গ্রীস ভিসার দাম কত এবং আবেদন করার নিয়ম জানুন

গ্রীস ইউরোপের সেনজেনভুক্ত একটি দেশ। বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশ থেকে গ্রীসে প্রবাসীরা ভিসা নিয়ে গিয়ে থাকেন। উদাহরণস্বরূপ: কাজের ভিসা, টুরিস্ট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা,চিকিৎসা ইত্যাদি। প্রশ্ন হচ্ছে গ্রীস ভিসার দাম কত? উত্তরটি জানতে নিচে পড়তে হবে।
গ্রীস দেশটিতে যাওয়ার খরচ অনেকটা বেশি। আর সেজন্য বাংলাদেশ থেকে কম সংখ্যক মানুষ গ্রীস  গিয়ে থাকেন। আপনি চাইলে সরকারিভাবে গ্রীসে যেতে পারবেন। বাংলাদেশ থেকে গ্রীস যেতে কত টাকা লাগে এবং গ্রীস ভিসার দাম কত ও আবেদন করার নিয়ম জানতে পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ গ্রীস ভিসার দাম কত এবং আবেদন করার নিয়ম জানতে পড়ুন

গ্রীস ভিসার দাম কত টাকা

গ্রীস ভিসার দাম কত, এ সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে, আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকেন, তাহলে সহজেই আশা করি জানতে পারবেন। গ্রীসে কাজ করার জন্য, ছোট বড় অনেক ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে। এবং বেতনের দিক দিয়ে অন্যান্য দেশে তুলনায় বেশি হয়ে থাকে। 

এজন্য গ্রীসের কোন কাজের বেতন কত জেনে নিতে পারেন। গ্রীস যেতে খরচের পরিমাণটা বেশি হলেও, বেতন বেশি হওয়ার কারণে সে দেশটিতে অনেকেই যেতে চান। গ্রীস দেশটিতে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই, যে কাজের উদ্দেশ্যে যাবেন, সেই কাজের উপরে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে যাবেন। আপনি কয়েক ধরনের ভিসার মাধ্যমে গ্রীস দেশটিতে যেতে পারবেন। 

সেজন্য জানতে হবে গ্রীস ভিসার দাম কত টাকা এবং দেশটিতে কোন ভিসাতে যেতে কত টাকা খরচ হয়ে থাকে। সেগুলো আপনাদের জানার সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।

ক্রমিক নং ভিসার নাম ভিসার দাম জানুন (টাকায়)
০১ ভিজিট ভিসা প্রায় ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা
০২ স্টুডেন্ট ভিসা প্রায় ৪ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা
০৩ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রায় ৮ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা
০৪ সিজনাল ভিসা প্রায় ৮ লক্ষ টাকা
০৫ কৃষি ভিসা প্রায় ৮ থেকে ৯ লক্ষ টাকা
০৬ ড্রাইভিং ভিসা প্রায় ৮ থেকে ৯ লক্ষ টাকা
০৭ ফাক্টোরি, কলকারখানা ভিসা প্রায় ৮ লক্ষ টাকা
০৮ শ্রমিক, লেবার ভিসা প্রায় ৭ লক্ষ টাকা
০৯ কোম্পানি ভিসা প্রায় ৮ থেকে ১২ লক্ষ টাকা
১০ হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ভিসা প্রায় ৮ লক্ষ টাকা

গ্রীস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানুন

গ্রীস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই ইন্টারনেটের খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। এই পোস্টটি পুরোটা পড়তে থাকুন, আশা করি সহজেই বুঝতে পারবেন বা জানতে পারবেন। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে গ্রীসে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আপনি যদি কাজের ভিসা নিয়ে দেশটিতে যেতে পারেন, তাহলে প্রতিমাসে দেড় লক্ষ থেকে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত কাজ করে ইনকাম করার সুযোগ পাবেন। 

কৃষি কাজ থেকে শুরু করে নির্মাণ কাজ, গার্মেন্টস, ড্রাইভিং, ইলেকট্রিক্যাল, রেস্টুরেন্টসহ সব ধরনের ভিসা পাবেন। তবে এসব কাজের ভিসা নিয়ে যদি আপনি সরকারিভাবে যেতে চান, তাহলে আপনার খরচ পড়বে প্রায় ন্যূনতম ৪ থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।এছাড়া আপনি যদি বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে গ্রীসে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান, 

তাহলে সর্বনিম্ন ভিসা খরচ হতে পারে প্রায় ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকা। এবং ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী সর্বোচ্চ খরচ হতে পারে প্রায় ৮ থেকে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় বাংলাদেশ থেকে গ্রীস যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে জেনে নিন।

গ্রীসে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বেতন কত জানুন

গ্রীসের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বেতন, সাধারণত নির্ভর করে থাকে কাজের পার্থক্য ও ধরণ, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং যোগ্যতার উপরে। একেক কোয়ালিটি শ্রমিকের একেক ধরনের বেতনের লক্ষ্য করা যায়। তবে কাজের ক্ষেত্রে দেশটিতে সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়ে থাকে। গ্রীসে একজন শ্রমিকের সর্বনিম্ন বেতন হয়ে থাকে প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। 

এবং যেসব শ্রমিকদের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা রয়েছে, সেবব কর্মীদের বেতন হয়ে থাকে প্রায় দের লক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।

  • গ্রীসে সিকিউরিটি গার্ড কিংবা ক্লিনার কাজের বেতন সাধারণত সর্বনিম্ন ১ লক্ষ থেকে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • এছাড়া গ্রীসের রাজমিস্ত্রি, প্লাম্বার, জাহাজ নির্মাণ কাজের বেতন প্রাথমিকভাবে প্রায় এক লক্ষ টাকা হয়ে থাকে। তবে যদি দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা থাকে সে ক্ষেত্রে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন।

গ্রীসে স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে

গ্রীসে একমাত্র স্টুডেন্ট ভিসাতে যেতে খরচের পরিমাণ কম হয়ে থাকে। কেননা আপনি মাত্র ৪ লক্ষ টাকার ভেতরেই দেশটির স্টুডেন্ট ভিসা পেয়ে যাবেন। এছাড়া আপনি যদি পড়াশোনা জন্য স্টুডেন্ট ভিসাতে সরকারিভাবে যেতে পারেন তাহলে খরচ হতে পারে ১ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। পড়াশোনা করার জন্য যদি গ্রীসে যেতে চান, তাহলে আপনার খরচ হতে পারে,
সব মিলিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মত। এছাড়া আপনি যদি স্কলারশীপ এর মাধ্যমে কিংবা IELTS স্কোরের উপর ভিত্তি করে স্টুডেন্ট ভিসাতে যেতে পারেন, তাহলে খরচের পরিমাণ আরো কম হতে পারে।

গ্রীসে টুরিস্ট ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে

গ্রীসে টুরিস্ট ভিসায় যেতে যে খরচ না হয়, তার চেয়ে বেশি খরচ হয়ে থাকে কাজের ভিসা বা চাকরির ভিসাতে। আপনি যদি ইউরোপের দেশ গ্রীস ভ্রমণ করতে চান, তবে দেশটি মাত্র ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার ভিতরে অফার করে থাকে। বাংলাদেশের যে কোন ভিসা এজেন্সি থেকে, আপনি মাত্র ৪ লক্ষ টাকার মধ্যেও গ্রীসের ভিজিট ভিসাটি পেতে পারেন। এছাড়া আপনি যদি 

সরকারিভাবে যেতে পারেন, তাহলে দুই থেকে তিন লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। ভিসার মেয়াদের উপর নির্ভর করে সাধারণত ভিসার দাম নির্ভর করে থাকে। আপনি যদি গ্রীসে ভ্রমণ করতে যেতে চান, তবে এই সব মিলিয়ে ৫ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। তবে এই খরচ কিছুটা কমবেশি হতে পারে। নিচে গ্রীস ভিসা আবেদন করার নিয়ম জানতে পড়ুন।

গ্রীস ভিসা আবেদন করার নিয়ম জানুন

গ্রীস সরকার সাধারণত কয়েক ধরনের ভিসা ক্যাটাগরি অফার করে থাকে। প্রথমে আপনাকে কোন উদ্দেশ্য নিযে দেশটিতে যাবেন সেই অনুযায়ী আপনার ভিসা ক্যাটাগরিটা নির্বাচন করতে হবে। তবে দেশটিতে বেশিরভাগ মানুষ কাজের উদ্দেশ্য নিয়ে গিয়ে থাকেন। আপনি চাইলে খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে গ্রীস ভিসা আবেদন করতে পারবেন। 

তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, গ্রীস ভিসা আবেদন করার জন্য নিম্নলিখিত কিছু ধাপ। যেগুলো অনুসরণ করলে আপনি খুব সহজেই আবেদন করতে পারবেন।

  • প্রথমে আপনাকে গ্রীসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে, আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করতে হবে এবং সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
  • আপনি অনলাইনের মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে চান, তবে এই Global Visa Center লিংকটিতে প্রবেশ করতে পারেন।
  • অনলাইনের মাধ্যমে আপনাকে ভিসা আবেদনের ফি পরিশোধ করতে হবে।
  • গ্রীসে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করতে হবে এবং অনলাইনের মাধ্যমে সব কাগজপত্র গুলো আপনাকে সাবমিট করতে হবে।
  • এরপর আপনাকে ইন্টারভিউ দেওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে।
  • আপনি যদি ভিসার জন্য মনোনীত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে পাসপোর্ট এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো ডেলিভারি করে দেওয়া হবে।

গ্রীস যেতে কত টাকা খরচ হতে পারে জানুন

গ্রীস যেতে কত খরচ হতে পারে, সে সম্পর্কে জানা প্রতিটি গ্রীস প্রবাসগামী মানুষের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়। আপনার ভিসা আবেদন থেকে শুরু করে ভিসা আবেদন, ভিসা ফি, বিমান ভাড়া, ভিসার দাম, দালালের খরচ, মেডিকেল পরীক্ষার খরচসহ সব মিলিয়ে টোটালি আপনার যেতে খরচ হতে পারে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। তবে ভিসার ধরন অনুযায়ী আপনার খরচ হতে পারে প্রায় ৮ লক্ষ থেকে সর্বচ্চো ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। সরকারিভাবে গ্রীসে যেতে কত টাকা লাগে জেনে নিতে পারেন।

গ্রীস যেতে কি কি যোগ্যতা লাগে

গ্রীস যেতে কি কি যোগ্যতা লাগে, সে সম্পর্কে জানা প্রায় প্রতিটি প্রবাসীর জন্য আবশ্যক। কেননা যোগ্যতা যদি না থাকে, তাহলে আপনি দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন না, বা ভিসা তৈরি করতে পারবেন না। গ্রীসে যাওয়ার জন্য প্রায় সবাই আবেদন করতে পারে, তবে সেক্ষেত্রে আপনার বয়স যদি ৪০ এর মধ্য হয়ে থাকে তাহলে আপনার জন্য উপযোগ। গ্রীসে ওয়ার্ক পারমিট 
ভিসাতে যাওয়ার জন্য যোগ্যতার ক্ষেত্রে আপনাকে, আপনাকে যে পুরোপুরিভাবে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা থাকতেই হবে এমনটা কিন্তু বাধ্যতামূলক নয়। তবে আপনার যদি কাজের প্রতি অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা কম থাকে তাহলে বেতনের পরিমাণ একটু কম পেতে পারেন। ইতিমধ্যে কোন কাজের বেতন কত সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। ধরুন আপনি ফল প্যাকেজিং এর কাজ পেয়েছেন, 

এটাতে কিন্তু যোগ্যতার প্রয়োজন নেই, সেক্ষেত্রে আপনার কোন ধরনের যোগ্যতা ছাড়াই কাজগুলো করতে পারবেন। তবে কিছু কিছু কাজ রয়েছে সেগুলোতে অবশ্যই আপনার যোগ্যতা থাকলে বেশি বেতন পেতে পারেন বা আপনার প্রতি কোম্পানির চাহিদা বেশি থাকবে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, গ্রীস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, গ্রীস ভিসার দাম কত টাকা, গ্রীস ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে বেতন কত, গ্রীস স্টুডেন্ট ভিসা যেতে কত টাকা লাগে, গ্রীস টুরিস্ট ভিসাতে যেতে কত টাকা লাগে,গ্রীস ভিসা আবেদন করার নিয়ম, গ্রীসে যাওয়ার যোগ্যতা এবং গ্রীসে যেতে কত টাকা খরচ হয় ইত্যাদি সম্পর্কে। আপনি যদি গ্রীস যেতে চান, 

তবে অবশ্যই খুঁটিনাটি বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে যাবেন। যেমন: বেতন কেমন, কোন কাজের চাহিদাগুলো বেশি, যেতে কত টাকা লাগবে ইত্যাদি। তবে সব সময় দালাল এবং প্রতারক থেকে সাবধাণতা অবলম্বন করার চেষ্টা করতে হবে। আশা করি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url