ক্রোয়েশিয়া ভিসার দাম কত ২০২৪ (আবেদন ও খরচ)
ক্রোয়েশিয়া দেশটি ইউরোপ মহাদেশের একটি উন্নত রাষ্ট্র। দেশটিতে কাজের সুযোগ এবং
উচ্চ বেতন হওয়ায়, প্রতিবছর বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী ভাইয়েরা পাড়ি
দিতে চায়। তাই আপনারা যারা ক্রোয়েশিয়া যেতে চাচ্ছেন, ক্রোয়েশিয়া ভিসার দাম
কত, নিচে জেনে নিতে পারেন।
ক্রোয়েশিয়াতে আপনি বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ভিসা ক্যাটাগরির মাধ্যমে যেতে পারবেন।
তবে পূর্বের তুলনায় ক্রোয়েশিয়ার ভিসার দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আপনি
দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা করলে খরচের পরিমাণটা বেশি পড়বে। চলুন নিচে জেনে
নেওয়া যাক, ক্রোয়েশিয়া ভিসার দাম কত সে সম্পর্কে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ ক্রোয়েশিয়া ভিসার দাম কত জানতে পড়ুন
ক্রোয়েশিয়া ভিসার দাম কত
ক্রোয়েশিয়া ইউরোপের স্বাধীন এবং উন্নত একটি রাষ্ট্র। দেশটি স্বাধীন হওয়ার পর
থেকেই তাদের নিজস্ব ভিসা নীতিতে কাজ করছে। ক্রোয়েশিয়া দেশটি ২০১৩ সালে ইউরোপীয়
ইউনিয়নের যোগদান করেছে। তারপর থেকেই দেশটিতে ইউরো মুদ্রা প্রচলিত শুরু হয়েছে।
ক্রোয়েশিয়া দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত হওয়ায় প্রায় অসংখ্য বাংলাদেশসহ
অন্যান্য প্রবাসগামী মানুষ,
আগ্রহের সাথে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা তৈরি করছেন। বিশেষ করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং প্রক্রিয়া অবলম্বন করে থাকেন। কেননা
ক্রোয়েশিয়াতে কাজের উচ্চ বেতন এবং কাজের চাহিদা বেশি হওয়ায়, দেশটি প্রবাসীদের
কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে ক্রোয়েশিয়া দেশটিতে
যেতে চান, তবে বর্তমানে ভিসা তৈরি,
বিমান ভাড়া এবং প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রসহ সব মিলিয়ে দেশটিতে যেতে, আপনার খরচ
হতে পারে প্রায় ৮ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা। এছাড়া সর্বোচ্চ ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত
খরচ হতে পারে।কেননা অনেক সময় দালাল বা এজেন্সির কারণে কম বেশি হতে পারে। তবে
দেশটিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে দালাল থেকে সতর্ক থাকা উচিত।
ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম কত জানুন
ক্রোয়েশিয়া ভিসার দাম কত, সে সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ গুগলে
সার্চ করে থাকেন। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে এই পোস্টটি ভালোভাবে মনোযোগ
সহকারে পড়তে থাকুন, আশা করি জানতে পারবেন। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরি ভিসা
নিয়ে আপনি ক্রোয়েশিয়া দেশটিতে যেতে পারবেন। যেমন: ওয়ার্ক পারমিট ভিসা,
স্টুডেন্ট ভিসা, ভিজিট ভিসা ইত্যাদি।
আপনার যদি ক্রোয়েশিয়ার ভিসা পেতে চান তবে নিকতস্থ এম্বাসি কিংবা এজেন্সির সাথে
যোগাযোগ করতে হবে। যেহেতু ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বিভিন্ন ক্যাটাগরি রয়েছে তাই
ক্যাটাগরি অনুযায়ী কোন ভিসার দাম কত, সে সম্পর্কে জানতে নিচে পড়ুতে পারেন।
ক্রমিক নং | ভিসা ক্যাটাগরি | ভিসার দাম (টাকায়) |
---|---|---|
০১ | ওয়ার্ক পারমিট ভিসা | প্রায় ৮ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা |
০২ | ভিজিট ভিসা | প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা |
০৩ | স্টুডেন্ট ভিসা | প্রায় ৪ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা |
০৪ | কনস্ট্রাকশন ভিসা | প্রায় ৬ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা |
০৫ | কৃষি ভিসা | প্রায় ৭ লক্ষ থেকে ৮ লক্ষ টাকা |
০৬ | ড্রাইভিং ভিসা | প্রায় ৭ লক্ষ থেকে ৯ লক্ষ টাকা |
০৭ | শ্রমিক ভিসা | প্রায় ৭ লক্ষ থেকে ৮ লক্ষ টাকা |
০৮ | রেস্টুরেন্ট ভিসা | প্রায় ৭ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা |
০৯ | টুরিস্ট ভিসা | প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা |
ক্রোয়েশিয়া বেতন কত জানুন
ক্রোয়েশিয়ার বেতন কত, সেটা সাধারণত একজন কর্মীর কাজের ধরন, যোগ্যতা, দক্ষতা এবং
অভিজ্ঞতার উপরে ভিত্তি করে নির্ভর করে থাকে। ক্রোয়েশিয়া দেশটি সবসময় দক্ষতা
এবং অভিজ্ঞতা কে মূল্যায়ন করে থাকে। এছাড়াও দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মানুষের
বেতনের পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে থাকে।
ক্রোয়েশিয়াতে সর্বনিম্ন বেতন প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত
হয়ে থাকে। এছাড়া যাদের কাজের প্রতি অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা রয়েছে, তাদের পেশা
অনুযায়ী কাজের বেতন সাধারণত দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ক্রোয়েশিয়া কোন কাজের বেতন কত জেনে নিতে পারেন।
ক্রোয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
ক্রোয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগবে, সেটা সাধারণত নির্ভর করবে ভিসার ধরন এবং ভিসার
খরচের উপরে ভিত্তি করে।কেননা ক্রোয়েশিয়া দেশটিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার ভিসা
আবেদন ফি, বিমান ভাড়া, মেডিকেল রিপোর্ট সহ বিভিন্ন ধরনের খরচ হয়ে থাকবে।
- সব মিলিয়ে ভিসার ধরন অনুযায়ী আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে ক্রোয়েশিয়া দেশটিতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে বা কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে প্রায় ৮ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
- এছাড়া আপনি যদি ভিজিট ভিসা বা টুরিস্ট ভিসাতে ক্রোয়েশিয়া দেশটিতে যেতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
- স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে আপনারা খরচ হতে পারে প্রায় ৪ থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে জানুন।
ক্রোয়েশিয়ায় যেসব কাজের চাহিদা বেশি
ক্রোয়েশিয়া দেশটিতে বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে। আপনার যদি দক্ষতা এবং
অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশটিতে যেতে পারেন, তাহলে ভালো বেতনে কাজ করতে পারবেন। কেননা
ক্রোয়েশিয়া দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে সব সময় মূল্যায়ন করে থাকে।
তবে ক্রোয়েশিয়া দেশটিতে বর্তমানে পর্যটন শিল্পের আওতাধীন যেমন: শিল্প ও
নির্মাণ, তথ্যপ্রযুক্তি ও স্বাস্থ্য সেবায় আওতায় যে সকল কাজ রয়েছে সেসব কাজের
প্রচুর পরিমাণে চাহিদা রয়েছে। তাহলে চলুন যেনে নেওয়া যাক, ক্রোয়েশিয়ায় যেসব
কাজের চাহিদা বর্তমানে বেশি রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে।
- কৃষি কাজ
- কনস্ট্রাকশন কাজ
- হোটেল বা রেস্টুরেন্ট এর কাজ
- ক্লিনারের কাজ
- ফুড ডেলিভারি ম্যানের কাজ
- ইলেকট্রিকশিয়ানের কাজ
- মেকানিক্যালের কাজ
- শপিং মলের কাজ
- ড্রাইভিং এর কাজ
ক্রোয়েশিয়ায় উপরে উল্লেখিত কাজগুলোতে ভালো চাহিদা রয়েছে, এইসব কাজের উপরে
যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই দক্ষতা অর্জন করে যাওয়া উচিত। তাহলে আপনি প্রথম থেকেই ভালো
পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন এবং সহজেই ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। ক্রোয়েশিয়া ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া জেনে নিতে পারেন।
ক্রোয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে
ক্রোয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে,আপনারা যারা ক্রোয়েশিয়া প্রবাসীগামী
রয়েছেন, তাদের জন্য জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক।
- আপনি যদি ক্রোয়েশিয়া দেশটিতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে যেতে চান, তাহলে সর্বনিম্ন বয়স হতে হবে ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৪৫ বছর।
ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ফর বাংলাদেশ
ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ফর বাংলাদেশ বলতে বোঝানো হয়ে থাকে, আপনার ওয়ার্ক
পারমিট ভিসার ভিতরে কি ধরনের কাজ রয়েছে এবং সেগুলো কাজের তথ্য, বেতনসহ যাবতীয় খরচ
বোঝানো হয়ে থাকে। বর্তমানে প্রায় অধিকাংশ মানুষের জীবিকা নির্বাহ করার জন্য
বর্তমানে ইউরোপের উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে গিয়ে থাকেন। সেজন্য প্রবাসীদের কাছে
ইউরোপের পছন্দের তালিকাতে ক্রোয়েশিয়া দেশটিও বর্তমানে আকর্ষণীয় গন্তব্য।
কেননা দেশটিতে
কাজে চাহিদা এবং উচ্চ বেতন রয়েছে। আপনি যদি কোন দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে
ক্রোয়েশিয়া দেশটিতে যেতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার খরচের পরিমাণ বেশি পড়বে। তাই
ক্রোয়েশিয়া দেশটিতে অল্প খরচে যাওয়ার জন্য সার্কুলারের জন্য অপেক্ষা করতে
পারেন। ক্রোয়েশিয়ার নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায় জেনে নিন।
অনলাইনে ক্রোয়েশিয়া ভিসা চেক
প্রতিটি প্রবাসী শ্রমিক কাজের উদ্দেশ্যে ক্রোয়েশিয়া দেশটিতে যেতে চায়। তবে
যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনার হাতের ভিসাটি চেক করে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কেননা আপনি যদি কাজের জন্য ক্রোয়েশিয়া যেতে চান, তবে অবশ্যই বৈধ ভিসা থাকতে
হবে। প্রায় বেশিরভাগই মানুষ দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার আবেদন করে থাকে।
কিছু কিছু দালাল বা এজেন্সি রয়েছেন
যারা অবৈধ ভিসা হাতে ধরিয়ে দিয়ে থাকেন। যার ফলে দেশটিতে যেতে আপনার নানান
ঝামেলায় পোহাতে হতে পারে। তাই আপনার ভিসাটি আসল কি নকল সে বিষয়ে জানার জন্য চেক
করা অতি জরুরী। নিচের এই
ওয়েবসাইটের
মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে চেক করতে পারবেন।
লেখকের শেষ মন্তব্য - ক্রোয়েশিয়া ভিসার দাম কত সে সম্পর্কে
উপরোক্ত আলোচনা মাধ্যমে জানতে পারলেন যে,ক্রোয়েশিয়া ভিসার দাম কত, ক্রোয়েশিয়া
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দাম কত, ক্রোয়েশিয়া বেতন কত, ক্রোয়েশিয়া যেতে কত টাকা
লাগে, কোন কাজের চাহিদা বেশি, ক্রোয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে এবং অনলাইনে
ক্রোয়েশিয়া ভিসা চেক ইত্যাদি সম্পর্কে। আপনি যদি ক্রোয়েশিয়াতে যেতে চান, তবে কোন
ভিসার দাম কত,
সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে যাবেন। দালালরা অনেক সময় নানান বাহানা করে ভিসা দাম বেশি
নিয়ে থাকেন। এছাড়াও আপনি যে কাজের উদ্দেশ্যে দেশটিতে যাবেন, সেই কাজের উপরে
অবশ্যই দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে যাওয়া উচিত। তবে দেশটিতে যাওয়ার পূর্বে
আপনার ভিসাটি চেক করতে পারেন, ভিসাটি আসল নাকি নকল সে বিষয়ে বোঝার জন্য।আশা করি
পুরো আর্টিকেলটি সহজেই বুঝতে পেরেছেন।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url