ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে জেনে নিন এখনই
ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে এবং যাদের টার্গেট বা স্বপ্ন রয়েছে ইউরোপ তাদের জন্য এ সম্পর্কে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ
পর্যন্ত পড়তে থাকুন, বিস্তারিত জানতে পারবেন। কিভাবে যাবেন এবং কত টাকা লাগবে।
ইউরোপের একেক দেশে যেতে আপনার একেক রকম খরচ লাগবে। যাদের স্বপ্ন সাধারনত ইউরোপ
যাওয়ার কিন্তু ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে ধারণা নেই।
শুধুমাত্র আপনাদের জানার জন্যই আজকের এই আর্টিকেলটি।
পোস্ট সূচীপত্রঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে জানতে পড়ুন
ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে
ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে, সে সম্পর্কে প্রায় অধিকাংশ মানুষ গুগলে
সার্চ করে থাকেন। আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে
জানতে পারবেন। আপনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে পারবেন, তবে আপনার খরচটা নির্ভর
করবে আপনার অবস্থান, ভিসা ক্যাটাগরি এবং ভিসার মেয়াদের উপরে।
আপনার এই ভিসার খরচের ভেতরেই অন্তর্ভুক্ত থাকবে ভিসা আবেদন ফি, মেডিকেল ফি, বিমান
ভাড়া এবং অন্যান্য যাবতীয় খরচ। আপনি যদি ইউরোপে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, ভিজিট
ভিসা এবং টুরিস্ট ভিসা নিয়ে যেতে চান, তবে যে খরচ পড়বে, সে সম্পর্কে নিচে
আনুমানিক একটা ধারণা উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
ইউরোপের অংশ | ইউরোপের দেশের নাম | স্টুডেন্ট ভিসা খরচ | ভিজিট/ টুরিস্ট ভিসা খরচ | ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ |
---|---|---|---|---|
পূর্ব ইউরোপ | রাশিয়া, ইউক্রেন, মলদোভা, বেলারুশ, জার্জিয়া,আর্মেনিয়া,আজারবাইজান,তুরস্ক , বসনিয়া, হার্জেগোভিনা, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া,হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, রোমানিয়া। | প্রায় ৩ লক্ষ টাকা থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। | প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। | প্রায় ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৭ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। |
পশ্চিম ইউরোপ | আইসল্যান্ড, আন্ডোরা,আলবেনিয়া, সাইপ্রাস, ডেরমার্ক, ইস্টোনিয়া, জার্মানি,ফ্রান্স,ইতালি,গ্রীস,লাতভিয়া,লিথুনিয়া,মাল্টা, লুক্সেরবার্গ,মন্টিনিগ্রো,হলান্ড,নরওয়ে, পর্তুগাল,সান মরিনো। | প্রায় ১০ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে | প্রায় ১২ লক্ষ থেকে ১৬ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। | প্রায় ১২ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। |
মধ্য ইউরোপ | অস্টিয়া,বেলজিয়াম,চেক প্রজাতন্ত্র, ফিনলান্ড,নেদারলান্ডস,আয়ারলান্ড এবং সুইজারলান্ড। | প্রায় ৪ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। | প্রায় ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। | প্রায় ১০ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। |
ইউরোপের কোন দেশগুলোতে কম খরচে যাওয়া যায়
ইউরোপের কোন কোন দেশে কম খরচে যাওয়া যায় সে সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। যতগুলো
মহাদেশ রয়েছে তার ভিতরে ইউরোপ মহাদেশে যেতে সবচেয়ে বেশি খরচ হয়ে থাকে। আবার
ইউরোপের এমন কিছু দেশ রয়েছে, যেগুলোতে আপনি অন্যান্য দেশের তুলনায় কম খরচে যেতে
পারবেন। কম খরচের ভিতরে ইউরোপের ভিসা নিয়ে যেসব দেশে সহজে যাওয়া যায়, সেগুলোর
তালিকা নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- রোমানিয়া
- ফ্রান্স
- মাল্টা
- পর্তুগাল
- সুইজারল্যান্ড
- নেদারল্যান্ড
ইউরোপের এসব দেশে আপনি বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসা, টুরিস্ট ভিসা এবং ওযার্ক
পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন। এসব দেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা
রয়েছে যা টুরিস্টদের কে আকৃষ্ট করে।
উপরে উল্লেখিত দেশগুলোতে আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান, তবে
আনুমানিক খরচ পড়বে প্রায় ৮ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা। তবে আপনি যদি টুরিস্ট ভিসা
কিংবা স্টুডেন্ট ভিসাতে যান, তবে তুলনামূলকভাবে খরচ কম পড়বে। বাংলাদেশের সাধারণত
এসব দেশের দূতাবাস রয়েছে সেখানে গিয়ে আপনি যোগাযোগ করে ভিসা আবেদন করতে পারেন
এবং প্রয়োজনীয় আরো সকল তথ্য নিতে পারেন।
ইউরোপের কোন দেশে যাওয়া সবচেয়ে সহজ
ইউরোপের সেনজেনভুক্ত যে কোন একটি দেশের ভিসা পেলে আপনি সহজেই ইউরোপের সেনজেনভুক্ত
২৬টি দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে সেনজেনভুক্ত এবং নন-সেনজেনভুক্ত দেশের
তালিকা সম্পর্কে জানতে হবে। সেনজেনভুক্ত কিছু দেশ রয়েছে, যেগুলোতে আপনি খুব
সহজেই ভিসা পাবেন বা পাওয়া অনেক সহজ।
ইউরোপে সহজে ভিসা পাওয়া যায়, এমন কিছু সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা আপনাদের জানার
সুবিধার্থে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- আয়ারল্যান্ড
- লাতভিয়া
- লিথুনিয়া
- ফিনল্যান্ড
- স্লোভাকিয়া
উপরে উল্লেখিত ইউরোপের দেশগুলোর ভিসা অনুমোদনের হার অনেক বেশি। সেজন্য অবশ্যই
আপনাকে উক্ত দেশে যাওয়ার জন্য যোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। আপনি যদি উপরোক্ত
দেশগুলোতে ভিসা আবেদন করেন, তাহলে খুব সহজে ভিসা অনুমোদন পেয়ে যাবেন।
এসব দেশে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা এবং ভিজিট ভিসা খুব সহজেই পাওয়া
যায়। উপরের যে কোন একটি দেশের যদি ভিসা পান, তাহলে ইউরোপের প্রায় সবগুলো দেশ
ভিজিট করতে পারবেন। ইউরোপের এসব দেশের জীবনযাত্রার মান উন্নত, শিক্ষার মান উন্নত
এবং ভালো চিকিৎসা পরিসেবা কাজের মজুরি ভালো পাওয়া যায়।
ইউরোপের কোন দেশে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যায়, তবে তুলনামূলকভাবে যেসব দেশের
স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া খুবই সহজ। সেগুলো নিচে আপনাদের জানার সুবিধার্থে উল্লেখ
করে দেওয়া হলো।
- জার্মানি
- পোল্যান্ড
- হাঙ্গেরি
- নেদারল্যান্ডস
- ফ্রান্স
উপরে উল্লেখিত ইউরোপের দেশগুলোর স্টুডেন্ট ভিসা আপনি খুব সহজেই পাবেন। তাই আপনি
যদি ইউরোপের এসব দেশে পড়াশোনা করতে যেতে চান, তবে যেতে পারেন।
IELTS ছাড়া ইউরোপের কোন দেশে যাওয়া যায়
আইএলটিস ছাড়া আপনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে পারবেন। তবে নিচে এই দেশগুলোতে
স্টুডেন্ট ভিসা কিংবা অন্যান্য ভিসার জন্য বাধ্যতামূলক নয়। সে দেশগুলো আপনাদের
জানার সুবিধার্থে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- জার্মানি
- ফ্রান্স
- পোল্যান্ড
- ইতালি
- হাঙ্গেরি
আপনি যদি ইউরোপের এই দেশগুলোতে যেতে চান, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট
প্রয়োজনীয়তা এবং ভিসা প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিবেন।
ইউরোপ ভিসা প্রসেসিং
ইউরোপের ভিসা প্রসেসিং সাধারণত কয়েকটি ধাপে সম্পূর্ণ হয়ে থাকে। সেগুলো আপনাদের
জানাই সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- প্রথমেই আপনাকে ভিসা নির্ধারণ করতে হবে, আপনি কোন ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করবেন। যেমন: (স্টুডেন্ট ভিসা,ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, টুরিস্ট ভিসা)
- ওয়েবসাইট থেকে আবেদন পত্র ডাউনলোড করে বা নির্দিষ্ট দেশর দূতাবাস থেকে আবেদনপত্রটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
- আবেদন পত্রের সাথে আপনার প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট যেমন পাসপোর্ট, ছবি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ইন্সুরেন্স এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলোসহ জমা দিতে হবে।
- এরপর আপনাকে ভিসা প্রসেসিং এর জন্য ভিসা ফি দিতে হবে। ভিসা ফি সাধারণত ভিসার ধরন এবং দেশের উপর নির্ভর করবে কত টাকা লাগবে।
- ভিসা প্রসেসিং সাধারণত ১৫ থেকে ৩০ দিনের ভিতরেই কমপ্লিট হয়। তবে দেশের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে।
লেখকের শেষ মন্তব্য - ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, ইউরোপের কোন কোন দেশে কম খরচে যাওয়া
যায়,ইউরোপের কোন দেশে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার সহজ, আইএলটিএস ছাড়া ইউরোপের কোন
দেশে যাওয়া যায়, ইউরোপ ভিসা প্রসেসিং। ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে এবং
ইউরোপের কোন দেশে যাওয়া সবচেয়ে সহজ ইত্যাদি সম্পর্কে।
আশা করি পুরো আর্টিকেলটি
মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। বাংলাদেশ থেকে আপনি কম খরচের মাধ্যমে
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে পারবেন যা উপরে আলোচিত হয়েছে। আর্টিকেলটি পড়ে যদি
উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url