দেওয়া হয়ে থাকে। বর্তমানে পোল্যান্ডের মাসিক বেতন হচ্ছে প্রায় ১,০৬০ ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় কনভার্ট করলে দাঁড়ায় ১ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা। পোল্যান্ডে শ্রমিকরা গড়ে বেতন পায় প্রায় ১,৮১৩ ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় কনভার্ট করে দাঁড়ায় প্রায় ২ লক্ষ টাকা। আপনি যদি দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে যেতে পারেন তাহলে বেতন আরো বাড়তে পারে। 

আশা করি বুঝতে পেরেছেন পোল্যান্ডের বেতন কেমন হতে পারে।এছাড়া পোল্যান্ডে আপনার কাজের ধরন যোগ্যতা দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বেতন কমবেশি হয়ে থাকে।আমি সপ্তাহে সাধারণত ৪০ ঘন্টা ডিউটি করতে পারবেন। এছাড়া দেশটিতে আপনি বছরে ১৫০ ঘণ্টার বেশি ওভারটাইম করতে পারবেন না। পোল্যান্ড কোন কাজের চাহিদা বেশি জেনে নিতে পারেন।

বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে সে বিষয়ে আলোচনা করবো। পোল্যান্ড ইউরোপের একটি ইইউ (EU) দেশ। আর এর কারণে সাধারণত পোল্যান্ডে যেতে একটু টাকা বেশি খরচ হয়ে থাকে। আপনি যদি সরকারি ভাবে দালাল ছাড়া পোল্যান্ডে যেতে পারেন 

তাহলে আপনার খরচ হবে প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা। অন্যদিকে আপনি যদি বেসরকারিভাবে বিভিন্ন এজেন্সি কিংবা দালালের সহযোগিতা নিয়ে যান, তাহলে খরচ প্রায় 8 লক্ষ থেকে লক্ষ টাকা।

পোল্যান্ড থেকে কোন কোন দেশে যাওয়া যায় জেনে নিন

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই পোল্যান্ডের নাগরিকরা যেতে পারেন। কেননা বর্তমানে পাসপোর্ট Ranking এ পোল্যান্ড সর্ব উপরে রয়েছেন। বিশ্বে পোল্যান্ডের পাসপোর্ট এর অবস্থান বর্তমানে ষষ্ঠতম স্থানে রয়েছে। পোল্যান্ডের এই পাসপোর্টটি দিয়ে আপনি ভিসা ছাড়াই পৃথিবীর ১৮৯ টি দেশে ৯০ দিনের জন্য সহজেই ভ্রমণ করতে পারবেন।
পোল্যান্ডের পাসপোর্টধারী হোল্ডাররা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, লুক্সেমবার্গ এবং সুইজারল্যান্ড এর মত উন্নত, যে কোন দেশেই সহজে ভিসা ছাড়াই যেতে পারেন। তবে কিছু কিছু দেশের ক্ষেত্রে অবশ্যই ভিসার প্রয়োজন হবে। সে দেশগুলোর নাম হলো, আফগানিস্তান, চীন, উত্তর কোরিয়া, আলজেরিয়া, কিউবা।

লেখকের শেষ মন্তব্য

উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে,পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, টুরিস্ট ভিসা এবং স্টুডেন্ট ভিসা, বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার উপায়, বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে, পোল্যান্ড আবেদন প্রক্রিয়া, পোল্যান্ড যেতে কত বছর বয়স লাগে, পোল্যান্ডের বেতন কত এবং পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে ইত্যাদি সম্পর্কে। আশা করি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে শেয়ার করে দিতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url