সেনজেন ভিসা পাওয়ার উপায় জানুন (ভিসা খরচ)
সেনজেন শব্দটি যারা দেশ বিদেশ ভ্রমণ করেন তাদের কাছে পরিচিত একটি শব্দ।
সেনজেনভুক্ত একটি দেশের ভিসা পেলেই আপনি ইউরোপের বাকী ২৬টি দেশ সহজেই ভ্রমণ করতে
পারবেন। এজন্য আপনার আলাদা ভিসার প্রয়োজন হবে না। শুধুমাত্র জানতে হবে সেনজেন ভিসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে।
সেনজেন ভিসা খরচ কেমন হতে পারে সেটা তুলনামূলকভাবে কঠিন, তবে বিভিন্ন দেশ
অনুযায়ী ভিসা খরচ ভিন্ন হয়ে থাকে। এছাড়াও ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশগুলোতে
সিঙ্গেল এন্ট্রি, মাল্টিপল এন্ট্রি, দীর্ঘমেয়াদী ভিসার জন্য খরচের তারতম্য হয়ে
থাকে। নিচে জেনে নিন সেনজেন ভিসা পাওয়ার উপায় কিভাবে পাবেন সে সম্পর্কে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ সেনজেন ভিসা পাওয়ার উপায় জানতে পড়ুন
সেনজেন ভিসা খরচ
সেনজেন ভিসা খরচ কত, সে সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাং মানুষ গুগলে সার্চ করে
থাকেন। তাই আমাদের জানার সুবিধার্থে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে,
সেহজেন ভিসা খরচ কেমন হতে পারে, সে সম্পর্কে আশা করি বিস্তারিত জানতে পারবেন।
সেনজেন ভিসা খরচ সাধারণত বিভিন্ন ধরনের বিষয়ের উপর নির্ভর করে থাকে। আপনার ভিসা
ধরন,
কোন দেশের জন্য ভিসা তৈরি করবেন, এবং আপনার বয়স কত, বিভিন্ন প্রক্রিয়ার উপরে
নির্ভর করে আপনার খরচ কেমন হবে সে নির্ভর করবে।এছাড়াও আপনার সেনজেনভুক্ত দেশের
ভিসার জন্য সিঙ্গেল এন্ট্রি, মাল্টিপল এন্ট্রি, দীর্ঘমেয়াদী ভিসার জন্যও খরচের
তারতম্যটা হতে পারে। সেনজেনভুক্ত দেশগুলোর ভিসা তৈরি করার সময়, আপনার আবেদন
ফি,
মেডিকেল পরীক্ষা ফি সহ আরো অন্যান্য খরচ হতে পারে। তবে আপনার ভিসা ফি অনুযায়ী,
ভিসা খরচ হতে পারে নূন্যতম প্রায় ১০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা থেকে
২০ হাজার টাকা। নিচে সেনজেন ভিসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।
সেনজেন ভিসা পাওয়ার উপায়
সেনজেন ভিসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ ইন্টারনেটে
খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। সেদনজেনভুক্ত দেশের ভিসা পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে কিছু
পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সেনজেন ভিসার পাওয়ার উপায় গুলির মধ্য প্রথম উপায়টা
হচ্ছে, সরকারিভাবে সেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করা। এছাড়াও আপনি বেসরকারিভাবে
বিভিন্ন
দূতাবাসের সহযোগিতা নিয়ে আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি যদি চান, সেনজেন ভিসা
অনলাইনে মাধ্যমে আবেদন করবেন, তবে সেটাও পারবেন। কেননা অনলাইনে আবেদন করার জন্য
সেনজেন ভিসার আবেদন ফরম রয়েছে। আপনি যদি গুগলে গিয়ে সেনজেন ভিসা লিখে সার্চ
করেন, তাহলে সহজেই একটি আবেদন লিংক পাবেন। আপনাদের আবেদন
করার সুবিধার্থে
এই লিংকে
আবেদন ফরমটি সতর্কতার সহিত সঠিকভাবে পূরণ করে দিতে পারেন।অবশ্যই আপনাকে আবেদন
ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে এবং দুই পাশের প্রতিটি ঘর গুলো পূরণ করতে হবে। এই
ফরমটিতে কোন ঘর ফাঁকা থাকলে অথবা আপনার কোন ভুল তথ্য থাকা যাবে না। আপনাকে আবেদন
ফরমের কপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো
নিকটস্থ দূতাবাসে গিয়ে জমা দিতে হবে এবং ফরমে অবশ্যই তারিখ এবং আপনার স্বাক্ষর
উল্লেখ থাকলে হবে।বাংলাদেশ থেকে সেনজেনভুক্ত দেশের ভিসা তৈরি করতে আপনার খরচ হবে
প্রায় নূন্যতম ৮ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা জেনে নিন।
বাংলাদেশ থেকে সেনজেনভুক্ত দেশের ভিসা পাওয়ার উপায়
সেনজেনভুক্ত ২৭টি দেশের যে কয়েকটি দূতাবাস বাংলাদেশে রয়েছে, সেখানে গিয়ে সেনজেন
ভিসার জন্য আপনাকে আবেদন করতে হবে। তবে আপনাকে একটি বিষয়ে মাথায় রাখতে হবে সেটা
হলো, সেনজেনভুক্ত যে কোন দেশের দূতাবাস থেকেই আপনি এই ভিসার জন্য আবেদন করতে
পারবেন। ইউরোপের নন-সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা জানতে পড়ুন।
সেনজেন ভিসা ফি
সেনজেন ভিসা ফি কত, সে সম্পর্কে জানা আপনাদের জন্য খুবই জরুরী। কেননা সেনজেন ভিসা
ফি পূর্বের তুলনায় অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য
সেনজেন ভিসা ফি ৮০ থেকে ৯০ ইউরো পর্যন্ত করা হয়েছে।
এছাড়া যেসব শিশুদের বয়স ৬ থেকে ১২ বছর বয়স, তাদের ক্ষেত্রে ৪০ ইউরো থেকে ৪৫ ইউরো
পর্যন্ত রয়েছে। অর্থাৎ যাদের বয়স ৬ বছরের নিচে তাদের কোনো সেনজেন ভিসা ফি লাগবে
না। আশা করি পরিষ্কার বুঝতে পেরেছেন।
সেনজেনভুক্ত দেশের সুবিধা কি
আপনারা যারা সেনজেন ভিসা করতে চাচ্ছেন, সেনজেনভুক্ত দেশের সুবিধা কি, সে সম্পর্কে
জানাটা প্রয়োজন। সেনজেন দেশের ভিসার মেয়াদ সাধারণত ৯০ দিনের জন্য হয়ে থাকে।
সেনজেন ভিসা নিয়ে আপনি ২৭টি দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন অবাধে কোনো রকম ভিসা ছাড়াই।
তাহলে চলুন যেনে নেওয়া যাক সেনজেনভুক্ত দেশের সুবিধাগুলো কি কি সে সম্পর্কে।
- একটি ভিসার মাধ্যমে আপনি ইউরোপের ২৭টি দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন।
- সেনজেনভুক্ত এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতাযাতের ভালো ব্যবস্থা রয়েছে এবং খুব সহজে যেতে পারবেন।
- সেনজেনভুক্ত দেশগুলোতে উন্নত মানের শিক্ষা ও চিকিৎসার সুবিধা রয়েছে।
- সেনজেনভুক্ত দেশগুলোর বিভিন্ন ধরনের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ঘেরা।
- সেনজেনভুক্ত সকল দেশের নাগরিকদের জন্য রয়েছে উন্নত মানের পর্যটন সুবিধাগুলো।সেনজেনভুক্ত দেশের আরো সুবিধা কি জানুন।
সেনজেন ভিসা আবেদনের জন্য কি কি লাগে
আপনারা যারা সেনজেন ভিসার আবেদন করতে চাচ্ছেন অবশ্যই কি কি ডকুমেন্ট লাগবে বা
প্রয়োজন পড়বে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, সেনজেন
ভিসা আবেদন করার জন্য যেসব কাগজপত্রগুলো লাগে।
- আমার বৈধ পাসপোর্ট
- সেনজেন ভিসা আবেদন ফরম পূরণকৃত
- আপনি যে দেশগুলোতে যাবেন, তার বাসস্থান, ফ্লাইটের বিবরণসহ ভ্রমণের যাত্রাপথ।
- আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- আপনার পেশা কি তার প্রমাণপত্র
- পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য বীমার প্রমাণপত্র
- সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- সেনজেন ভিসা প্রেসেসিং কত দিন লাগে
সেনজেন ভিসা প্রসেসিং হতে আপনার সময় লাগবে কমপক্ষে সর্বনিম্ন ১৫ দিন এছাড়াও
ভিসা প্রসেসিং হতে ৩০ থেকে ৬০ দিনও লেগে যায়৷ আপনাকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।
সেনজেন ভিসা তৈরি করার সময় অবশ্যই কাগজপত্রগুলো সঠিক দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
সেনজেন ভিসার জন্য কি কি যোগ্যতা লাগে
সেনজেন ভিসার জন্য কি কি যোগ্যতা লাগে, সে সম্পর্কে আপনাদের ধারণা রাখা প্রয়োজন।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, কি কি যোগ্যতা গুলো লাগে, সে সম্পর্কে নিচে উল্লেখ
করে দেওয়া হলো।
- আপনাকে অ-ইউরোপীয় দেশের নাগরিক হতে হবে যেটটা ইউরোপীয় ইউনিয়নে নেই।
- আপনার ভ্রমণের কারণ, সেই সাথে ভ্রমণের সময়সীমা অবশ্যই যুক্তিযুক্ত হতে হবে।
- আপনার ভিসা আবেদনের পর, অন্তত তিন মাস আপনার কাছে একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।
- ইউরোপীয় ভিসা আবেদন করার জন্য, আপনার মেডিকেল ট্রাভেলস ইন্সুইরেন্স ন্যূনতম £৩০,০০০ থাকতে হবে।
সেনজেন ভিসা টাইপ সম্পর্কে জানুন
সেনজেন ভিসা আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে সেনজেন ভিসার প্রকার
সম্পর্কে। আপনি কোন ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করবেন, সে অনুযায়ী আপনাকে ভিসা
প্রসেসিং করতে হবে। তাহলে চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক।
সেনজেন ভিসার টাইপগুলো হলোঃ
- ট্রানজিট ভিসা
- টুরিস্ট ভিসা
- বিজনেস ভিসা
- কালচারাল/স্পোর্টস/ইভেন্ট ভিসা
- স্টাডি ভিসা
- মেডিকেল ভিসা
সেনজেনভুক্ত ১০টি দেশে ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়
সেনজেনভুক্ত যে দশটি দেশে সহজে ভিসা পাওয়া যায় সেগুলো সেগুলো আপনারা জেনে নিতে
পারেন। আপনাদের জানার সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
- লাটভিয়া
- বেলজিয়াম
- ফ্রান্স
- ফিনল্যান্ড
- এস্তোনিয়া
- স্লোভাকিয়া
- পোল্যান্ড
- গ্রীস
- লুক্সেমবার্গ
- চেক রিপাবলিক
লেখকের শেষ মন্তব্য - সেনজেন ভিসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, সেনজেন ভিসা খরচ, সেনজেন ভিসা পাওয়ার
উপায়, বাংলাদেশ থেকে সেনজেন দেশে ভিসা পাওয়ার উপায়, সেনজেন ভিসা ফি, সেনজেনভুক্ত
দেশের সুবিধা কি, সেনজেন ভিসা আবেদনের জন্য কি কি লাগে, সেনজেন ভিসার জন্য যেসব
যোগ্যতা লাগে এবং সেনজেন ভিসা টাইপ ইত্যাদি সম্পর্কে।
আশা করি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। আপনারা যদি এই
আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে শেয়ার করে দিতে ভুলবেন না।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url