দক্ষিণ কোরিয়ার সকল প্রকার ভিসা এবং আবেদন করার নিয়ম জানুন
দক্ষিণ কোরিয়ার সকল প্রকার ভিসা এবং আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে আপনি কি জানতে
চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। দক্ষিণ কোরিয়া একটি উন্নত
এবং বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। এ দেশটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচে
পড়ুন।
বাংলাদেশের প্রতিটি প্রবাসগামী মানুষের কাছে দক্ষিণ কোরিয়া পছন্দের গন্তব্য।
দেশটিতে আপনি যদি যেতে চান, তবে দক্ষিণ কোরিয়ার সকল প্রকার ভিসা সম্পর্কে জানা
উচিত। এছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে এবং সরকারিভাবে যাওয়ার উপায়
জানাও প্রয়োজন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ দক্ষিণ কোরিয়ার সকল প্রকার ভিসা সম্পর্কে জানতে পড়ুন
- দক্ষিণ কোরিয়ার সকল প্রকার ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
- দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা
- দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসায় যেসব কাগজপত্র লাগে
- দক্ষিণ কোরিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে যেসব কাগজপত্র লাগে
- দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা
- টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে যা যা লাগে
- দক্ষিণ কোরিয়া বিজনেস ভিসা
- বিজনেস ভিসার ক্ষেত্রে যা যা লাগে
- দক্ষিণ কোরিয়া ভিসার আবশ্যিক যে কাগজপত্র গুলো লাগে
- দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা আবেদন করার নিয়ম জানুন
- লেখকের শেষ মন্তব্য
দক্ষিণ কোরিয়ার সকল প্রকার ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
দক্ষিণ কোরিয়া দেশটিতে আপনি যদি ভ্রমণের জন্য যেতে চান, তাহলে ভিসার প্রয়োজন
পড়বে। তবে বিশ্বের ভিতরে ৬০টির বেশি দেশ রয়েছে, যেখান থেকে আপনি দক্ষিণ
কোরিয়াতে যদি ভ্রমণ করতে চান, তাহলে ভিসা প্রয়োজন পড়বে না। আপনি ভিসা ছাড়াই
দক্ষিণ কোরিয়াতে ৯০ দিন অবস্থান করতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে
ভ্রমণ করতে চান, তাহলে অবশ্যই ভিসার প্রয়োজন পড়বে।
বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়াতে যাওয়ার জন্য কয়েক ধরনের ভিসার অফার থাকে।বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে জানুন। দক্ষিণ কোরিয়ার সকল প্রকার ভিসা সম্পর্কে আপনাদের জানার সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো। দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা দাম কত জেনে নিতে পারেন।
- দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা
- দক্ষিণ কোরিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা
- দক্ষিণ কোরিয়া বিজনেস ভিসা
দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা
দক্ষিণ কোরিয়াতে আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসাতে যেতে চান, তবে কোন লটারি প্রয়োজন
হয় না। সেক্ষেত্রে তবে অবশ্যই আপনার দক্ষিণ কোরিয়াতে যাওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে।
দেশটিতে যাওয়ার প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস যদি থাকে তাহলে খুব সহজেই যেতে পারবেন।
আপনার আর্থিক সাপোর্টের ডকুমেন্ট লাগবে এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় কোন শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের ভর্তি অফার লেটারটা লাগবে।
আপনি যদি দক্ষিণ কোরিয়াতে স্টুডেন্ট ভিসা যান, তবে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
কাজের ক্ষেত্রে আপনি প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারবেন না। কেননা
দক্ষিণ কোরিয়ার পড়াশোনা তুলনামূলকভাবে অনেকটা কঠিন। আপনাকে কোরিয়ান ভাষার
পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার প্রতি ও দক্ষতা অর্জন করতে হবে।যদি ভাষার দক্ষতা অর্জন
করতে না পারেন,
তাহলে যোগাযোগ করতে আপনার জন্য খুবই অসুবিধা হয়ে যাবে। তবে যতই অসুবিধা থাকুক না
কেন, দক্ষিণ কোরিয়া দেশটিতে উচ্চশিক্ষার জন্য একটি সেরা গন্তব্য হতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসার যেসব কাগজপত্র লাগে
দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে যেসব কাগজপত্রগুলো লাগে, আপনাদের জানার
সুবিধার্থে সেগুলো নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো। বিস্তারিত জেনে নিন।
- শিক্ষাগত যোগ্যতায় সকল সার্টিফিকেট
- আর্থিক সক্ষমতার ডকুমেন্ট (ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
- দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তির অফার লেটার
- কোরিয়ান ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট
দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র গুলো লাগবে। এসব
কাগজপত্র যদি না থাকে তাহলে আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। তাই আবেদন
করার পূর্বে অবশ্যই কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করে রাখার চেষ্টা করুন।
দক্ষিণ কোরিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
দক্ষিণ কোরিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে প্রায় অধিকাংশ মানুষ জানার আগ্রহ
প্রকাশ করেন। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত
পড়তে থাকুন জানতে পারবেন। দক্ষিণ কোরিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা কাজের ভিসা
সাধারণত ইপিএস প্রোগ্রাম নামে পরিচিত। এই ভিসাতে দেশটিতে সাধারণত সরকারিভাবে যেতে
হয়।
লটারির মাধ্যম ছাড়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার যাওয়া সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ থেকে আপনি বোয়েসেলের মাধ্যমে কাজের ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াতে যেতে
পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার বাধ্যতামূলক ভাষা দক্ষতা, কাজের অভিজ্ঞতা এবং
যোগ্যতা থাকতে হবে।কাজের ভিসা নিয়ে আপনি যদি দেশটিতে যেতে পারেন, তাহলে ভালো
বেতনে চাকরি করতে পারবেন।
কানাডা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপের চেয়ে কোন দিক দিয়েই এই দেশ পিছিয়ে
নেই। আপনি যদি দেশটিতে একটু বেশি পরিশ্রম করতে পারেন, তাহলে প্রতি মাসে কয়েক
লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।দক্ষিণ কোরিয়া টাকার মান কত জেনে নিন। সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পারেন।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে যেসব কাগজপত্র লাগে
- বয়সীমা হতে হবে ১৮ থেকে ৩৯
- কালার টেস্ট পরীক্ষায় আপনাকে উত্তীর্ণ হতে হবে
- শিক্ষাগত যোগ্যতায় সকল সার্টিফিকেট
- আপনার দক্ষতার সার্টিফিকেট
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র
- কোরিয়ান ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক
দক্ষিণ কোরিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্রগুলো অবশ্যই
লাগবে। এসব কাগজপত্র না থাকলে, আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। সুতরাং
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াতে যেতে পারবেন না।
দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা
দক্ষিণ কোরিয়াতে ৯০ দিনের জন্য আপনি টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভ্রমণ করতে পারবেন। কিছু
কিছু দেশ রয়েছে যাদের দক্ষিণ কোরিয়াতে ভ্রমণ করার জন্য ভিসার প্রয়োজন হয় না।
তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অবশ্যই টুরিস্ট ভিসা বাধ্যতামূলক লাগবে। আপনি যদি
টুরিস্ট ভিসাতে দেশটিতে যেতে চান, তবে আপনার লটারি প্রয়োজন হবে না। টুরিস্ট
ভিসার মাধ্যমে আপনি ঐতিহাসিক স্থানগুলো, পর্যটন কেন্দ্রগুলো কিংবা পরিবারের সাথে
দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবেন।
টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে যা যা লাগে
- আপনি যদি স্থায়ী চাকরিজীবী হন, তবে নিয়োগকর্তার পক্ষ থেকে ছুটির অনুমতিপত্র লাগবে
- আপনার আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণপত্র লাগবে
দক্ষিণ কোরিয়া বিজনেস ভিসা
আপনি যদি একজন বড় ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন, তাহলে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য আপনার
একটি গুরুত্বপূর্ণ বা সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। আপনি যদি ব্যবসা করার জন্য ৫ লক্ষ ডলার
বিনিয়োগ করতে পারেন, তাহলে লটারি ছাড়াই আপনি সেই দেশটিতে বিজনেস ভিসা পেয়ে
যাবেন। বিজনেস ভিসা সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি হলো ৯০ দিনের জন্য এবং
অন্যটি হলো ৯০ দিনের বেশি সময়ের জন্য। আপনি যদি এই ভিসাতে যেতে চান, তবে অবশ্যই
কিছু ডকুমেন্ট লাগবে।
বিজনেস ভিসার ক্ষেত্রে যা যা লাগে
- কোরিয়ান কোম্পানির কাছ থেকে আমন্ত্রণপত্র লাগবে
- বিমানের রিটার্ন টিকিট
- কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন সনদ
- আপনার আর্থিক সাপোর্টের প্রমাণপত্র (ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ট্যাক্স রিটার্ন)
বিজনেস ভিসার ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্রগুলো আবশ্যিক লাগবে। তাই অবশ্যই
কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করে রাখার চেষ্টা করবেন। যেন ভিসা করার পূর্বে কাগজপত্র
গুলো খুঁজতে না হয়।
দক্ষিণ কোরিয়া ভিসার আবশ্যিক যে কাগজপত্র গুলো লাগে
দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য আবশ্যিক যে কাগজপত্র গুলো লাগবে, সে সম্পর্কে অনেকেই
ধারণা রাখেন না। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে, সেই কাগজপত্রগুলোর নিচে উল্লেখ
করে দেওয়া হলো।
- আপনার বৈধ পাসপোর্ট
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- পাসপোর্ট সাইজের সাম্প্রতিক তোলা ছবি
- জাতীয় পরিচয়পত্র কপি
- ভিসা আবেদন ফরম
- ভিসা আবেদন ফি
- ভিসা প্রসেসিং ফি
দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা আবেদন করার নিয়ম জানুন
দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা আবেদন আপনি সাধারণত দুইভাবে করতে পারবেন। প্রথমটি হলো
অফলাইনের মাধ্যমে এবং দ্বিতীয়টি অনলাইনের মাধ্যমে। আপনি চাইলে ঘরে বসেই অনলাইনের
মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে অবশ্যই আপনার
প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে। এরপর আপনাকে দক্ষিণ কোরিয়া
ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
প্রথমে আপনাকে ভিসা ক্যাটাগরিটা নির্বাচন করতে হবে, তারপরে আবেদনপত্রটি সঠিকভাবে
পূরণ করতে হবে।প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টগুলো স্ক্যান করা কপি জমা দিতে হবে। এরপর
আপনাকে ভিসা আবেদন এবং প্রসেসিং ফি জমা দিতে হবে। এছাড়া আপনি যদি অফলাইনের
মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চান তাহলে সরাসরি দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসে
গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে।
আপনার ভিসা আবেদন প্রক্রিয়াটি যদি সম্পূর্ণ হয়ে যায়, তাহলে কয়েক সপ্তাহের
ভিতরেই ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন হবে।আশা করি বুঝতে পেরেছেন। দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী শ্রমিকদের কোন কাজের চাহিদা ও বেতন বেশি জানতে পড়ুন।
লেখকের শেষ মন্তব্য - দক্ষিণ কোরিয়ার সকল প্রকার ভিসা সম্পর্কে
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, দক্ষিণ কোরিয়ার সকল প্রকার ভিসা,
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা, টুরিস্ট ভিসা, বিজনেস ভিসা, প্রতিটি ভিসার
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো এবং দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা আবেদন করার নিয়ম ইত্যাদি
সম্পর্কে। উপরের আলোচ্য বিষয়টুকু আশা করি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে
পেরেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়া দেশটিতে আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যান, তাহলে অবশ্যই যে
কাজের উদ্দেশ্যে যাবেন, সেই কাজের উপরে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে যাবেন।
তাহলে প্রথম থেকেই বেশি বেতন উপার্জন করে সহজেই ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url