বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওযার উপায়
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার নিরাপদ মাধ্যম হলো সরকারিভাবে যাওয়া। বাংলাদেশ থেকে
প্রবাসীরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সরকারিভাবে জাচ্ছেন। আপনি যদি মালয়েশিয়াতে যেতে
চান, তবে বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে নিচে পড়ুন।
মালয়েশিয়াতে সরকারি ভাবে গেলে আপনি অল্প খরচে যেতে পারবেন এবং দালালের
প্রতারণার শিকার হতে হবে না। প্রতিবছর হাজার হাজার প্রবাসী কাজের উদ্দেশ্যে নিয়ে
সরকারিভাবে মালয়েশিয়াতে জাচ্ছে। তাই সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায় এবং
গাইডলাইন জানতে নিচে পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায় জানতে পড়ুন
- সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায় জানুন
- সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যেতে যেসব কাগজপত্র লাগে
- মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন করার নিয়ম জানুন
- মালয়েশিয়া থেকে কত বছর বয়স লাগে
- বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে কত সময় লাগে
- বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার দূরত্ব কত কিলোমিটার
- মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
- এজেন্সি বা দালাল ছাড়া মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায়
- মালয়েশিয়ার ভিসা চেক করার উপায় জানুন
- লেখকের শেষ মন্তব্য
সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায় জানুন
বাংলাদেশ থেকে আপনি যদি সরকারিভাবে মালয়েশিয়াতে যেতে চান, তবে আপনাকে গুগল প্লে-স্টোর
থেকে "আমি প্রবাসী অ্যাপ" ডাউনলোড করে, আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তারপর
আপনাকে মালয়েশিয়ার চাকরির জন্য আবেদন করতে হবে। মালয়েশিয়াতে বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি রয়েছে, তারা শ্রমিক নিয়োগের সার্কুলার
প্রকাশ করে থাকেন। এসব সার্কুলার দেখে
আপনি চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং
সরকারিভাবে মালয়েশিয়াতে পাড়ি জমাতে পারবেন। তবে অবশ্যই আপনাকে বিএমইটি (BMET) রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ করতে হবে।
রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ না করলে, আপনি মালয়েশিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন
না। এই নিবন্ধনটি ছাড়া আপনি সরকারিভাবে মালয়েশিয়াতে যেতে পারবেন না। মালয়েশিয়া কনস্ট্রাকশন কাজের বেতন কত জেনে নিন।
আপনি কোন ভিসাতে মালয়েশিয়াতে যাবেন, সেসব ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী মালয়েশিয়া
যাওয়ার কাগজপত্রগুলো ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসা এবং
টুরিস্ট ভিসাতে মালয়েশিয়া যেতে চান, তবে আলাদা আলাদা কিছু ডকুমেন্ট লাগবে। তবে
আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়াতে যেতে চান, তবে নিচে উল্লেখিত
কাগজপত্রগুলো লাগবে।মালয়েশিয়া থেকে (ইউরোপ) ইতালি যাওয়ার উপায় জেনে নিতে পারেন।
সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যেতে যেসব কাগজপত্র লাগে
সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যেতে যেসব কাগজপত্র লাগে সেগুলো জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ
মানুষ গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে সরকারিভাবে
মালয়েশিয়াতে যেতে যেসব কাগজপত্রগুলো লাগে, সেগুলো নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- আপনার মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- BMET রেজিষ্ট্রেশন কার্ড
- আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র
- করোনা ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট
- কোম্পানির অফার লেটার
- কোম্পানির কাজের চুক্তিপত্র
- আপনার কাজের দক্ষতা সার্টিফিকেট (যদি লাগে)
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র (যদি লাগে)
- ন্যূনতম দুই বছর মেয়াদী পাসপোর্ট
- সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- অন্যান্য সহায়ক কাগজপত্র
আপনি যদি মালয়েশিয়াতে সরকারিভাবে যেতে চান, তবে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্রগুলো
অবশ্যই লাগবে। তাই ভিসা করা পূর্বেই আপনার কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করে রাখুন।
মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন করার নিয়ম জানুন
মালয়েশিয়া সরকার বিভিন্ন ধরনের ভিসা ক্যাটাগরির অফার করে থাকেন। এসব ভিসা
ক্যাটাগরি অনুযায়ী মালয়েশিয়াতে যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করার প্রক্রিয়া কিছুটা
ভিন্ন হয়ে থাকে। বাংলাদেশ থেকে আপনি মালয়েশিয়াতে খুব সহজে যেতে পারবেন, এজন্য
অবশ্যই একটি ভিসার প্রয়োজন হবে।
বাংলাদেশ থেকে আপনি মালয়েশিয়া ভিসার জন্য সাধারণত তিনভাবে আবেদন করতে
পারবেন।
- বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন করার মাধ্যমে
- রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে (অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন)
- এবং "আমি প্রবাসী অ্যাপস" এর মাধ্যমে
বিএমইটি (BMET) রেজিস্ট্রেশন এর মাধ্যমে
মালয়েশিয়াতে আপনি যদি যেতে চান, তবে অবশ্যই আপনাকে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশনের মধ্য
দিয়ে যেতে হবে। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো কার্যালয়ে গিয়ে আপনি
মালয়েশিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই কার্যালয়টি সাধারণত প্রতিটি
জেলাতেই রয়েছে।
আপনার মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন করার জন্য, যেসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো লাগে
সেগুলো আগে থেকেই আপনাকে সংগ্রহ করে রাখতে হবে। আপনি যদি ভিসা আবেদন করার অনুমোদন
পান, তবে বিএমইটি রেজিষ্ট্রেশন করার মাধ্যমে সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যেতে পারবেন।
রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে (অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন)
মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো বিশ্বস্ত
রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করা। বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন
সফলভাবে সম্পন্ন হয়ে গেলে, তারপর আপনাকে মালয়েশিয়া ই-ভিসার জন্য আবেদন করতে
হবে। এজন্য আপনাকে মালয়েশিয়ান যে ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট এর অফিসিয়াল
ওয়েবসাইট রয়েছে,
সেখান থেকে ভিসা ক্যাটাগরী অনুযায়ী আপনাকে আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করে সঠিকভাবে
পূরণ করতে হবে। তারপর আপনাকে যাবতীয় সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ভিসা কি পরিশোধ
করে, ভিসার জন্য একটু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। এজেন্সি একটি নির্দিষ্ট সময়
পর আপনাকে ভিসাটি সংগ্রহ করে দিয়ে থাকবে। মালয়েশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি জানুন।
আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে
মালয়েশিয়াতে আপনারা যারা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে যেতে চাচ্ছেন, আপনারা গুগল
প্লে-স্টোর থেকে আমি প্রবাসী অ্যাপটি ডাউনলোড করে, ওয়ার্ক পারমিট
ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আমি প্রবাসী অ্যাপে যদি রেজিষ্ট্রেশন করেন, তবে আপনাকে ভিসার জন্য
প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র স্ক্যান করে দিতে হবে। আপনার মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন
সম্পূর্ণ করার পর তিন দিনের মধ্যেই আপনচর ভিসা প্রসেসিং শুরু হয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে আপনাকে ভিসা যাচাই ফি মাত্র ৩০০ টাকা বিকাশে পরিশোধ করতে হবে।
আপনাকে প্রতিনিয়ত আমি প্রবাসী অ্যাপে লগইন করতে হবে এবং চাকরি খুঁজতে হবে এবং
তারপর চাকরির জন্য আবেদন করতে হবে। আপনারা আবেদনটি যদি গ্রহণ করা হয়, তাহলে
মেসেজের মাধ্যমে জানানো হবে। মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় সম্পর্কে আরও
বিস্তারিত যদি জানতে চান, তবে একজন মালয়েশিয়া প্রবাসী কিংবা নিকটস্থ কোনো
বিশ্বস্ত এজেন্সির সহযোগিতা নিতে পারেন।
মালয়েশিয়া থেকে কত বছর বয়স লাগে
মালয়েশিয়াতে আপনি যদি সরকারিভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান, তবে
অবশ্যই আপনার বয়স হতে হবে সর্বনিম্ন ২১ বছর থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। যাদের বয়স ৪৫
বছরের উপরে, তাদের কাজ পাওয়া সম্ভাবনা খুব কম থাকে তাই ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনাটাও
কম থাকে। যাদের বয়স ২১ বছরের নিচে তারা মালয়েশিতে কাজ করতে পারবেন না। অবশ্যই
ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে মালয়েশিয়া যেতে বয়সের রিকোয়ারমেন্টটা পূরণ করতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে কত সময় লাগে
বাংলাদেশ থেকে আপনাদের সরকারিভাবে যান, তাহলে মালয়েশিয়ায় সাধারণত বিমানের
মাধ্যমে যেতে হবে। এমনকি আপনি যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমেও যান। তবে আপনি যদি কোন
দালালের মাধ্যমে অবৈধ পথে যান তাহলে (সড়ক বা পানিপথ) যাওয়া লাগতে পারে।
- আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় বিরতিহীন ননস্টপ ফ্লাইটের বিমানে যান, তাহলে আপনার সময় লাগবে আনুমানিক প্রায় ৪ ঘন্টার মতো।
- এছাড়া আপনি যদি স্টপেজ বিমানের ফ্লাইটে যান, তাহলে আপনার সময় লাগবে প্রায় ১০ ঘন্টা থেকে ১৫ ঘণ্টার মতো।
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার দূরত্ব কত কিলোমিটার
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া দূরত্ব কত কিলোমিটার সেই সম্পর্কে প্রায় অধিকাংশ
মানুষ জানতে চান।তাই আপনাদের জানাই শুভরাতের নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার মোট দূরত্ব হলো আনুমানিক প্রায় ৩,৭৪৮ কিলোমিটার।
মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশ থেকে আমি যদি সরকারিভাবে মালয়েশিয়াতে যেতে চান তবে খরচ হবে প্রায়
৭৮,৯৯০ টাকা। এর ভিতরেও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ভিসা ফি, পাসপোর্ট ফি, বিমানের টিকিট
সহ সব মিলিয়ে ৭৮,৯৯০ টাকা হলেই আপনি সহজেই মালয়েশিয়াতে যেতে পারবেন।
এছাড়া
আপনি যদি কোন দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে যান, তাহলে আপনার কাছ থেকে ভিসা দেওয়ার
নামে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিবে।
এজেন্সি বা দালাল ছাড়া মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায়
এজেন্সি বা দালাল ছাড়া আপনি মালয়েশিয়া যেতে পারবেন। আর সেজন্য আপনাকে যেতে হবে
সরকারিভাবে। সরকারিভাবে আপনার যদি মালয়েশিয়া যান তাহলে খরচ হবে সব মিলিয়ে
৭৮,৯৯০ টাকা। এছাড়া যদি কোন দালালের মাধ্যমে যান, তাহলে ভিসা দেওয়ার নামে আপনার
কাছ থেকে ৪-৫ লক্ষ টাকা নিবে।
মালয়েশিয়ার ভিসা চেক করার উপায় জানুন
মালয়েশিয়া ভিসা চেক করার উপায় সম্পর্কে অনেকে জানতে চান। তাই আপনাদের জানার
সুবিধার্থে মালয়েশিয়া ভিসা চেক করার উপায় নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- মালয়েশিয়া ভিসা চেক করার জন্য এই লিংকটি ব্যবহার করতে পারেন: eservices.imi.gov.my/myimms/FomemaStatus
লেখকের শেষ মন্তব্য - বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওযার উপায় সম্পর্কে
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায়,
সরকারিভাবে মালয়েশিয়া থেকে কি কি কাগজপত্র লাগে, মালয়েশিয়ার ভিসা আবেদন করার
নিয়ম, মালয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে, মালয়েশিয়া যেতে কত সময় লাগে,
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার দূরত্ব কত কিলোমিটার, এজেন্সি বা দালাল ছাড়া
মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায় এবং মালয়েশিয়া ভিসা চেক করার উপায় ইত্যাদি
সম্পর্কে।
আশা করি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। আপনি যদি কম
খরচে ঝুঁকিমুক্তভাবে মালয়েশিয়া যেতে চান, তবে অবশ্যই সরকারিভাবে যাওয়ার জন্য
প্রস্তুতি নিন। মালয়েশিয়াতে আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান, তবে
আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে উপরে আলোচিত হয়েছে আশা করি পড়েছেন। আর্টিকেলটির পরে
যদি উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে শেয়ার করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url