মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা এবং মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম
মিষ্টি কুমড়া সবজিটি খুবই জনপ্রিয় একটি খাদ্য। মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা প্রচুর
পরিমাণে রয়েছে, কিন্তু সে সম্পর্কে অনেকেই ধারণা ধারণা রাখেন না। এই আর্টিকেলটির
মাধ্যমে মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম এবং উচ্চ ফলনশীল মিষ্টি কুমড়ার জাত
সম্পর্কে নিচে জেনে নিতে পারবেন।
মিষ্টি কুমড়া সবজি হিসেবে খেতে পছন্দ করেনা এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। সবজিটি
যেমন সুস্বাদু যেমন পুষ্টিগুণে ভরপুর। খাওয়ার পূর্বে জেনে নেওয়া উচিত মিষ্টি
কুমড়ার বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে চলুন মিষ্টি কুমড়া
সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পোস্ট সূচীপত্রঃ মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পড়ুন
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা প্রতিটি সবজি প্রিয় মানুষের
জন্য জানা জরুরী। কেননা মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে, আপনি যদি জেনে
খেতে পারেন, তাহলে বেশি পরিমাণ উপকারিতা পেতে পারেন। এছাড়া মিষ্টি কুমড়াতে যেসব
ক্ষতিকর দিকগুলো রয়েছে সেগুলো সম্পর্কেও ধারণা রাখা প্রয়োজন। মিষ্টি কুমড়ার
বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ গুগলে অনুসন্ধান করে থাকেন। তাই আজকের এই
আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের জানার সুবিধার্থে মিষ্টি কুমড়ার অনেক ধরনের
উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করবো। পুরো আর্টিকেলটি
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে পড়ুন।
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতায় সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ ইন্টারনেটে
খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। মিষ্টি কুমড়ার নানান ধরনের উপকারিতা শরীর স্বাস্থ্যর জন্য
খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কিন্তু মিষ্টি কুমড়াতে কি কি উপকারিতা রয়েছে, সেগুলো
সম্পর্কে অনেকেই ধারণা রাখেন না। অথচ নিত্য প্রয়োজনীয় সবজি হিসাবে প্রতিনিয়তই
খেয়ে থাকি। মিষ্টি কুমড়াতে যেসব উপকারিতা রয়েছে,
সেগুলো সম্পর্কে জেনে যদি খেতে পারি, তাহলে বেশি পরিমাণে উপকারিতা পাওয়া যেতে
পারে। তাই আজকে আর্টিকেলটির মাধ্যমে মিষ্টি কুমড়াতে যেসব উপকারিতাগুলো রয়েছে,
আমানাদের জানার সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- মিষ্টি কুমড়াতে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ফাইবার এবং পটাশিয়াম থাকার কারণে সবজিটি খেলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
- মিষ্টি কুমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যার ফলে হজমে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নিয়মিতভাবে সবজিটি খেতে পারলে কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যাগুলো দূর হয়ে যেতে পারে।
- মিষ্টি কুমড়াতে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থেকে থাকে, যার ফলে কিছু মারাত্মক রোগ যেমনঃ ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিকস কে দূরে রাখে।
- মিষ্টি কুমড়া সবজি নিয়মিত খাওয়ার ফলে আপনার আপনার ত্বক হবে কোমল এবং মসৃণ।
- মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম যা আপনার স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে থাকবে।
- মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, পটাশিয়াম এবং আয়রন, যা আপনার শরীরের শক্তি এবং পুষ্টি যোড়াতে সাহায্য করবে।
- মিষ্টি কুমড়া উচ্চ ফাইবার সম্পন্ন এবং কম ক্যালরি হওয়ায় ওজন কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। চিরতরে মেছতা দূর করার উপায় জেনে নিতে পাড়েন।
- সবজিটি পটাশিয়ামের উৎস বলে প্রতিনিয়ত খেতে পারলে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- আপনার লিভার ভালো রাখতে মিষ্টি কুমড়া কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। কেননা মিষ্টি কমড়াতে রয়ে বিটা ক্যারোটিন, ফাইবার এবং ভিটামিন সি, যা আপনার শরীর থেকে দূষিত পদার্থগুলো বের করতে সাহায্য করে থাকে।
মিষ্টি কুমড়ার ক্ষতিকর দিক
মিষ্টি কুমড়ার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানা প্রতিটি মানুষের জন্য জরুরী। কেননা
মিষ্টি কুমড়ার যেমন উপকারিতে রয়েছে , তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। মিষ্টি কুমড়া প্রায়
সবার পছন্দের খাবার বলেই, খাদ্য তালিকা স্থান পেয়ে থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার
বৃদ্ধি করতে এই খাবারের কোন জুরি নেই। তাই বলে কি আপনি প্রচুর পরিমাণে খাবেন? না
এমনটা ঠিক নয়? মিষ্টি কুমড়ার ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
রক্তচাপ কমে যেতে পারেঃ রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে যেমন মিষ্টি কুমড়া
খাওয়ার বিকল্প নেই, তেমনি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে খাবারের বিকল্প নেই। কিন্তু
সবজিটি যদি আপনি বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন, তাহলে রক্তচাপ অতিরিক্ত পরিমাণ কমে
যেতে পারে।
হজমের সমস্যাঃ বিভিন্ন ধরনের সবজি রয়েছে, তবে এর ভিতরে মিষ্টি কুমড়া হজম
করাটা একটু বেশি কঠিন হয়ে যায়। মিষ্টি কুমড়ার কিছু কিছু উপাদান রয়েছে, যেগুলো
আপনার পেটের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণ কুমড়ো খাওয়া
থেকে বিরত থাকাই উচিত, কেননা পেট খারাপের সমস্যার কারণ হতে পারে।
ওজন বৃদ্ধি সমস্যাঃ অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া খেলে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কেননা মিষ্টি কুমড়াতে অন্যান্য সবজির
তুলনায় ক্যালোরির পরিমাণটা একটু বেশি থাকে।
অ্যালার্জি জনিত সমস্যাঃ অ্যালার্জি জনিত সমস্যা যাদের রয়েছে, আপনারা
মিষ্টি কুমড়া সবজিটি এড়িয়ে চলতে পারেন। কেননা আপনারা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে
সবজিটি খান, তাহলে অ্যালার্জির পরিমাণ আরো বেড়ে যেতে পারে। এছাড়াও আপনার শরীরে
আরো নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ডায়াবেটিকসের সমস্যাঃ যাদের ডায়াবেটিকস এর সমস্যা রয়েছে তারা চিকিৎসকের
পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ মত খেতে পারেন। হাত পায়ের কালো দাগ দূর করার উপায় জানতে পড়ুন।
মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম
মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ
বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। কেননা মিষ্টি কুমড়ার বীজে প্রচুর পরিমাণে
উপকারিতা রয়েছে, কিন্তু সেগুলো সম্পর্কে অনেকেই ধারণা রাখেন না। তাই এই
আর্টিকেলটির মাধ্যমে মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা
করবো। পুরো আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
বাংলাদেশের প্রায় বিভিন্ন অঞ্চলের সকল ধরনের শাকসবজিগুলো চাষ করা হয়ে থাকে। এসব
সবজিগুলোর ভিতরে মিষ্টি কুমড়া অন্যতম একটি সবজি। মিষ্টি কুমড়া প্রায় সারা বছরই
বাজারে পাওয়া যায়। মিষ্টি কুমড়া আমিষ জাতীয় একটি সবজি। প্রতিদিনের খাবারের
তালিকাতে মিষ্টি কুমড়া অতি পরিচিত একটি নাম কমবেশি সবাই সবজিটি পছন্দ করে
থাকি।মিষ্টি কুমড়া
সবজিটি পছন্দ করে না আসরে এমন মানুষ পাওয়াটা কঠিন হয়ে যায়। এই সবজিটির কোন
কিছুই ফেলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। আপনি মিষ্টি কুমড়ার বীজ সংরক্ষণ করে
পরবর্তীতে খেতে পারবেন। কুমড়ার বীজে নানান ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। বীজ আপনি
অনেক ভাবেই খেতে পারবেন।
- মিষ্টি কুমড়ার বীজ কাঁচা অবস্থায় ভর্তা করে খাওয়া বেশ মজাদার।
- মিষ্টি কুমড়ার বীজ আপনি রান্না করেও খেতে পারবেন।
- রোদে শুকিয়ে ভেঁজেও খেতে পারবেন।
- কুমড়ার বীজ দিয়ে আপনি স্যুপ,কেক এবং সালাদ বানিয়েও দিতে পারবেন।
- মিষ্টি কুমড়ার বীজ গুঁড়া করে আপনি আটার সাথে মিশিয়ে বানিয়ে খেতে পারবেন।
মিষ্টি কুমড়া চাষ পদ্ধতি
মিষ্টি কুমড়ার চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেই জানার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। আমাদের
দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী সাধারণত মিষ্টি কুমড়ার বীজ বছরের যে কোন সময় বোনা যেতে
পারে। চলুন নিচে যেনে নেওয়া যাক, আমাদের দেশে মিষ্টি কুমড়ার বীজ কখন বোনা যায় সে
সম্পর্কে।
- আপনি যদি শীত মৌসুমের মিষ্টি কুমড়া চাষ করতে চান, সেক্ষেত্রে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মিষ্টি কুমড়ার বীজ বপন করাই উত্তম।
- আপনি যদি গ্রীষ্মকালে এই বর্ষজীবী সবজিটি চাষাবাদ করতে চান, তাহলে অবশ্যই ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত কুমড়ার বীজ বপন করা আপনার জন্য উপযুক্ত সময় হতে পারে।
- এছাড়া উন্নত ফলন পেতে আপনি নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে মিষ্টি কুমড়ার বীজ বপন করতে পারেন।
মিষ্টি কুমড়ার বীজ রোপনের জন্য আপনাকে প্রকৃতি ও স্থানভেদে ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি উচু
জায়গাতে বেড তৈরি করতে হবে যাতে পানি জমে না থাকে। একটি গাছের দূরত্ব থেকে
আরেকটি গাছের দূরত্ব কমপক্ষে দুই ফুট হতে হবে। সরাসরি জমিতে বীজ ভবনের ক্ষেত্রে
আপনাকে ভালোবাবে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। জমিতে সার দেওয়ার ৭-১০ দিন পর আপনাকে
বীজ
বপন করতে হবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে বীজ যেন মাটির খুব গভীরে চলে না যায়। বীজ
বপনের গভীরতা হবে সাধারণত ১ ইঞ্চি। চারা গজানোর পর সেগুলোকে রক্ষা করার জন্য
চারিদিকে বেড়া দিতে পারেন।
মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টিগুণ
মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অনেকেই জানার জন্য ইচ্ছে পোষণ করে থাকেন। এই
পোস্টটির মাধ্যমে মিষ্টি কুমড়াতে যেসব পুষ্টিগুণ রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে পারবেন। মিষ্টি কুমড়া পুষ্টিগুনে ভরপুর এবং কোন প্রকার
কোলেস্টেরলের নেই।
এছাড়াও সবজিটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কার্যকরী
ভূমিকা পালন করে থাকে। চলুন তাহলে নিচে জেনে নেওয়া যাক, প্রতি ১০০ গ্রাম মিষ্টি
কুমড়ায় পুষ্টিগুণ কেমন হয়েছে সে সম্পর্ক।
- কার্বোহাইড্রেটঃ ৫.৫ গ্রাম
- শর্করাঃ ১.৩৬ গ্রাম
- অ্যাঁশঃ ০.৫ গ্রাম
- চর্বিঃ ০.১ গ্রাম
- প্রোটিনঃ ১.০ গ্রাম
- পটাশিয়ামঃ ৩৪০ মিঃগ্রা
- জিংকঃ ০.৩২ মিঃগ্রা
- ভিটামিন সিঃ ৯.০০ মিঃগ্রাম
- ভিটামিন ইঃ ১.০৬ মিঃগ্রাম
- ভিটামিন এ ৩৬৯ মাইক্রো গ্রাম
লেখকের শেষ মন্তব্য
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা এবং মিষ্টি
কুমড়ার ক্ষতিকর দিক, মিষ্টি কুমড়ার বীজ কিবাবে খাবেন তার নিয়ম, মিষ্টি কুমড়ার
চাষ পদ্ধতি এবং মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টিগুণ ইত্যাদি সম্পর্কে। মিষ্টি কুমড়া খাওযার
পূর্বে
অবশ্যই এর উপকারিতা গুলো কি কি সে সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন। এবং ক্ষতিকর দিকগুলো
কি সে সম্পর্কেও জেনে রাখা খুবই প্রয়োজন। উপরের আলোচ্য অংশটুকু আশা করি যদি শুরু
থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। নিমপাতা ও কাঁচা হলুদের উপকারিতা জেনে নিতে পাড়েন।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url