কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয় জানুন
বাংলাদেশের কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়, লোন নিতে কি কি কাগজপত্র লাগে,কত
টাকা প্রবাসী লোন পাবেন এবং পরিশোধের সময়সীমা ইত্যাদি সম্পর্কে আপনি কি জানতে
চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে নিচে পড়তে
থাকুন।
বাংলাদেশ থেকে অনেকেই বিদেশ যেতে চাচ্ছেন অথচ টাকার অভাবে যেতে পারছেন না। আপনার
সম্পত্তি নেই, আত্মীয় সজন সহযোগিতা করছে না, এমন পরিস্থিতিতে আপনাকে সাহায্য করবে
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রবাসী কল্যান ব্যাংকসহ
সরকারি-বেসরকারি অনেকগুলো ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে নিচে বিস্তারিত জেনে নিন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয় জানতে পড়ুন
- কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয় জানুন
- সোনালী ব্যাংক
- অগ্রণী ব্যাংক
- পূবালী ব্যাংক
- এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক
- জনতা ব্যাংক
- প্রবাসী লোন কারা পাবেন?
- প্রবাসী লোন পাওয়ার জন্য যেসব কাগজপত্র লাগে
- প্রবাসী লোন কত টাকা পাবেন
- প্রবাসী লোন পরিশোধের নিয়ম এবং মেয়াদ
- বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন কোন ব্যাংক লোন দেয়
- লেখকের শেষ মন্তব্য
কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয় জানুন
কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়, সে সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ
গুগলে সার্চ করে থাকেন। কেননা আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ নিম্নবিত্ত। নিজের
সম্পত্তি বিক্রি করে প্রবাসে যাবে, কিন্তু সেই সম্পত্তি টুকুও নেই। এমনকি
আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকেও কোন রকম সহযোগিতা পায় না। আর সে জন্য দ্বারস্থ হতে
হয়, যেসব ব্যাংকগুলো সহযোগিতা করে পাশে দাঁড়ায়,
সেসব ব্যাংকের কাছে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রবাসীদের
সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। প্রবাসীদের
সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে ২০১১ সালে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক গঠন করা হয়। প্রবাসী
কল্যাণ ব্যাংক রাষ্ট্রমালিকানাধীন একটি বিশেষায়িত ব্যাংক। এই ব্যাংক প্রবাসীদের
সহ আরো নানান ধরনের ঋণ প্রদান করা থাকে যার মধ্য রয়েছে।
- অভিবাসন ঋণ
- ব্যবসা ঋণ
- শিক্ষা ঋণ
- গৃহ ঋণ
এছাড়াও আরো বিভিন্ন ব্যাংক রয়েছে যেগুলো প্রবাসে যাওয়ার ক্ষেত্রে, প্রবাসী
কল্যাণ ব্যাংকের পাশাপাশি এসব ব্যাংকগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সে সব
ব্যাংকগুলোর নিচে আপনাদের জানার সুবিধার্থে উল্লেখ করে দেওয়া হলো। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম জেনে নিন।
সোনালী ব্যাংক
সোনালী ব্যাংক সাধারণত প্রবাসীদের "প্রবাসী কর্মসংস্থান প্রকল্প" নামে ঋণ প্রদান
করে সহযোগিতা করে থাকে। আপনি চাইলে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করার মাধ্যমে আপনার
স্বপ্নের দেশটিতে পারি জমাতে পারেন এবং ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে দেশ এবং
পরিবারকে স্বাবলম্বি করে তুলতে পারবেন।
অগ্রণী ব্যাংক
অগ্রণী ব্যাংক বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রবাসীদের সাহায্য করার জন্য "অভিবাসী
শ্রমিক ঋণ প্রকল্প" নামে একটি ঋণ প্রদান করে থাকেন।
পূবালী ব্যাংক
পূবালী ব্যাংক প্রবাসগামীদের বিশেষভাবে সহযোগিতা করার জন্য "প্রবাসী ঋণ প্রকল্প"
নামে একটি ঋণ প্রদান করে থাকেন। আপনি চাইলে এই ঋণ গ্রহণ করার মাধ্যমে আপনার
স্বপ্নের দেশটিতে পাড়ি জমাতে পারবেন। এছাড়াও অর্থ উপার্জন করে পরিবারের সচ্ছলতা
আনতে পারবেন।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক "প্রবাসী কর্মসংস্থান ঋণ" নামে একটি ঋণ প্রদান করে থাকেন।
আপনি চাইলে এই ঋণ গ্রহণ করার মাধ্যমে বিদেশে গিয়ে অর্থ উপার্জন করে ঘুরে
দাঁড়াতে পারেন।
জনতা ব্যাংক
জনতা ব্যাংক বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ব একটি বড় ব্যাংক এটি প্রবাসীদের জন্য
বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকে। যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি জনতা ব্যাংক
থেকে ঋণ
নিয়ে প্রবাসে পাড়ি জমাতে পারেন। এগুলো ব্যাংক ছাড়াও আরও কিছু ব্যাংক রয়েছে
যেগুলো প্রবাসী ঋণ দিয়ে থাকতে পারে।
প্রবাসী লোন কারা পাবেন?
প্রবাসী লোন কারা পাবেন? এমন একটা প্রশ্ন আসতেই পারে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক
প্রবাসী লোন কারা পাবেন সে সম্পর্কে। আপনারা যারা বিদেশে যাওয়ার জন্য সাধারণত
ভিসা পেয়েছেন তাদের জন্য প্রবাসী লোন। আপনি যখন কোন দেশে যাওয়ার জন্য ভিসা
পাবেন, তারপর ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করতে
হবে।
আপনার লোন পেতে বৈধ ভিসা থাকতে হবে, ভিসার মেয়াদের উপর ভিত্তি করে কত টাকা লোন
দেওয়া হবে, সেটা সাধারণত নির্ধারণ করা হবে। একটা বিষয় মাথায় রাখবেন সেটা হলো,
কোন ব্যাংক আপনাকে ভিসা পেতে সহযোগিতা করবে না। নিজে ভিসা ম্যানেজ করার পর লোনের
জন্য আবেদন করতে পারবেন।
প্রবাসী লোন পাওয়ার জন্য যেসব কাগজপত্র লাগে
প্রবাসী লোন পাওয়ার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগবে, সে সম্পর্কে জানাটা আপনার জন্য
খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কাগজপত্রগুলো যদি সঠিক না থাকে, তাহলে আপনার জন্য লোন
পাওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। তাহলে চলুন জেনে নেই কি কি কাগজপত্র লাগে সে
সম্পর্কে।
- ভিসার ফটোকপি
- সাম্প্রতিক তোলা তিন কপি সত্যায়িত ছবি
- ইউনিয়ন পরিষদের নাগরিক সনদপত্র
- জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি
- পাসপোর্ট এর ফটোকপি
- স্থানীয় পরিচিত কোন ব্যক্তির জামিন নামা
এখানে পরিচিত যে ব্যক্তিটি জামিননামা দিবে সেটা সম্পত্তি বন্ধকের বিকল্প হিসেবে
কাজ করবে। জামিনদারের ছবি পৌরসভা বা ইউনিয়নের সনদপত্র, জাতীয় পরিচয় পত্রের
ফটোকপি, পাসপোর্ট এর ফটোকপি(যদি থাকে) জমা দিতে হবে।
প্রবাসী লোন কত টাকা পাবেন
প্রবাসী লোন কত টাকা পাবেন, সে সম্পর্কে জানাটা আপনার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা
আপনি কোন পরিস্থিতিতে রয়েছেন, ঋণ কত টাকা পাবেন সে সম্পর্কে জানলে আপনার জন্য
উপকার হবে। বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি ব্যাংকগুলো সাধারণত ১ লক্ষ থেকে ২ লক্ষ
টাকা পর্যন্ত লোন দিয়ে থাকে। আপনাকে যদি বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে এসব ব্যাংক থেকে
লোন নেন,
তাহলে এর মেয়াদ থাকবে ২৪ মাস। এই সাথে আপনার গ্রেস পিরিয়ড হিসেবে আরো দু'মাস
যোগ হবে। অর্থাৎ সরকারি ব্যাংকগুলো আপনাকে মোট ২৬ মাসের জন্য ৯% অর্থাৎ ৯ শতাংশ
সুদে ঋণ প্রদান করবে।এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলো রয়েছ, সেগুলো আপনাকে এক লক্ষ থেকে তিন লক্ষ টাকা
পর্যন্ত লোন দিবে। লোন পরিষদের মেয়াদ সাধারণত এক বছর থেকে তিন বছর মেয়াদী হয়ে
থাকে।
তবে ব্যাংকগুলো সুদের হার ১২% থেকে ১৪% নিয়ে থাকে। বিদেশ যাওয়ার জন্য যদি, আপনি কোন ব্যাংক ঋণ নেন তাহলে বিদেশ পৌঁছানোর তিন মাস পর
থেকে আপনার কিস্তি নেওয়া শুরু হবে। সরকারি বেসরকারি যেসব ব্যাংকগুলো রয়েছে
তাদের লোনের শর্ত ও অনুমোদন প্রক্রিয়া প্রায় একই রকমের হয়ে থাকে।
- সৌদি আরব
- সংযুক্ত আরব আমিরাত
- কাতার
- ওমান
- অস্ট্রেলিয়া
- ইতালি
- বাহরাইন
উপরে উল্লেখিত দেশগুলো লোন পরিশোধের মেয়াদ সাধারণত দুই বছর হয়ে থাকে। যারা এসব
ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে সিঙ্গাপুরে যায়, তাদের লোন পরিশোধের মেয়াদ ১ বছর হয়।
প্রবাসী লোন পরিশোধের নিয়ম এবং মেয়াদ
সোনালী ব্যাংকের প্রবাসী লোন পরিশোধের মেয়াদ সাধারণত তিন বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে।
প্রবাসে যাওয়ার পরে আপনাকে দুই বছরের ২৪ কিস্তি এবং তিন বছরে ৩৬ কিস্তি পরিশোধ
করতেই হবে। প্রতি মাসে সাধারণত আপনাকে একটি করে কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। পূবালী ব্যাংকে আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন দিলেও পরিশোধের মেয়াদ সাধারণত দুই
বছর থাকে।
এছাড়াও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক সহ অন্যান্য যে ব্যাংকগুলো রয়েছে তিন
লাখ টাকা পর্যন্ত লোন দিলেও ১২,১৪,৩৬ মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। এছাড়াও অগ্রণী ব্যাংকের লোন পরিশোধের মেয়াদ থাকে মাত্র দেড় বছর। বিদেশ যাওয়ার
সাধারণত তিন মাস পর থেকেই এই কিস্তি শুরু হয়ে যায়।
বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়
বিদেশ যাওয়ার জন্য যেসব ব্যাংকগুলো লোন দেয় সেগুলো আপনাদের জানার সুবিধার্থে
উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
- সোনালী ব্যাংক
- পূবালী ব্যাংক
- এন আরবি গ্লোবাল ব্যাংক
- অগ্রণী ব্যাংক
- জনতা ব্যাংক ইত্যাদি
লেখকের শেষ মন্তব্য - কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয় সে সম্পর্কে
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়,
প্রবাসী লোন কারা পায়, কি কি কাগজপত্রগুলো লাগে, প্রবাসী লোন কত টাকা এবং
প্রবাসী লোন পরিশোধ করার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে। আশা করি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ
সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছে।
তারপরেও আপনাদের যদি বুঝতে কোন সমস্যা হয়ে
থাক, তাহলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। এ সম্পর্কে আরো কোন প্রশ্ন জানার থাকলে,
অবশ্যই কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url