সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ এবং আবেদন প্রক্রিয়া
সুইডেন ইউরোপের উন্নত একটি দেশে। সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কেমন এবং স্টুডেন্ট
ভিসায় যেতে কি কি লাগে, সে সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে যাবতীয়
তথ্যগুলো জেনে নিতে পারবেন। পুরো আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিচে পড়তে
থাকুন।
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা কিভাবে দ্রুত সময়ের ভেতরে পাবেন, সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা
খরচ, আবেদন প্রক্রিয়া ইত্যাদি সমস্থ বিষয়গুলো যদি জানতে চান, তাহলে এই
আর্টিকেলটি নিচে মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। কেননা আবেদন করার ক্ষেত্রে ভুল হয়ে
থাকলে আপনি ভিসা নাও পেতে পারেন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ সুডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ সম্পর্কে জানতে পড়ুন
- সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা
- সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসার জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে
- সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত
- সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করার নিয়ম
- সুইডেনে পড়াশোনা পাশাপাশি যে পার্ট টাইম কাজগুলো করতে পারবেন
- সুইডেন পড়াশোনার জন্য সর্বাধিক চাহিদা সম্মত বিষয়গুলো
- সুইডেনের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম জানুন
- লেখকের শেষ মন্তব্য
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ গুগলে সার্চ করে
থাকেন। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে, এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে শুরু থেকে শেষ
পর্যন্ত পড়লে, আশা করি সুইডেন পড়াশোনার ভিসা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যগুলো জানতে
পারবেন। আপনি যদি উচ্চ শিক্ষার জন্য সুইডেন যেতে চান, তাহলে অবশ্যই সুইডেনের স্টুডেন্ট ভিসা খরচ সম্পর্কে জানতে হবে।
কেননা সুইডেনের স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া মানে সোনার হরিণের মত। বিশেষ করে সুইডেন
ইউরোপের এবং উন্নত দেশ হওয়ার কারণে শিক্ষা ব্যবস্থার মান অনেকটাই ভালো। সুইডেন
স্টুডেন্ট ভিসার জন্য যেসব যোগ্যতাগুলো লাগে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো। সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে জেনে নিতে পারেন।
- আপনার একাডেমিক রেজাল্ট কমপক্ষে ৬০% মার্ক থাকতে হবে।
- আপনারে এস.এস.সি এবং এইচএসসিতে কমপক্ষে ৩.০০ থেকে ৩.৫০ পয়েন্ট থাকতে হবে।
- মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য আপনার যোগ্যতা থাকতে হবে ২.৫০ থেকে ২.৭৫ পয়েন্ট।
- ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য আপনার IELTS স্কোর সর্বনিম্ন ৬.০০ এবং মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য সর্বনিম্ন ৬.৫০ থাকতে হবে।
স্টুডেন্ট ভিসাতে আপনি যদি ইউরোপের দেশ সুইডেন যেতে চান, তবে এই সকল বিষয়গুলো
আপনার মাথায় রাখতে হবে। তাছাড়া স্টুডেন্ট ভিসাতে যদি সুইডেন যেতে পারেন তাহলে
বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবেন। পড়াশোনার পার্ট টাইম জব করে নিজের টিউশন ফি দিতে
পারবেন।
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসার জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসার জন্য যেসব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট বা কাগজপত্রগুলো লাগবে সে
সম্পর্কে প্রায় অধিকাংশ মানুষ ধারণা রাখেন না। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্ধে
সুইডেনের স্টুডেন্ট ভিসার জন্য যেসব কাগজপত্রগুলো লাগে সেগুলো নিচে উল্লেখ করে
দেওয়ার চেষ্টা করছি।
- আপনার বৈধ পাসপোর্ট (কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদী এবং দুই পৃষ্টা খালি থাকতে হবে)
- সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- সুইডেন বিশ্ববিদ্যালয় ইস্যুকৃত ভর্তির অফার লেটার
- আপনারা আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণপত্র (প্রতি মাসে কমপক্ষে ১০ হাজার ৩১৪ ক্রোনা বাংলা টাকায় প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার ৯৮৮ টাকা)
- স্নাতক প্রোগ্রামে আবেদন করলে আপনার উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষায় সনদ লাগবে।
- স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য ৪ বা আপনার অনার্সসহ ৩ বছরের স্নাতক ডিগ্রী সনদ লাগবে।
- ইংরেজী ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট লাগবে
- IELTS স্কোর ৬.৫ লাগবে ( কোন বিভাগে ৫.৫ এর কম পাওয়া যাবে না)
- আপনার টোফেল ইন্টারনেটভিত্তিক স্কোল ২০ ( ০ থেকে ৩০ স্কেলে) মোট স্কোল ৯০ লাগবে।
- কোনো শিক্ষার্থী যদি স্নাতকের চার বছর ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করে থাকেন অথবা উচ্চ মাধ্যমিক ইংরেজি পড়াশোনা করে থাকেন, সেক্ষেত্রে আলাদা করে IELTS বা টোফেলের প্রযোজন হবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে মিডিয়াম অব ইনস্টাকশন বা এমওআই প্রদর্শন করতে হবে।
- একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট লাগবে
- আপনার সিভি বা পোর্টফোলিও
- স্টেটমেন্ট অফ পারপাস
- লেটার অব মোটিভেশন
- লেটার অব রিকমেন্ডেশন
- আবেদন ফি পরিশোধের রশিদ
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করার ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্রগুলো আবশ্যিক
লাগবে। তাই দেশটিতে যাওয়ার পূর্বে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করে রাখতে
পারেন। সুইডেন কাজের চাহিদা ও বেতন জেনে নিতে পারেন।
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত, সে সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই ইন্টারনেটে
খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। বাংলাদেশ থেকে পড়াশোনা করার জন্য অনেকেই সুইডেন যেতে
চান। কিন্তু সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসায় কেমন খরচ হতে পারে সেই সম্পর্কে সঠিক ধারণাটা
জানেন না। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসায় কেমন খরচ হতে
পারে সেগুলোর এই পোস্টের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করবো।
আবেদন ফিঃ স্টুডেন্ট আবেদন ফি ৯০০ ক্রোনা। সুইডেনের ১ ক্রোনা সমান
বাংলাদেশী টাকায় দাঁড়ায় ১১.৫০ পয়সা। তাহলে আপনার আবেদন ফি দাঁড়াবে ১২ হাজার
টাকার মতো।
ডকুমেন্ট কুরিয়ার ফিঃ মাস্টার্স প্রোগ্রামে আপনারা যারা ভিসার জন্য আবেদন
করবেন, তাদের যে মাস্টার্সের ট্রান্সক্রিপ্ট রয়েছে সেগুলো আপনার ইউনিভার্সিটি
থেকে ইউনিভার্সিটি ইন ব্লপে অ্যাটেস্টেড করে আপনাকে সুইডেনে পাঠাতে হবে। কুরিয়ার
করে পাঠাতে আপনার খরচ হতে পারে প্রায় ৪ হাজার টাকার মতো।
টিউশন ফিঃ সুইডেনে পড়াশোনা জন্য টিউশন ফি লাগে ৪০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার
ক্রোনা পর্যন্ত। যা বাংলাদেশি টাকায় কনভার্ট করলে দাঁড়ায় ৫ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ
টাকা পর্যন্ত। সুইডেনের টিউশন ফি প্রতি সেমিস্টার অনুযায়ী হয়ে থাকে। এই টাকাটা
আপনাকে আগেই পাঠিয়ে দিতে হবে।
ইন্সুইরেন্স খরচঃ সুইডেনের ইন্সুরেন্স ফি ফ্রি হয়ে থাকে। ইন্সুরেন্স
নিয়ে আপনার কোন ঝামেলা নেই। ইন্সুইরেন্স বাবদ আপনার কোনো টাকা খরচ করতে হবে না।
ভিসা আবেদন ফিঃ সুইডেনের ভিসা আবেদন করার জন্য ১৫০০ ক্রোনা লাগে, অর্থাৎ
বাংলাদেশী টাকায় ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা এম্বাসি ফি দিতে হয়।
সুইডেনের স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার আগ পর্যন্ত, আপনার খরচ হতে পারে প্রায় ৭ লক্ষ
থেকে ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। বাংলাদেশ থেকে সুইডেনের দূরত্ব জানুন।
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করার নিয়ম
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে জানার ইচ্ছে পোষণ করে থাকেন।
কিন্তু কিভাবে করবেন সে সম্পর্কে অনেকেই ধারণা রাখেন না। তাহলে চলুন কিভাবে আবেদন
করবেন, তার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।দীর্ঘকালীন না পড়াশোনার জন্য
আপনি যদি ইইউ রাষ্ট্রে যেতে চান, তবে অধ্যায়ের উদ্দেশে রেসিডেন্স পারমিটের জন্য
আবেদন করতে হবে।
এই পারমিটের মাধ্যমে আপনি সুইডেনে পড়াশোনার জন্য ৩ মাস বা 90 দিনের বেশি পড়াশোনার
জন্য অনুমতি লাভ করতে পারবেন।তবে একটি বিষয় আপনাকে মাথায় রাখতে হবে সেটা হলো,
এই ভিসা নিয়ে সেজনভুক্ত অন্যান্য দেশের ভ্রমণ করতে পারবেন না। অন্য দেশগুলো
ভ্রমণ করার জন্য আলাদাভাবে স্বল্পমেয়াদি ভিসার আবেদন করতে হয় পারেন।
সুইডেনে উচ্চশিক্ষার রেসিডেন্স পারমিটের জন্য আবেদনের সহজ উপায় হচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করা। সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করার
জন্য এই লিংকে
https://www.migrationsverket.se/manageaccount/
একাউন্ট খুলতে হবে। তারপর আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো স্ক্যান কপি করে
আপলোড দিতে পারেন। আমেরিকা ডিভি লটারি আবেদন জেনে নিতে পারেন।
সুইডেনে পড়াশোনা পাশাপাশি যে পার্ট টাইম কাজগুলো করতে পারবেন
সুইডেনে পড়াশোনার জন্য রেসিডেন্সি পারমিট পাওয়ার পর পড়াশোনার পাশাপাশি যে কাজগুলো
করতে পারবেন। এতে আপনার আলাদা করে কাজের ভিসার কোন প্রয়োজন পড়বে না। এছাড়া
অন্যান্য যেসব দেশগুলো রয়েছে তার মত কাজ করার জন্য ধরাবাঁধা কোন সময়সীমা নেই।
তাহলে চলুন কাজগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- গ্রাহক সেবা প্রতিনিধি
- লাইব্রেরী সরকারী
- ল্যাব টেকনিশিয়ান
- রিসেপশনিস্ট
- ওয়েটার
- বিক্রয় সহকারী
- আইডি সাপোর্ট ইত্যাদি
সুইডেন পড়াশোনার জন্য সর্বাধিক চাহিদা সম্মত বিষয়গুলো
সুইডেনে পড়াশোনার জন্য যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে, সেগুলো আপনাদের
জানার সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলো। তাহলে চলুন জেনে নেই। কুয়েত প্রবাসীদের বেতন ও কোন কাজের চাহিদা বেশি জানুন।
- প্রকৌশল ও প্রযুক্তি
- ব্যবসা ও অর্থনৈতিক
- সাংবাদিকতা যোগাযোগ ও তথ্য
- লাইভ সায়েন্সস এন্ড মেডিসিন
- ডিজাইন এন্ড আর্কিটেকচার
সুইডেনের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম জানুন
সুইডেনের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্কে যারা ধারণা রাখেন না বা জানে না। এই
পোষ্টের মাধ্যমে তাহলে নিচে জেনে নিতে পারেন।
- কেচিএইচ রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি
- লুন্ড ইউনিভার্সিটি
- উপসালা ইউনিভার্সিটি
- স্টকহোম ইউনিভার্সিটি
- চালমার্স ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি
- ইউনিভার্সিটি অব গোথেনবার্গ
- ক্যারোলিস্কা ইউনিভার্সিটি
- উমিয়া ইউনিভার্সিটি
- হালম্সট্যান্ড ইউনিভার্সিটি
লেখকের শেষ মন্তব্য
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে,সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা, সুইডেন
স্টুডেন্ট ভিসায় যেসব কাগজপত্র লাগে, সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কেমন, সুইডেন
ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া এবং পার্ট টাইম হিসেবে কোন জব গুলো করা যায় ইত্যাদি
সম্পর্কে। সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কিত উপরের আলোচ্য অংশটুকু আশা করি মনোযোগ
সহকারে পড়েছেন এবং সহজেই বুঝতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি পড়ে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন
তাহলে শেয়ার করে দিতে ভুলবেন না।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url