কানাডা জব ভিসা ২০২৪ ( আবেদন, খরচ, যোগ্যতা)
কানাডা উন্নত একটি দেশ। দেশটিতে কাজের চাহিদা, উচ্চ বেতন, জীবনযাত্রার মান এবং
সুযোগ সুবিধা বেশি হওয়ার কারণে, প্রতি বছর বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পাড়ি
জমিয়ে থাকেন। তাহলে চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক, কানাডা জব ভিসা আবেদন এবং খরচ
কেমন সে সম্পর্কে।
কানাডার কোম্পানিগুলো প্রতি বছর সার্কুলার দিয়ে হাজার হাজার শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে
থাকে। তবে আপনি যদি কানাডাতে কাজ করার উদ্দেশ্যে যেতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই
আপনার কানাডা জব ভিসা লাগবে। জব ভিসা সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে নিচে জানতে
পারবেন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ কানাডা জব ভিসা ২০২৪ সম্পর্কে জানতে পড়ুন
কানাডা জব ভিসা আবেদন করার নিয়ম জানুন
কানাডা জব ভিসা আবেদন করার নিয়ম, সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ
গুগলে সন্ধান করে থাকেন। এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে, আশা করি
জানতে পারবেন। কানাডা জব ভিসা পেতে হেলে, আপনাকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করে অনলাইনে
আবেদন করতে হবে। আপনি কানাডা সরকারি ওয়েবসাইটে আবেদন করতে পারবেন।
কানাডা জব ভিসা আবেদন করার অনেকগুলো ওয়েবসাইট রয়েছে। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয়
ওয়েবসাইটটি হলো
www..jobbank.gc.ca আপনি যদি মাত্র
কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করেন, তাহলে খুব সহজেই কানাডা জব ভিসা আবেদন করতে পারবেন।
চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক সেই ধাপগুলো সম্পর্কে।
- প্রথমে আপনাকে ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করতে হবে। এরপর আপনাকে ইনফরমেশন ব্যবহার করে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে। অবশ্যই আপনাকে সঠিক তথ্য গুলোই ব্যবহার করতে হবে।
- আপনার একাউন্ট যখন তৈরি হয়ে যাবে, তখন আপনাকে জব খুঁজে বের করতে হবে। সেজন্য আপনি ওয়েবসাইটের Job Search অপশনটি ব্যবহার করতে পারেন। Job search ব্যবহার করলে, আপনি খুব সহজে নিজের চাহিদা মতো পছন্দ অনুযায়ী জব খুঁজে বের করতে পারবেন।
- আপনি যখন জব খুঁজে বের করবেন, তারপর আপনাকে অবশ্যই জবের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন করার জন্য How to Apply অফশনটিতে ক্লিক করতে হবে। এভাবেই আপনার যাবতীয় সকল প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো দিয়ে কানাডা জবের জন্য আবেদন করতে হবে। কানাডা গ্রীন কার্ড লটারি আবেদনের নিয়ম জেনে নিন।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কি কি কাগজপত্র লাগে
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় অবশ্যই আপনার প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র লাগবে।
আপনারা যারা কানাডা কাজের ভিসাতে কি কি কাগজপত্র লাগে, সে সম্পর্ক ধারণা রাখেন না
বা জানা নেই, তাহলে চলুন আমাদের জানার সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- আপনার বৈধ পাসপোর্ট (কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদী)
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট
- কাজের অভিজ্ঞতা প্রমাণপত্র
- শিক্ষাগত যোগ্যতা সকল সার্টিফিকেট
- কানাডা ভিসা আবেদন ফরম
- ভিসা পে রশিদ
- ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট
কানাডাতে আপনি যদি কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে যেতে চান, তবে উপরে
উল্লেখিত কাগজপত্রগুলো অবশ্যই লাগবে। এসব কাগজপত্রগুলো যদি না থাকে তাহলে ভিসা
আবেদন করতে পারবেন না অর্থাৎ আপনার কানাডাতে যাওয়া হবে না। তাই কানাডাতে ভিসা
আবেদন করার পূর্বে কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করে রাখার চেষ্টা করতে পারেন। কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে আরো জেনে নিন।
কানাডা জব ভিসা খরচ কত জানুন
কানাডা জব ভিসা খরচ কত, সে সম্পর্কে জানার জন্য অনেকে ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করে
থাকেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, কানাডা জব ভিসা খরচ কেমন সে সম্পর্কে জেনে
নেওয়া যাক। কানাড়া জব ভিসার মেয়াদ সাধারণত ১ বছর থেকে ৩ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে।
আপনার ভিসার মেয়াদের পরিমাণ যত বেশি হবে, খরচের পরিমাণ তত বেশি হবে।
একটি ভিসা করতে সাধারণত অনেক ধরনের খরচ হয়ে থাকে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য
খরচ গুলো হলো ভিসা ফি, এজেন্সি ফি এবং অন্যান্য খরচ। বাংলাদেশ থেকে প্রকৃতপক্ষে
কানাডার জব ভিসার খরচ অনেকটা তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। তবে আপনি ভিসা প্রসেসিং
সাধারণত বিভিন্ন এজেন্সির সাহায্য করলে, অনেক বেশি টাকা লেগে যায়। কানাডা জব ভিসা
করতে আপনার
আনুমানিক খরচ হবে প্রায় ৭ লক্ষ থেকে ১১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। বাংলাদেশের বেশিরভাগ
মানুষ সাধারণত এজেন্সি বা দালালের সহযোগিতা নিয়ে স্বপ্নের দেশ কানাডাতে গিয়ে
থাকেন। আর এর কারণে তুলনামূলক খরচটা বহুগুণ বেশি হয়ে গিয়ে থাকে। কানাডা ভিসার
চাহিদা চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে, বর্তমানে এ ভিসা পাওয়াটা কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে।
অবৈধ পথে কানাডা
যাওয়া আপনার জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সেজন্য অবৈধ পথে ভুলক্রমেও না যাওয়াই উচিত।
অবৈধ পথকে সবসময় আমরা নিরুৎসাহিত করে থাকি। প্রয়োজনে আপনি সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় জেনে নিতে পারেন। সরকারিভাবে কানাডা যেতে পারলে আপনার খরচের
পরিমাণটা কম হবে। কানাডা ভিসা পাওয়ার সহজ উপায় জানতে পড়ুন।
কানাডা জব ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে জানুন
কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা যদি আপনার না থাকে, তাহলে ভিসার জন্য আবেদন করতে
পারবেন না। কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি যোগ্যতা গুলো ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। আপনি যদি
আপনার স্বপ্নের দেশ কানাডাতে জবের উদ্দেশ্যে যেতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই IELTS
স্কোর সর্বনিম্ন ৬ থাকতে হবে। শিক্ষার দিক দিয়ে আবেদনকারীর সর্বনিম্ন এইচএসসি পাস
হতে হবে। আবেদনকারীর বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর হতে হবে এবং ব্যাংক ব্যালেন্সে
পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা থাকতে হবে।
কানাডা জব ক্যাটাগরি জেনে নিন
কানাডা যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই কানাডা জব ক্যাটাগরি সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা নিযে
যাওয়া উচিত। কেননা কানাডা সব সময় অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতাকে মূল্যায়ন করে থাকে।
আপনার যদি দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে কানাডাতে উচ্চ বেতনে বিভিন্ন ধরনের কাজ
পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই আপনাকে কানাডাতে বৈধ উপায়ে যেতে হবে। না হলে প্রথম
অবস্থায় এখানে কষ্ট হবে।
কানাডাতে যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের কাজ পাওয়ায়। তবে আপনার যদি বেশি
শিক্ষাগত যোগ্যতা নাও থাকে, সেক্ষেত্রে দক্ষতার উপর ভিত্তি করে, অনেক কাজ রয়েছে
যেগুলো থেকে ভালো টাকা উপার্জন করা যায়। দেশটিতে প্রতিটি কাজের অনেক গুরুত্ব
রয়েছে। কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই জেনে নিতে পারেন, কানাডা কোন কাজে চাহিদা বেশি এবং কানাডা সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতন কত।
কানাডা সর্বনিম্ন বেতন কত, সেটা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু সর্বোচ্চ বেতন
কত হবে সেটা নির্ধারিত নয়। সেটা সাধারণত নির্ধারিত হয়ে থাকবে, আপনার দক্ষতা এবং
যোগ্যতার উপরে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কানাডাতে কিছু চাহিদা সম্মত কাজ সম্পর্কে।
- কনস্ট্রাকশনের কাজ
- ড্রাইভিং কাজ
- মেকানিক্যালের কাজ
- কৃষি কাজ
- রেস্টুরেন্টের কাজ
- কোম্পানির কাজ
- প্লাম্বারের কাজ
- ইলেকট্রনিক্সের কাজ
- ক্লিনারের কাজ
কানাডাতে বেতন কত জানুন
কানাডাতে বেতন কত, সেটা সাধারণত কানাডার বিভিন্ন প্রদেশ বা অঞ্চল ভেদে সর্বনিম্ন
গড় বেতন পরিবর্তন হয়ে থাকে। কানাডাতে সাধারণত ঘন্টা অনুযায়ী বেতন প্রদান করা
হয়ে থাকে। দেশটিতে ঘন্টা প্রতি বেতন সর্বনিম্ন ১৫. ৪৫ কানাডিয়ান ডলার।
বাংলাদেশি টাকায় কনভার্ট করলে দাঁড়ায় ১,২০০ টাকার মতো। সে তুলনায় কানাডাতে
যদি শ্রমিকদের মাসিক বেতন হিসাব করা যায়,
তাহলে দাঁড়ায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে আপনার যদি
কাজের প্রতি দক্ষতা, যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে বেতন আরো বেশি হতে পারে।
কানাডাতে যেসব শ্রমিক রয়েছে তারা সাধারণত ৮ ঘন্টার বেশি কাজ করতে পারে না। কানাডা ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে।
কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি
কানাডাতে যাওয়ার জন্য বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ভিসা ক্যাটাগরি পাওয়া যায়। আর কি
কি ভিসা পাওয়া যায় সেগুলো আপনাদের জানার জন্য নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
বিস্তারিত সেখান থেকে জেনে নিতে পারেন আপনাদের জানার সুবিধার জন্য।
- কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- কানাডা টুরিস্ট/ভিজিট ভিসা
- কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা
- কানাডা লেবার ভিসা
- কানাডা কৃষি ভিসা
- কানাডা জব ভিসা
- কানাডা শ্রমিক ভিসা
- কানাডা মেডিকেল ভিসা
- কানাডা ইমিগ্রেশন ভেজা
- কানাডা ফ্রি ভিসা
কানাডাতে আপনি যদি যেতে চান, তবে উপরে উল্লেখিত ভিসাগুলোর মাধ্যমে যেতে পারবেন।
তবে যাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এছাড়াও প্রতিটি
ভিসার ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন ডকুমেন্টগুলো লেগে থাকে। কানাডা গ্রীন কার্ড লটারি ২০২৪/২০২৫ সম্পর্কে জানতে পড়ুন।
লেখকের শেষ মন্তব্য
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলে যে, কানাডা জব ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া,
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কি কি কাগজপত্র লাগে, কানাডা জব ভিসার খরচ কেমন,
কানাডা জব ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা, কানাডা জব ক্যাটাগরি এবং কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি
ইত্যাদি সম্পর্কে। আপনি কানাডাতে উদ্দেশ্যে নিয়ে যেতে চান, তবে অবশ্যই সে কাজের
উপরে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা
অর্জন করে যাওয়া উচিত। কেননা দেশটি দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে সবসময় মূল্যায়ন করে
থাকে, এছাড়াও বেতনের পরিমাণ সর্বোচ্চ হয়ে থাকে। আশাকরি আর্টিকেলটি মনোযোগ
সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। তবে বুঝতে সমস্যা হলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন
না।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url