অনলাইন জিডি করার নিয়ম ২০২৫ (জেনে নিন ১মিনিটে)

মানুষের দৈনন্দিন জীবনে লেনদেন, চুরি, ছিনতাই, মারামারি হুমকি ধামকি, প্রতারণা, মালামাল চুরি, ইত্যাদির ক্ষেত্রে অনলাইনে জিডি করতে চান,কিন্তু কিভাবে করবেন সে সম্পর্কে জানেন না। যা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে খুব সহজে জেনে নিতে পারবেন।

অনলাইনে জিডি করতে চাচ্ছেন কিন্তু কিভাবে করবেন বুঝতে পারছেন না? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়লে আশা করি অনলাইন জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ অনলাইন জিডি করার নিয়ম জানতে পড়ুন

অনলাইন জিডি করার নিয়ম জানুন

অনলাইন জিডি করার নিয়ম, সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ থাকে গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আপনাদের জানার সুবিধার্থে, এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে, আশা করি জানতে পারবেন। আপনারা যারা অনলাইন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জিডি করতে চাচ্ছেন সেক্ষেত্রে এখানে ক্লিক করতে পারেন।
ওয়েবসাইটটিতে থেকে ক্লিক করার পর ডান পাশে রেজিস্ট্রেশন অপশনে ক্লিক করতে হবে, আপনার অনলাইন জিডি কার্যক্রম শুরু করার জন্য। রেজিস্ট্রেশন অপশনটিতে ক্লিক করার পর আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে চারটি অপশন দেখতে পাবেন।

  1. জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার
  2. জন্ম নিবন্ধন নাম্বার
  3. দেশি পাসপোর্টধারী
  4. বিদেশী পাসপোর্টধারী
উপরের যে কোন চারটি অপশনের মধ্যে একটি অপশন ব্যবহার করে, আপনি জিডির জন্য সহজেই আবেদন করতে পারবেন। আপনার কাছে যে ডকুমেন্টে রয়েছে, সেটি দিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করুন, ধরুন আপনার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে, তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার অপশনটিতে ক্লিক করুন। তারপরও দেখবেন আপনাকে আরেকটি পেজে নিয়ে যাওয়া হবে।

অনলাইন জিডি করার ধাপগুলো

অনলাইনে জিডি করার জন্য আপনাকে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। জিডি করার ক্ষেত্রে যে ধাপগুলো আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জেনে নিতে পারেন। তাহলে চলুন ধাপগুলো সম্পর্কে নিচে জেনে নেওযা যাক।

প্রথম ধাপঃ আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম সাল এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বারটি দিয়ে Verify অপশনে ক্লিক করুন। আপনার দেওয়া তথ্যটি যদি সঠিক হয় তাহলে সাকসেসফুলি ভেরিফাইটে দেখাবে। তারপর নিচে আপনার ব্যক্তিগত ঠিকানা দিতে হবে, যেমন ধরুন আপনার বিভাগ, জেলা, উপজেলা, থানা, গ্রাম মহল্লা পোস্ট কোড ইত্যাদি তবে অবশ্যই আপনারা জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী। এরপর Next অপশনটিতে ক্লিক করুন।

দ্বিতীয় ধাপঃ আপনার পাসপোর্ট সাইজের সাদা কালো বা রঙিন ছবি কিংবা নরমাল ছবি সিলেক্ট করুন। এরপর আপনাকে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে সেটি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। এই দুটি ডকুমেন্টস আপলোড করার পর পরবর্তী অপশনই আপনাকে ক্লিক করতে হবে।

তৃতীয় ধাপঃ এরপর আপনার ব্যবহৃত রানিং মোবাইল নাম্বার, মোবাইল অপারেটর, আপনার জিমেইল, পাসওয়ার্ড ও security Questions দিয়ে ক্লিক করে পরবর্তী অপশনে যেতে করতে হবে ।

৪র্থ ধাপঃ তৃতীয় ধাপে দেওয়া আপনার সচল মোবাইল নাম্বারটিতে দেখতে পাবেন একটি ওটিপি কোড যাবে। আর সেই OTP কোডটি দিয়ে আপনার মোবাইল নাম্বারটি ভেরিফাইয়ের কাজটি সম্পন্ন করতে হবে। তারপর আপনাকে পরবর্তী অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। তাহলে আপনার রেজিস্ট্রেশন সহজেই সম্পন্ন হয়ে যাবে। এরপর আপনার জিডি সম্পর্কিত সকল তথ্যগুলো দিয়ে অনলাইন জিডি আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। আবেদন শুরু করতে আপনাকে Continue অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে।

যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবেঃ অনলাইনে জিডি রেজিস্ট্রেশন একজন ব্যক্তি জীবনে শুধুমাত্র একবারই করতে পারবেন। তাই আপনার একাউন্ট সম্পর্কিত সকল যাবতীয় ইনফরমেশন গুলো, উদাহরণস্বরূপঃ আপনার জন্ম সাল, জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার, জিমেইল, পাসওয়ার্ড ও সিকিউরিটি প্রশ্ন সমূহ অবশ্যই আপনারা ডাইরিতে লিখে রাখকে পারেন।

মোবাইল অ্যাপ দিয়ে অনলাইনে জিডি করার নিয়ম

অনলািন জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে উপরের আলোচ্য অংশে আপনারা ইতিপূর্বে জেনেছেন। সেক্ষেত্রে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি দ্বারা Online GD নামে একটি অ্যাপস দেখতে পাবেন আর সেটি ইনস্টল করার মাধ্যমে সহজেই আপনারা জিডি করতে পারবেন। এটি আপনার জন্য খুব সুবিধাজনক এবং নিরাপদ হতে পারে। 
কাঙ্খিত সেবাটি পেতে Online GD অ্যাপটি আপনারা ইন্সটল করতে পারেন। ইনস্টল হয়ে গেলে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করে খুব সহজেই রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন।

  • ধাপ ১ঃ  অ্যাপসটি ইনস্টল করার পর একটা ইন্টারফেস দেখতে পাবেন। নিচের দিকে কোনার নিবন্ধন বাটনে ক্লিক করতে হবে।
  • ধাপ ২ঃ আপনার কাছে স্মার্টফোনটির নাম্বার দিয়ে মোবাইল ভেরিফিশন করে নিতে পারেন।
  • ধাপ ৩ঃ জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার এবং জন্ম তারিখ দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রও ভেরিফাই করে নিতে হবে।
  • ৪র্থ ধাপঃ সব কিছু যদি সঠিক হয়ে থাকে, পরবর্তী স্কিনে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার, জন্ম তারিখ, নাম পিতার নাম ও মাতার নাম দেখতে পাবেন। তারপরে তথ্য সঠিক হলে এখানে ক্লিক করুন বাটনে ক্লিক করতে হবে। ধাপ৫ঃ ফেস ভেরিফিকেশন এর জন্য নির্দেশনা মতো ছবি তুলে দিতে হবে। 
  • ধাপ ৬ঃ এরপর আপনার একাউন্ট তৈরি করার জন্য পাসওয়ার্ড সেট করে নিতে হবে। সবকিছু যদি সঠিক থাকে তাহলে সাকসেস মেসেজ দেখতে পাবেন। 
  • ধাপ ৭ঃ এরপর আপনার রানিং মোবাইল নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড নাম্বার দিয়ে লগইন করতে পারেন।  
  • লগিন করা যদি আপনার সঠিক হয় তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা তার জেলা, থানা, গ্রাম, পোস্ট কোড ইত্যাদি তথ্যগুলো দেখতে পাবেন। তারপরে আপনি একটি ড্যাশবোর্ডে চলে আসবেন।
  • এরপর আপনি দেখতে পাবেন অপেক্ষমান আবেদন, গৃহীত আবেদন, অগৃহীত আবেদন, তদন্তাধীন জিডি এবং নিষ্পত্তিকৃত জিডি।নতুন তথ্য এন্ট্রির জন্য দেখতে পাচ্ছেন হারানো ও পাওনা দুটি অফশন।    

অনলাইন জিডি আবেদন কার্যক্রম

অনলাইন জিডি আবেদন কার্যক্রমের শুরুতে Continue ক্লিক করার পর আপনার সামনে অনেকগুলো ক্যাটাগরি দেখতে পাবেন। অর্থাৎ আপনার জিডির বিষয়বস্তু গুলো দেখতে পাবেন, আপনি কেন জিডি করতে চাচ্ছেন সেগুলো সম্পর্কে ক্যাটাগোরি উল্লেখ থাকবে। তাহলে চলুন নিচে ক্যাটাগরি গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

  • চুরি
  • হারানো
  • পাওয়া
  • মানুষ
  • যানবাহন
  • অন্যান্য ইত্যাদি
ধরুন আপনার কোন দামি বা কম দামি কিছু জিনিসপত্র চুরি হয়ে গিয়েছে, তাহলে আপনি যেভাবে আবেদন করতে পারবেন বা করবেন সেই ধাপগুলো আপনাদের জানার সুবিধার্থে নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হচ্ছে।
প্রথম ধাপঃ ক্যাটাগরির পেজ থেকে আপনাকে চুরি অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। তারপর আপনি যানবাহন কিংবা অন্যান্য অপশনের যে কোন একটিতে ক্লিক করুন। আমি ধরে নেন যে, অন্যান্য সিলেক্ট করেছেন।

দ্বিতীয় ধাপঃ এ পর্যায়ে আপনি দেখতে পাবেন আপনার সামনে সাবক্যাটাগরি গুলো চলে আসবে। অর্থাৎ আপনার কোন জিনিসটি চুরি হয়ে গিয়েছে। সাবক্যাটাগরি গুলো নিচে দেখে নিতে পারেন।
  • কম্পিউটার
  • মোবাইলে
  • ইলেকট্রিক
  • গহনা
  • প্রসাধনী
  • ব্যাগ
  • জুতা
  • টাকা-পয়সা
  • ডকুমেন্ট
  • কার্ড
  • ঘড়ি
  • চশমা
  • চাবি
  • গৃহপালিত পশু
  • গার্মেন্টস ইত্যাদি

মোবাইল চুরি হলে অনলাইনে কিভাবে জিডি করবেন?

বাংলাদেশে প্রায় অধিকাংশ মানুষের মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায় কিংবা হারিয়ে যায় বা ছিনতাই হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি কিভাবে অনলাইনে জিডি করতে পারেন, সে সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাহলে চলুন আপনাদের জানার সুবিধার্থে নিচে জেনে নেওয়া যাক মোবাইল চুরি হলে কিভাবে জিডি করবেন সে সম্পর্কে।

তৃতীয় ধাপঃ এই ধাপে আপনাকে অবশ্যই মোবাইল ফোন সম্পর্কিত সঠিক তথ্যগুলো দিতে হবে। যেমন ধরুনঃ

  • আপনার মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ডের নাম
  • মডেল নাম্বার
  • অপেরারেটিং সিস্টেম
  • আইএম ই নাম্বার
  • ব্যাটারির
  • র‍্যাম
  • পরিমাণ
  • ব্যান্ড
  • মেড ঠিকানা
  • ক্রমিক নং
  • রম
  • মূল্য ইত্যাদি
এরপর আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন শনাক্তকরণেন জন্য রং, ছবি, চিহ্ন ইত্যাদি দিতে হবে। তারপর আপনার মোবাইল ফোনটি চুরি হওয়ার ঘটনা স্থান অর্থাৎ জেলা, বিভাগ, গ্রাম ইত্যাদি সংযুক্ত করতে হবে। আপনার যাবতীয় তথ্যগুলো সঠিকভাবে দেওয়ার পর পরবর্তী অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে।

৪র্থ ধাপঃ এ পর্যন্ত যে সকল তথ্যগুলো দিয়েছেন সবগুলো আবারো একবার আপনার সামনে চলে আসবে। অনলাইনে দেওয়া আপনার যাবতীয় তথ্যগুলো ভালোভাবে আবারো যাচাই-বাছাই করে নিতে, এডিট অপশনে ক্লিক করে পুনরায় সংশোধন করে নিতে পারবেন। আর যদি তথ্যগুলো সব সঠিক থাকে, তাহলে ফাইনাল সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে পারেন। তাহলে আপনারা আবেদনটি এই সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। আপনি চাইলে দিদির ফর্মটি প্রিন্ট করে নিতে পারেন না অথবা জিডি কোডটি নোট করে নিতে পারেন।

এরপর পরবর্তীতে আপনাকে Go Back to Home বাটনে ক্লিক করতে হবে। তাহলে সকল আপডেট তথ্যগুলো দেখতে পাবেন।

লেখকের শেষ মন্তব্য - অনলাইন জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে

প্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, অনলাইন জিডি করার নিয়ম, অনলাইনে জিডি করার ধাপসমূহগুলো, জিডির আবেদন কার্যক্রম এবং মোবাইল চুরি হলে অনলাইনে কিভাবে জিডি করবেন ইত্যাদি সম্পর্কে। আশা করি উপরের আলোচ্য অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ে, কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে জিডি করবেন, তার নিয়ম সম্পর্কে সহজেই বুঝতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকলে, আশা করি শেয়ার করে দিতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাহবুব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url