মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায় এবং খরচ কত জানুন
মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্ন প্রায় প্রতিটি প্রবাসীই দেখে থাকেন।
স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে চাইলে,অবশ্যই মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যাওয়ার
উপায় এবং খরচ সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে বিস্তারিত জেনে
নেওয়া যাক, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
আমেরিকা বর্তমানে সবচেয়ে বড় অর্থনীতির একটি দেশ।দেশটির ডলার দিয়ে বর্তমানে
আন্তর্জাতিক বানিজ্য চলছে। দেশটিতে গেলে উচ্চ বেতন এবং উন্নত জীবন যাপন করতে
পারবেন। তাই মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পুরো পোস্টটি
শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায় জানতে পড়ুন
- মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায়
- মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যেতে যেসব কাগজপত্র লাগে
- মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যেতে খরচ কত টাকা
- মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা কেন যাবেন?
- আমেরিকা কোন কাজের চাহিদা বেশি জানুন
- আমেরিকার সর্বনিম্ন বেতন কত
- আমেরিকায় সর্বোচ্চ বেতন কত জানুন
- আমেরিকা যেতে কত বয়স লাগে
- মালয়েশিয়া আমেরিকার ভিসা পেতে কতদিন লাগে
- লেখকের শেষ মন্তব্য
মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায়
মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ
মানুষ গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে, এই আর্টিকেলটি শুরু
থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকলে, আশা করি সহজেই জানতে এবং বুঝতে পারবেন। মালয়েশিয়া
থেকে আমেরিকা আপনি সাধারণত দুটি উপায়ে যেতে পারবেন।
- বৈধ উপায়ে
- অবৈধ উপায়ে
আপনি যদি মালয়েশিয়ার পাসপোর্ট হাতে পেয়ে থাকেন, তাহলে আপনার স্বপ্নের দেশ
আমেরিকাতে সহজেই বৈধ উপায়ে পাড়ি জমাতে পারবেন। এজন্য আপনাকে আপনার আমেরিকা
যাওয়ার উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিসা ক্যাটাগরিটা নির্বাচন করতে হবে। এরপরে আপনাকে
অনলাইনে মাধ্যমে আমেরিকার ভিসার আবেদন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করতে দূতাবাসে
সাক্ষাৎ করতে হবে।
তারপরে আপনি যদি ভিসার অনুমোদন পেয়ে যান, তাহলে আপনার স্বপ্নের দেশ আমেরিকাতে
পাড়ি জমাতে পারবেন। মালয়েশিয়াতে যারা নাগরিক নয় তাদেরকে অবশ্যই অবৈধ পথে
আমেরিকাতে পারে জামাতে হবে। এজন্য আপনাকে প্রথমে মালয়েশিয়া থেকে ইন্দোনেশিয়া
দেশটিতে যেতে হবে। অর্থাৎ ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপে অবস্থান করতে হবে। ইন্দোনেশিয়ার
দ্বীপে কিছুদিন থাকার পরে,
আপনাকে সেখান থেকে সাগর পথে অস্ট্রেলিয়া দেশটিতে যেতে হবে। সমুদ্রপথে
ইন্দোনেশিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া পৌঁছানোর পর সেখান থেকে আপনি আপনার স্বপ্নের দেশ
আমেরিকাতে যেতে পারবেন। তবে অবশ্যই মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা অবৈধ পথে যদি যেতে
চান, সেক্ষেত্রে একজন দক্ষ বা বিশ্বস্ত দালালের সাহায্য নিয়ে যেতে হবে। তবে অবৈধ
পথে
আপনি যদি মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকাতে যেতে বিভিন্ন জায়গাতে জীবনের ঝুঁকি পড়তে
পারে।মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপ যাওয়ার উপায় জেনে নিতে পারেন।
মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যেতে যেসব কাগজপত্র লাগে
মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে সে সম্পর্কে অনেকেই ধারণা রাখেন
না। আপনার আমেরিকা ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা যদি থাকে, তবে আপনি চাইলেই মালয়েশিয়া
থেকে আমেরিকা সহজেই পাড়ি জমাতে পারবেন। আমেরিকা যদি বৈধ পথে যেতে চান তবে আপনার
ভিসার প্রয়োজন হবে। আর এই ভিসা আবেদন করার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে।
কাগজপত্রগুলো যদি না থাকে, তাহলে ভিসার জন্য আপনি আবেদন করতে পারবেন না। তবে ভিসা
ক্যাটাগরি অনুযায়ী সাধারণত কাগজপত্রগুলো ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া
যাক, আমেরিকা যেতে কি কি কাগজপত্রগুলো লাগে সেগুলো সম্পর্কে।
- সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- আপনার বৈধ পাসপোর্ট (সর্বনিম্ন ২ বছর মেয়াদী)
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- ট্রাভেলস ইন্সুরেন্স
- জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি
- কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র
- ভিসা আবেদন ফরম
- ভিসা ফি
- আপনার পার্সোনাল আইডেন্টিটি ডকুমেন্ট
- ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট
মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকার ভিসা তৈরি করতে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্রগুলো লাগবে। তাই
ভিসা আবেদন করার পূর্বেই কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করে রাখার চেষ্টা করতে পারেন। যেন
আবেদনের সময কাগজপত্রগুলো খুঁজতে সময় না লাগে বা ঝামেলা পোহাতে না হয়।
মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যেতে খরচ কত টাকা
মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যাওয়ার খরচ কত টাকা, সে সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। চলুন
এই পোস্টের মাধ্যমে যেনে নেওয়া যাক খরচ কত টাকা হয়। বর্তমানে আমেরিকার ভিসা পাওয়া
অনেকটাই কঠিন। আপনি নিজে নিজেই যদি দেশটির ভিসার আবেদন করতে পারেন, তাহলে নাম
মাত্র খরচে আপনার স্বপ্নের দেশ আমেরিকাতে পাড়ি জমাতে পারবেন।
তবে আপনি যদি কোনো দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে আমেরিকাতে যেতে চান সেক্ষেত্রে
খরচের পরিমাণটা বেশি পারে। তবে সঠিকভাবে বলাটা সম্ভব হচ্ছে না। কেননা দালাল বা
এজেন্সি যার কাছ থেকে যক টাকা নিতে পারে। বর্তমানে আপনি যদি মালয়েশিয়া থেকেই
আমেরিকাতে যেতে চান, তবে আপনারা আনুমানিক খরচ হতে পারে প্রায় ১০ লক্ষ থেকে ২০
লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
তবে ভিসা ক্যাটাগরি এবং ভিসার মেয়াদেরর উপরে ভিত্তি করে খরচ কিছুটা কম বেশি হতে
পারে। তবে এ বিষয়ে আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হয়, আপনি যদি আমেরিকান প্রবাসী কোন
ব্যক্তির সাথে কথা বলতে পারেন, কিংবা কোন বিশ্বস্ত এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে
পারেন।
মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা কেন যাবেন?
মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা কেন যাবেন? এই প্রশ্নটা অনেকের মাঝেই সাধারণত দেখা
যায়। কেননা এই প্রশ্নটা অনেকটাই যুক্তি সঙ্গত। প্রায় অনেকেই ভেবে থাকেন যে, আমি
মালয়েশিয়াতে ভালো বেতন পাচ্ছি এবং সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি, তাহলে কেন আমেরিকাতে
পাড়ি জমাবো?হ্যাঁ, আপনার কথাগুলো যুক্তিসঙ্গত রয়েছে। তবে মালয়েশিয়ার চাইতে
আমেরিকা দেশটি অর্থনৈতিকভাবেই অনেক উন্নত, উচ্চ বেতন, স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা এবং
জীবন যাত্রার মান উন্নত।
এ কারণে আপনি এই দেশটিতে যেতে পারেন।তবে আপনি যদি মালয়েশিয়াতে ভালো বেতন এবং
সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন, তাহলে আপনার আমেরিকাতে না যাওয়াটাই ভালো। আপনার
মালয়েশিয়াতে থাকাকেই আমরা সমর্থন করে থাকি। আমেরিকা গ্রীণ কার্ড পাওয়ার উপায় জেনে নিতে পারেন।
আমেরিকা কোন কাজের চাহিদা বেশি জানুন
আমেরিকা কোন কাজের চাহিদা বেশি, আপনারা যারা মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যেতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কোন কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে জানতে পারলে, যাওয়ার পূর্বে সেই কাজের উপরে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে যেতে পারবেন। দেশটি কাজের দক্ষতা কে সব সময় মূল্যায়ন করে থাকে।
এছাড়াও দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন শ্রমিকের বেতনের পরিমানও বেশি হয়ে থাকে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, আমেরিকায় কোন কাজগুলো চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে।
- ইন্জিনিয়ারিং কাজ
- নার্সের কাজ
- প্লাম্বারের কাজ
- ডেলিভারি ম্যানের কাজ
- ওয়েটারের কাজ
- ড্রাইভিং কাজ
- কনস্ট্রাকশনের কাজ
- ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ
- পেইন্টারের কাজ
উপরে উল্লেখিত কাজগুলো আমেরিকাতে অনেক বেশি পরিমাণ চাহিদা রয়েছে। মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকাতে যাওয়ার পূর্বে কাজগুলোর উপরে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে যেতে পারেন। তাহলে আপনি প্রথম মাস থেকেই ভালো পরিমাণ বেতন উপার্জন করতে পারবেন।
আমেরিকার সর্বনিম্ন বেতন কত
আমেরিকায় সাধারণত ঘন্টা অনুযায়ী বেতন প্রদান করা হয়ে থাকে।আপনি যদি আমেরিকাতে কাজ করেন তবে আপনাকে ঘন্টা অনুযায়ী বেতন দেওয়া হবে। আমেরিকায় সর্বনিম্ন বেতন কত সেটা সাধারণত সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করে দেওয়া থাকে। প্রতি ঘন্টা অনুযায়ী আমেরিকার সর্বনিম্ন বেতন হচ্ছে ৭.২৫ ডলার। এর নিচে কেউ বেতন পায় না।
আমেরিকায় সর্বোচ্চ বেতন কত জানুন
আমেরিকায় সর্বোচ্চ বেতন সাধারণত কাজের ধরন, দক্ষতা অভিজ্ঞতার এবং যোগ্যতার উপরে নির্ভর করে থাকে। আপনি যদি আমেরিকায় দেশটিতে উচ্চ বেতনের পেশায় নিয়োজিত থাকেন, তাহলে আপনি বছরে আনুমানিক বেতন পাবেন প্রায় ১ লক্ষ ডলার থেকে ৫ লক্ষ ডলার পর্যন্ত। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, উচ্চ পেশার কাজ কোনগুলো। আপনাদের জানার সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- ডাক্তার
- বিশেষজ্ঞ
- নার্স
- সফটওয়্যার ডেভলপার
- ডেটা বিজ্ঞানী
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ
- আইনজীবী
- বিচারক
উপরে উল্লেখিত কাজগুলো হচ্ছে উচ্চ পেশার কাজ। আমেরিকায় এসব কাজ করতে পারলে আপনি সর্বোচ্চ বেতন পাবেন।
আমেরিকা যেতে কত বয়স লাগে
আমেরিকার যেতে কত বছর বয়স লাগে, সে সম্পর্কে জানা যারা দেশটিতে যেতে চাচ্ছেন
তাদের জন্য অবশ্যই জরুরী। সাধারণত মানুষ বিভিন্ন কারণে আমেরিকাতে গিয়ে থাকেন। কেউ
স্টুডেন্ট ভিসায়, কেউ টুরিস্ট ভিসায়, কেউ ওয়ার্ক পারমিট ভিসায়।
আপনাদের জানার সুবিধার্থে আমেরিকা যেতে কত বছর বয়স লাগে, সে সম্পর্কে আপনাদের
জানার সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়ার চেষ্টা করছি।
- স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে আপনার কমপক্ষে ১৪ বছর বয়স হতে হবে।
- কাজের ভিসার ক্ষেত্রে সাধারণত আপনার বয়স ১৮ থেকে ২১ বছরে হতে হবে।
মালয়েশিয়া আমেরিকার ভিসা পেতে কতদিন লাগে
মালয়েশিয়ায় আমেরিকান ভিসা পেতে কতদিন লাগে সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। তাই
আপনাদের জানার সুবিধার্থে, মালয়েশিয়ায় আমেরিকার ভিসা প্রক্রিয়া হতে সাধারণত
সময় লেগে থাকে, প্রায় ৩০ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। তবে এই সময়টা অবশ্যই আপনার ভিসা
প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করবে। ভিসা প্রক্রিয়ার সময় কাল আপনার ভিসা প্রক্রিয়া
ধরন এবং আপনার ভিসা প্রক্রিয়ার বিশেষ বিবরণ অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে
পারে।
লেখকের শেষ মন্তব্য - মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায় সম্পর্কে
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকায় যাওয়ার
উপায়, মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকা যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে, মালয়েশিয়া থেকে
আমেরিকা যাওয়ার খরচ কেমন এবং মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকাতে কেন যাবেন ইত্যাদি
সম্পর্কে। আপনি যদি উন্নত জীবন, উচ্চ বেতন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, চিকিৎসা সব
দিক দিয়ে সুবিধা পেতে চান
তবে মালয়েশিয়া থেকে আমেরিকাতে পাড়ি জমাতে পারেন। তবে বৈধ পথে আমরা সবসময়
সমর্থন করে থাকি। অবৈধ পথ আপনার জন্য জীবনহানি ঘটতে পারে। আশা করি এই আর্টিকেলটি
মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং সহজেই বুঝতে পেরেছেন। আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হয়ে থাকলে,
আপনার বন্ধু-বান্ধব আত্মীয় স্বজনের সাথে শেয়ার করে দিতে পারেন যেন তারা উপকৃত
হতে পারে।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url