সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনি কি সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন? কিন্তু কিভাবে খুলবেন, সোনালী
ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানেন না? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার
জন্য।এই পোস্টের মাধ্যমে নিচে জেনে নিতে পারবেন সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার
যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে।
আপনারা যারা সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট করতে চাচ্ছেন, অবশ্যই কিছু নিয়ম ফলো করতে
হবে। প্রায় অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট করতে চান,
কিন্তু কিভাবে খুলতে হয়, সে বিষয়ে ধারণা রাখে না। তাহলে চলুন সোনালী ব্যাংক
একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।
পোস্ট সূচীপত্রঃ সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে পড়ুন
সোনালী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম
সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ
গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে, এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত
পড়লে, আশা করি সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে সহযেই জেনে নিতে
পারবেন। সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট আপনি দুটি পদ্ধতিতে করতে পারবেন। একটি হচ্ছে
সরাসরি ব্যাংক শাখায়
গিয়ে সঠিক তথ্যগুলো দিয়ে একাউন্ট খোলা এবং অন্যটি হচ্ছে আপনার স্মার্টফোন কিংবা
কম্পিউটার দ্বারা ঘরে বসেই অনলাইনে মাধ্যমে একাউন্ট খোলা। এই পোস্টে আপনারা দুটি
পদ্ধতিই জেনে নিতে পারবেন,চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক। ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি জানুন।
সোনালী ব্যাংকের শাখায় একাউন্ট খোলার নিয়ম
সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে গেলে কিছু ডকুমেন্ট লাগবে যেগুলো নিচে জেনে নিতে
পারবেন। সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট করতে আপনাকে যে কোনো একটি ব্যাংক শাখাতে যেতে
হবে। যেখানে কর্মরত যেকোনো কর্মকর্তাকে জানাতে হবে যে, আপনি সোনালী ব্যাংকে
একাউন্ট খুলতে ইচ্ছুক। তারপর আপনাকে তারা একটি সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফরম
দিবে।
আপনি চাইলে নিজে পূরণ করতে পারেন কিংবা সঠিক তথ্যগুলো দিয়ে তাদের দ্বারা পূরণ করে
নিতে পারেন। তবে একাউন্ট খোলার সময় অবশ্যই আপনার সকল তথ্যগুলো দিয়ে পূরণ করতে
হবে।আপনার একাউন্ট খোলার সময় ডকুমেন্টগুলো চাওয়া হবে, সেগুলো একাউন্ট খোলার সময়
আপনাকে ফরমের সাথেই জমা দিতে হবে। একাউন্টটি খোলার সময়
ডিপোজিটের টাকা জমা দিতে হবে, তাহলে আপনার একাউন্টে খোলা হয়ে যাবে। আপনি যে
মোবাইল নাম্বারটা ব্যবহার করেন সেই নাম্বারটি দিয়ে একাউন্ট খুলতে পারেন। আপনার
একাউন্ট হয়ে গেলে এসএমএসের মাধ্যমে সেই নাম্বারটিতে জানিয়ে দেওয়া হবে। চেক বই
কিংবা এটিএম কার্ড নেওয়ার মাধ্যমে আপনি সহজেই লেনদেন শুরু করতে পারবেন। বিধবা ভাতা আবেদন অনলাইন জানুন।
সোনালী ব্যাংক একাউন্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে
সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে সেই সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই
ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে যেসব কাগজপত্রগুলো
লাগে, সেগুলো সম্পর্কে সহজেই জেনে নিতে পারবেন। তবে একাউন্ট করার জন্য
কাগজপত্রগুলো আপনার জন্য বাধ্যতামূলক। কেননা ব্যাংকটি সরকারি হওযার কারণে নিয়ম
কানুনগুলো কড়া হয়ে থাকে। তাহলে চলুন যেসব কাগজপত্রগুলো লাগে সেগুলো নিচে জেনে
নেওয়া যাক।
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা পাসপোর্ট এর কপি
- সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি
- নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- একাউন্ট খুলতে যে পরিমাণ টাকা লাগে সেই টাকা
- ঠিকানা যাচাইয়ে বিদ্যুৎ বিল বা গ্যাস বিলের কাগজ
- আয় এবং ব্যায়ের প্রমাণপত্র
- ব্যবসায়িক একাউন্ট খুলতে চাইলে আপনার ট্রেড লাইসেন্সের কপি লাগবে।
- একটি সচল মোবাইল নাম্বার লাগবে
- এছাড়াও ব্যাংক থেকে আরো প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট চাইতে পারে।
আপনি যদি সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট করতে চান, তবে অবশ্যই উপরে উল্লেখিত
ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন পড়বে। একাউন্ট করার পূর্বে অবশ্যই ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে
রাখতে পারেন, তাহলে পরবর্তীতে সুবিধা হবে কেননা খুঁজতে হবে না। হাউজ লোন কিভাবে পাব জানুন।
সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে
সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে, সে সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই আগ্রহ
প্রকাশ করেন। সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার সময় সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা জমা দিতে
হয়। তবে একাউন্ট খোলা হয়ে গেলে সেই টাকাটা আপনার একাউন্টে জমা থাকবে।
বাংলাদেশের যে কোনো ব্যাংকেই একাউন্ট খুলবেন না কেন, প্রথমে ইনষ্ট্যান্ট
ডিপোজিটের টাকা জমা দিতে হয়।
সেক্ষেত্রে আপনি একাউন্টটি যদি ক্লোজ করে ফেলেন, তাহলে সেই টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
আমি যে ১০০০ টাকা জমা রাখবেন সেটি আপনার একাউন্টেই থাকবে। সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংক জানুন।
অনলাইনে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
অনলাইনে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার উপায় জানার জন্য অনেকেই খোঁজাখুঁজি করেন।
কিন্তু সঠিক তথ্যটি পান না। যা আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন।তাহলে
চলুন জেনে নেওয়া যাক, অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট খোলা যায়
তার নিয়ম সম্পর্কে।
- ধাপ ১ঃ অনলাইনে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে গুগল প্লে স্টোর থেকে Sonali eSheba apps টি ইনস্টল করতে হবে। অ্যাপসটি ইনস্টল হয়ে গেলে ওপেন করতে হবে। ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আইকন ক্লিক করতে হবে তাহলে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।
- ধাপ ২ঃ যে মোবাইল নাম্বারটি দিয়ে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন, সেই মোবাইল নাম্বারটি আপনাকে প্রদান করতে হবে। আপনার মোবাইল নাম্বারটি লেখার পর সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। সাবমিট বাটনে ক্লিক করার পর আপনার নাম্বার একটি OTP কোড আসবে সেটি আপনাকে দিতে হবে। এর ফলে আপনার মোবাইল নাম্বারটি ভেরিফাই হবে।
- ধাপ ৩ঃ আপনার মোবাইল নাম্বারটি যাচাই সম্পন্ন হয়ে গেলে, মোবাইলের ক্যামেরাটি ব্যবহার করে নিজের সেলফি তুলতে হবে। এরপর আপনার জন্ম তারিখ বছর/মাস/দিন অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে। এনআইডি ঘরে ১৭ সংখ্যার আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার (১৩ সংখ্যার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার এর পূর্বে অবশ্যই জন্ম সাল যুক্ত করে দিতে হবে)/ ১০ সংখ্যার স্মার্ট কার্ড
- নাম্বার প্রদান করে "তথ্য যাচাই করুন" বাটনে ক্লিক করতে হবে।জাতীয় পরিচয়পত্র যদি আপনার না থাকে, তাহলে জন্ম নিবন্ধন নম্বর ঘরে জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রদান করে "তথ্য যাচাই করুন" বাটনে ক্লিক করে দিতে হবে। তবে জন্ম নিবন্ধনের নাম্বারটি দেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে, অনলাইনে দেওয়া ১৭ সংখ্যার নাম্বারটি দিতে হবে।
- ধাপ ৪ঃ আপনার মৌলিক তথ্যগুলো প্রদান করতে হবে অর্থাৎ আপনার বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা সিলেক্ট করে, গ্রাম/পোস্ট/উপজেলা/জেলা ইত্যাদি দিতে হবে। এছাড়া স্বামী-স্ত্রী থাকলে তাদের নামও লিখতে হবে। এরপর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- ধাপ ৫ঃ আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের সামনে এবং পিছনে ছবি তুলে সাবমিট করতে হবে।
- ধাপ ৬ঃ আপনারা তথ্যগুলো প্রদান হয়েছে এমন ঠিকানার উপরে ভিত্তি করে নিকটস্থ শাখা গুলো প্রদর্শিত হবে এবং সেখান থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী শাখাটি নির্বাচন করুন। ড্রপডাউন লিস্ট থেকে আপনার কাঙ্খিত হিসাবের ধরণটি নির্বাচন করতে হবে। এরপর নমিনির তথ্য, নমিনির নাম,নমিনির সাথে সম্পর্ক, নমিনির এনআইডি নাম্বার দিয়ে একাউন্ট খুলুন
- বাটনে ক্লিক করে দিতে হবে। এরপর আপনার দেওয়া নাম্বারটিতে এসএমএস এর মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার জানিয়ে দেওয়া হবে।
- ধাপ ৭ঃ উপরোক্ত তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করার মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট সহজ ভাবে খুলতে পারবেন। সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট দিয়ে আপনি সব ধরনের লেনদেন করতে পারবেন। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখবেন সেটা হচ্ছে, একাউন্ট যেন ডি-একটিভ না হয়ে যায়। আর এজন্য আপনাকে একাউন্ট খোলার তিন মাসের মাঝে আপনার নির্বাচন করা শাখায় গিয়ে
স্বাক্ষর এবং অন্যান্য তথ্যগুলো প্রদান করে আসতে হবে।অনলাইনের মাধ্যমে একাউন্ট
খোলার মাধ্যমে অবশ্যই তিন মাসের মাঝে ব্যাংকে গিয়ে স্বাক্ষর এবং অন্যান্য
তথ্যগুলো প্রদান করে আসতে হবে না হলে, একাউন্টটি ডি-একটিভ হতে পারে।
উপরের এই ৭টি ধাপ আপনি যদি অনুসরণ করতে পারেন, তাহলে সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে
বসে একাউন্ট করতে পারবেন। বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক জানুন।
লেখকের শেষ মন্তব্য
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম,
সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কি কি কাগজপত্রের প্রয়োজন পরে, সোনালী ব্যাংক
একাউন্ট খুলতে কত টাকার প্রয়োজন পরে, সোনালী ব্যাংকে অনলাইনের মাধ্যমে একাউন্ট
খোলার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে। আপনার যারা সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট করতে চাচ্ছেন,
আশা করি উপরে উল্লেখিত আর্টিকেলটির মাধ্যমে সহজেই বুঝতে পেরেছেন। পোস্টটি পড়ে
উপকৃত হয়ে থাকলে শেয়ার করে দিতে ভুলবেন না।
মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url