নরওয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা - নরওয়ে যেসব কাজের চাহিদা বেশি
নরওয়ে ইউরোপের উন্নত একটি দেশ। দেশটিতে কাজের উচ্চ বেতন এবং সুযোগ সুবিধা বেশি পাওয়া যায়, সেজন্য দেশটিতে ওযার্ক পারমিট ভিসা তে অধিকাংশ মানুষ যেতে চায়। তবে যাওয়ার পূর্বে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং বেতন সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে যাওয়া উচিত।
নরওয়ে পৃথিবীর অনন্য সুন্দরতম একটি দেশ। নরওযের অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ উন্নত। আমরা
যারা নরওয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চাচ্ছেন, তবে দেশটির সর্বনিম্ন বেতন কত এবং নরওয়ে কাজের সুবিধাসমূহ সম্পর্কে জেনে যেতে পারেন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ নরওয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানতে পড়ুন
নরওয়ে কাজের সুবিধাসমূহ
নরওয়ে কাজের সুবিধাগুলো কি সে সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই গুগলে অনুসন্ধান করে
থাকেন। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে, এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত
পড়লে, আশা করি নরওয়ে কাজের সুবিধ গুলো কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
তাহলে চলুন না ধীরে ধীরে নিচে জেনে নেওয়া যাক সুবিধাগুলো সম্পর্কে। নরওয়েতে আপনি
যে কোম্পানিতে কাজ করবেন,
সাধারণত তারাই আপনার থাকার ব্যবস্থা করে দিবে। সেক্ষেত্রে খাবার খরচের বহনটা
আপনাকেই করতে হবে।সপ্তাহে আপনাকে ৫ দিন কাজে করতে হবে এবং সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন
না হয়ে থাকে। তবে অনেক সময় আপনাকে সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করা লাগতে পারে। তবে
অতিরিক্ত কাজ করলেও ওভারটাইম হিসাবে আপনাকে পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। এছাড়া
নরওয়েতে
যেসব সরকারি সুযোগ সুবিধাগুলো রয়েছে সেগুলো আপনি পেতে পারেন, কেননা দেশটিতে নিয়ম
কানুন সবার জন্যই সমান হয়ে থাকে। দেশটিতে আপনাকে কোনো ধরনের ঝামেলা পোহাতে হবে
না। এজন্য দেশটিকে পৃথীবির অন্যতম সুখী দেশ বলা হয়ে থাকে।ইউরোপের অন্যান্য দেশের
তুলনায় আপনি বেতনের পরিমাণ বেশি পেয়ে থাকবেন। যেখানে ইউরোপের অন্যান্য
দেশগুলোও যেমন: রোমানিয়া, ক্রোয়েশিয়ার, মালটা লিথুনিয়াতে বেতন ১ লক্ষ থেকে দের
লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। কিন্তু নরওয়েতে প্রায় এর দ্বিগুণ হয়ে থাকে।
নরওয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিমা আবেদন
নরওয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন আপনি খুব সহজেই করতে পারবে। নরওয়ের ভিসা আবেদন
করার জন্য প্রথমে আপনাকে নরওয়ের ইমিগ্রেশন ডিরেক্টেরেটের ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনাকে
একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। তবে আবেদন ফরম পূরণ করার সময় অবশ্যই সঠিক
তথ্যগুলো দিয়ে পূরণ করতে হবে। কোনভাবেই ভুল করা যাবে না। আপনার প্রয়োজনীয়
যাবতীয়
কাগজপত্রগুলো বা ডকুমেন্টগুলো স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। আবেদন পত্র জমা
দেওয়ার পর আপনাকে আবেদন ফি দিতে হবে। এরপর নরওয়ে যাওয়ার জন্য আপনার আবেদনপত্রটি
প্রক্রিয়াকরণ শুরু হবে। এরপর আপনাকে ইন্টারভিউ বা সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য টাকা
হতে পারে। সাক্ষাৎকারে আপনি যদি সফল হন, আপনারা আবেদন প্রক্রিয়াটি শুরু হয়ে
যাবে।
নরওয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ
নরওয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ ইন্টারনেটে
খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জেনে
নিতে পারেন। নরওয়ে ওয়ার্ক পারমিটি ভিসা তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের খরচ রয়েছে।
আপনার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ফি প্রায় ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা লাগতে পারে।
মেডিকেল পরীক্ষা খরচ
আপনার ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। নরওয়েতে আপনি সাধারণত কোন
এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে যাবেন সেটার উপরে নির্ভর করবে। এছাড়াও অন্যান্য খরচ যেমন:
কাগজপত্র সত্যায়ন এবং ট্রাভেল ইন্সুরেন্স খরচ আরো বেড়ে যাবে। নরওয়েতে পৌঁছানোর
খরচ, বসবাস খাবার অন্যান্য জীবন যাপন খরচ বিবেচনা করা হয়ে থাকে। সব মিলিয়ে নরওয়ে যেতে কত টাকা লাগে জেনে নিতে পারেন।
নরওয়ে ভিসা প্রসেসিং কত দিন লাগে
নরওয়ে কাজের ভিসা প্রসেসিং হতে কতদিন সময় লেগে থাকে, সে সম্পর্কে অনেকেই জানার
আগ্রহ প্রকাশ করেন। নরওয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং হতে সময় লেগে যায় প্রায়
৪ থেকে ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত। তবে ভিসা প্রসেসিং সময় কিছুটা কম বেশি হতে পারে।
নরওয়ে কোন কাজের বেতন কত
নরওয়ে কোন কাজের বেতন কত, সে সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই ইচ্ছে পোষণ করে থাকেন।
কেননা আপনারা দেশটিতে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চাচ্ছেন, অথচ কাজের বেতন কেমন হতে
পারে, সে সম্পর্কে ধারণা থাকবে না,সেটা আপনাদের জন্য অতি দুঃখ জনক। তাই আপনাদেরকে
আজকে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে নরওয়ে কোন কাজের বেতন কত, সে সম্পর্কে ধারণা
দেওয়ার চেষ্টা করবো। নরওয়েতে প্রায় প্রতিটি কাজের উচ্চ বেতন হয়ে থাকে। নরওয়ে টাকার মান কেমন জানুন।
- তথ্য প্রযুক্তি সেক্টরে একজন কর্মীর মাসিক বেতন হয়ে থাকে প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
- স্বাস্থ্যসেবা খাতে একজন কর্মীর বেতন হয়ে থাকে প্রায় ২ লক্ষ টাকা থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। তবে চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞদের বেতনের পরিমাণ আরো বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে।
- নির্মাণ শ্রমিকের মাসিক বেতন প্রায় ১ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
- গ্যাস এবং তেল শ্রমীকদের মাসিক বেতন প্রায় ২ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
- নরওয়ে ক্লিনারের বেতন ৮০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
- ওয়েটারের মাসিক বেতন ৮০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। নরওয়ে যেতে যেসব কাজগপত্র লাগে জানতে পড়ুন। নিচে নরওয়ে যেসব কাজের চাহিদা বেশি জেনে নিতে পারেন।
নরওয়ে যেসব কাজের চাহিদা বেশি
নরওয়েতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের কাজে সুযোগ রয়েছে, তবে এর ভেতরে কিছু কিছু কাজের
চাহিদার পরিমাণ বেশি থাকে। আর এসব কাজের চাহিদাগুলোর সাথে বেতনের পরিমাণও বেশি
হয়ে থাকে থাকে। চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক, কোন কাজের চাহিদা গুলো বেশি রয়েছে।
- নার্স
- কেয়ারগিভার
- সফটয়ার ডেভেলপার
- সিস্টেম এনালিস্ট
- নেটওয়ার্ক ইন্জিনিয়ার
- প্রকৌশলি
- স্থপতি
- হোটেল ম্যানেজমেন্ট
উপরে উল্লেখিত কাজগুলোতে নরওয়েতে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে। তাই দেশটিতে যাওয়ার
পূর্বে অবশ্যই এসব কাজের উপরে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে যেতে পারেন। এছাড়া নরওয়েতে আরো যেসব কাজের চাহিদা রয়েছে জেনে নিতে পারেন।
নরওয়ে স্টুডেন্ট ভিসা খরচ
নরওয়ে স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কেমন, যারা দেশটিতে পড়াশোনার জন্য যেতে চান, তারা জানার
জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। নরওয়ে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য ফি দিতে
হয় প্রায় 545 USD। অথচ নরওয়ের প্রতিবেশী দেশগুলো যেমন: সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসার
জন্য নিয়ে থাকেন প্রায় 100 USD। অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সময় ডিরেক্টরেট
ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে
আপনার ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ফি বা অর্থ প্রদান করতে হবে।আপনি যদি অনলাইনে
মাধ্যমে ফি জমা করতে না পারেন, তাহলে দূতাবাসে গিয়ে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময়
অর্থ প্রদান করতে পারবেন। তবে ভিসা খেলে আপনাকে একটি পরিষেবা পেয়েও দিতে হয়
আবেদন কেন্দ্রে গেলে আপনাকে ভিসা পরিষেবা ফিও দেওয়া লাগতে পারে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, নরওয়ে কাজের সুবিধাগুলো, নরওয়ে ভিসা
আবেদন প্রক্রিয়া, নরওয়ে ওযার্ক পারমিট ভিসা খরচ, নরওয়ে ভিসা প্রসেসিং হতে কতদিন
সময় লেগে যায়, কোন কাজের বেতন কত, যেসব কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে এবং নরওয়ে
স্টুডেন্ট ভিসা খরচ ইত্যাদি সম্পর্কে। আপনি যদি নরওযেতে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চান
তবে
যে কাজগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে ধারণা নিবেন এবং সেই
কাজের উপরে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিয়ে যেতে পারেন। তাহলে আপনি প্রথম
থেকেই বেশি পরিমাণ বেতন পাওয়ার আশা করতে পারেন। আশা করি আর্টিকেলটি মনোযোগ
সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url