মিশর যেতে কত টাকা লাগে - মিশরের নতুন রাজধানীর নাম কি
মিশর প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য মানুষ ভ্রমণ এবং কাজের উদ্দেশ্যে যেতে
চান। কিন্তু মিশর যেতে কত টাকা লাগে, বেতন কেমন এবং কোন কাজগুলো চাহিদা রয়েছে সে
সম্পর্কে ধারণা রাখেন না। এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আশা করি
জানতে পারবেন।
মিশর সৌন্দর্যতম দেশ বলে অনেক পর্যটক এবং কাজের জন্য অনেক কর্মী দেশটিতে যেতে
চায়। কাজের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার একটি বৈধ ভিসা থাকতে হবে। এই আর্টিকেলটির
মাধ্যমে নিচে জেনে নিতে পারেন, মিশরের ভিসা পাওয়ার উপায় এবং মিশরে যেতে কত টাকা
লাগে সে সম্পর্কে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ মিশর যেতে কত টাকা লাগে জানতে পড়ুন
- মিশর যেতে কত টাকা লাগে
- মিশর কাজের ভিসার ধরন
- মিশর কাজের বেতন
- মিশরে কোন কাজের বেতন বেশি
- মিশর কাজের ভিসার জন্য যেসব যোগ্যতা লাগে
- মিশর যাওয়ার জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে
- মিশর ভিসা প্রসেসিং করতে কতদিন লাগে
- বাংলাদেশ থেকে মিশর কত কিলোমিটার
- মিশর টুরিস্ট ভিসা প্রসেসিং ফি
- মিশরের মুদ্রার নাম কি
- মিশরের ১ পাউন্ড বাংলাদেশের কত টাকা
- মিশরের নতুন রাজধানীর নাম কি
- লেখকের শেষ মন্তব্য
মিশর যেতে কত টাকা লাগে
মিশর যেতে কত টাকা লাগে, সে সম্পর্কে জানার প্রায় অধিকাংশ মানুষ
গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই
আপনাদের সুবিধার্থে, মিশর যেতে কত টাকা লাগে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে যাবতীয়
তথ্যগুলো আশা করি জানতে পারবেন। মিশর যেতে আপনার কত টাকা খরচ হতে পারে, সেটা
নির্ভর করবে সাধারণত বিভিন্ন বিষয়ের উপরে, আপনারা যাত্রার ধরন, বিমান ভাড়া,
ভিসা ফি,
আবাসন খরচ এবং দৈনন্দিন খরচ ইত্যাদির উপরে। তবে মিশর যেতে কত টাকা লাগে
আনুমানিক খরচ আপনাদের জানার সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে জানতে পড়ুন।
ভিসা ফি খরচ
মিশর যাওয়ার জন্য আপনাকে কাজের ভিসা বা ভ্রমণ ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
সেক্ষেত্রে মিশর যাওয়ার জন্য ভিসা ফি সাধারণত ২,৭৫০ থেকে ৬,৬০০ টাকা খরচ হতে
পারে। এই ভিসার ধরন এবং নাগরিকত্ব অনুযায়ী হবে।
ঢাকা টু মিশর বিমান ভাড়া খরচ
ঢাকা থেকে মিশরের রাজধানী কায়রোতে যেতে কত খরচ হবে, সেটা সম্পন্ন নির্ভর করবে
আপনার ভ্রমণের বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের উপরে। তাহলে চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক
ঢাকা থেকে মিশর যেতে বিমান ভাড়া করে কত হতে পারে সে সম্পর্কে নিচে উল্লেখ করে
দেওয়া হলো।
- ঢাকা থেকে মিশর যেতে বিমান ভাড়া খরচ হতে পারে প্রায় ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে বুকিং এবং সিজনের উপরে নির্ভর করে কমবেশি হতে পারে।
মিশরে থাকার আবাসন খরচ
মিশরে গিয়ে থাকার জন্য আপনি হোটেল কিংবা গেস্টহাউজ ভাড়া পাবেন। তবে আবসনের
খরচ সাধারণত শহর এবং অবস্থানের উপর নির্ভর করে থাকবে।
- স্বল্পমেয়াদি ভ্রমণের জন্য অর্থাৎ পর্যটকদের জন্য গড়ে প্রতিদিন হোটেল খরচ আপনার ২,৫০০ থেকে ৬,০০০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
- দীর্ঘমেয়াদি থাকার জন্য অর্থাৎ কাজের উদ্দেশ্যে গেলে আপনার মাসিক আবাসন খরচ হতে পারে ১৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
আপনার দৈনন্দিন খরচ
আপনার দৈনন্দিন খরচ অর্থাৎ মিশরের খাবার, যাতায়াত, এবং অন্যান্য যে খরচ গুলো
রয়েছে বাংলাদেশের চাইতে কিছুটা কম হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে
রোমানিয়া যেতে কত টাকা লাগে
জেনে নিতে পাড়েন।
- খাবার প্রতিদিন ১০০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
- আপনার প্রতিদিন যাতায়াতের খরচ প্রায় ৫০০ থেকে ১,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
মিশর যেতে কত টাকা লাগে সংক্ষিপ্তভাবে জানুন
- আপনার বিমান ভাড়া ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
- আপনার ভিসা ফি ২,৭৫০ থেকে ৬,৬০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
- আপনার আবাসন খরচ ১৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
- দৈনন্দিন মাসিক ব্যয় ৩০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
সর্বমোট আপনার আনুমানিক খরচ হতে পারে প্রায় ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৭৫০ থেকে ২ লক্ষ ৬
হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত। তবে খরচের পরিমাণ কিছুটা কম বেশি হতে পারে। মিশর
যাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে তারপরে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
মিশর কাজের ভিসার ধরন
মিশর যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজের ভিসা হতে পারে। তবে দেশটিতে যাওয়ার
জন্য সাধারণত যে সকল ধরনের ভিসা পাওয়া যায়, সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
শর্ট-টার্ম কাজের ভিসাঃ এই ভিসা সাধারণত অস্থায়ী কাজের জন্য অর্থাৎ ৬
মাস বা এক বছরের জন্য প্রদান করা হয়ে থাকে।
লং-টার্ম কাজের ভিসাঃ এই ভিসা মূলত স্থায়ী কাজের জন্য দীর্ঘদিনের জন্য
হয়ে থাকে।
মিশর কাজের বেতন
মিশর কাজের বেতন কেমন হবে, সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার দক্ষতা, যোগ্যতা,
অভিজ্ঞতা এবং কোম্পানির আকারের উপরে। তবে বেতন কেমন হতে পারে আপনাদের সাধারণ
তথ্য দেওয়ার জন্য নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো বেতনের ক্ষেত্রে কিছুটা কমবেশি
হতে পারে।
- মিশরে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ন্যুনতম মাসিক বেতন হচ্ছে ২,৭০০ পাউন্ড।
- মিশরের কর্মীদের গড় মাসিক বেতন হচ্ছে প্রায় ৬,০০০ থেকে ৯,০০০ মিশরীয় পাউন্ড।
মিশরে কোন কাজের বেতন বেশি
মিশরে যেসব কাজের বেতন বেশি, সে সম্পর্কে আপনারা যারা দেশটিতে যেতে যাচ্ছেন
জেনে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কোন কাজগুলোর বেতন বেশি, সে সম্পর্কে যদি
পূর্ব থেকে জেনে যেতে পারেন, তাহলে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করে যেতে পারবেন।
চলুন জেনে নেই, কোন কাজগুলোর বেতন সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
- তেল ও গ্যাস
- তথ্য প্রযুক্তি
- টেলিকমিউনিকেশন ইত্যাদি
আপনি যদি উপরে উল্লেখিত কাজের উপরে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিয়ে যেতে
পারেন, তাহলে ভালো পরিমাণ বেতন আশা করতে পারেন।
সিঙ্গাপুর যেতে কত টাকা লাগে
জানুন।
মিশর কাজের ভিসার জন্য যেসব যোগ্যতা লাগে
- মিশরের কোন প্রতিষ্ঠান থেকে অবশ্যই কাজের প্রস্তাব থাকতে হবে।
- মিশর যাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে।
- কাজের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং যোগ্যতা থাকতে হবে।
- মিশরের কোন ধরনের আইন লঙ্ঘন করা না থাকলে যেতে পারবে।
মিশর যাওয়ার জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে
মিশর যাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট লাগবে। যেগুলো ছাড়া
আপনি দেশটিতে যাওয়ার জন্য ভিসা তৈরি করতে পারবেন না। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া
যাক, মিশর যেতে কি কি কাগজপত্রগুলো বা ডকুমেন্টগুলো লাগে, সে সম্পর্কে নিচে
উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- আপনার বৈধ পাসপোর্ট (কমপক্ষে ছয় মাস মেহেদী)
- আপনার কাজের চুক্তিপত্র
- সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- আপনার ভিসা ফি
- চাকরিজীবীদের জন্য অফিস থেকে এনওসি লেটার লাগবে
- আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স লাগতে পারে এবং সেটা ইংরেজিতে অনুবাদ সহ দিতে হবে।
বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা অনুযায়ী মিশর যাওয়ার ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র
গুলো আবশ্যিক লাগবে। তাই যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করে রাখার
চেষ্টা করতে পারেন। যেন পরবর্তীতে কাগজগুলো খুঁজতে ঝামেলা পোহাতে না হয়।
মিশর ভিসা প্রসেসিং করতে কতদিন লাগে
মিশর ভিসা প্রসেসিং করতে কতদিন লাগে, যারা মিশর যেতে চাচ্ছেন না তারা জেনে নিতে
পারেন। কেননা মিশর যাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে সর্বপ্রথম ভিসা প্রসেটিং করতে
হবে। ভিসা প্রসেসিং করার জন্য আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো যদি সঠিক ভাবে
দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার ভিসা প্রসেসিং খুব দ্রুতই হয়ে যেতে পারে।
- মিশর ভিসা প্রসেসিং হতে আপনার সময় লাগবে প্রায় ১০ থেকে ২০ দিনের মতো। আপনার ভিসা প্রসেসিংটি যদি কমপ্লিট হয়ে যায়, তাহলে শুধুমাত্র বিমানে টিকিট ক্রয় করে মিশর যেতে পারবে।
বাংলাদেশ থেকে মিশর কত কিলোমিটার
বাংলাদেশ থেকে মিশর কত কিলোমিটার, সে সম্পর্কে জানার জন্য, যারা মিশর যেতে চায়
তাদের অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা
সহজেই জেনে নিতে পারবেন, ঢাকা থেকে মিশর কত কিলোমিটার সে সম্পর্কে।
- বাংলাদেশ থেকে মিশরের দূরত্ব হচ্ছে প্রায় ৫,৯৪১ কিলোমিটার। আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে মিশর যেতে চান সেক্ষেত্রে ৫,৯৪১ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে দিতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম জানুন।
মিশর টুরিস্ট ভিসা প্রসেসিং ফি
মিশর টুরিস্ট ভিসা ফি কত, সে সম্পর্কে অনেকেই ধারণা রাখেন না। তাই আপনাদের
জানার সুবিধার্থে টুরিস্ট ভিসা ফি কেমন হতে পারে, সেগুলো নিচে উল্লেখ করে
দেওয়া হলো।
ক্রমিক নং | ভিসা ফি | ভিসার মেয়াদ | কত দিন থাকা যাবে |
---|---|---|---|
০১ | প্রায় ৩,৭০০ টাকা | ৬ মাস | ৩০ দিন |
০২ | প্রায় ৪,৬০০ টাকা | ৬ মাস | ৩০ দিন |
মিশরের মুদ্রার নাম কি
মিশরের মুদ্রার নাম কি আপনারা যারা দেশটিতে যেতে চাচ্ছেন জেনে রাখা প্রয়োজন।
কেননা দেশটিতে যাবেন অথচ মুদ্রার নাম জানবেন না, সেটা আপনার জন্য দুঃখজনক হতেও
পারে। তাই চলুন নিচে জেনে নেই, মিশরের মুদ্রার নাম কি সে সম্পর্কে।
- মিশরের মুদ্রার নাম হচ্ছে পাউন্ড। আশা করি মিশরের মুদ্রার নাম সম্পর্কে জানতে পারলেন।
মিশরের ১ পাউন্ড বাংলাদেশের কত টাকা
মিশরের ১ পাউন্ড সমান বাংলাদেশের কত টাকা সে সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। যারা
দেশটিতে অবস্থান করছেন এবং যারা যেতে চাচ্ছেন, উভয়ের জন্যই বিষয়টি জানা খুবই
জরুরী।
কেননা দেশটিতে যাবেন অথচ দেশের পাউন্ড সম্পর্কে ধারণা রাখবেন না সেটা কেমন হয়ে
যায় না? তাহলে চলুন নিচে পাউন্ড সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- মিশরের ১ পাউন্ড সমান বাংলাদেশের টাকা হচ্ছে ২.৪২ টাকা। তবে সময়ের সাথে সাথে রেট পরিবর্তন হতে পারে।
মিশরের নতুন রাজধানীর নাম কি
মিশরের রাজধানী কায়রো হলেও দেশটি নতুন রাজধানী নির্মাণ করা হচ্ছে। আর সেই
রাজধানীর নামটি সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন মাধ্যমে
খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। মিশরের নতুন রাজধানীর নাম কি নিচে এই আর্টিকেলটির
মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন।
মিশরের নতুন রাজধানীটির নাম হচ্ছে সুজাক। রাজধানীর এই নামটি সাধারণত মিশরের
সাবেব রাষ্ট্রপতি নির্দেশনা অনুযায়ী নির্মিত হচ্ছে। সুজাক শহরটি মিশরের অন্যতম
নতুন আধুনিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা করা হয়েছে।
সার্বিয়া থেকে ফ্রান্স যাওয়ার সহজ উপায় জানুন।
লেখকের শেষ মন্তব্য
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, মিশর যেতে কত টাকা লাগে, মিশরের
কাজের ধরন গুলো, মিশর থেকে কি কি যোগ্যতা এবং ক্গজপত্র গুলো লাগে, মিশর ভিসা
প্রসেসিং করতে কতদিন লাগে, বাংলাদেশ থেকে মিশরের দূরত্ব কত কিলোমিটার, মিশরের
নতুন রাজধানীর নাম কি এবং মিশরের মুদ্রার নাম কি ইত্যাদি সম্পর্কে। আশা করি
মিশরের যবতীয় তথ্য সম্পর্কে উপরের আলোচ্য অংশটুকু শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ
সহকারে পড়েছেন এবং সহজেই বুঝতে পেরেছেন।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url